নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

শেষে কী পেয়েছো,,,,, সুরভী ইসলাম





না জানি কবে থেকে আমি,
একটি আস্ত মেঘের মুখ দেখিনি
ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি ,আমার বুকের
উপর কত দিন নামেনি।

সেই কবে যেন শিকড়গুলো
উপড়ে ফেলে ছিলো যে,
নতুন করে গাছ লাগাতে
আর ফেরেনি তো সে।

গরম লুএর ছোঁয়ায় আমার বুক ক্রমশ ফাটছে!
হাহাকার করছে যারা ঐ খালি পায়ে হাঁটছে ।
কেউ কি আটকাইনি তাদের,
নাকি ওরা কারও কথা শোনেনি?
বন জঙ্গল কাটছে বেদম,
এখনো কি কিছুই বোঝেনি?

নাজানি কবে থেকে,
আমি একটি পাখির মুখ দেখিনি।
সে যে দল বেঁধে সব রওনা দিয়েছিলো,
সেকি! এখনো তো তারা ফেরেনি ?
সকাল বিকেল দিঘির ধারে বসতো তারা এসে।
ওদের কথা শোনা যায়না আর,
গেছে দিঘির জলে ভেসে।

দিনের  পর দিন পৃথিবীটা আমার ,শুধু ব্যথায়  কাতরাচ্ছে ।
আমার বুকের  ভেতর গর্ত করে ,তারা এখোনো হাতড়াছে।

তেল ,কয়লা,সোনা,রুপা ,খুঁড়ছে সবাই , ভাবছেনা কেউ!!!
গলছে হিমবাহ ,ফুলছে সাগর,উঠছে সুনামি ঢেউ । । ।

কোন্ ভবিষ্যতের  কথা ভেবে সব এড়িয়ে তুমি  চলেছো?
একবার ঘুরে তাকিয়ে  দেখো পেছোনে কী তুমি ফেলেছো। ।

সেই সবুজের দেশ,শিতল হাওয়া,মিষ্টি  পাখির ডাক,
শেষ কবে শুনেছো,কবে বৃষ্টিতে ভিজেছো,বলো শেষে কী পেয়েছো? 

ঈশ্বর সব জানেন,,,, অযান্ত্রিক



ওই যে চৌখুপ্পি ঘর, বিস্কুটের মতো বারান্দা,ঠিক ওই খানেই,
ইস্কুল খুলেছেন আমার ঈশ্বর,
মানুষ ওখানে বাঁচার তরীকা শিখতে আসে,
লক্ষ্যে পৌঁছানো শিখতে আসেন।

সবার কাঁধের উপর রাখেন হাত,
বলেন সোজা করো পাঁজর ধনুক।
বলো কি দেখতে পাও, ঘর বাড়ি,
হাসপাতাল অফিস কাছারি।

শিষ্য বলে ওঠে সব ,সব দেখছি হে প্রভু,
ঈশ্বর বিস্মিত হন,তোমার লক্ষ্যে পৌঁছানো হলোনা।
একজন আসেন ,বলেন আমি শুধু লক্ষ্য দেখছি,
পাখির নীল চোখ,খরগোশের লেজ,
তাহলে চালাও, ইচ্ছের তীর,
কেটে যাক বন্ধুর মাথা ,মায়ের কান্না ,
তুমি থামবেনা,ছুঁড়ে যাবে তীর।
তোমাকে লক্ষ্যে পৌঁছুতেই হবে,

হায়, ইশ্বর লক্ষ্য বোঝেন ,দুঃখ বোঝেন না।

অপমৃত্যু -সুকান্ত ঘোষ



চায়ের ভাঁড়ে দীর্ঘ একটা ফু দিয়ে খানিক্ষণ চুপ থেকে অনেকটা উষ্ণ বিস্ময় নিয়ে এবার রাহুল প্রশ্ন করল।

-"থিয়েটার ছাড়ছিস কেন?"

সমীর কোনো উত্তর দিলো না, আর্দ্র চোখে শুধু চুপ করে রইল।

-"কিরে, চুপ থাকিস না, বল।"

রাহুল আবার প্রশ্ন করল। সামনে থেকে এবার উত্তর এল।

-"এমনি...."

-"কী এমনি? '১৭ ই জুলাই'-তে তোর অভিনয় সবার খুব পছন্দ হয়েছিল। সবাই তো তোর কতো নাম করল, আর তুই কী না...."

