নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

কামরান চৌধুরী





একুশে চেতনা
*************

একুশ মনে চেতনা আনে
ভাষার বোধ হৃদয় পানে,
রক্ষা করতে মায়ের ভাষা
শহিদ বেদিতে ছুটে আসা।

ফাগুন দিনে দীপ্ত শপথ
বর্ণ শব্দে মোহিত জগৎ।
অতীত সাথে মেল বন্ধন
অন্তর গৃহে ভাষা স্পন্দন।

প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে
ভাষা মাধুর্য বাহিত সুরে।
গর্ব আমার বাংলা ভাষা
গড়েছি সেথা স্বপ্নের বাসা।

ভাষার জন্য দেশের জন্য
শহিদি মরণ ধন্য ধন্য।

একুশ মনে তারুণ্য আনে
শত্রুর মূলে আঘাত হানে,
দেশের মাটি কপালে ছুঁয়ে
মৃত্যু চুমি যে অহংকারে।

শেকল ছেঁড়া দুরন্ত তরী
নোঙর করে প্রভাতফেরি।

ভাষার তাজ শ্বাস প্রশ্বাস
শিমুল পলাশে নিত্য বাস।
একুশ মানে এগিয়ে চলা
সপ্ত সিন্ধুতে ভাসিয়ে ভেলা।।


মাযহারুল ইসলাম অনিক




ভাষা শহীদের প্রতি
**************




ইচ্ছেগুলো যখন তখন
বলতে পারে কথা,
উর্দূ ঘায়ে মনের মাঝে
হয় না এখন ব্যথা।

শাসকগুলো মাইক হাতে
ছাড়ছে না আর ডাক,
বাংলা ভাষা মনের মাঝে
দিচ্ছে শুধু হাঁক।

বুড়ো -বুড়ি খোকা -খুকু
জানায় মনের আশা,
অ, আ,ক,খ সর্বখানে
বাঁধছে সুখের বাসা।

গলা ছেড়ে ইচ্ছেমতো
গাইতে পারি গান,
বাংলা মায়ের দামাল ছেলে
করলো জীবন দান।

হাজার সালাম জানায় তাদের
লড়লো যারা একা,
রাজপথেতে জীবন দিতে
পায় না ভীতির দেখা।

সেই তো আমার সবার প্রিয়
দেশের রফিক সালাম
তাদের তরে জীবন ভরে
পড়ি দোয়া কালাম।

নিলুফার




*ফেব্রুয়ারি  মানে আনন্দ*
   *******************

ফেব্রুয়ারি মানে হৃদয়  মাঝে একরাশ  আনন্দ!
শীতের কুয়াশা ভেদ করে তেজি সূর্য,
গাছে গাছে নতুন পাতা, নতুন কুঁড়ি ,স্নিগ্ধ,
শোনা যায় কোকিলের কুহু কুহু, আগমনের ধ্বনি ঋতুরাজ
বসন্ত!
কত ফুল কৃষ্ণচূড়া, পলাশ ,শিমুল, টগর, দোলন চাঁপার সুগন্ধ!
আবার আসছে যে আগুন ঝরা মাস
ফাগুনের ঐতিহ্য!
আসছে আট  ফাল্গুন, বরেন্য!
এক দিকে প্রকৃতি নবতর সাজে সজ্জিত!
আর অন্য দিকে সেই
বুলেটের সেই শব্দ---
তারপর ভাই  হারিয়ে চারদিক নিস্তব্ধ,
সালাম রফিক, জাব্বার, বরকতের নিষ্প্রাণ দেহ!!
অনেক শোকে কাতর ,, যেন  স্তব্ধ!
জানাই সকলে তাদের শ্রদ্ধার্ঘ্য!
তবুও নিজের মাতৃভাষা বাংলাকে একান্ত করে পেয়ে কতনা আনন্দ!
আর
বারো ফাল্গুন---
মাদারীপুরের এক  গাঁয়ে
যে কন্যা শিশুর জন্ম,
মা বাবার অনেক প্রত্যাশিত, সীমাহীন আদরে লালিত
জন্মের পর  যে সে  মাতৃভাষা বাংলাকে পেলো,
তোমরা জানো,
সেও কত  বেশি গর্বিত?
বাংলায় কিছু লিখতে পেরে সে কতটা  আনন্দিত?
ফেব্রুয়ারিতে শুধু শোক  নয আর় --
ধরো, প্রিয় বাংলাকে বিশ্বের সম্মুখে মেলে ধরো-
শোক ভুলে  আনন্দে মাতৃভাষা শেখো, লেখো,
তাহলেই শহীদের আত্মা শান্তি পাবে ,জেনো,
ওরা তো এই ভাষার জন্যে প্রাণ দিয়েছিল!
লিখো, তোমাদের কাব্যে, গল্প, সাহিত্যে
বাংলার
গৌরবের ইতিহাস কথা লিখো।
মনের ভাব বাংলায় লিখে  ভাষাকে করি সমৃদ্ধ,
রবীন্দ্র, নজরুল, সুকান্ত, জীবনানন্দ, নির্মলেন্দু,
ফররুখ, আল মাহমুদ, ডঃশহীদুল্লাহ, হুমায়ূন, সব বিখ্যাত
কবি সাহিত্যিকের মতো!
বাংলাকে এগিয়ে নিয়ে  বিশ্বের  মানচিত্রে দেই  আসন অনন্য ,
সম্মানিত!
মা, মাতৃভূমি, মাতৃভাষার অনেক অমূল্য!
রেখো না এঁদের অবহেলিত!
বইমেলা দিয়েছে খুলে, যে দ্বার ছিল রুদ্ধ,
বাংলার চর্চার জন্য উন্মুক্ত!
এসো, বাংলা চর্চা করি, বাংলায় দেখি বিশ্ব!
চল, মায়ের ভাষায়  পড়ি, লিখি , বলি, শুনি, বাংলা শিখি শুদ্ধ!।
মায়ের ভাষার সাথে অন্য ভাষা করবো না মিশ্রিত,
করবো না বিকৃত,
মায়ের আঁচলের মতো মাতৃভাষা থাকুক অমলিন, পবিত্র!
চল, বাংলায়
প্রকাশ করি মনের কথা , প্রাণের  ইচ্ছে  যতো,
এ ভাষা একান্ত নিজস্ব!
এই ভাষা আমার !
এই ভাষা তোমার!
আমাদের সকলের!
দু'শো দশ মিলিয়ন মানুষের!
একমাত্র এই ভাষাই পাওয়ার জন্য
উনিশশো বায়ান্নের একুশে ফেব্রুয়ারি হয়েছিল যুদ্ধ!
পারেনি  মুছে দিতে বাংলাকে , তাড়িয়ে দিয়েছি শত্রু!!
এ ভাষা মুছে ফেলা সহজ নয়‌ অত!
অনেক দামি!
রক্ত দিয়ে কিনেছি!
সতের নভেম্বর ,উনিশশো নিরানব্বই---
সেই যে রফিকুল  ইসলাম
লিখলেন চিঠি ইউনেস্কো :
বাংলা পেল
'আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের সম্মান'।
জীবন দিয়ে এ ভাষার মর্যাদা রাখবো!
বড্ড বেশি  প্রিয়!
অনেক সাধনা , অনেক ত্যাগে পেয়েছি!
ভালোবাসি বাংলা ,
ভালোবাসি।!

