নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

নৃপেন্দ্রনাথ মহন্ত







অবসরপ্রাপ্ত মাধ্যমিক শিক্ষক, এম.এ.বি.টি.।মুখ্যত ছোটোগল্প লেখক। প্রকাশিত গল্পগ্রন্থ:পতঙ্গ বাসনা,ভেতরের মানুষ,হয়তো গল্প। প্রায় সবকবিতাই ২০১৬ সালে রোগশয্যায় রচিত।



কিছু আলাপ কিছু কথা 
*********************

১.কবিতা কি ? 
উত্তর:কবিতা আমার কাছে এক সঞ্জীবনী সুধা।
২)আপনার প্রিয়কবি কে ?আপনার অনুপ্রেরণা কে বা কি ?
উত্তর: আমার প্রিয় কবি(রবীন্দ্রনাথ ব্যতীত) -
জীবনানন্দ দাস
৩)কেন লেখেন আপনি কবিতা ?
উত্তর: বর্তমানে আমি কবিতা লিখি দীর্ঘ অসুস্থতাজনিত ঘরবন্দি জীবনের নিঃসঙ্গতা কাটাবার জন্য।
৪)আপনার প্রথম কবিতার নাম ও কাব্যগ্রন্থের নাম ?(প্রকাশিত বা অপ্রকাশিত)
উত্তর: প্রথম কবিতা (কলেজ জীবনে):প্রভু,আমি গ্রাজুয়েট
   প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ  : স্বপ্নশ্যামাপোকা(২০১৬)!৫)নবদম্পতির সম্পর্কের মতো।




                                   কবিতা গুচ্ছ 
                                ***************



                            পথরেখা 

                      (পঞ্চদশপদী কবিতা)



ওই যে খোকা, একটি রেখা পাহাড় থেকে নামে
মাঠ ছাড়িয়ে,গ্রাম ছাড়িয়ে সাগরপারে থামে
ওই রেখাটি আবেগ দিয়ে স্বদেশ ঘিরে রাখে।
সে-রেখাতে সঠিক পথের হদিশ আঁকা থাকে।

পথের ডাকে পথ চলেছে মাতাল হয়ে একা
পথ কী,জানো?পথ মানে এমন একটি রেখা
চলতে গিয়ে ডাইনে-বাঁয়ে প্রত্যহ হয় দেখা
উভয়ে ডাকবে তোমায় উঠতে তাদের না'য়ে
বলো কোন্ পথে চলতে চাও ডাইনে, নাকি বাঁয়ে?

পথ চলেছে ডাইনে -বাঁয়ে, পথ চলেছে সোজা
পথের খোপায় কেউ দেখে ফুলের মালা গোঁজা
কেউ বা দেখে কাঁটা শুধুই, কান্নাভেজা পথ
ওই পথের শেষেই তোমার সিদ্ধ মনোরথ।

ডাইনে আছে ডাইনিরানী ফুলমালায় সেজে
বাঁয়ের পথে সুখের দাসী চোখের জলে ভেজে।




               শিল্প ও শিল্পী 




ছবি আঁকছেন চিত্রশিল্পী
তাঁর সামনে এক বিষাদ প্রতিমা
মুখে হাসি নেই
অধরোষ্ঠে নেই খুশি একতিল।
শিল্পীর ইচ্ছে
সন্তানসম্ভবা সুন্দরীর প্রশান্তির হাসিমুখ
বন্দি করে রাখবেন ছবির খাঁচায়।

অদূর অতীতে প্রথম সন্তানহারা জননীর মুখে
অকৃত্রিম হাসি ফোটাতে চেষ্টার অন্ত ছিলনা।
ভাড়াকরা ভাঁড় এলো,ভাঁড়ামির চূড়ান্ত হল
সুন্দরীর ভারাক্রান্ত মনে তার ছায়াপাত ঘটলো না।
নৃত্যশিল্পী এলো,এলো সঙ্গীতশিল্পীও
সুন্দরীর মনের জমাট  অন্ধকারের শরীরের ভাঁজে
তবু কোনো দুলুনি নেই,বিদ্যুতের ঝলকানি নেই,
এমনকি ঘাসফড়িঙের ওড়াওড়িও নেই।