-"সেটা তো ছোটো চরিত্র....."

-"মানে? ছোটো চরিত্র পেলি বলে দল ছেড়ে দিলি? অন্য দলে নাম লিখিয়েছিস বুঝি?"

-"না সেটা না...থিয়েটার আর করব না।"

-"সেটাই তো বলছি, করবি না কেন?"

-"এমনি..."

রাহুল ধৈর্যের মাত্রা খানিকটা সামলে পায়ের আঙুল কচলে, ভুরু দুটো ঘনিষ্ঠ করে আবার প্রশ্ন করল।

-"তোর কী হয়েছে বলতো? এই তো 'গাজনা চড়ের বাজনা' আর 'কপিকলে'-এ বড়ো দুটো চরিত্র পেলি, এমনকি স্যার বলেছেন পরের নাটকে তোকে লিড ক্যারেকটার দেবেন। এতো ভালো একটা সুযোগ সামনে, আর তুই বলছিস থিয়েটার ছেড়ে দিবি?"

-"হ্যাঁ..."

-"কী হ্যাঁ? তাহলে 'অনার্য বার্তা'-র কী হবে? সামনের মাসেই সো, অভিমন্যু কে করবে?"

-"জানি না.."

-"তার মানে সত্যিই থিয়েটার আর করবি না?"

-"হ্যাঁ"

-"তুই কি পাগল হয়ে গেছিস?"

-"হ্যাঁ.."

-"ধুর্! সত্যি তোর মাথাটা গেছে, যা সাইক্রাটিস্ট দেখা, তোর সাথে কথা বলাই বেকার, যা খুশি কর.........."

এবার রাহুল ধৈর্য হারাল, চায়ের ভাঁড়াটা পোস্টের গোড়ায় সজোরে ছুড়ে আর কিছু শোনার অপেক্ষা না রেখে সোজা চলে গেল সদনের দিকে, রাহুলের কথা গুলো ক্রমে অস্পষ্ট হয়ে হাওয়া মিলিয়ে গেল।

সেই ভাঁড়ের টুকরো গুলোর মতো না বলতে পারা কতগুলো টুকরো কথা কুড়িয়ে মনের এক পাশে তুলে রাখল সমীর। একাডেমীর সামনে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে শেষবারের মতো নিঃশব্দে ভালোবাসা জানিয়ে দীর্ঘ একটা নিঃশ্বাস বুকে চেপে সোজা চলে গেল ক্যাথিড্রাল রোড ধোরে ময়দানের দিকে।

আজ সাত বছর হল সমীরের বাবা মারা গেছেন। এতোদিন মা সংসারের হাল টেনেছেন, ওদের দুবেলা খাইয়ে, পড়ালেখা শিখিয়ে বড়ো করেছেন। মা এখন অসুস্থ, তাই আর পারেন না। সমীরের একটা ভাই আছে, ওর থেকে দু-বছরের ছোটো, সে কাজ করে, সংসার চালায়। ওরা বেলগাছিয়ায় একচালা একটা টালির বাড়িতে ভাড়া থাকে। সংসারে সমীর বেশি টাকা দিতে পারেনা। থিয়েটার করে কতই বা ওঠে? অথচ যা পায় সবটাই নিঙ্গরে দেয়। তবুও কিছু মানুষের কাছে সমীর নিষ্ঠুর, তারা অগোচরে সমীরের নাম করে- "কোনো মুরোদ নেই। মা, ভাইকে খাটিয়ে মারে, কাজ নেই বাজ নেই খালি রং মেখে সং সাজা।" এসব কথায় সমীর নিষ্ক্রিয়। বুকের ভেতর এসব ভাঙা ভাঙা কষ্টের স্তূপ সাজিয়ে সে সারাক্ষণ অভিনয় করে, কী জীবন্ত সেই অভিনয়।

মামার হাত ধরে সমীরের থিয়েটারে আসা। সেই ১৩ বছর বয়স থেকে ও থিয়েটার করছে, মামার কাছেই অভিনয় শেখা। আজ আর মামা নেই। এই ৯ বছর সমীর থিয়েটারকে ভালোবেসে থেকেছে। এতোদিনে বেশ নাম-ডাক-খ্যাতি পেয়েছে। আর কতো মানুষ দেখেছে, কতো মানুষ সেজেছে, কতো শিক্ষা পেয়েছে, কতো অভিজ্ঞতা কুড়িয়েছে। আজ থেকে সে আর কিছু কুড়োতে যাবে না সেখানে। "থিয়েটার এবার ছাড়তে হবে।"

