নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

রাতের ভাঁজে চশমাকাচে:- সৌমেন দাস




রাত বাড়ে

ফ্যাকাশে হয় অনুভূতির মানিপ্লান্ট

শেষ চুমুকে পেয়ালাজুড়ে উঁকি দেয়
কত শত কাহিনিরা

শীর্ণ হয়ে আসে খুশির রেখা

টেবিলে রাখা নতুন চশমাটাও ঠাট্টা করে

ভিজে যায় নিরিহ দুটি চোখ

আর পদ্যরা সব গদ্যপাড়ায় মুখ থুবড়ে পড়ে …

ফাঁকি দিয়ে :- মান্নুজা খাতুন ( মালা)



ফাঁকি দিয়ে যদি লুকায় মাগো
মেঘের আড়াল কোনে
দিনের শেষে হন্য হয়ে
খুজবি কি আর পথে?

খাবার খেতে বসবি যখন
চিনু মিনুর সাথে
আমার অনুপস্থিতি দেখে
ডাকবি কি আর খেতে?

দিনের শেষে ফিরতে হলে দেরি
বারে বারে করবি কি আর খোঁজ
পদধ্বনি শুনলে মাগো
দু চোখ রোষে আগুন করে
বকবি কি মা রোজ?

ছোট্ট আমি ভয় পেলে মা
গভীর রাতের শেষে
উঁকি মেরে দেখবি কি মা
দোরের আড়াল হতে!
সত্যি করে বল না মা আমায়!
তোর ওই বন্য চোখের দুপথ বেয়ে
ফেলবি কি আর অশ্রুধারা
দীর্ঘদিনের জন্য যদি
লুকায় মাগো কোথাও।।

ভুলটুল: রাকেশ কুণ্ডু




প্যাকেট ভর্তি নিকোটিন আর
বুকের ভেতর তাসের দেশ ।
অন্ধকারে ঠোঁট পুড়ে যায়
করতে গিয়ে হিসেব নিকেশ ।

সাক্সেস রেট নামছে দ্রুত
হচ্ছে উঁচু ভুলের পাহাড় ..
জিতবো বলেই নামছি মাঠে ..
তবুও দেখো হারছি 

ভালো থেকো : রৌনক









চলতি পথে সেই দেখা যে হলো,
ভাবিনি সম্ভব হবে কোনদিন,
ঝড়ের পূর্বে সব শান্ত হয়ে গেলো,
অতীতের কাছে বাকি আছে ঋণ।।

শেষের দেখায় কান্না ছিলো চোখে,
এখন হাসি ঝরে ঠোঁটের কোনে,
থমকে গেলাম হঠাৎ তোমায় দেখে,
নামলো শ্রাবন চোখের মধ্যিখানে।।

আকাশ তখন মেঘলা হয়ে আসে,
স্মৃতি থাকে বৃষ্টির প্রত্যেক ফোঁটায়,
সব ভুলে মন তোমাতেই ভাসে,
মৃত ইচ্ছে জ্যান্ত হয় হৃদয় আঙিনায়।।

পরনে লাল চোখে কাজল লাগছে বেশ,
হয়তো আজ প্রয়োজন নেই আমার,
গল্পটা হয়েছে অনেক আগেই শেষ,
মহোৎসবে মেতেছে দেশ তোমার।।

বছর আটেক গেলো বিচ্ছিন্ন হয়ে দুজন,
সময়ের হিসাব বলছে অনেক কথা,
গেলো দিনে ছিলাম তোমার স্বজন,
দিনের গভীরে সয়ে গেছি  ব্যথা।।

হাজার প্রশ্ন ঠোঁটের কোনে রয়,
উপাধি'তো প্রাক্তন দিয়েছে সমাজ,
ভীষণ জ্বরে মন, তোমার কথাই কয়,
খুশিতে ভরুক তোমার মনখারাপী সাঁঝ।।

বাতাস মেতেছে নতুন গানের সুরে,
রাজ্য আমার ধ্বংসের মুখে প্রায়,
গেলে অজুহাতের পাহাড় গড়ে,
ভাবি কি করে তোমায় মোছা যায়।।

ভালো থেকো তুমি তার ভালোবাসায়,
আমার ইচ্ছেদের মৃত্যু হোক তোমার সকল আশায়।।

               

পায়ে পায়ে বিকেল বেলা : বৈশাখী গোস্বামী





পায়ে পায়ে বিকেলবেলা,
পথ গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে
কে লেখে, কার কথা?
শুধু গল্প বলার ছুতোয়
আটকে গেছে বিকেল শেষের ঠোঁট
জমিয়ে রাখা মুঠোফোনের মুঠোয় ।
একটা দু'টো চলতি পথ
হালকা হওয়ার নেশায়,
পথ গড়িয়ে ফিরতি পথ
সরল নাকি ব্যস্তনুপাতিক হারে?
থমকে যাওয়া সমীকরণ শেষে
হাঁটতে থাকি মনখারাপের দেশে।

আলো ছায়ার কথামালা : হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়






।। তেত্রিশ ।।


               বিকেলবেলা। গ্রামের একটি বাস স্টপেজ। একটা পাড়াই বলতে গেলে। ছড়িয়ে ছিটিয়ে বেশ কিছু মানুষ। একটা গাছের গোড়া গোল করে বাঁধানো। ঠিক তার পাশেই একটা ঠাকুরের বেদি। দু'একটা দোকান।
               রাস্তার ওপারে একটা টাইম কল। মুখ দিয়ে অনবরত জল পড়ে যাচ্ছে। বেশ জোরেই। আমি এ নিয়ে দু'এক কথা বলতেই দু'একজন কথা বলে উঠল। তারা বললো, কল বন্ধ করে কিছু করতে গেলে পাইপ ফেটে যাবে। আমি অন্য টাইমকলের কথা উল্লেখ করে বললাম, কেন, অন্যান্য কলের পাইপগুলো তো ফেটে যাচ্ছে না। ওরা বললো, এই কলটা অন্য জাতের। আমি আর কথা বাড়ালাম না।
               একটা জিনিস লক্ষ্য করে আমি অবাক হলাম। আশে পাশে কত মানুষ। এদের মুখে একবারেও জন্যেও আমি জল নিয়ে কোনো কথা শুনলাম না। আমি নিজে থেকে বললাম কিন্তু কেউ ব্যাপারটাকে বিশেষ পাত্তা দিল না। একজন শুধু বললো, মুখে প্যাঁচ একটা লাগানো হয়েছিল কিন্তু একদিন যেতে না যেতেই হাওয়া।
               নিজেরটুকু ছাড়া দেশের অন্য আর সকল কিছুকে আমার বলে দাবি করার ইচ্ছাটা এদেশের মানুষদের মধ্যে জন্মাল না কেন? শুধু তাই নয়, কৃত কর্মের জন্য মানুষের কোনো অপরাধবোধ নেই, লজ্জা তো কোন কালে ত্যাগ করে ফেলেছে।
               গ্রাম বলেই চিন্তাটা বেশি হয়। শহরের ইঁট কাঠ পাথরের মানুষ তো নয়। মাটির মানুষেরাও এসব নিয়ে ভাববে না ? আমরা তাহলে কোথায় গিয়ে দাঁড়াব ?
               ওখানে যতক্ষণ ছিলাম কি অস্বস্তিটাই না হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল, এখনই বাস চলে আসুক। আমি এখান থেকে পালিয়ে যাই।



(চলবে ..)