অবশেষে শিল্পীর মনোবিদ এক বন্ধু
সেদিনের খবরের কাগজখানা ধরলেন তার সামনে
প্রথম পাতাতেই রাজ্যের বাক্যবাগীশ মহারানীর ছবি
তাঁকে দেয়া হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ বিদুষীর সম্মান
স্বয়ং রাজাধিরাজ তাঁকে পরিয়ে দিচ্ছেন উত্তরীয়
হাতে তুলে দিচ্ছেন শ্রেষ্ঠত্বের অভিজ্ঞান।
সেই চিত্রদর্শনে সুন্দরীর সর্বাঙ্গ 
বিচিত্র হাসির গমকে কেঁপেকেঁপে উঠলো
আর সেই উদ্ভটসুন্দর হাসির মুহূর্তটি
শিল্পী বন্দি করে ফেললেন তাঁর ছবির মুখাবয়বে।

দুষ্পাঠ্য শিলালিপির মতো শিল্পশালার এক কোণে
পড়ে রইলো বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ সেই শিল্পকীর্তি।
অবশেষে চোখ পড়লো শিল্পরসিকদের।
অনন্ত বিভ্রমে ভরা আলো- অন্ধকারের রহস্যেঘেরা
বহুমাত্রিক সেই ছবি আলোড়ন তুললো শিল্পীমহলে।

শিল্পীকে পেছনে ফেলে শিল্প এগিয়ে গেলো
অমরত্বের নিঃশব্দ দ্রাঘিমায়।
             

            

             শব্দকথা 





প্রথমে ভেসে আসছিলো জলপথে
পরে আকাশপথেও।
ছড়িয়ে পড়ছিলো নগরে-শহরে,গ্রামে-গঞ্জে সর্বত্র।
ভিনজাতের সাথে শুরু হল ওঠা-বসা,মেলা-মেশা
ক্রমশ ঘনিষ্ঠতা,মন দেওয়া-নেওয়া--অসবর্ণমিলন।
জাতকের চেহারায় পড়লো তার ছাপ।
ভিনদেশ থেকে উড়েআসা ভেসেআসা শব্দরাশি
নবরূপে ঠাঁই পেলো এদেশের শব্দখনিতে,
হয়ে উঠলো সহৃদয়হৃদয়সংবেদী শব্দবাণ।

কবিরা কুড়োচ্ছিলো শব্দরত্ন 
বিশ্বের বিস্তৃত অঙ্গন থেকে
তখন ক্রমশ জটিল হচ্ছিল সময়
এবং সময়ের কুম্ভীপাকে বিপর্যস্ত হচ্ছিল মানুষ।
সহৃদয় শব্দ এসে দাঁড়ালো তার পাশে,
ঢুকে পড়লো কাব্য-কথায়
গন্ধ পেয়ে ছুটে এলো বিজ্ঞান, এলো প্রযুক্তি ও দর্শন
সাহিত্যকে অভয় দিয়ে বললো: 
হ্যাশ ট্যাগ--মি টু--আমিও আছি।
মহাকাব্য এসে আশীর্বাদ করে বললো  :
সুখী হও,দীর্ঘজীবী হও,
বিশ্বময় গড়ে তোলো অখণ্ড শব্দের সংসার।

আমি তাই বনেজঙ্গলে, পাহাড়েপর্বতে,সাগরেনগরে
শব্দ কুড়োতে বসেছি--যে শব্দ সহৃদয়হৃদয়সংবেদী,
যে শব্দ ভেসে আসে ঢেউয়ে ঢেউয়ে বাতাসে বাতাসে
যে শব্দ পাক হয় বাংলার অদৃশ্য ভিয়েনে।



                    বিভ্রান্তি 



দাঁড়ালাম অবশেষে
সংসারের সমুদ্রবন্দরে
তীরে এসে ভিড়েছে জাহাজ

চলে যাব বহু দূরে
কোনো পিছুটান নেই আর
ফুরিয়েছে জগতের কাজ।

মগজে বেঁধেছে বাসা
অর্থহীন শব্দ রাশি রাশি
সেগুলোকে কোথা রেখে যাব?

কবিতা লিখবো বলে
যা কিছু দেখেছি মর-চোখে
সেগুলোকে কোথায় লুকোবো?