সমীর নিজেকে প্রশ্ন করে। "এই ভাবে আর কত দিন?শেষে মা-ভাইকে না খাইয়ে মারবি? আরে আমাদের জীবনটা থিয়েটার নয়। এখানে অনেক নাটক নেই, এখানে শুধু একটাই নাটক, বেঁচে থাকার নাটক, খেয়ে-পোরে কোনো রকম বেঁচে থাকার নাটক। আর না, এবার স্টেজ ছেড়ে বাস্তবের অডিটোরিয়ামে নেমে আয়, আর দেখ যারা অন্ধকারে বসে আছে, এখন আর কেউ তোকে দেখছে না, তোকে কেউ চেনেই না, কে তুই? সবাই শুধু হা করে স্টেজের দিকে তাকিয়ে আছে, দেখছে কতো গুলো রংচঙে মিথ্যা মানুষ আর তাদের মিথ্যা অভিনয়। স্টেজে তুই তাদের মতোই একটা মিথ্যা মানুষ, ওরা ওই মিথ্যা মানুষটাকে চেনে। গ্রিন রুমের এই সত্যি মানুষটাকে কেউ চেনে না। ওরা শুধু মিথ্যা ভালোবাসে, সত্যিটাকে কেবল অবজ্ঞা করে। কাজ কর, সংসার চালা, থিয়েটার নিয়ে বাঁচিসনা। ওটা মিথ্যা জীবন..."

"থিয়েটার ছেড়ে দেব? একদিন যে থিয়েটারের জন্য সব ছেড়ে এসেছিলাম আজ সেই থিয়েটার ছেড়ে দেব? কার জন্য?"

সমীরের মনের ভিতর একটা বর্ণহীন দ্বৈত-মানসিক দ্বন্দ্ব চলতে থাকে। একদিকে অভাববোধ, সাংসারিক-বাস্তবতা, ঘরের অন্ধকার আর অন্যদিকে রঙ্গমঞ্চ, থিয়েটার, সটেজের আলো। সমীরের বুকের ভিতরটা শূন্য হয়ে আসে, এ কোথায় এসে পড়ল সে? আজ বাবার কথা খুব মনে পড়ছে তার। বাবার না থাকা আজ তাকে আরো বেশি একা করে তুলেছে। চোখের সামনে শুধু ভাসছে অসুস্থ মায়ের সেই আশার মুখ, "আমি না থাকলে ভাইটাকে দেখিস..." সমীর আর সামলাতে পারে না নিজেকে, বুকের ভিতরটা ঝাঁঝরা হয়ে গেছে, এবার হাউ হাউ করে কেঁদে ওঠে সে। এতো একা সে কোনোদিন ছিল?

সেদিনের পরে আজ অনেক গুলো বছর কেটে গেছে। সমীর সত্যিই থিয়েটার ছেড়ে দিয়েছে। এখন সে একটা সামান্য চাকরি করে, যা মাইনে পায় তাতে মোটের উপর শুধু সংসারটাই চলে যায়। ৯টা-১০টার ডিউটি। একই জায়গা, একই ঘর, একই চরিত্র, একই অভিনয়। আর কতো গুলো একই অস্পষ্ট মানুষ, কেউ কারোর সাথে তেমন কথা বলে না, সবাই চুপচাপ কেমন যেন নিজেদের মুঠো করে রাখে। সবকিছু কেমন গতানুগতিক। এসব আর সমীরের ভালো লাগেনা, তবুও সে বিরক্ত হয় না। আজ ও সেই সব পেয়েছে যা ও কোনোদিন চায়নি। এখন সমীর আরো বেশি একা। সে থিয়েটার ঠিকই ছেড়েছে কিন্তু অভিনয় ছাড়েনি, ছাড়তে পারেনি, সে এখনো অভিনয় করে চলেছে নিজের সাথে, ভালো থাকার অভিনয়, বেঁচে থাকার অভিনয়। আর হাতরে বেড়াচ্ছে নিজেকে, দৈনন্দিনের ভিড়ে যে হারিয়ে গেছে অনেক আগেই।

