নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

আমরা কি চা খাব না : শিশিরবিন্দু দত্ত



"আমরা কি চা খাবো না, খাবো না আমরা চা"----একই প্রশ্ন বা,  কথাকে দু'ভাবে বলার রীতিই তো অলংকার। আই মিন, সাহিত্যে যে #অলংকার পরানো যায় তা কোনো পার্থিব জুয়েলারি দোকানে পাওয়া যায়নি,যায় না কখনও। সে যাই হোক,  #মৃদুল_দেও কিন্তু আপাতদৃষ্টিতে  এক উল্লেখযোগ্য ফিগার অফ স্পিচ। সদর্থকভাবেই তিনি জনপ্রিয় হয়ে উঠলেন এই কথাটা মুখ ফসকে বলার কারণে।
          বাঙালির চা খাওয়াটা একটা দৈনন্দিন #স্টার্ট অফ আ ডে। দিন শুরুই হয় না চা না খেলে।

           বিশ্বে সর্বপ্রথম চা পানের প্রচলন করেন চীনের সম্রাট  #শেন_নাং প্রায় দুশো খ্রীস্টপূর্বাব্দে ।  কথিত আছে যে , একদিন তিনি বাগানে বসে গরম জল খাচ্ছিলেন। তখন একটি বুনো গাছ থেকে কিছু পাতা এসে  পড়ে ঐ জলের ওপর এবং সঙ্গে সঙ্গে জলের রঙ লালচে হয়ে যায়। তারপর তিনি সেই জল পান করেন। এভাবেই নাকি পানীয় জগতের মঞ্চে  উদ্যমী আবির্ভাব  ঘটে চায়ের।

            তবে এটাও শুনেছি, এই বাঙালির চা খাওয়া শেখাটা ব্রিটিশদের কাছ থেকে ।  'বোস্টন টি পার্টি' বলে একটা  কথা পড়েছিলাম  হিস্ট্রি বইতে। তবে এটা ঠিক যে,  দার্জিলিংয়ের চা তার আগেই উৎপন্ন হতো কিন্তু সেই চায়ের স্বর্গীয় স্বাদ বাঙালিরা  এখনো সেই ভাবে পাওয়া হয়নি । কারণ,  দার্জিলিংয়ে  উৎপাদিত চা মোস্টলি বাইরের দেশে চলে যায়। #ছিটেফোঁটা যা পড়ে থাকে তা-ই   চোখ বুজে পান করে বাংলার  'সহনশীল' বাঙালিরা  দুধের স্বাদ ঘোলে মেটায়।

       চা খায় না এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া অসম্ভব।  বাঙালির কাছে এমন একটি অমূল্য রসিক পানীয় যা শীত -গ্রীষ্ম -বর্ষা- সকাল-  বিকেল -সন্ধ্যা , এমনকি  দুপুরে বা,  #মাঝরাতেও কেউ কেউ চা খেতে পছন্দ করেন । তবে বেশিরভাগ লোকের কাছেই প্রভাতী চা সারাদিনের উদ্যম কর্মক্ষমতা ও #অনুপ্রেরণা বটে। সকালের চা না হলে আবার চা যদি মনপসন্দ না হয়,  তাহলে মনে হয় সারাটা দিন ম্যাড়ম্যাড়ে হয়ে যায়।

           আমাদের চা খাওয়াটা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাইরে ঘটে।  সে সকাল হোক বা সন্ধ্যায়।  বাজারের চায়ের দোকান  দিয়েই আমাদের প্রাত্যহিকী শুরু করতে হয়  । #সৌমেন,  বিক্রম, বিপ্লব বা সুরজিৎ -শুকদেব ---চা পানের বিভিন্ন চরিত্র, নানারকম সঙ্গত। কখনো কখনো #আশিসদা,শ্যামলদা অথবা কমলদা চায়ের আড্ডা দিতে চলে আসে আমাদের ধূমকেতু কক্ষে। চা পানে পাই যেমন নানা রকম মানুষ রেগুলারলি, #চা-চরিত্র ও বিবিধ। আগে  লিকার চা,   যাকে বলে  র - চা এবং দুধ চা ছিল। এখন গ্রিন টি , লেমন টি , ব্ল্যাক টি,  ইনস্ট্যান্ট টি,  স্পাইস টি------ওহ্ যেন একান্নবর্তী  ফ্যামিলি অফ টি ।