হায়দার আলী লিটন




বাঙ্গাল ও কাঙ্গাল
**************



বাংলা বল্লে বাঙ্গাল বলো
বাঙ্গাল কথা সত্য বটে
বাঙ্গাল আমি কাঙ্গাল নই
ভিন ভাষা নেই ঠোঁটে।

বাংলা বল্লে বাঙ্গাল বলো
ডাকো আমায় ক্ষেত
একুশ এলে চিৎকার করো
বুঝিনা তোমাদের ভেদ।

বাঙ্গাল আমি কাঙ্গাল নই
নই আমি বাংলিশ
উপরে যেমন ভিতরে তেমন
নই তো আমি ইবলিশ।

হয়তো আমি দিন মজুর
হয়তো কোন চাষী
বাংলা আমার মায়ে মতো
বাংলারে ভালোবাসি।

মাইনুদ্দিন আল আতিক






।।মাতৃভাষা প্রেম।।
**************




আমি অনুভব করছি
বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন
একুশে ফেব্রুয়ারির রাজপথ
শোষকদের প্রহসন ১৪৪ ধারা।
রাষ্ট্রভাষা বাংলা দাবির হুংকার
সারিসারি সুপারি গাছের মতো
সাহসী বুকে এগিয়ে চলা ছাত্রজনতার ঢল।
আকস্মিক ছুটে আসা বুলেট বিদ্ধ তাঁদের বুক
গড়িয়ে পড়ছে টকটকে লাল তাজা রক্ত
লুটিয়ে পরা দেহের ছটফটানি
হাতে আটকে আছে ব্যানার-প্ল্যাকার্ড
কাকের কা-কা রব আকাশে-বাতাসে।
রফিক সফিক সালাম বরকতের দেহ ত্যাগ করে
প্রাণপাখি পাড়ি জমায় জান্নাতের ঠিকানায়,
রাজপথ ভাসে রক্তের প্লাবনে।
আমি মাটির মমতায় শহীদের আর্তনাদ শুনি
ঘ্রাণ শুকি ভালোবাসায়,
প্রতিবাদী হই মুষ্টিবদ্ধ হাতে
মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায়।

ইভা আলমাস





" আমি ' ২১ "
**********




আবার এসেছি ফিরে মাগো         
 তোমার শহীদের মাঝে
সব কিছু বিলীন হলেও জানি
আমি রবো সকাল সাঁঝে।
তোমার দামাল ছেলে আমি
শত বারণ উপেক্ষা করে
তোমার ভাষাকে তোমার আঁচলে
বেঁধে দেবার অঙ্গীকারে
নেমেছিলাম রাজপথে।             
  তোমার জন্য দিয়েছি জীবন
মান রেখে গেছি  ভাষার অমন
আজলা ভরে দিয়েছি ও মা
তোমার ভাষার ফুলঝুরি।
অথচ আজ আমায় ভূলে
কি এক মহা উল্লাসে
তোমার ছেলেরা তোমারই কাছে
হিব্রুতে  বায়না করে !
শত অবহেলা সয়েও মা
কি এক অমোঘ টান
বারবার আমায় ফিরিয়ে আনে
এই বাংলার গান ।
আমায় চেনোনি?
আমি '২১ আমি চঞ্চল
আমি বল্গাহীন রাজরোষ
আমি স্বজনহারা দীপ্ত শপথ
বিজয়ের বিশ্বকোষ।
ধন্য আমি এ ধরাধামে
তোমাতে মিশেছি বলে
ও মা, আমায় কখনো দিওনা ফেলে
নতুন ভাষার জলে।
তোমার চেতনায় যুগে যুগে আমি
ফিরবো বাংলার ঘরে
আমি '২১ আমি মাতৃভাষা
বিজয় কেতনে উড়ে ।