সূর্য অস্ত যায় ডানে
বামে জাগে পৌর্ণমাসী চাঁদ
যখন দক্ষিণমুখো হই

উত্তরমুখো হলেই
অবস্থানে বৈপরীত্য আসে
বলো,আমি কোনদিকে রই।

উত্তর-দক্ষিণ ভেদে
এতই পার্থক্য ফলাফলে
উদভ্রান্ত কোন্ দিকে যাব

সমুদ্রেই দেব ঝাঁপ
যা হওয়ার কপালে হোক
সাঁতরেই সাগর পেরোবো।





        পথপ্রান্তে ঘর 


পথের ধারে ঘর
সেই ঘরের  ভেতর
সারাদিন ছটফট করি দুরারোগ্য রোগের জ্বালায়
কুয়াশার চাদরে মুখ ঢাকে মুমূর্ষু হেমন্তের দিন
আমার অবস্থা যদিও সঙ্গিন
তথাপি বর্ষণশেষে বর্ণালি রামধনুর ন্যায় 
ক্ষণিক খুশির আবেগ আমাকে ভাসায়
যখন চতুর্থ বর্ষীয় পৌত্রী পাশে এসে বসে
বলে,দাদু, হাঁটো,আমার হাত ধরে হাঁটো।
মাঝে মাঝে স্পর্শ করি
অকল্পনীয় দুরাশার উচ্চতম চূড়া
যদি সেরে উঠি
যদি বিধাতা দেন বরাদ্দের অধিক পরমায়ু
তবে দূর করে দেব সর্ববিধ বেজন্মা হৃদয়ের খেদ
ঘুণধরা ভঙ্গুর হাড়ে লাগুক বাতাস
নাতনির হাত ধরে ঋজু হেঁটে চলে যাবো
অহর্নিশ অসন্তুষ্ট এ শহর ছেড়ে
শান্ত কোনো পল্লীর দূরতম কোণে
বেঁধে নেবো বাসযোগ্য প্রশান্ত কুটির
যার পাশে পথ নয়,থাকবে নিস্তরঙ্গ দিঘি।
পৌত্রী বলবে,দাদু, চলো ফিরে যাই
উত্তরে বলবো,তুমি ফিরে যাও দিদিভাই
বাকি কটা দিন আমি এখানে কাটাই
এখানে শহুরে মানুষের  প্রবেশ অবান্তর
এখানে পথের ধারে নয়, পথপ্রান্তে ঘর।


অভিজিৎ পাল



নাম - অভিজিৎ পাল
বসবাস - যাদবপুর, কলকাতা।
বর্তমানে - কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে শ্রীরামকৃষ্ণ ও 'কথামৃত' বিষয়ে গবেষণারত।

প্রশ্ন :১:- আপনার কাছে কবিতা কি ? 

উঃ কবিতা একটি বিমূর্ত সত্তা। তাকে লালন করতে হয়। সঠিক পরিমার্জন ও পরিশোধন কবিতাকে তন্বী করে। আমার কাছে কবিতা কি তা আমি জানি না। বলতে পারি একটা স্বতন্ত্র ও বিশেষ ভালো লাগার ক্ষেত্র। 

প্রশ্ন  ২:- আপনার প্রিয় কবি কে ? আপনার অনুপ্রেরণা কে বা কি ? 
উঃ প্রিয় কবি অনেকেই। কোনো নির্দিষ্ট একজন নয়। মনের অবস্থা অনুযায়ী কবিতা ভালো লাগে। সেই মতো কবিকে। এক কবির সব কবিতা ভালো লাগবে, তার কোনো মানে নেই।

অনুপ্রেরণা হিসেবে চিহ্নিত করবো আমাদের স্কুলের শিক্ষক দীপক হালদারকে। তিনি সত্তরের দশকের যশস্বী কবি ও গদ্যকার। তিনিই ঠিক ভাবে কবিতাকে ভালোবাসতে শিখিয়েছিলেন। তাঁর লেখায় অদ্ভুত একটা অনুভূতি তৈরি হতো স্কুলজীবনে। বাংলা স্যার হিসেবে একজন কবিকে পাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল আমাদের।

 প্রশ্ন ৩:- কেন লেখেন আপনি কবিতা ? 

