নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

নিরন্তর অপেক্ষা : শোভন মন্ডল


আমরা কি এইভাবে হারিয়ে যাবো?

কোমরের নীচ থেকে যে তীব্র আকুতি কুড়ে খাচ্ছে
তার কোন বিহিত হলো না

জানা নেই নিরন্তরকাল আসলে কী
খুঁড়ে রাখা গর্তের ভিতর থেকে কিলবিল করছে কীট
অজস্র,  অনন্ত লেজযুক্ত কীট

সময় নেই ,  সময় নেই আর
ঝিমিয়ে পড়ছে প্রাণ,  ভেসে যাচ্ছে নিথর খোলস

এইসব দেখতে দেখতে অপেক্ষায় থাকা শত শত ডিম্বাণুরাশি
প্রতিনিয়ত  রক্তাক্ত করছে
নিজেকে



পরিযায়ী : আর্য দাস



গভীর অসুখ, ভীষণ সংকট দেশে
তারা যায় ভিনদেশে
সন্ধানে দুমুঠো অন্ন, পরিযায়ী বেশে।

ওরা হাঁটছে রোদের সাথে
আকাশ যখন জ্বলতে থাকা দীপ
সলতে পাকায় পেটের ক্ষিদের ব্যামো
ছাড়তে হবেই পরিযায়ীদের দ্বীপ।

অববাহিকার রেলের লাইন জুড়ে
ঘুমোয় যত রুটি আধপোড়া
পোড়াকপাল শ্রমিক যত্তসব
ঘুমিয়ে মরে হেঁটে আগাগোড়া।

গোরার বিবেক তবুও কি কাটা পড়ে,
কালামানুষের দেখে ছিন্ন লাশ ?
উপত্যকার রাস্তায় চাপা পড়ে
মোমবাতি হাতে মিছিলের অবকাশ।

পৃথিবীর যত যুদ্ধ আর মহামারী
জীবন মেলায় ওদের আরবার,
প্রাপ্য রুজির সন্ধানে ওরা পাবে
শুধু সমান্তরাল মৃত্যু উপহার।

অসম লড়াই চলছে যুগে যুগে
শ্রেণীসংগ্রাম সংখ্যায় বারেবারে
বন্দী বিপ্লব প্রমাণ দিয়ে গেল;
সর্বহারারা আজও কতভাবে হারে।


             

পুনরায়: রিঙ্কু মন্ডল


বর্ণভেদের ছোঁয়াছুয়ি করার
অভ্যাসটাই বদলালো না;
উপরন্তু দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশ।

মানুষের সাথে মানুষের সাক্ষাৎ নেই
হেরে যেতে বসেছে সমাজ;
জীবন কাটছে ইতর প্রাণীগুলোর মতই।

আমাদের ব্যবহার-
ভালো অথবা খারাপ
মৃত্যুর পরে সংস্কাররূপে আত্মাতে থেকে যায়।

কতদিন হয়ে গেল
গৃহবদ্ধই হয়ে আছে মানুষ,
দিন কাটায় একাকিত্বে।

বিষাক্ত ভাইরাস ধ্বংস হওয়ার পর
যদি একাকিত্বের সংস্কার থেকে যায়,
তাহলে আর একবার হবে
আমাদের পরাজয়;
যা মহামারির পর দ্বিতীয় এক মহামারি।

শব্দ : অর্ঘ্যকমল পাত্র



ডান পায়ের শব্দে এগিয়ে আসে
আমাদের বাঁ পা।
বাঁ পায়ের শব্দে একঝাঁক শুকনো পাতা
শব্দ করে জানান দেয়—অস্তিত্ব
শুকনো পাতার আওয়াজে
সবার উদ্ধতভাব নিবিয়ে দিতে
ভিজে যায় মাটি।
জলের শব্দে সে মাটিতে গড়িয়ে পড়ে
একটা বীজ এবং জন্ম নেয়
একটা গাছ

যে গাছের নীচে বসে
এই তো সেদিন আমরা
কোনো শব্দই শুনতে পাইনি!


