নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

📜 সম্পাদকীয় ✍️







"গ্রাম ছাড়া ওই রাঙা মাটির পথ ,আমার মন ভুলায় রে"
দূরে থাকা প্রিয় মানুষ জানি উৎসবেই আসবে ফিরে "।।

উৎসব মানেই ফিরে আসা ,ফিরে দেখা ,মিলন
ছুটির আমেজ,খুশির ছোঁয়া, ঠিক ভালো হয়ে যাবে মন।।

নদীর পাড়ে শুনতে পেলাম,ঢাকের আওয়াজ,ঈদে
মাটির গন্ধে ভিজছে আঁচল,হঠাৎ দেখা ছোট্টবেলার হারিয়ে যাওয়া বান্ধবীকে।।

শালুক ফুলের বউ মালা আর,পদ্মদীঘির পাড়
দেওয়াল দেওয়া মনের ভিতর, ফের পাতাবে সংসার।।

এমন সময় ফুরফুরে মন,ইচ্ছে আলিশ কিনছে বই
দূরের কোথাও বন্ধুকে বলা ,এবার পুজোয় ফিরবো'ই।।

তাই তো আবার নতুন করে ,নতুন ভাবে পথ চলা
মনের ভিতর জমছে কথা ,ফের হোক একটু বলা।।

দেখতে দেখতে কাটছে সময়,গুনছে দিন
ভিড় জমাটি মোড়ের মাথায়, পুজোর আমেজ খুব রঙ্গিন।।

সাজবে আলো,শহর জুড়ে ,মন পড়ে থাক উৎসবে।
দূরেও জানি ফুটবে খুশি,দিনান্তের দুবেলা ভাত,মফঃস্বলে।।


যেমন প্রিয় ফিরলো বাড়ি,বছর পাঁচেক পর,

উমা'ও এলো বাপের বাড়ি ,জানান দিচ্ছে গ্রাম-শহর।।


তাই
সবার কলম লিখছে কথা,জমছে বুকে নিন্মচাপ ,
আপনার “না বলা কথা’য়” ফের নিকোটিন প্রাণ পাক।

হারিয়ে যাওয়া মাস্তুলে ,পুড়ছে সবাই,চিবুকের কাছে একা,
তোমার আমার কথা’র মাঝেই ,মন-জমি কে “উৎসবে’তেই দেখা।।


ভালো থাকুন,সুস্থ থাকুন,হাসি থাকুক প্রিয় মানুষটির মুখে,
শুভেচ্ছাটা সঙ্গে নেবেন,সঙ্গে রেখো এই আগন্তুক কে।।






                                                  ধন্যবাদন্তে,
                     
                                নিকোটিন ও নিকোটিন পরিবার



📜 সুচিপত্র


সুমিত মোদক 
 অরূপ সরকার
   জিয়া 
রুনা দত্ত
শুভঙ্কর গড়াই
 জ‍্যোতির্ময় মুখার্জি
 রাণা চ্যাটার্জী
মৌসুমী রায়
উত্তম মণ্ডল
শতাব্দী মজুমদার
অমিত কুমার জানা
 মাধব মণ্ডল
 সীমন্তিনী
স্বাগতপর্ণ গোস্বামী
সুদীপ ভট্টাচার্য্য
সায়নদীপা পলমল
যীশু চক্রবর্তী
 সুমিত মোদক
 অমিত কুমার জানা
প্রতিভা দে
 আশীষ মাহাত
শিবানী বাগচী
রবি মল্লিক
আমিনুল ইসলাম
শাহীন রায়হানের গুচ্ছ কবিতা
অনিন্দ্য পাল এর গুচ্ছ কবিতা
 সুজাতা মিশ্র(সুজান মিঠি)
সবুজ জানা ,
অনাদি রায় এর গুচ্ছ কবিতা
অভিজিৎ আচার্য্য
জয়দীপ রায় এর গুচ্ছ কবিতা
তমালী বন্দ্যোপাধ্যায়
আকাশদীপ গড়গড়ী
জিয়াউল হক
কাজী জুবেরী মোস্তাক
 তন্মনা চ্যাটার্জী
জসিমদ্দিন সেখ
মৌসুমী রায়
শুভম চক্রবর্ত্তী
মান্নুজা খাতুন





।।শুদ্ধিকরণ ।।সুমিত মোদক






জেগে উঠে প্রথম সকাল
তানসেনের সুরে .....
সম্রাট অশোকের রাজপ্রাসাদ
দূরে , বহু দূরে ....