উঃ এটি একটি ভয়ঙ্কর প্রশ্ন। আমি না লিখলেও বাংলা সাহিত্যের কিছু হানি হবে না। আমার লেখা বা না লেখা দিয়ে কারো কিছু যায় আসে না। সত্যি বলতে কি আমি কেন লিখি তাই জানি না। শুধু বলবো নিজে লিখে আনন্দ পাই, তাই লিখি। ২০০৭ থেকে অনেক ছোট-বড় কাগজে লিখেছি। একটি-দুটি পাঠক হলেও আশা করি তৈরি হয়েছে। হয়তো বা নিজের জন্যই লিখি।

  প্রশ্ন  ৪:- আপনার প্রথম কবিতার নাম ও কাব্য গ্রন্থের  নাম (প্রকাশিত/ অপ্রকাশিত) 

উঃ প্রথম কবিতার নাম মনে নেই। বিষয় ছিল শ্রীমা সারদা দেবী। শুধু মনে আছে স্কুল ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়েছিল।

২০১৬তে প্রকাশিত হয়েছে 'আমার শ্যাডোগ্রাফি'। প্রায় নিঃশেষিত হয়ে এসেছে। অনেক পাঠক কিনেছিলেন। আরেকটি বইয়ের কাজ ও কথা চলছে। আমার গবেষণার কাজটি শেষ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করছেন একটি সংস্থা। গদ্যকবিতা নিয়ে আগামী বইটি প্রকাশ হবে

  প্রশ্ন ৫:- কবিতা/কবি সঙ্গে পাঠকের সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিৎ ? 

উঃ আমি মনে করি সব কবিতা সবার জন্য উন্মুক্ত না। তাই সম্পর্কটি পাঠক তৈরি করেন তার রুচি, পাঠের অভ্যাস প্রভৃতির উপর নির্ভর করে।
     
(সমস্ত বক্তব্যের অনুলিখন করেছেন সুমন পাত্র, তাকে ধন্যবাদ জানাই)




কবিতা 
******
রাই-কৃষ্ণ পদাবলী 
*****************



রাধার বুক চিরে বেড়িয়ে আসে চেনা জানা একটা ব্যথা।
 বিরলে বসে একা পড়তে থাকে ভাবী জীবনের পাঠ। 
ধ্যানবৎ স্থির হয়ে আকাশের ঔদার্য দেখে। 
সেখানে লেগে রয়েছে লাম্পট্যের ঘনরঙ। 
স্থির চোখে একা দেখে মেঘের যাপনকলা। 
যোগিনীর মতো স্থিতধী হয়ে ওঠে গৈরিক আবহ। 
খাদ্য বস্ত্র পরিবারের জৈবিক চাহিদা মুছে আসছে ক্যানভাসে। ত্রস্ত বেণীর থেকে খসে পড়ে বেদনাকাতর ফুলের আলপনা। কেশের মধ্যে কেশবের রঙ খুঁজতে চেষ্টা করে একাকিনী। 
মরে শুধুই মরে। 
পোষা ময়ূরের গলায় আদরের আকাশী নীল স্বপ্ন সাজায়। 
দূর থেকে এক অননুমোদিত কৃষ্ণাতুরার ছবি আঁকে চণ্ডিদাস।


                      (২)

সখীসম্মুখে চেনা কথাগুলোর ব্যাখ্যানের 
পর সামনে এসে দাঁড়ায় প্রশ্নচিহ্ন। 
অনুভূতি বিবর্তিত হয়। 
নতুন ভাবনার মতো প্লট বদলে 
যায় ক্রমশ আকাশের ছন্দে। 
আজীবন চেয়ে দেখব আমি, 
আজীবন শুনব আদিম প্রেম জড়ানো ধ্বনিগুচ্ছ।
 শুধু অতৃপ্তি আর অতৃপ্তি বাঁধব আমার দু'হাতে।
 এখনও বাসন্তী রাত কাটে অজস্র ক্রীয়াকৌতুকে। 
                  বদলে উঠি প্রতিদিন।
 লক্ষ লক্ষ যুগ অতিক্রম করেও 
একটা অজানা অতৃপ্তি জমে থাকে বুকের ভিতর।
 সংজ্ঞা বদলে আসে প্রেমানুসঙ্গের। 
কুঞ্জবনে পাহাড়া দেয় কবিবল্লভ। 
নীচু স্বরে সহমত জানায়।