সমীরের মতো মধ্যবিত্ত কি নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষদের জীবনেটা একটা রুক্ষ মস্ত রেল লাইনের মতো, দুটো লাইন সোজা গিয়ে একটা বিন্দুতে মিশেছে, যত এগোনো যায় বিন্দুটা তত সরে সরে যায়। গন্তব্যহীন একটা দীর্ঘ পথ, এই পথের কোনো শেষ নেই, সামনে যা পিছনেও তাই, অতীত যা ভবিষ্যতও তাই। চলার পথটাই শুধু আছে, একটা নিরবচ্ছিন্ন আশা আর কিছু বিষণ্ণ সংশয় নিয়ে হেঁটে যাওয়াই সার। অভাব, পরিস্থিতি আর বাস্তব এই ভাবেই গ্রাস করে কতো স্বপ্ন, ইচ্ছে আর আনন্দ। জীবনের সঙ্গে আষ্টে-পৃষ্ঠে মিশে থাকা এই কদর্য অগ্রাহ্য রেল লাইনেই কাটা পড়ে কতো স্বপ্ন আর অভাব তাড়িত প্রতিভা। আর এই ভাবেই প্রতিনিয়ত অপমৃত্যু

রুপময়ী হাওয়র কন্যা..... রুদ্র সুশান্ত



হাওয়র কন্যার এতো মুগ্ধকারী রুপ, তোকে অনাবৃত না দেখলে কোন শালায় বুঝতে পারবে না।

ঈশ্বরের চরম সৃষ্টির মায়াবী চন্দ্রিমা যখন লুটোপুটি খায় তোর সুঠান বক্ষে তখন পৃথিবীর যেকোন যুবক স্বর্গের গালে থুথু মেরে প্রাচীনতম চুম্মা দিবে তোর উদ্যমী ঠোঁটে, পেটের দায়ে টিউশন করা ছেলেটা জীবন ভুলে গিয়ে সারা মাসের মাইনে দিয়ে তোর জন্য একটা উজ্জ্বল রক্তিম লিপস্টিক কিনে নিবে অনায়াশে,
পাড়ার বেকার ছেলটা চাকরীর জন্য হন্যি হবে তোর রুপময়ী ঠোঁটের আশায়।
আর এ ধরিত্রীর যেকোনো কবি তাঁর নির্মিত পবিত্র পান্ডুলিপি সহস্র বছরের জন্য বন্ধক দিবে তোর দৃষ্টিনন্দন ঠোঁটের নেশায়।

হাওয়র কন্যা, তুই রাতবিরেতে আমার সাথে শুষ্ক বিছানায় গড়াগড়ি খাবি, আমার বিছানায় একটা মাত্র চাঁদ--তুই। কুঁপি বাত্তির আলোয় তোর মুখে এঁকে দিই ভালোবাসার উদ্যান, তুই পরম তৃপ্তভরে জড়িয়ে নিবি একটা যুবককে।
আহা-- কি যে মোনায়েম সুখ!
তোর বক্ষ না হলে পৃথিবীর কোন শালা এ সুখ বুঝতে পারবে না, খালি অবোধ শিশুর মতো হামাগুড়ি খাবে,
তুইও তো জানিস না কুঁপি বাত্তি নিভে যখন চাঁদের আলোয় সজ্জিত হয় তোর সমগ্র দেহ তখন তোর নাভি হয়ে উঠে স্বর্গোদ্যানোর দ্বার।

একাদশী, দ্বাদশী, ত্রয়োদশী... সবকটা দিনেই তুই রহস্যময়ী মোনালিসা।
ঈশ্বর হয়তো তোরও প্রেমিক, তুই জানিস না।
তোকে ভালোবেসে ইশ্বর আর কাউকে এমন নয়নাভিরাম করে বানায় নি।

রাসররাতে তোকে চুমু খেয়ে যেকোন যুবক পরবর্তী চব্বিশঘণ্টা মাতাল থাকবে, নতুবা ফের তোর সাথে মৈথুনে লিপ্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত।
তুই পুরোটাই রহস্যময় রুপের কুঞ্জণ।