তোমার মধ্যে সেই শিশুটি
জাগতে দেখি আবার ....
বিক্রমাদিত্যের সিংহাসনে বসত যে
বারবার , এবার ....


জল চেয়েছি , প্রাণ চেয়েছি ,
বাতাস চেয়েছি শুদ্ধ .....
তোমার সঙ্গে শুদ্ধি করণে
আমরা ঐক্যবদ্ধ ....


মেলে দেবো সবুজ পাতা 
বৃক্ষরাজি , নম্রতায়  ..
চাণক্যর অর্থশাস্ত্রে ইলশে গুঁড়ি
বৃষ্টি আজি , সভ্যতায় .. . 

।।যাপন ।। অরূপ সরকার




    রাত শেষ হচ্ছে বিলম্বিত লয়ে,
বালিঘড়ি ও ক্লান্ত হয়ে শেষ নিশ্বাসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ,
দূরে কোথাও হচ্ছে দেবীর থানে ওঠার আবাহন 
সময় চক্রে খন্ডিত হওয়া ব্রহ্ম নাভি  জানাচ্ছে দেবীর আগমন।
মুছে গেছে সব হিংস্রতা, আজানের সুরে জেগেছে মানুষ,
হ্যাঁ হ্যাঁ মানুষ,সকলেরই তো মা এসেছেন,
সকলের সুরই মিলে গেছে চন্ডী পাঠে,
ধুনোর গন্ধ গায়ে মেখে নিয়ে নাচছে ওই কুতুবউদ্দিন,
ঈদের তো বাকি আর মাত্র কয়েক দিন।
সমস্ত বেড়া দ্রাঘিমা ও অক্ষ পুড়ে গেছে  মণিকর্ণিকার  ঘাটে,
কোনো ফারাক আর নেই গীতা আর কোরানে,
না প্রয়োজন নেই কোনো পান্ডা বা ঈমামের

জিভ নিজেই স্বয়ংক্রিয়,উচ্চারণ  করতে জানে ।
গীতা ও কোরান দুই আত্মীয় পাশাপাশি শুয়ে থাকে ।

।।একটা নদীর গল্প।। জিয়া




দরজার কোনে উঁকি দিয়ে দেখতাম সিনেমা
মায়ের কালসিটে বেয়ে গড়াতো রক্ত,
ছুটে পালাতাম ছাদের কোনে চুপিসারে
সব চাপা দিয়ে হতে হবে বাবার ভক্ত।

দিন পনেরো কাটতো পেতাম না কোল
মায়ের স্তন অনাহারে গেছিলো শুকিয়ে,
দুধ না পাওয়ায় শুরু হতো অত্যাচার
কাঁদতাম আড়ালে., মায়ের চোখ দিতাম মুছিয়ে।

চাকরির পরীক্ষা আসে যায় পোড়ে বইপত্র
বাবাও কিন্তু চাইতোনা মায়ের হোক আয়,
পাছে স্বনির্ভরতায় সে বিচ্ছেদ চেয়ে বসে
মানসিক যন্ত্রণা দিতো,সাফল্য পাওয়া দায়।

দাদা একটু বড় হলো বুঝতে শিখলো সব
ঘরবন্দি মাকে মারতে দেখে সপাটে দিলো থাপ্পড়,
প্রতিবেশীদের হাসাহাসি সম্মান হলো নষ্ট
দাদার পায়ে পড়লো কোপ ঠান্ডা হলো চড়।

মা ভীষণ অভিমানী দেওয়ালে ঠেকলো পিঠ
আমার বয়স তিন কি চার কিছুই বুঝিনি,
সিলিংয়ে ঝুলছিলো মা চারিদিকে হাহাকার
বোবার মতো দেখছিলাম চোখ মুছিনি।

দাদা বড্ডো শান্ত হলো বাবার মুখে হাসি
আমার মা আমাকে আর সোনা বলে ডাকেনি,
নিজে নিজেই ঘুমিয়ে পড়ি ঘরের এককোনে
দাদার মুখে সিগারেট আর ঘরে ফেরেনি।