              সে যাই হোক না কেন,   প্রত্যেকের চা পানের একটা নির্দিষ্ট জায়গা আছে  ।  প্রতিদিন একটি চা দোকানে একই মুখের সমারোহ। কেউ  #সিগারেট জ্বালিয়ে চা পান করেন। কেউ জোরে শব্দ করে চা পান করেন। কেউ  বাবু স্টাইল তো কেউ  #হাবু স্টাইল। কেউ পর পর দু'কাপ। মজার ব্যাপার হলো, চায়ের দোকানদার সব খদ্দেরদের  চা-চরিত্র  এক নিমেষে বলে দিতে পারেন ----- কে চায়ে  বেশি চিনি খান, কার কম চিনির চা চাই,  কার ডায়াবেটিস আছে  বা, কার হার্টের প্রবলেম । একবার এক #অভিভাবক আমাকে তাঁর বাড়িতে #চাপ্যায়ন করেছিলেন। এমন মিষ্টি দিয়ে চা বানিয়ে আমাকে পরিবেশন করেছিলেন যে সেখানেই আমি #দু'লাইন লিখে ফেললাম : এ তো চা নয়,  খাচ্ছি যেন দধি,  আমি চায়ে মিষ্টি বিরোধী।

             চায়ের স্বভাব চরিত্র যাই হোক না কেন, স্বাস্থ্যের দিক থেকে চা যথেষ্ট #উপকারী । নিয়মিত চা পান করলে শরীরে চনমনে ভাব আসে। শরীর-মনজুড়ে  ক্লান্তি দূর করে চায়ে বিদ্যমান ক্যাফেইন। এ ছাড়া, চায়ে অনেক বেশি #অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় ।  তবে বিভিন্ন চায়ের রয়েছে বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা।
কবীর সুমনের একটি  বিখ্যাত গান আছে : এক কাপ চায়ে আমি #তোমাকে চাই । চায়ের সাথে টা- র  একটা চিরন্তন প্রেম  রয়েছে।  কিন্তু  এই চায়ের সাথে বিশেষ 'তোমাকে ' চাওয়ার কী কোনো উচ্ছ্বাস আছে ---তা আমার এক উল্লেখযোগ্য প্রশ্ন।

       #পরিশেষে বলি, বাঙালি  যত  আধুনিক ফ্যাশনে নিজের অস্তিত্বকে বিসর্জন দিক  বা সো কলড্ আপডেট করুক, চা-প্রীতি বাঙালীর কাছে চিরন্তন সত্য হয়ে থাকুক----- যা দেখে অন্তত এই বিশ্বখ্যাত জাতিটাকে এক ঝলকে চিনতে পারে আসমুদ্রহিমাচল।


উলোট পুরাণ: রিম্পা লাহা সুরাই



ঠিক এভাবেই সেদিন পিষেছিল চাকা ,
মরেছিল কিছু অমানুষ ;
রক্ত তাদের উল্লাসে ফেটে আজ ,
 নীরবতা চিরে ফিরুক সবার হুঁশ ।

তেত্রিশ কোটি শুধু নীরব দর্শক ,
সওয়ার বিকল রথে ,
বোধনের আগেই গিয়েছে ভাসান,
ওদের কান্না ভেজা পথে ।

দেবতাও আজ ফিরিয়েছে মুখ ,
বেজে গেছে পাঞ্চজন্য ;
অর্জুন আজ হারিয়েছে দিশা ,
পথ দেখাও হে কৃষ্ণ ।

ভাসছে পুঁথি , বাইবেল , কোরাণ
আবছা গীতার শ্লোক ,
ধর্ম জেহাদ সবটা ভুলে ,
অন্তরাত্মা জাগ্রত হোক ।

সমাজ ও উৎসব : সুনন্দ মন্ডল



সভ্যতার রোজনামচা
      লকডাউনে সমস্যা
      ‎        কাঠগড়ায় উৎসব

মানুষের মৃত্যু মিছিলে করোনা'র তীব্র হাসি।

সমাজের বাম পাঁজরে আঘাত!

পোড় খাওয়া পাখিটাও বলেছিল কোনোদিন,
সময় নগ্ন হবে একদিন,
উল্টে যাবে প্রকৃতি!

দেখো, কোথাও রুষ্ট আবহাওয়ায় ঝড়ের তান্ডব!