                              (৩)


ঘরের দরজা কঠিন হয়ে আসছে। 
নেমে আসছে অধরা মাধুকরী মাখানো বৃষ্টির দল।
 দুর্গম পথ হাঁটি অভিসারে। 
একা কৃষ্ণাভিমুখে।
 নীলাম্বরে আবৃত হই। 
মিশে যাই বর্ষার ক্যানভাসে।
 নির্দিষ্ট পুরুষ স্বাক্ষরিত চিহ্নায়ক দৃশ্যে
 অপেক্ষা করে হ্রদের ধারে।
 শঙ্কিত হয়ে উঠি। আকাশ কেঁপে ওঠে ভয়ে।
 ধাঁ ধাঁ লাগে আলোর। 
ধুলোর সাথে মিশিয়ে ফেলি আমার মৃত্যুমুখীচেতনা। 
কবি গোবিন্দদাস পথ চেনায়।
 ক্ষীপ্র বাণ হয়ে উঠি।

      
                        (৪)




মায়াজাল আঁকো নারীর সম্মুখে। 
সম্পর্কের ঘোষণাহীন ফাঁদ পাতো। 
বিরামহীন আভিজাত্যের সঙ্গে 
বৈপরীত্য সাজাই ঘর-বাহির, 
আপন-পর, রাত-দিনের সংজ্ঞায়। 
বদলে ফেলি সব, সব কিছু। 
চেষ্টা করি প্রেমজ আনন্দবিহারে সমাহিত হতে। 
নদীর বুকে ভেসে যায় শ্যাওলার দাম্পত্য। 
ভয় নেমে আসে , এক অজানা অতৃপ্তি ভয়। 
আমিও শ্যাওলার মতো বিচ্যূত হয়ে চলেছি গহনের পথে। কঠোরতা হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকো সামনে। 
মৃত্যুমুখী শরীরের সামনে দাঁড়িয়ে থাকো স্থবিরতা মেখে।
 দ্বিজ চণ্ডিদাসকে সাক্ষি রেখে আমি মৃত্যুবিলাসী হতে চাই।



                          (৫)



সখির সামনে মেলে বসি দুঃখীর ইমান। 
ভরা বর্ষা মাখানো ভাদ্রদিনে শূন্য হয়ে আসছে গেহ।
 চিত্রকল্পে জমে উঠছে মেঘ। 
আকাশ বাতাস ব্যাপ্ত হয়ে নেমে আসছে শরীরে। 
প্রবাসী কৃষ্ণের অপেক্ষা করি। 
খেদ জমে ক্যানভাস জুড়ে। 
বর্ষার দৃশ্য মনে উঠেই নেমে যেতে চায়। 
ময়ূরের সোহাগ দেখি। মেতে ওঠে দাদুরী।
 ডাহুকীর হাতে তুলে দিতে থাকি 
আমার দুঃখিনী বর্ণমালাদের। 
বুকে জমে ওঠে কষ্ট। 
অন্ধকার আর অন্ধকার জমে। 
দিগন্তে লেগে থাকে গোঙানীর দাগ। 
বিদ্যাপতি এসে সান্ত্বনা মাখানো 
বাক্যিক বিন্যাস সাজায়। 
...............................................................

✍️✍️পরিচিতি পর্ব




✍️✍️সম্পাদকীয় .....