নতুন মা আগলায়নি বাসেনি একটুও ভালো
বাবাও আর বরাবর চায়নি কাছে আসেনি,
অন্য দাদা আপন হলো মেয়ে ঘাড়ের বোঝা
সব হারিয়ে নিঃস্ব, ওরা কেউ কথা রাখেনি।

অন্য দাদা যখন পড়লো ঝাঁপিয়ে.,বয়স নয়
শরীরে কত রক্ত ছিল ব্যাথা পেয়েছিলাম খুব,
দিনে দিনে বাড়লো ব্যাথা কেউ জানতে আসেনি মায়ের কাছে এলাম, দিয়ে নদীর স্রোতে ডুব।।

বিয়োগচিহ্ন: রুনা দত্ত



মনে হয় হারিয়ে যাচ্ছি
বা ফুরিয়ে যাচ্ছি
তাও শব্দরা হারায় না

শব্দের পর শব্দ সাজিয়ে
লিখে যাই ....

জীবনের কথা আমার কথা
বা তোমার আমার কথা।

এইভাবেই ফিরে যেতে যেতে
বারবার ফিরে আসি
চেতনে বা অবচেতনে
আমার নৈসর্গিক পৃথিবীতে ....

যেখানে আমার জন্য
আজও অপেক্ষায়
অজস্র সাদা কালো শব্দ

তাই আবার কলম তুলেনি
মৃত্যুকে ফাঁকি দিয়ে
সৃষ্টি করে চলি ...
জীবনের শব্দরূপ বা রূপকল্প

