নোটিশ বোর্ড
কৌশিক গাঙ্গুলী
আমার কবিজীবন
*************
২৭বছরের বেশি লেখালিখি করছি কোনো প্রতিষ্ঠান , কোনো শাসক বা কোনো দলের সহযোগিতা ছাড়াই । অনেক মন্দ আর ভাল অভিজ্ঞতা হয়েছে । ১৪টা কবিতার বই , ৫২ টা কবিতাফোল্ডার প্রকাশিত হয়েছে । অজস্র পত্রিকায় অজস্র কবিতা আমার লেখা প্রকাশিত হয়েছে , হচ্ছেও । অপমান এর সঙ্গে কিছু সম্মানও পেয়েছি । প্রথম দিকে মেলা ও উৎসবে আগ্রহ ছিলো । যোগদানও করেছি । এখন আগ্রহ নেই । ফেসবুক এ আছি নিজের মতো করে । লেখার জন্য মার খেয়েছি , দেখেছি কত নোংরামো আবার ভালবাসা পেয়েছি প্রচুর । এখন আমন্ত্রিত হয়েও আর্ধেক অনুষ্ঠানে যাইনা নানা সমস্যার জন্য । বাণিজ্যিক লেখক নই বলে অবজ্ঞা পেয়েছি আবার প্রতিষ্ঠান বিরোধী বলে একটা আলাদা সম্মান আছে সচেতন মানুষদের কাছে । রাজনৈতিক দুর্নীতি আর সামাজিক ভ্রষ্টাচারের বিরুদ্ধে লিখলে ২নম্বরীরা রাগ তো করবেই । তাই না ?
কবিতা গুচ্ছ
*********
কিছু এক লাইনের কবিতা
******************
(১) আমি আনন্দবাজারে চাকরি করিনা , পড়ি ।
(২) যারা দল পাল্টায় তারা ট্রাপিজের খেলা জানে ।
(৩) ক্ষমতালোভীরা ক্ষমতা হারাবার ভয়ে হিংস্র ।
(৪) মিথ্যা চিরকালই জনপ্রিয় ব্যাধি ।
(৫) ভোটের সময়ে আমি কানের অসুখে ভুগি ।
(৬) টাকা ছাড়া প্রেম একতরফাই থাকে ।
(৭) রাজকবি হিংসা করে লোককবিকে ।
(৮) ধান্দা ছাড়া রাজনীতি করে বোকারা ।
(৯) অক্ষমেরা সিনেমা দেখে স্বান্তনা খোঁজে ।
(১0) সত্য এখন জ্বলন্ত চুল্লীতে আর বিবেক বেশ্যাখানায় ।
(১১) আদর্শ এখন নিরুদ্দেশে আর সরলতা পাগলাগারদে ।
(১২) বুদ্ধিজীবির চাইতেও দরকার এক জিবি নেট ।
(১৩) করের দায়িত্ব মধ্যবিত্তের ।
(১৪) মানুষও আজকাল হায়নার মতন হাসে ।
(১৫) ক্ষমতার পাশে পাশাসহ শকুনি মামারা ।
(১৬) জাতি দাঙ্গা মানব সভ্যতাকে নাঙ্গা করে ।
(১৭) ভালবাসা ফুর্তির বিছানায় থাকে ।
(১৮) প্রতিবাদের জায়গা লাশকাটা ঘরে ।
কবিতা গুচ্ছ
**********
স্বয়ং সিদ্ধ
********
বেশ করেছি গড়েছি ,
বেশ করেছি ভেঙেছি -
বেশ করেছি হাত কেটে রক্তপাত ,
আসলে আমি স্বয়ংসিদ্ধ , কবি ও কারিগর ।
নেই হুশ , নেই খেয়াল
সব স্বপ্ন দিয়েছি তোকে ,,,
অভাবের আগুন আর স্বভাবের
ঝড় জ্বালিয়ে দিয়েছে তোকে ,
পাই আনন্দ , তুই যন্ত্রনায় কাতরাবি ,
বাতাসে পোড়ার গন্ধ ।
বিচিত্র উল্লাসে উড়িয়ে দিয়েছি পান্ডুলিপি ,
ছিঁড়েছি যত চিঠি আর একমুঠো সোনারোদ .....