সমাজের ডান পাঁজরে হঠাৎ মোচড়।
                -------$-----

শর্ত : কিশলয়



প্রথম লড়াই বুকের দিকে আসে
তারপরেই পড়শী- বান্ধবী
ঝড়ের মতো জান্তব উল্লাসে
ফুঁসে ওঠে যমুনা, জাহ্নবী

মনকে বোঝাই পথের কথা গুলো
সময় কিছু কঠিন পরীক্ষা নিক
ঠিক হয়ে যাক একটা দুটো ভুলও
ঝড়কেও তুই মান্য করিস খানিক

বুকের ভিতর লড়াই পড়ুক জ্বরে
ছাই হয়ে যাক অকাল দাবানলে
যেমন হাড়ে নতুন নাটক করে
পুরুষ মানুষ প্রথম বাবা হলে

সকল লড়াই আচমকা যায় থেমে
জ্যান্ত হলে বুকের তাজা খুন
পায়ের কাছে শত্রু আসে নেমে
শান্তি টানে জ্বলন্ত আগুন

তবু জয় চাই, জয় : সকুমার দাস




তবু জয় চাই,  জয়
-- অনীশ্বর

অপেক্ষারত
মৃত্যুমিছিল! ভয়!
তন্দ্রাহত অন্ধকার, অন্ধকার করে তুলছে
সমস্ত দিব্যদৃষ্টি!

অনাহুত অতিথি, অবিরাম
আগল ভাঙছে, ভেতরে ঢুকবে বলে
দরজা সামলে সমস্ত শক্তি নিংড়ে
শিরা- উপশিরা টানটান করে
দাঁড়িয়ে আছি। ধ্বসে পড়ার ভয়
শক্তিহীন করে তুলছে ক্রমশঃ

রাগ ক্ষোভ দুঃখ ভয়, সব মিলমিশে
একাকার। কোনটা তুলে রাখি
ভবিষ্যতের জন্য...
জয়  জয়  জয়, জয়শক্তি অর্জন
 করতে করতে
অকস্মাৎ শক্তিহীন শক্তিশালী বিশ্ব,
প্রলাপধ্বস্ত, বিদ্ধ
কত ঠুনকো আমাদের শক্তি, অহঙ্কার
মেদবহুল আস্ফালন, --- সব অপলাপ
ভীতি-বাণীজ্যের অমোঘ দেউল
অসারত্ব বিলিয়ে যায়
মেরে বাঁচার আদিম কৌশল!

কে যেন
পাপ ধ্বংসের প্রতিশ্রুতি প্রতিষ্ঠা করে
অস্ফুট সংলাপে!
অনবদ্য করতালি
বিশ্বাস বিলুপ্ত করে
প্রশ্নহীন দীর্ঘশ্বাসে!

তবু জয় চাই, জয়
মানুষের জয়
জীবনের জয়
স্বপ্নের জয়, আর
দয়া দাক্ষিণ্য নয়---
বেঁচে থাকবার জন্য
জীবিকার জয়।


প্রেমিকা : শ্যামল কুমার রায়



   বছর পঁচিশ আগের তারুণ্যে ফিরে গেলেন ডঃ প্রিয়তোষ সান্যাল। একি কাকে দেখলেন আজ? সেই চেনা মুখ, চেনা হাসি। নিশ্চিন্তপুরের বিনোদ বিহারী উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ার সময় ঘাড় ঘুরিয়ে তিনি যাকে দেখতেন সে নয় তো? পিছনের বেঞ্চে বসা ক্লাসের সবচেয়ে উজ্জ্বল চেহারার মেয়েটাকে তিনি বারবার ঘুরে ঘুরে দেখতেন, তাঁর প্রথম ক্রাশ।
        খাতার মলাটে যার নাম তিনি লুকিয়ে লুকিয়ে লিখে রাখতেন; যার হাসি তাঁর চোখে মনে লেগে থাকতো। এতো সেই ঊর্মি। হাঁ নিশ্চিত ঊর্মি। সেই সময়ও মুখ ফুটে বলতে পারলেন না, আজও চুপ থেকে গেলেন ব্লুমহার্ট স্কুলের আজকের রাশভারী প্রিন্সিপাল ডঃ সান্যাল। ঊর্মি এসেছে সিঙ্গেল পেরেন্ট হিসেবে মেয়ের ভর্তির জন্য ইন্টারভিউ দিতে।
                 চোখাচোখা প্রশ্ন দক্ষ হাতে সামাল দিয়ে চলেছেন মিসেস ঊর্মি ব্যানার্জী। মুখ ফস্কে ডেকে ফেললেন ' পুলু' বলে। পুলু হলো প্রিয়তোষের ডাক নাম, বন্ধুদের দেওয়া। ব্যাস, চোখাচোখি, মুচকি হাসি অষ্টাদশী প্রেমিকা ঊর্মি ফিরে এলো পুলুর কাছে।
               -----------------------------------