নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

আমি... দেবলীনা অধিকারী



ঝরা  পাতার শব্দ  শুনি
বয়ে যাওয়া নদীর স্রোতে শান্তি খুঁজি
ভালোবাসার  আমি কি ই বা বুঝি!
কবি নই, আবৃত্তি কার নই,
নই শিল্পী  কিংবা গীতিকার
নই নাম যশ খ্যাত নারী
ভালোবেসে পুড়তে জানি
অভিমানে নীরব হতে মানি
উড়েযাওয়া পাখিদের -
ডানার  পালক ধরেই স্বপ্ন দেখি,
রোদের পরশ গায়ে মাখি
নাম না জানা ঠিকানা তে চিঠি লিখি
ঐ যে দেখা যায়-দূরে
কবিতার জানালা , সুরের খিড়কি
মই বেয়ে সব শব্দ রা আকাশে দিয়েছে পাড়ি ! ! !.....

আমার এদেশ...... মুহাম্মদ মাহমুদ হাসান



আমার এদেশ আলতো পরশ
প্রভাতশিশির ছুঁয়া
ভোরের পাখি পালতু সরস
কোকিল কাকাতুয়া।

আমাদের এদেশ হিজলডালে
গোলাপ-জবার হাসি
পল্লীগাঁয়ে দীঘল খালে
শাপলা রাশি রাশি।

আমার এদেশ নীল সবুজাভ
লাল পতাকার ছবি
মায়ের স্নেহ,রাগ-অনুতাপ
দুপুরতেজী রবি।

আমার এদেশ মুকুট বাহার
শহীদ-গাজীর শিরে
পাঁজরবাঁধা অটুট পাহাড়
পদ্মাজলের তীরে।

পৌঁছায়নি এখনও...... অনিন্দ্য পাল


ওয়াটার প্রুফ প্যাকেটে মুড়ে পাঠিয়েছি সন্তান
অথচ একবারও প্রাপ্তি স্বীকার করেনি কেউ

আমার আর সেই ডাকদেশের মধ্যে আছে মনে হয়
অমীমাংসিত কোনও কৃষ্ণ গহ্বর
সমস্ত অক্ষর, মাত্রা আর যতি পাল্টে চলেছে নিয়ত
অভিশপ্ত অসীম ক্ষুধায় ...

অসংখ্য শব্দ ঝনঝন করে টুকরো হবার আগে
কোথায় তলিয়ে যায় অন্ধকূপের যোনিতে
হয়ত অন্য কোথাও জন্ম হয় আবার
অন্য কোন উচ্চারণে

অতীত মুছে ফেলা সেই সব জারজ সংলাপ
বড় চেনা মনে হয়
তবু চিনতে পারি না একবারে
মনে হয় যেন সব কটা মুখোশের নিচে শুয়ে আছে
আমার অলাজ মুখ ...

ম্যাসোচিস্ট..... অভিজিৎ দাসকর্মকার



এক বালতি জল তাকে
বেগের মান অভিমুখের পরিবর্তনহীন সমত্বরণে রাখা মাত্রই
দ্বিতীয় পুলকেশি শিলালিপি লেখে
অশ্বক্ষুরাকৃতি মালভূমিতে।

অসংখ্য ব-দ্বীপে অশান্ত গঙ্গার পলি পড়ে জীবাশ্ম হয়েছে আজ
ছোট বালিয়াড়িতে ভূ-প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য
সি-ইউ-কি র পাতা ওল্টায় আর
তৃতীয় গতিসূত্রে নিউটনের সাক্ষাৎকার নেয়

যে স্লোগানটি উত্তোলনের পর বি-বা-দি বাগে ফটকা ফেটেছিল
আর্কিমিডিসের বাউন্ডারি ভেঙে উপচে পড়া জলে পিছল খেয়েছিল
ফরাসি শব্দের সামনে রাখা বেদের আরণ্যক ভাগ।

অথচ মুখ শুকনো করা লাইন হাতে বনলতা কবি আজও দাঁড়িয়ে
কাঁধে দাঁড়ি-ব্যাগ আর
সেই বিখ্যাত ম্যাসোচিস্ট ট্রাম...**