আমি ভাসতে ভাসতে হাওয়র কন্যা নগ্ন ঠোঁটে চুমু দিয়ে বলেছিলাম---আজ অবধি পৃথিবীর পবিত্রতম চুমো হলো এটাই।
তুই চোখ তুলে বলেছিলি -- "আমি লজ্জায় মরে যাই"।
আমরা নয়নোৎসবে মিলিত হলাম খোলা আকাশের নিচে, তুই তো বলেছিস- তুই নাকি স্বর্গে যাবিনা।
বললাম কেনো? তুই আবার বললি --"এই তো আমার অমরাবতী"।
সেই দিন আমি বুঝেছিলাম আমিও তোর প্রেমিক হতে পেরেছি। হাওয়রে দ্বীপের মতো ভেসে থাকা তোর সুডোল বক্ষে আমি যতবার মগ্ন হয়েছি ততবার তোকে নতুনভাবে আবিষ্কার করেছি। তোর আছে রহস্যোপন্যাস, আমি পৃষ্টায় পৃষ্টায় ঠোঁট লাগিয়ে তোকে ইচ্ছে মতন পড়ে নিই।
আমি প্রথম তোর কাছেই জেনেছি, নীরবতা মানে আরো কিছু চায়।

আমি আকাশ হাতের মুঠোয় পুরে বলছি- পরজন্মেও আমি তোকে অনাবৃত করবো।
কন্যা, অমন করে হাসিস না, মানব জাতির ইতিহাস সাক্ষী থাকবে, আমি তোর কাছে বেহায়া হবো কোটিকোটি বার।

তোর উচ্ছ্বল হাসি ঈশ্বরেরও ধ্যান ভঙ্গ করে, আমরা তো মানুষ মাত্র,
এবার বুঝ পৃথিবীর কতো যুবক তোর ঠোঁটে পাগল হতে চায়(?)

আমার বাসরে তোর চাঁদমাখা মুখখানিই সারাক্ষণ জ্বলে। তোর মিলনে আমার প্রতিরাতে বাসর হয়, রুপময়ী।

অনুভবে -সুকান্ত ঘোষ



সকাল ১১:১০ এ পুঁচি রেজাল্ট দেখল। এতক্ষন উত্তেজনায় পা যেন মাটি থেকে সরছিল না। এখন স্বস্তি। পুঁচি উচ্চমাধ্যমিকে স্টার পেয়েছে, স্কুলে কৃতি ছাত্রীদের মধ্যে তার নাম রয়েছে। এই সাফল্য ওর জীবনের একটি বড়ো পদক্ষেপ। স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে পুঁচি যাবে বাইরের এক বিশাল জগতে। সেখানে ওকে লড়তে হবে কোমর এঁটে, ও প্রস্তুত। সকলের শুভকামনা, আশীর্বাদ ও পুঁচির অমোঘ পরিশ্রমে আজ এই সফলতা।

সকাল থেকে বাড়িতে পুঁচিকে নিয়ে হুড়োহুড়ি, রেজাল্ট আনতে যাওয়া, বাবা-দিদি-বোন সবার সাথে ঐকান্তিক আনন্দ বিনিময়, বন্ধুদের সাথে শেষ দেখা সেই সঙ্গে আবার-সাক্ষাতের শপথ গ্রহণ, ম্যাডামদের প্রশংসা, ও বিশেষত যার কাছে হাতেখড়ি সেই দিদিমনির আনন্দে চোখের জলে ভাসা, এমন কী পাড়ার সবচেয়ে খিটখিটে কাকুর ৫০০ টাকা দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এ সব যেন পুঁচির কাছে জীবনের এক অপ্রত্যাশিত আনন্দ।

দিনের শেষে যখন সব শান্ত। ঘরের দরজার সামনে একা বসে আছে পুঁচি। প্রথমার রাত্রে জ্যোৎস্নার ম্লান আলো সামনের কৃষ্ণচূড়ার লাল-সবুজ চাদরের ফাঁক দিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে রাস্তায়, সেই ক্ষীণ আভা ম্লান করেছে তিনটি শরীর। চৌকাঠে উপবিষ্টা পুঁচির নিথর দৃষ্টি স্থির অদূরে অবস্থিত দুটি প্রাণীর ওপর। পুঁচি দেখছে একটি নিষ্পাপ, নিরীহ, ক্ষুদ্র কুকুর ছানা তার ঘুমন্ত মাকে ঘিরে খেলা করছে, আর ঘুমন্ত মায়ের একটি পা বার বার আগলে নিচ্ছে শিশুটিকে। জ্যোৎস্নার স্বচ্ছতায় প্রাণী দুটি যেন আরো নিষ্পাপ নিরীহ মনে হচ্ছে। পুঁচির দৃষ্টি স্থির, দেহ
 নিথর।