আয় দুজনেই কাঁদি , দুজনেই হাসি , সব শোধবোধ ।
ভুলভাল
******
আমেরিকা যাবে
জানি না কি পাবে ?
ওখানেতে থাকে ওবামা
এখানে আমাদের জীবন
ফাঁটা পায়জামা
অজানা রোগ
মায়ের ভোগ
আচ্ছে দিন আর
উন্নয়নের মাঝে
ব্যস্ত সবাই
সমাজের কাজে
দুপাশে পাক ও চীন
এক দুই তিন
বাঁচান মিঃ ট্রাম্প
দিয়ে হাইজাম্প
সমস্যার সন্ত্রাস
জীবনের বারোমাস
আমেরিকা পালাবে
জানিনা কি পাবে ?
মূল্যবৃদ্ধির চাপে
হৃদয় কাঁপে
পকেটে বড় টান
আধার লিঙ্ক চান
চোখেতে দেখি গোলকধাঁধা
চারিদিকে কতো গাধা
গাইছে মরণমুখী গান
ফুর্তিতে খরচা বাড়ে
টাকা আসে অন্ধকারে
রঙ্গ দেখে স্যায়ানারা হাসে
কুটিলেরা মিছে কাশে
দেশজুড়ে বাড়ে প্রহসন
ঠাকুর তুমি থাকবে কতক্ষণ
ঠাকুর তুমি যাবে বিসর্জন ।
চলমান জীবন
**********
একজন বিখ্যাত ব্যাক্তিকে জিজ্ঞাসা করলাম :
বারবার পুরস্কৃত কিভাবে ? স্মিত হেসে পিঠ চাপড়ে
বললেন : অনেক আপোসের শৃঙ্খল গেঁথে ।
একজন সেরা লম্পটকে জিজ্ঞাসা করলাম ;
তার লাম্পট্যের উৎস কি ? চমৎকার ভাবে জানালো :
জহুরী জহর চেনে , সে চেনে নেশা ও নারী । একজন রাজনীতিবিদকে জিজ্ঞাসা করলাম : এতবার দল
পাল্টান কি করে ? তিনি কপাল কুচকে মুখে হাসি এনে
বাণী দিলেন - চোখে কম দেখি যে .... ।
সংখ্যাগরিষ্ঠ যুবসমাজকে জিজ্ঞাসা করি :
এভাবে ধ্বংস করো কেনো সমাজ কে ?
তুমুল হুল্লোড় আর বিচিত্র সিটি সমেত জানালো
- শুধু বুঝি কেরিয়ার অথবা অন্ধকার ।
একদল ব্যাতিব্যস্ত শিশুদের জিজ্ঞাসা করলাম :
ফাস্ট হবে তো সব্বাই ? নানাদিক থেকে ছিটকে এলো
উত্তর - মা জানে , বাবা জানে , পরীক্ষার খাতা জানে
এইভাবেই বেঁচে থাকা , এইতো চলমান জীবন আমাদের ।
মশাল আর কবিতা
*************
বড় বেমানান আমি যেকোনো পার্টিসংস্কৃতির মঞ্চে কিংবা পত্রিকায় , ঘরে - বাইরে আমার লড়াই , স্বপ্নেও । কুর্ণিশ আর তেলবাজির রাস্তায় আমি অচেনা এক পথিক .....