রিয়াজুল হক সাগর একগুচ্ছ কবিতা



১.
এই সময়ে

এ খন রাত এসেছে অন্ধকার
সত্যের বিজয় নিশান উড়ছে,
এই বাংলায়, সাহস রেখ আগামির
পথে পথে, এই হোক অঙ্গিকার।
সমাজের চিত্র বদলে গেলেও
বদলায়নি মানুষের চরিত্র,
আবার একটি পলকে বদলাতে
পারে মানুষ নামের অমানুষ ।
এই মানুষ যেতে হবে বহু দুরে
অচিনপুরের একটি গ্রামে,
সেখানে হবে বিচার তোমার
থাকবে শুধুই তুমি নামের একমাত্র আমি।

২.
যা….রে করোনা --

দুরে চলে যা হে করোনা
কোথা হতে আসলি রে তুই,
তোর কাছে সবাই মাথা নত
অতি শক্তিশালী তোর প্রলয়।
তুই কি তাকিয়ে দেখেছিস,
কত লাশের মিছিলের ধিক্কার
তোকে শুনতে হয়েছে
কোটি কোটি প্রাণের চিৎকার।
এই করোনা কি করিলি?
দুনিয়া জুড়ে দেখছে তোকে
তাকিয়ে তাকিয়ে, তোর ভয়ে।
লকডাউনের যাতা কলে এখন
পৃথিবী মানব শুন্য দেখা মেলে না
অতি আপনজনের, এই করোনায়
হে করোনা তুমি চলে যাও দেশ হতে।

৩.
নালিশ

করিতে নালিশ
করবে আমায় পালিশ,
মামলা দিয়ে
করতে চায় হালিস।
চোরদের দাপট
চোখে পরার মত,
আনাচে কানাচে দেখা যায়
বৃক্ষ রাজির মত।
সত্যের বিজয় জেনেও
আজ নিচ্ছুপ,
বিবেক নামের
সেই স্বত্বা আমার হারিয়ে গেছে।

৪.
নাইরে দিন

দিন গেল তোর আগে ভাগে
একলা দিনের মত,
আজে বাজে স্বপ্ন দেখে
 হাজার কথা শত ।
মিষ্টি মেয়ের দৃষ্টি পড়ে
ঝাকড়া চুলের দিকে,
রাখাল ছেলের বাশিঁর সুরে
মাঠ গেছে হায় পিকে।
এই দিনের কাছে
সেই দিনের হার,
নদীর বুকে ঢেউয়ের খলাৎ খলাৎ
ডাকু শুনে আমিও দিলাম পার।


৫.
ভাতের লাগিয়া…

দু..দিন গেল পেটে ভাত পরে নি
কেটে গেল বেলা,
অবুঝ শিশুর চোখের পানি
স্বপ্ন করে খেলা।
বাবা যে তার কাজে গেছে
আনবে কিনে খাবার,
পাইনি কাজ বাবা তাহার
দিন শেষে পেলনা আহার।
এই করোনার ভয়ে ভয়ে আজ
দিশেহারা গরীব মানুষ,
লুট করে খেল সব
ফিরলো না তাদের হুস।

কোভিড-19 : রাহুল শীল


বুকের ভেতর ভীষণ ভয়ের বাস
নিরাপদ শুধুই কোয়ারেন্টিন,
মায়ের মুখেও একটা শুধু শব্দ
বিপদের নাম কোভিড-19।

আকাশ ফাটে।খাঁচার ভিতর মানুষ
করোনা নামে চিনা ভাইরাস,
পাশের বাড়ির কাকার হাই প্রেশার
ইতালিতে থাকে ছেলে পলাশ।

খবর কাগজ, মৃত্যু মিছিল গুনে
কানের কাছে করে ফিসফিস,
নিউজ চ্যানেল বার্তা পাঠায় শুধু
করোনা আক্রান্তের মিলল হদিশ।

ভিড় এড়াতে সতর্কতার বাণী,
এক মিটার দূরে পথ চলুন।
নিজামুদ্দিন বাড়ালো আক্রান্ত সংখ্যা
কার কথা কে শোনে বলুন।

যে জনগণ মৃত্যু দেখে শেখেনা
তাদের জন্য কিছু করার নেই,
ঘরে বসেই মৃত্যু মিছিল দেখুন
করোনা হতে বাঁচবেন এভাবেই।।