সেই স্থির দৃষ্টি যেন এবার অস্থির হয়ে আসছে। পুঁচির চোখ দুটি জলে ভোরে উঠেছে। ম্লান আলয়ে ছলছল করছে সেই চোখ সমুদ্রের জলে বিচ্ছুরিত জ্যোৎস্নার মতো। বাঁ দিকের গাল বেয়ে চুয়ে পড়ল এক ফোঁটা নোনা অশ্রুজল বাঁ হাতের চামড়া ওঠা জীবন্ত ফোসকাটির ওপর। পুঁচির সমস্ত শরীর-মন জ্বলে উঠল। পুঁচি কাঁদছে। আজ ৮ বছর ও মা-কে হারিয়েছে। আজ ওর মায়ের কথা খুব মনে পড়ছে। "আজ যদি মা থাকতো? খুব আনন্দ পেত, আমায় জড়িয়ে ধরত। মা-এর মুখের সেই অমলিন হাসি দেখে আমারও হয়তো চোখে জল আসত। কোথায় রাখতাম সেই আনন্দ গুলো? তা তো আজ আর সম্ভব নয়। এই ক্ষতি তো পুরণ হওয়ার নয়!" আজ মায়ের অভাব পুঁচির বুকের ভিতরটা একেবারে শূন্য করে দিয়েছে। এই কষ্ট ওর একার, একেবারে নিজের। পুঁচি চাইলেও যেতে পারবেনা ওর মায়ের কাছে, ছুঁতে পারবেনা সেই অমলিন হাসি।

কিন্তু হঠাৎ পুঁচির অস্থির দৃষ্টির চঞ্চলতা এবার বেড়েছে। ও ক্রমশ অনুভব করতে পারছে বাঁ হাতের চামড়া ওঠা জীবন্ত ফোসকার জ্বালা যেন অস্বাভাবিক শীতল হয়ে আসছে। কে যেন একটা ঠান্ডা স্পর্শ রেখেছে তার উপর। পুঁচি অনুভব করছে একটা ঠান্ডা শরীর যেন তাকে জড়িয়ে ধরেছে। পুঁচির সমস্ত শরীর হীম হয়ে উঠছে। পুঁচি বুঝতে পারছে এই স্পর্শ ওর খুব চেনা। এই স্পর্শ যে ওর মায়ের। পুঁচির নিথর দেহ ক্ষণিকের জন্য প্রাণ পেয়ে আবার অসার হয়ে পড়েছে, কেবল দুই চোখ দিয়ে অঝোরে জল ঝড়ছে, বোবার মতো নিঃশব্দে প্রচন্ড চিৎকার করে কেঁদে চলেছে সে।

পুঁচি বুঝল ওর মা দুই হাত বাড়িয়ে ওকে জড়িয়ে ধরেছে, দৃঢ় স্নিগ্ধ শীতল সেই স্নেহালিঙ্গন। এই সমস্ত ও অনুভব করছে। দেখতে পাচ্ছে মায়ের সেই অদৃশ্য অমলিন হাসি। আর কাঁদছে।

এই অনুভূতি কেবল পুঁচির নিজের একার। ও অনুভব করেছে মায়ের অস্তিত্ব, শুধু বস্তুজগতের বাহ্য ব্যবধানের জন্য তা আজ অদৃশ্য। সমস্তকিছুই তো কেবল অনুভূতির দ্বারা গ্রাহ্য, বাস্তব অপেক্ষা অনুভবে অস্তিত্বের সত্যতা তো সর্বাধিক।

অন্তর কালা .... আহাম্মেদ হৃদয়



ধর্ষিতা নও তুমি,
ধর্ষক বটে
এই পৃথিবীতে এইসব,
হাজারো দূর্লভ ঘটনা ঘটে।

দেহ পোড়ানো জ্বালা
ভুলিতে পারেনা তারা।
যে জ্বালিয়ে মারে তাকে
সে তো বোঝেনা তাহার কষ্টটাকে।
সে মোহে অন্ধ হয়ে জ্বালায় তাকে।

নিজের দেহ হয় দখল
অন্তর হয় কালা
এই সব ঘটনা ঘটে
মধ্য রাএীবেলা।

বিবেক শুন্য প্রতারক তুমি
ক্ষমা পাবিনা আর
তদের জন্য আসছে একদল
সুশীল ছাত্র সমাজ।

অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদ করে
পিছু পা হাঁটেনা তারা
ন্যায়ের পক্ষে জন্ম তাদের
অন্যায় দেখলে জ্বলে ওঠে তারা।