আমার প্রিয় উজ্জ্বল সূর্য ও মশালের আগুন , অন্ধকারে ভয় , সংশয়ে টেনশন বাড়ে , রোজগার হয় না , অপমান , হুমকি নিত্যসঙ্গী হয় , বদমাশ আর ধান্দাবাজরা বন্ধু হয় না । সচেতন ও লোভহীন বান্ধবীও খুঁজে পাইনি এখনও তাই বাউল হবার ইচ্ছের মুখে ঝামা ঘসে দিয়ে অসুস্হ শরীর আরও অসুস্হ হয় । গুমড়ে ওঠা কান্না আর দায়বদ্ধ কবিতায় আমার বেঁচে থাকা , মনুষ্যত্বের জন্য লড়াই , মাথা উঁচু রাখার স্বপ্ন দেখি নিঃসঙ্গ আমি , বেমানান আমি এই পচা - গলা সিস্টেমে অথবা কোনো রাজনৈতিক দলের আশ্রয়ে তবু যুদ্ধ চলে মর্যাদা রক্ষার বিবেক আর বোধের , সঙ্গী থাকে কবিতা , ইচ্ছে থাকে অন্ধকারে মশাল জ্বালাবার , আলোর দরকারে ।
অগ্নি লিখন
********
বাতাসে পোড়া বারুদের গন্ধ
অসুস্হ শরীর কলমটা খুঁজে চলে ।
এখন সবাই কবিতায় বিনোদন চায় কিংবা বিশুদ্ধ দুর্বোধ্যতা
ছাপা হয় লিটিল ম্যাগাজিনে ।
বিবেকের দায় নিতে বয়ে গেছে তাদের ।
রাস্তায় পচা লাশের গন্ধ ,
রক্তের ঘন ছাপ ।
সাদা পৃষ্ঠায় আগুন লিখতে চাই , লিখতে চাই একরাশ শাণিত প্রতিবাদ ,
এখন সবাই কেরিয়ার গোছাতে ব্যস্ত কিংবা ঘন অন্ধকারে বিকৃত আনন্দের সন্ধানে ।
সন্ত্রাসে , যুদ্ধে , ভ্রষ্টাচারে , ব্যাভিচারে ছয়লাপ , বিচিত্র মুখোশের আড়ালে সমাজ ও সভ্যতা । কে কি চায় তা নয় , কি চাওয়া উচিত জিজ্ঞাসা করো বোধকে । ধান্দার বেড়াজালে মিথ্যাকে খুঁজো না । . . . . . . . . . . . . .
সাদা পৃষ্ঠায় আগুন লিখতে চাই , লিখতে চাই সময়ের যন্ত্রনার কথা , বাতাসে ভাসে পচা সমাজের কটু গন্ধ ,
একাকি কবি তার কলমটা খুঁজে চলে ।
স্বপ্ন
***
মগজে সাইক্লোন ,
ধর্মে ঠিকানা
চেটেপুটে দেখোতো
ঠিক আছে কিনা ?
আমিও গেয়েছিলাম
তোমার সঙ্গে সেদিন ,
সবই কি দিয়েছো ফিরিয়ে ,
বাকি কি নেই ঋণ ?
তবুও মশাল জ্বালাবার
স্বপ্ন দেখে থাকি ,
পুরানো ক্ষতটাকে
মুখোশেতে ঢেকে রাখি ।
এটা কি চেয়েছিলে ,
তুমিও কি ভেবেছিলে ?
সবই কি হারালাম ,
সবই কি দিলে ফেলে ?