আলো ছায়ার কথামালা. ... হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়





।। ছত্রিশ ।।



               আজ ব্যানার্জী কেবিনে বসে আছি। হঠাৎ একটা কথা কানে এলো। কেবিনের শম্ভুদা একজনকে বলছে, "আপনার যদি দরকার হয় তাহলে ওর সঙ্গে কথা বলে নিন না।" শম্ভুদার কথা শুনে লোকটির মন্তব্য ----- "সত্যি শম্ভু, তোর যেমন বুদ্ধি ! আমি ইঞ্জিনিয়ার হয়ে একজন রঙমিস্ত্রির সঙ্গে কথা বলতে যাব ! তুই ওকে বল আমার বাড়িতে এসে একদিন কথা বলে যেতে।" দুজনের কাউকেই আমি দেখতে পাচ্ছিলাম না। শুধুমাত্র শম্ভুদার গলা চিনি বলে এতক্ষণ বুঝতে পারছিলাম যে ওটা শম্ভুদার গলা। এবার পিছনে ঘুরে না তাকিয়ে পারলাম না। হ্যাঁ, লোকটাকে আমি চিনি। কিন্তু ওনার যে এতবড় একটা গুণ আছে আমি জানতাম না।
               সত্যি মানুষ এখনও এসব ভাবে ! অনুপাতটা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। নিজের প্রয়েজনে একটা মানুষ আর একটা মানুষের সঙ্গে কথা বলবে তাও তার কত ভাবনা ! সত্যি, আমরা আর মানুষ হলাম না !



।। সাঁইত্রিশ ।।



               মহাশ্বেতা দেবীর একটা কথা খুব মনে পড়ে, "অকাজে ঘুরে না বেড়িয়ে বাড়িতে পড়বি, অনেক কাজ দেবে।" এখন এটাই অক্ষরে অক্ষরে পালন করি। ছাত্র পড়িয়ে যতটুকু সময় পাই পড়ি আর লিখি। কবিতা লিখতে এসে কত মানুষের সঙ্গে তো মিশলাম। শিক্ষকতার ত্রিশ বছরে আরও অনেক অনেক মানুষ। যাকেই নিজের মনে করে একটু কথা বলতে যাচ্ছি সে-ই ঘুরে গিয়ে নিজের আসল রূপ দেখিয়ে দিচ্ছে। তাই এখন নিজেকে অনেকটাই গুটিয়ে নিয়ে এসেছি। তবে অবশ্যই নিজেকে অন্যের থেকে উন্নতমানের মনে করে সরে আসা নয়। বরং ঠিক উল্টোটাই। আমিই ঠিক সকলের যোগ্য নই। তা না হলে সবাই হেসে খেলে কথা বলে দারুণভাবে বেঁচে থাকতে পারছে আর আমি পারছি না কেন ?

অনন্ত যাত্রা : সাব্বির সেখ



ক্লান্ত জীবন থমকে আছে জীবনের শেষ তীরে,
অনেক ইচ্ছে গুমরে রইলো সবার অগোচরে।

অবসন্ন দেহ ক্লান্ত হয়ে ঘুমের পরশ খোঁজে,
শ্রান্ত আত্মা পাড়ি দিবে চিরনিদ্রার দেশে।

শেষ চিঠিটি আসতে আর নেইকো খুব দেরী,
জীবনের সব হিসেব নিয়ে দিতে হবে পাড়ি।

ছিল যত দর্প আমার,অহংকার আর জ্ঞান,
মরণ আমার সব গর্ব করে দেবে ম্লান।

আমার জানাজার পথে যদি তোমরা দাও মন ,
দেখবে আমি নিয়ে যাচ্ছি শুধু একটুকরো কাফন।

জীবনের আগল ঢেলে যখন ঢুকবো মৃত্যুপুরে,
নাম না জানা গুল্মলতা জন্মিবে মোর গোরে।

আমার আত্মীয় স্বজন যখন পুছবে আমার খবর,
কেউ তোমরা দেখিয়ে দিও আমার দেহের কবর।

আমি যদি কোথাও একটু পূণ্য করে থাকি,
সেটাই হবে আঁধার গোরে আমার আলোর বাতি।