আজ থেকে প্রায়
100 বছর আগে বিশ্ববাসীর বেশি সংখ্যক জনগণ কোন না কোন দেশের আওতায় পরাধীন ছিলেন।যতদিন যায় মানসিকতায় আসে পরিবর্তন ।পরাধীনতার থেকে মুক্ত হতে চলতে থাকে মহাসংগ্রাম ,লড়াই ।অবশেষে দাসত্ব প্রথার অবলুপ্তি ঘটতে থাকে ।আধুনিক সভ্যতার বিকাশ ক্ষেত্র গড়ে ওঠে। এসময় 8 ঘণ্টা কাজ 8 ঘণ্টা বিনোদন 8 ঘন্টা বিশ্রামের জন্য শুরু হয় লড়াই। দীর্ঘ সংগ্রামের ফলে প্রতিবাদী দের রক্তের বিনিময়ে আসে আটঘণ্টা কাজ ,আট ঘণ্টা বিনোদন, আধঘন্টা বিশ্রাম।এ কথা আজ আমরাসবাই ভুলে গেছি।8 ঘণ্টা বিনোদন এর মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান হল নাটক নাটক কি বর্তমান সমাজে তা বোধ হয় বিশেষ করে বলার অপেক্ষা রাখে না তবে এই সুসভ্যতায়নাটকের বিশেষ গুরুত্ব আছে বলে বোধগম্য হয় না নানা ভাষা নানা মত নানা পরিধান এই অন্তনিহিত শব্দটির মধ্যে দিয়ে ভারতবর্ষকে বহুমাত্রিক গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে পরিচিত করেছে বিশ্বের দরবারে।ভিন্ন ভাষাভাষী মানুষজনদের ভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয় সেই অনুষ্ঠান কেন্দ্রিক এক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাস্তব চরিত্র হলো নাটক। সাহিত্য রচনা একটি বিশেষ শ্রেণী হলো এই নাটক।প্রাচ্য ও নাট্যশাস্ত্র একই দৃশ্যকাব্য বলে অভিহিত রেছেন গ্রিক ভাষা থেকে আগত ড্রামা শব্দটির অর্থ হলো অ্যাকশন অথবা কিছু করে দেখানো ।বাংলা নাটক নাট্য নট-নটী প্রভৃতি শব্দ থেকে শব্দ উদ্ভূত হয়েছে নট ধাতু থেকে যার অর্থ নাড়াচাড়া করা নড়াচড়া করা অর্থাৎ নাটকের মধ্যে এক ধরনের গতিশীলতা রয়েছে যা একটি ত্রিমাত্রিক শিল্প কাঠামো গড়ে তোলে এটা বিশেষভাবে প্রযোজ্য যেবর্তমান সময়ে নাটক পরিবেশন এর জনপ্রিয় মাধ্যম টেলিভিশন হলেও মঞ্চস্থ নাটক এর প্রকৃত যথার্থ পরিবেশ স্থল প্রকৃতপক্ষে নাটকের মধ্যে একটি সমষ্টিগত শিল্প প্রয়াস সম্প্রদায়ভুক্ত থাকে ।এতে অভিনেতারা দর্শকদের উপস্থিতিতে মঞ্চে উপনীত হয়ে গতিময় মানব জীবনের কোনো এক বা একাধিক বিশেষ ঘটনার প্রতিচ্ছবি অভিনয় মাধ্যমে উপস্থাপনা করেনসাধারণভাবে নাটক যে চারটি বিষয়ের উপর গুরুত্ব দেয় তা হল কাহিনী বা প্লট চরিত্র সংলাপ পরিপ্রেক্ষিত ।কেন্দ্রীয় চরিত্র এবং সহায়ক বিভিন্নচরিত্রের সংলাপ কে আশ্রয় করে উপস্থাপিত হবার প্রয়াস পায় নাটকে।এর সঙ্গে যুক্ত হতে পারে নিত্য গীত আবহসংগীত শব্দ সংযোজন আলোরসজ্জা মঞ্চকৌশল প্রভৃতি।