যা কবিতা হয়ে ফুটে ওঠে
বাস্তবের পটভূমিতে
শেষ বিয়োগচিহ্নের মতো


|| এক বৃষ্টি রাতের ভোর || শুভঙ্কর গড়াই



- আচ্ছা , তোমার বৃষ্টি ভালো লাগে ?
- হুম , ভালো লাগে । রাতের বৃষ্টিটা বেশি পছন্দের,
আর তোমার ?
- আমার ! ,  আমার কাছে বৃষ্টি অনেকটা নেশার মতো,
বৃষ্টির ছন্দে নিজেকে মাতাল বলে মনেহয় ।
- দেখেছো বৃষ্টির দাপট যেনো আরো বাড়ছে ।
- হুম , মনেহয় বৃষ্টি আমাদের কথাগুলো লুকিয়ে লুকিয়ে শুনছে ।
[ হঠাৎই প্রচন্ড মেঘ ডাকার শব্দ ]
- এভাবে কষে চেপে ধরলে যে , একি আমার প্রতি ভালোবাসা নাকি মেঘের গর্জনে ভয় ?
- হুম , আমার ভীষণ ভয় করে ।
- একি , এই যে বললে বৃষ্টি ভালোবাসা , তাহলে মেঘের শব্দে এত ভয় ?
- ও তুমি বুঝবে  না , সব ভালোবাসায় একটা ভয় ও থাকে ।
- আচ্ছা , তাই নাকি ? তা  এইযে তুমি আমাকে এতো ভালোবাসো , তাহলে এই ভালবাসাতেও বুঝি ভয় আছে তোমার ।
- হ্যাঁ, আছে তো , খুব ভয় পাই ।
- সে কি , আমি কি তোমাকে ভয় দেখায় নাকি ?
- ধুর বোকা !  এ ভয় সে ভয় নয় ।
- তবে ?
- তবে , তবে এই পাগলটাকে সারাজীবন আগলে রাখতে পারার  ভয় ।
- মানে ?
- মানে , তুমি যখন বর্ডারে যাও তখন ভীষণ ভয় করে জানো !
- ধুর পাগলি , এতো কিসের ভয় । তোমার ভালোবাসা কি আর আমাকে মরতে দেবে ।
- এই একদম উল্টো পাল্টা কথা মুখে আনবেনা ।  একটা রাত তোমাকে কাছে পেয়েছি , কাল থেকে আবার দিন গোনা শুরু হবে ।
- তোমার এই খোলা চুলের গন্ধটা আমাকে পাগল করে জানো । সত্যিই আমি বড়ো অভাগা জানো , দিনের শেষে তোমাকে ছুয়ে দেখার জন্য অন্তরাত্মা টা ছট্ফট্ করে ।
- শুধুকি তোমার , আর আমার করেনা বুঝি ।
- এই তুমি কাঁদছো কেন ?
- ও কিছুনা , চোখে একটু জল এসেছে এই যা ।
- এই দেখো বোধ হয় কারেন্ট অফ হয়ে গেল । ড্রয়ারে একটা মোমবাতি আছে , দাঁড়াও ওটা জ্বেলে আসি ।
- দাঁড়াও , অন্ধকারে নেমো না , আমি ফোনের ফ্ল্যাশ জ্বলছি ।
- কি দেখছো অমন করে , আরে ফ্ল্যাশটা অফ করো আমার তো মোমবাতি জ্বালা হয়ে গেছে ।
- ফুলের বাগান দেখছি প্রিয় । বহু দিনের কাঙ্খিত আমার একান্ত ফুলের বাগান ।
- উফফ , কি যে বলোনা তুমি ।
[ ফ্ল্যাশটা অফ করতেই সমস্ত ঘরটা মোমবাতির অগ্নিশিখার সোনালী আলোয় মেতে উঠলো ]
- দেখেছো বৃষ্টিটা কেমন নিজের তেজ সমান তালে ধরে রেখেছে ।
- হুম , হয়তো আমাদের এই মুহূর্তটাকে আরো ভালোবাসায় ভরিয়ে তোলার জন্য। হয়তো বৃষ্টি ও রাতের আকাশের সাথে প্রেমে মেতেছে ।
[ এর পর এক স্তব্ধতা , এই স্তব্ধতা যেনো দুটো শরীরের হাজার হাজার কথোপকথনের  একান্ত গোপণ পথ ।এই স্তব্ধতায় দুটি শরীরের আত্মা , দুটি শরীরের হৃদয় যেনো মিলেমিশে একাকার হয়ে উঠেছে , দুটি ঠোঁটের এই অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ দৃশ্য দেখে যেনো মোমবাতির অগ্নি শিখাও লজ্জায় কেঁপে উঠছে । মোমবাতির আলোয় ঘরে এক অদ্ভুত মায়া সৃষ্টি হয়েছে , সেই মায়ার বাঁধনে দুটো শরীর অদ্ভুতভাবে মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। দুটি শরীরের এতদিনের সমস্ত আকাঙ্ক্ষা সমস্ত ভালোবাসার ক্ষুধা যেনো পাকে পাকে গর্জে উঠছে । এই গর্জন বৃষ্টি ভেজা রাতের গর্জনের শব্দকে হার মানিয়ে আবার ঠোঁটের মিলনে স্তব্ধ হয়ে যাচ্ছে । ঘরের দেওয়ালে মোমবাতির আলোয় যেন দুই নগ্ন দেহের ভালোবাসা মাখা আলপনা সৃষ্টি হয়েছে । ]

- তোমাকে এভাবেই আমার অন্তিম নিশ্বাস পর্যন্ত কাছে পেতে চাই । বলো , এভাবেই থাকবে তো আমার পাশে । থাকবে তো আমার হয়ে !

- হুম কথা দিচ্ছি অন্তিম নিশ্বাস পর্যন্ত তোমার পাশে থাকব ।

[ অনেকটা রাত পেরিয়ে এসেছে , বৃষ্টির প্রতি ফোঁটা হীরক টুকরোগুলো ধীরে ধীরে আকৃতিতে ছোটো  হয়ে তেজ কমাচ্ছে । মেঘের দূর প্রান্ত থেকে মৃদু মৃদু আওয়াজ ভেসে আসছে ! ভোর হতে আর বেশি দেরি নেই । কিছুক্ষণ পরেই  বৃষ্টি ভেজা পাখিগুলো ভোরার আলোয় কিচির মিচির শুরু করে দেবে । মেঘের বুক চিরে দূর প্রান্তে মৃত নদীর মতো ভোরের আলো উকি দিচ্ছে ।]

- এই তোমার পিঠের তলায় বোধহয় আমার ব্লাউজ টা আছে , একটু  পিঠটা তলোতো ।
- হুম , এই নাও ।
- এই শুনছো ঘড়িতে পৌনে পাঁচটা বাজে । আমি তোমার ব্যাগ রাতে গুছিয়ে রেখেছি , তোমার তো সাড়ে ছটায় ট্রেন আছে , তুমিও উঠে পড়ো এবার , আমি তোমার জন্য চা করে আনছি । ।