আমিও কি ঠিক আছি ,
মগজে সাইক্লোন ,
দ্বন্ধে ঠিকানা ,
সবচেয়ে তুমি আপন ।
দালাল
******
আমাকে গালি দেবেন না বাবুমশাই
কারণ আলোয় - অন্ধকারে আমাকেই চাই ,
আমি ভালো কে বানাই মন্দ , মন্দকে ভয়ংকর
সত্যকে বানাই মিথ্যা , ভাঙি সুখের ঘর ।
আমি কাছের লোক রাজনীতি আর ধর্মের
দুর্নীতি ও ভন্ডামিতে মিনার গড়ি কুর্কমের ।
আমি গডম্যান থেকে ব্যাডম্যানে রাজি
অভিনেতা থেকে নেতাও
সাজি ।
আমি কখনও দালাল , কখনো স্মাগলার
সুবিধামতন তথ্য থেকে দ্রব্য পাচার ,
সবেতেই আমি-আমরা-আমাদের দরকার
আলোয়ে -অন্ধকারে , কর্মে - কুকর্মে আমরাই সমাচার ।
ট্যাক্স ফাঁকি ,জাল দলিল , নকল মার্কশিট
করিয়ে দেবো ,বানিয়ে দেবো , খুলে দেবো গিঁট ।
সরকারি বেসরকারি সব অফিসেই পাবেন ,
আমিষ বা নিরামিষ যা খাওয়াবো খাবেন -
শুধু ভরিয়ে দেবেন আমার থলি কিংবা সুইস ব্যাঙ্কে ,
দালাল বলে ধমক দিলে যাবো কিন্তু চমকে ।
সুনীতি দেবনাথ
অজানা
******
এই যে নিরালম্ব অবস্থান কতদিন কতকাল
এই যে অস্তিত্বের হাহাকার হয়তো চিরন্তন।
আমার তোমার যাপনের কাল স্বস্তিহীন শুধু
স্বর্ণলতিকার মতন সোহাগী শোভন হলেও
পরজীবী হবার যন্ত্রণার অবসান নেই কোনদিন।
ওপারে সমুদ্র উথাল পাথাল বেলাভূমি তপ্ত বালুময়
কখন উঠবে প্রলয় ঝড় সেও তো অজানা,
বন্দরে কি ফেলবে নোঙর অচেনা জলযান?
অলৌকিক স্বপ্নের যাত্রা শেষ হবে কি নতুন কোন
পারাপারহীন আলোকের ইশারায় অন্য উপকূলে?
কা জ রী ব সু
শীত
****
তুমুল রঙে প্রলেপ ছিল।ভুল ভাঙানোর ভিত।
এবং ছিল অস্তরাগের রঙ লাগানো শীত।
মুঠোয় ছিল লুকিয়ে রাখা উথালপাথাল ভয়।
হাতের পাতায় আখরজাত শঙ্খ এবং জয়।
অনেক কিছুর ভিতর ছিল ঘুম ভাঙানোর সুর
নীললোহিত আর চলতে থাকা দিকশূন্যপুর...
তোমার হাতে আগুন যখন শীত পোড়ে উদ্দাম
পুড়তে থাকে নিকষকালো অতল মধ্যযাম..
যে ঘুম থাকে মধ্যযামে,ভাঙতে ভাঙতে যেই
নিত্য সকাল,অর্ঘ্যকমল আলোর প্রাচুর্যেই...
তেমন ঘুমের ভাঙচুরে এক বয়সকালীন শীত
জটিল করে,যখন তোমার দু চোখ পথিকৃৎ...
পিয়ালী বসু ঘোষ
পরিপূরক...
*******
ইচ্ছের ভিতর থাকে আরও কিছু কৌতুহলী ইচ্ছে
তীব্রভাবে আছড়ে পড়বে বলেই
ঘনিষ্ঠ ঢেউ গুলো সরে যায় দূরে
সমব্যথী মেঘগুলো কাছাকাছি এলে
প্রকৃতিও শান্ত হয়
নিরাপদ পাঠশালায় নয়ছয় হয় সব প্রতিশোধ
ভুল করে বাড়িয়ে ফেলি আবারও তৃষ্ণার্ত জিভের ডগা
তোমার ঠোঁটের কাছে গিয়ে ফিরে আসে
আমার সব মৃত্যুগন্ধী নেশা
ঝরে পড়া রাত শিশির জানে মাটিই তার প্রত্যাশা !!
ঈশিতা দাস
হয়তো বা ...
********
আজ হয়েছি বন্ধি
তোমার উষ্ণতা জড়িত রাতের গভীরতায় ।
জমাট বেঁধেছে রক্ত বিন্দু
মুহূর্তদের কনায় কনায় ।
ডুবে গিয়েছি আজ
কোনো সীমান্তহীন জলের গভীরতায় ।
হ্যাঁ আজ আসক্ত হয়েছি আমি
তোমার প্রতি ।
নির্বাসিতা আমি আজকাল ।
তবুও হয়তো বা কোনো একদিন
নেশা কেটে গেলে
তুমিও কেটে যাবে
কোনো অস্তিত্বহীন পিছুটানে ।।
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)