দেখতে দেখতে দিন গুলো কেমন আসতে আসতে সরে সরে যাচ্ছে ।এই তো বছর শুরু হলো ,এই শেষ । এর মাঝেই কিছু চাওয়া ,কিছু পাওয়া । কিছু পেয়েও হারিয়ে ফেলা ,আবার হঠাৎ সান্তাক্লস দাদুর গিফ্ট ,প্রিয়মানুষটির সাথে খুনসুটি , অভিমান ...দূরত্ব,প্রাচীর ,কাঁটাতার ।তবুও টিপটাপ কিছু বৃষ্টি ,কিছু কিছু শিশির ,পা ভেজায় ।
দূর্বার উপর পায়ের ছাপ ,কিংবা বালির উপর দাগ কাটা আঁকিবুকি ,প্রিয়মানুষটির প্রতীক্ষা করে ল্যাম্পপোস্টময় ঝুলতে থাকা নীলচে খাম । আর এর মাঝেই হারিয়ে যেতে থাকে গল্প ,কথা ,শব্দমালা ,"আমি"/তুমি" ।
বসয় বাড়ার সাথে সাথেই পরিচয় বদলে যেতে থাকে ,হারায় ডাকনাম গুলো । এর মাঝেই এগিয়ে যাওয়া ,আরও একটি বার ভাঙা গলায় গেয়ে ওটা গান "একদিন চলে যাবো সব কিছুই ছেড়ে দূরে ,আরো দূরে ।আমার যা কিছু আজ আছে থাকবে পরে ।"


যাক এবার বছর শেষে তাই নিকোটিনে "তোমার আমার কথায়" "পরিচিতি পর্ব এবং কিছু কবিতা " নিয়ে ।অনেক প্রিয় মানুষের অনেক কবিতা ও সংলাপ আমরা পেয়েছি ,সকলকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ও ভালোবাসা ।
শুভ নববর্ষের আগাম শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন । ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আর ভালো রাখবেন প্রিয়মানুষটিকে ।।


                                     ধন্যবাদান্তে,
                                        ঈশিতা দাস
                                    (সহ-সম্পাদিকা)



নিকোটিন ও নিকোটিন পরিবার

সুধা সরকার
(চেয়ার ম্যান )
সুস্মিতা কর্মকার
(সুম্পাদিকা)
জ্যোতির্ময় রায়
(কার্যকরী সম্পাদক)
পিন্টু মাহাতো
(সহ সম্পাদক ,মিডিয়া ম্যানেজার )
ইশিতা দাস
(সহ সম্পাদিকা )

বনানী চক্রবর্ত্তী এর এক গুচ্ছ কবিতা







হেমন্ত 




চলে এল
আবার হেমন্ত
সবুজে ভরানো
আদরে মোড়ানো
যতনে সাজানো
অদ্ভুত সৌন্দর্য
ঝড়ে যাবে
একে একে
মাটির পরেতে
সব ফাঁকা
হয়ে যাবে
তারপর বিরাট
এক শূণ্যস্থান
আবার সব
পূরণ হবে
নব আনন্দের
এক বসন্তে।।
           



দুর্বলতা 



আমার সমস্ত দুর্বলতা
তোমার হাতের পাঁচআঙুলে
ধীরে ধীরে প্রেরিত,

আমার বুকের ভীরুতা
তোমার নয়নের সততায়
আরও নীরবে গ্রথিত।।
             


ছাই





পুড়ে গেছি আমি
পুড়িয়েছি তোমার হাসি
ছাই মাখা ঠোঁটে
তোমার অপেক্ষায় ভোর খুঁজি।।
             

জ্যোতির্ময় রায়





ডেল্টা এক্স 



0/১ =(₹)
          প্রশ্ন চিন্হ নেই ।
  এন্ড ক ন টি নি উ স ।






ম্যাগনেটিক ফিভার 




    পারদ ছুঁয়েছে ঠোঁট ।
  ফসফরাস জ্বলে উঠে 8.9 রিখটার।
    শিশির ছুঁয়ে এক হেমন্তের সকাল
    ঝালমুড়ির বিকেল তখন অভ্যাসগত ।
   "ফারাক বিস্তর ,যৌনতার নতিতে "
কিংবা স্বপ্ন বিক্রি সস্তায় । ইচ্ছে পালক ।
স্বা ধী ন তা ।দত্তকি প্রেম কিনেছে
     ম হা দে শ ।।
     


তুলি রায়





ফার্টিলিটি 




পরাগরেনু মাখা প্রতিটা গমনশীলতা

ঘুমিয়ে থাকে নিষেকে

রাস্তা মাপে
জীবন-জরিপ

পাগলীটার যৌনতা নিয়ে কারোর মাথা ব্যাথা ছিল না

মাতৃত্ব এসেছে ওর

আসলে গমনশীল হতে সবাই পারে না !