নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

অমিত কুমার জানা লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
অমিত কুমার জানা লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

অমিত কুমার জানা

 সভ্যতার ভিত



আমরা যখন ইঁট হয়ে থাকি
হতবাক হয়ে চেয়ে দেখি
তোমাদের কি নিষ্ঠুর মানবিকতা!
হেয়জ্ঞান করে অবজ্ঞাভরে
লাথি মেরে সরিয়ে দাও সুদূরে,
তাই মোরা নিক্ষিপ্ত হেথাহোথা।

পুনরায় স্ব স্ব প্রয়োজনে,
উন্মত্ত হও আমাদেরই অন্বেষণে।
আমাদের অগণিত সহোদরে
একসাথে রাখো জড়ো করে।
গড়ে তোল অট্টালিকা গগনভেদী,
স্তরে স্তরে সজ্জিত মোরা বহুদূর অবধি।

যাদের দিয়ে গড়েছো সভ্যতার ভিত,
তাদের অবজ্ঞা করো না কদাচিৎ।
সভ্যতার ভিতে যদি ধরে ফাটল,
নিষ্ঠুর শাসকের গদি হবে টলমল।

শারদীয়া আসছে : অমিত কুমার জানা





সেই তটিনীর তীরে    মন গিয়েছে আবারও ফিরে,
            যেথা হাওয়ায় দোলায়িত সাদা কাশ।
  ভোরের শিউলির ঘ্রাণ    ভরায় মন প্রাণ,
             এসেছে শারদীয়ার বাতাস।

সকালে গাঁয়ের রাস্তায়    খুশির দ্যুতি ঘাসের আগায়,
             আগমনির বার্তা নিয়ে এলো।
মৃন্ময়ী মূর্তি গড়ার কাজে   পূজামণ্ডপ নবরূপে সাজে,
              ওহ্ কি যে তোড়জোড় শুরু হলো।

আমাদের শহর সাজে    প্যাণ্ডেল গড়ার কাজে,
              অলি-গলিতে পোশাকের বিজ্ঞাপন।
পূজোর অফারের সুরে    কান দুটো যায় ভরে,
               অন্তরে আনন্দমাখা শিহরণ।

শুরু হলো দিনগোনা   নানা পরিকল্পনায় আনমনা,
              সমারোহে ভরা পূজোর বাজার।
   ওই চারটে দিনের তরে   প্রস্তুতি ঘরে ঘরে,
               নিজেকে গুছিয়ে নেয় যে-যার।

কেবল জোকারের সার্কাস!: অমিত কুমার জানা


রঙ্গভূমিতে সার্কাসের প্রদর্শন হয়ে চলেছে বছরের পর বছর,
অলৌকিক কিছু উপভোগের আশায় গণতন্ত্রের দর্শকাসনে উপবিষ্ট জনতা আপামর।

নিয়মমাফিক ভাষ্যকার আসে,হয় খেলা শুরুর ঘোষণা,
উৎসুক দর্শকরা যেন খুঁজে পায় আনন্দলাভের প্রেরণা।

জোকার আসে একের পর এক,আর ডিগবাজি খায়,
উচ্ছল দর্শক হাততালি দেয়, এতেই কি মন ভরে যায়?

ওরা চায় আরও কিছু  আরও বিস্ময়কর,
অপূর্ব দৃশ্যে ওরা হতে চায় বিভোর।

ব্যবস্থাপক লোকদেখানো তোড়জোড় করে,করে জারিজুরি,
কিন্তু রঙ্গমঞ্চে প্রেরিত হয় নতুন জোকার আহামরি!

নতুন মুখ দেখেই শুরু হয় দর্শকের সমবেত হাততালি,
নব ভেলকি দর্শনের আশা বৃথা,সে গুড়ে বালি!

সার্কাস শেষ হয়, দর্শক আশাহত বুকে ঘরে ফেরে,
ওদের পকেট খালি হয়,মালিকের পকেট যায় ভরে।

নির্বোধ দর্শক তবু আশা ছাড়ে না,সামনের সারিতে বসার লড়াই করে,
মালিক মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে যায়: অবাক করা উপহার দেবই পরের বারে।

পুঞ্জীভূত বিক্ষোভ : অমিত কুমার জানা


খোলা আকাশের নীচে
রোদ বৃষ্টি ঝড়ের সাথে
সভ্য সমাজের আড়ালে
আমরা তাতেও ছিলাম মেতে।

সহনশীলতা হারিয়ে গেলেও
বাঁচার তাগিদে সহ্য করেছি কতো
কষ্টেরাও মাথা উঁচু করেছিল
ওদের সাথেও হয়েছি অভিযোজিত।

জীবন ছিল মুক্ত বিহঙ্গের ন্যায়
স্বাধীনতা ছিল অফুরান
সারা পৃথিবীটা ছিল ঘর
সেই খুশিতে ভরে ছিল মনপ্রাণ।

হঠাৎ ওরা এসেছিল সদলবলে
দেখিয়ছিল জীবন পাল্টানোর স্বপ্ন
বুঝিনি সে মিথ্যা আশ্বাস
ওরা নাকি দেবে অমূল্য মানিক রত্ন!

তারপর পোড়া ইঁটের মতো করে
ওরা মোদের সাজিয়েছিল উপর্যুপরি
ওদের আড়ম্বর জীবনের ভিত গড়েছিল
মোদের উপর অন্যায় বল প্রয়োগ করি।

ওরা কেড়েছিল মোদের স্বাধীনতা
ক্ষুন্ন করেছিল স্থান পরিবর্তনের ক্ষমতা
কেড়েছিল মোদের বাকশক্তি
বালি সিমেন্টের আবরণে।
কিন্তু ওরা কি জানে?
মোদের বিক্ষোভের লাভা পূঞ্জীভূত হচ্ছে
সচেতন দুটো ইঁটের মাঝখানে।

অব্যাহতি : অমিত কুমার জানা


নিশুতি রাত, হায়নার ভয়ংকর ডাকে ও চমকে উঠলো।
ও চিৎকার করে ডাকলো বাবা মাকে,
বললো-"তোমরা কোথায়? এখনই লাঠিসোটা নিয়ে এস,
হিংস্র হায়নাটাকে তাড়িয়ে দাও"।
বাবা মা ভাই বোন কেউ এল না।
-"তোমরা কি শুনতে পাচ্ছো না কেউ?"
ও ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো,তবুও---

এবার ওর প্রকৃত নিদ্রা ভঙ্গ হলো,
দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পেতে ও পরিবারের সবাইকে ছেড়ে এসেছে,
ও মস্ত অফিসার, এখন ভীষণ স্বাধীন।
সংসার সামলানোর বাধ্যবাধকতা থেকেও মুক্ত।
উপার্জিত অর্থ একাই ভোগ করে,বাকিটা সঞ্চিত  থাকে।

রাত্রি বাড়ে, ওর চারপাশ ছমছমে আঁধার ঘন হয়ে ওঠে,
সুযোগ সন্ধানী হায়নার দল ধেয়ে আসে ওর দিকে,
ও যেন শিশুর মতো নিতান্ত অসহায় হয়ে ওঠে,
পরিবারবর্গের সঙ্গ পেতে ও মরিয়া হয়ে ও সচিৎকারে বলে ওঠে-"বাঁচাও, বাঁচাও---"