নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

কাঁচ : সুপ্রভাত দত্ত



জলের উপর অজানা হাঁসের আঁচড়,
কত ছায়া কত আকাশ ভাঙে..
ভেঙে যায় পুরোনো কোনো প্রহর,
নতুন এক প্রহরের সন্ধানে!

মুঠোর ভিতর শিউরে ওঠে রেখা।
মুঠো, তুমি বাস্তবতায় ভরা...
একটি মন চোখের উপর লেখা
চোখের জলে কেঁপে ওঠে তারা।

একলা পথে কাতর হয় স্মৃতি,
অন্ধকারে বুক কাটে কাঁচে...
কাঁচের ভিতর জমা সহানুভূতি,
কান্না গুলো শূণ্যতাতে বাঁচে।

সমস্ত ধর্ষিতা আমার বোন : মান্নুজা খাতুন



ষোড়শী তুই কি  ফিরবি আবার সেই চেনা জীবনে?

অন্ধকার রুদ্ধ ঘরের থেকে বেরিয়ে কি আসবি?

এই আলোর পৃথিবীতে!

তুই কি বাঁচবি আর পাঁচটা মেয়ের মতো?

পাশের বাড়ির মেয়েটির মত তোর কি ইচ্ছে করে না?

রাস্তার ধারে বাটি হাতে ফুচকা খেতে!

মাইলের পর মাইল পথ উজিয়ে পড়তে যেতে!

তুই কি আর স্বপ্ন দেখবি না বোন?

তুই কি হবি না নতুন ভবিষ্যতের আদর্শ শিক্ষিকা?

তোর তো স্বপ্ন ছিল বোন! তোরও তো ইচ্ছে ছিল!

কিন্তু আজ কি হলো তোর!

ওই ভাবে দুই হাটুর পরে মাথা গুজে আর কতদিন?

বেরিয়ে আয় বোন এই আলোর পৃথিবীতে

দেখিয়ে দে ওই নরপিশাচদের, ছুড়ে দে ওদের মুখে চুনকালি।

কিন্তু বোন

বেরিয়ে আয় বোন,  তোর পাশে আছি

সব ভুলে গিয়ে চল ফিরবি আবার চেনা জীবনে।

তোর চোখে জল কেন বোন!

ভাবছিস তোর কোন মুল্য নেই এই ধরাধামে

আছে!!  তুই আমার বোন, পাশের বাড়ির মালতীর বোন, আমার এ লেখা যে তারও ছোট বোন

এ ভাবে ভেঙে পড়িস না বোন আমরা আছি

মুক্ত কন্ঠে বলতে পারি

সমস্ত ধর্ষিতা আমার বোন, আমার দিদি আমার মা।

সফলতা : নাহার নাসরিন



তোমারই মতো এসেছিলাম আমিও মাতৃকোলে।
কিন্তু তুমি পালিত হয়েছ আদর- আবদারে,
আমি হয়েছি অবজ্ঞা - অনাহারে।
তাই বলে তুমি ভেবো না, মা আমায় বাসেনি ভালো,
তোমারই মায়ের মতো আমারও মা বেসে আমায় ভালো।

আজ তুমি রঙ্গ মঞ্চে করো অভিনয়,
আমি তারই দর্শক দেখি সেই অভিনয়।
আমারও স্বপ্ন ছিলে হব অভিনেতা
অভিজ্ঞতা অনেক ছিল, ছিল না শুধু সাফল্যতা।
ধনীর ঘরের দুলাল তুমি তাইতো এত সফলতা
চাষীর ঘরে এসে দেখো,
কোথায় তুমি আর কোথায় সফলতা।।

মৃৎ সঞ্জিবনী :তপন কুমার মাজি



কোলাহল যদি না পাওয়াদের মিলিত রূপ হয়
তবে বিবেকদের সাক্ষী রেখে ঝড় উঠাবেই উঠাবে একদিন চেতনারা,
প্লাবন ঘটাবে মরুপ্রান্তরে,
বালিয়াড়ির বুকে জমাবে পলির আস্তরণ।

সহ্যের ঘরে বন্দি থাকা কন্ঠদের কলরবে যেদিন
জ্বলে উঠবে শ্লোগান,
কালবৈশাখীর হঠাৎ সফরে বয়ে আনা অশনির মতো
বৃষ্টিতে সেদিন ধুয়ে যাবে সমস্ত ধুলো-বালি।

