নিলোফার,আমি “যদি ঝর্ণা ফোটাই তুমি দেখতে আসবে?”
না না ,হয়তো শক্তি বাবুর মত নয়,তবে আমার তো সাধ হয়।
কালের জমানো স্মৃতি,পাথরের মতো রয়েছে বুকে,দেখতে আসবে?
কাছ থেকে বোঝা যায় না, দূর থেকে খাঁজ হীন পাহাড় মনেহয়।
যদি একটা ঝর্ণা ফোটাই, আর কিছুটা নীচে, পেটের কাছে সরোবর,
তাতে শুধু নীল,ঘন নীল জল, রক্তাভ পদ্ম,
আর কিছু শালুক ফুটে উঠবে নাভির কাছাকাছি।
পাহাড়ের উপরের দিকে কার্তিকের বাতাস ছুঁয়ে যাবে জঙ্গলের চুল,
ছোটো ছোটো রংবেরঙের পাখিদের দল শীষ দেবে, ডাকবে, যেমন
হারিয়ে যাওয়া বন্ধুরা ডাকতো, ভালোবাসার নাম করে।
নিলোফার, “যদি ঝর্ণা ফোটাই তুমি কি দেখতে আসবে?”
একেকদিন, খুব ঘুম পায়, রাত যৌবন পেলে,
একেকদিন আবআর পায় না,
কিন্তু রোজ চোখ বুঝলেই আমার বিছানা জুড়ে জেগে ওঠে জঙ্গল,
আমার ভাবনার জঙ্গলের পাশে জেগে ওঠে পাহাড়।
তার নীচ থেকে কালো রাস্তা চলে যায় দিগন্তের দিকে,পথচারী হীন।
পাহাড়ের গা থেকে ঠিকরে পরে গোলাপী জোৎস্না,কার্তিকের হিম,
জঙ্গলের কোনো বুড়ো গাছের কোটর থেকে
হাহুতাশ করে লক্ষী পেঁচা,
মাঝে মাঝে মেঘের আড়ালে লুকিয়ে পরে কোজাগরী চাঁদ,
যদিও এমন পাহাড়ের গায়ে ঝর্ণা বড্ডো বেমানান,
বড্ডো একপেশে।
কিন্তু তবুও এখানেই “যদি ঝর্ণা ফোটাই,তুমি দেখতে আসবে”?
বহুদিন বন্ধুদের মুখ মনে পড়ে না,
নাম বলতেই মনে পড়ে শুধু কিছু কচি শিশুদের মুখ,
আমার বোজা চোখের পাহাড়ের নীচে ,কালো রাস্তা দিয়ে ,
মাঝে মাঝে ছুটে যায় মালবাহী ট্রাক, উন্নতির বোঝা নিয়ে,
আমার গল্প গুলো মাঝে মাঝে সেই ট্রাকের চাকায় থেতলে যায়,
রাস্তা পার হতে গিয়ে কিন্তু কেউ দেখার নেই,
আমি সেই গল্পের মৃতদেহ কোলে করে নিয়ে ফিরি বাস্তবে,
আমি যদি সেখানেই একটা ঝর্ণা ফোঁটাই, আর সেই গল্পের ,
সরোবর এঁকে দি, বুকের নীচেই,
তুমি কি দেখতে আসবে নিলোফার?,
প্রেমিকের মৃতদেহ, ঝর্ণা আর পাহাড় নীরবতা।