দুরন্ত সময়, প্রতিযোগিতার পাল্লা ঊর্ধ্বমুখী, বিশ্ব আজ তালুবন্দি, সময় কি আজ মানুষ লাগাম দিতে পারেনি কর্মমুখী ব্যস্ত জীবনে মানুষ হারিয়ে ফেলেছে নিজেদের জীবনের বৈচিত্র পিছনে ফিরে তাকানোর অবকাশ নেই আজ কারো। ফেলে আসা শৈশব আজ পিছন থেকে হাতছানি দিয়ে ডাকে।বৈচিত্র্যময় জীবন কাহিনীতে মানুষ মিথ্যা নাটক করতে করতে ভুলে গেছে সত্যি নাটকের দিনগুলো। ভিন্ন সম্প্রদায়ে দেশ ভারত বর্ষ, বছরের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধর্মীয় সামাজিকউৎসব লেগে থাকে, বিশেষ করে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ, গ্রাম বাংলার আত্মার আত্মীয়ও হল। এই উৎসবকে ঘিরে লেগে থাকত উদ্দাম উদ্দীপনা উত্তেজনা। দূর-দূরান্তের মানুষজন জড়ো হতে উৎসবকে কেন্দ্র করে আপন জন বন্ধু বান্ধব একে অপরের আত্মিকতায় ভরিয়ে তুলতে মেলা প্রাঙ্গণ। সেই মেলায় হত নাটক, যাত্রাপালা ,পুতুল নাচের গান আরো নানান সামাজিক অনুষ্ঠান। নাটকের মঞ্চ হল অভিনেতার প্রথম প্রতিফলন ।এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত বহু নামীদামী শিল্পী যারা অভিনয় মঞ্চে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন সাড়া বিশ্বে। একসময় কলকাতা ও নাটক নিয়ে থেমে থাকেনি এক সময়ে বহু নামিদামি শিল্পীদের আনাগোনা ছিল নাটক পাড়ায় বহু নামিদামি শিল্পীদের । জীবন অতিবাহিত করার প্রধান উৎস ছিল নাটক । বহু শিল্পী জীবনের মূল পন্থা হিসেবে।অনেক নামীদামী শিল্পী তার জীবন অতিবাহিত করেছে এই নাটকের মধ্য দিয়ে। নাটকের উন্মাদনা কে ঘিরে তৈরি হয় কলকাতার বুকে অনেক বড় বড় মঞ্চ। শিশির মঞ্চ ,তপন থিয়েটার হল,দাশুমতি ভবন ,নন্দন,উৎপল দত্ত মঞ্চ, আরো অনেক বড় বড় মঞ্চ। শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড, আর সেই শিক্ষার প্রথম মঞ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়, তেমনই অভিনয় জগতের প্রথম ধাপ হলো নাটক। গতিময় জীবনের বৈশিষ্ট্য আজ বড্ড ফ্যাকাশে গেছে। বই কে ঘিরে উন্মাদনা যেমন নেই বইপ্রেমী দের, আজ বই এর জন্যে বই মেলায় ভিড় লাগেনা। তেমনই বর্তমানে নাটক নিয়ে উন্মাদনা আর নেই নাটক পাড়ায়। আমরাই আমাদের সভ্যতা সংস্কৃতি গুলোকে হারিয়ে ফেলেছি জীবনের অঙ্ক থেকে।মানব জীবন আটকে গেছে হাতের তালুর মধ্যে। বাস্তব জীবন ছেড়ে কৃত্তিম জিবনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি। এর থেকে মুক্তির উপায় নিজেদের বের করতে হবে। এর জন্যে স্মার্ট ফোন। চারিদিকে তাকিয়ে দেখল মনে হবে আদিম মানুষ দের ভিড়। সবাই ঝুঁকে কি যেনো খুঁজছে স্মার্ট ফোনের ভিতর। তাহলে বুঝবো পৃথিবীর আদিম মানব জীবনে ফিরে যেতে হয় তো কি আর বেশি দূরে নয় ?