পৃথিবীর অন্য প্রান্তে যেখানে রৌদ্রের গতিপথ রুদ্ধ
সূর্য নিজেই সেদিন চুমু খাবে সেখানে
প্রত্যন্ত প্রদেশের ধুকতে থাকা বিষন্নদের মুখে,

মাহেন্দ্রক্ষণে সেদিন বইবে মিঠেল হাওয়া
রক্তিম আশারা কইবে কথা ফুলেদের সাথে,
হরিৎক্ষেত্রে জমে উঠবে স্বতঃস্ফূর্ত প্রেমের আলাপ,
মৃৎ-সঞ্জিবনী ফেরাবে সেদিন পাষাণের মৃতপ্রাণ !

হে নবীণ , তোমার জয়ধ্বনি : মো.রফিকুল ইসলাম


ভোরের প্রভাতে শুনতে পাই তোমার সুরে
আর্তমানবতার ধ্বনি ।
তোমার সুরে ভেসে উঠে আকাশে
হে নবীণ , তোমার জয়ধ্বনি ।
দানবের মরণ ফাঁদের বিরুদ্ধে তুমি
প্রতিবাদের প্রতিধ্বনি ।
রাজপথে মুখরিত শ্লোগান তোমার সুরে
হে নবীণ , তোমার জয়ধ্বনি ।
জালিমের বিরুদ্ধে ধারালো তলোয়ার
তোমার তরঙ্গের গতি আজ ।
মেহনতি মানুষের আওয়াজ
হে নবীণ , তোমার জয়ধ্বনি ।
শোষণ-বজ্ঞণা মজলুমের বিরুদ্ধে
অসহায় মানবের সম্মোহনী ।
অশুভ শক্তির ধ্বংসের সৈনিক তুমি অগ্নি
হে নবীণ , তোমার জয়ধ্বনি ।
দিন-মুজুরি শ্রমিকের আর্তনাদের হাহাকার
দিশাহারা মানবের সৈনিক তুমি ।
তোমার সুরে বাতাসে বহে মুক্তির গান
হে নবীণ , তোমার জয়ধ্বনি ।
সাম্যের প্রতিকী নৃত্যের প্রাঙ্গণে
বীরঙ্গণা মায়ের আর্তনাদ ।
তোমার কন্ঠে রাজপথ আজ
হে নবীণ , তোমার জয়ধ্বনি ।
তুমি বিপ্লবীদের , বিপ্লবী কন্ঠস্বর
তোমার আওয়াজে মুখরিত ভূমি
হে নবীণ , তোমার জয়ধ্বনি ।
জোসনার আলোয় রজনী সন্ধ্যায়
আলোর দিশারী তুমি ।
অন্ধজনের স্বজন আজ
হে নবীণ , তোমার জয়ধ্বনি ।

কান্না :তপন কুমার মাজি


দুর্বল আর নরম মানে কী শুধুই পরাজয় ?
গতিপথে যার ঢের অন্ধকার
আমার সেই শিকড় খুঁজে নিয়েছে বাঁচার রসদ !

প্রয়োজনে ফুটো করেছি পলিথিন-
গুঁড়ো করেছি নুড়ি-
ভেঙেছি পাথর,
কঠিন যে কোন কাঠিন্যই নয়
প্রমাণ করেছি ঝড়কে প্রতিহত করে,
কখনো লাঙলের ফলায় হয়েছি ছিন্নভিন্ন-
হয়েছি নাগরিকদের যূপকাষ্ঠে বলি,
তবুও...

ছেড়েছি কী হাল ?
নীরবে ছড়িয়েছি প্রাণরস ডালে ডালে--
পাতায় পাতায়--
কীটাণুদের বিষকে করেছি নির্বিষ,
ফুটিয়েছি ফুল বৃন্তে বৃন্তে,
দিয়েছি বেঁধে নাড়িকে বিটপের প্রতিটি শিরায়,
ফলাতে ফল,
দুঃস্থ পৃথিবীর প্রয়োজনে...

সদিচ্ছা আর মনোবলকে পাথেয় করে হাঁটছি--
এখনও হাঁটছি
অনিশ্চিত আগামীর পথে
যদিও কুঠারের আঘাতে শুনতে পাই আমি
কোন এক কান্না
যে কান্না অত্যন্ত গভীর ও ব্যঞ্জনাবাহী !!