নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

নৌকাসমগ্র : শুভঙ্কর দাস



কবির ভেতর থেকে নৌকা বেরিয়ে ভেসে যায় জলে,নাকি নৌকার ভেতর থেকে কবি বেরিয়ে এসে হেঁটে চলে যায় পাড়ে!
মাঝখানে জিরাফের মতো মুখ বাড়ানো সন্ন্যাসীগাছের ছায়ায় নৌকা দুলছে,কবিও।

পাড়ের দিকে চাও,প্রথমে গুহা,পাথুরে পথ,আর একটু এগোলেই গরুর খুরের ধুলো,আর একটু গেলেই নিকানো উঠোন,তুলসিতলা,হলুদরঙা শাড়ি

জলের দিকে চাও,প্রথমে ঢালু এবড়ো-খেবড়ো আহ্বান,তৃষ্ণা নিবারণের ধ্বনিগুণ, অভিযানের অলৌকিক হাতছানি আর এক দিগন্তরঙিনগভীরতা

নৌকার যাত্রা শুরু জলে আর পাড়ে,পাড়ে আর জলে।অতলে,অশোকে এবং অবিরাম মুক্তির বন্ধনে

এই নোঙরে চুম্বন করে,এই ডুবে যায় সুদীর্ঘ স্রোতের মধ্যিখানে,এই পাথরে খোদাই করে আকাশ,এই আদি তরলে খুঁজে ফেরে মনতরঙ্গের আয়না

ক্লান্তি পাথরের মতো জমাট বাঁধে,ঈর্ষা মরা শামুকখোলের মতো ধারালো,দুঃখ শুকিয়ে যাওয়া জলের দাগের মতো অসহায়

শুধু মহাকালের একটি চোখ সময়ের চশমা পরে দেখে,সুদীর্ঘ রক্ত-মাংসের ছায়ার নিচে

একটি নৌকা একা দুলছে,কবিও।

ইচ্ছে :প্রসেনজিৎ(বাপ্পা)

চেয়েছিলাম,  ছুঁয়ে দেখব তোমায়
কোন এক কাক ভেজা ভোরে।
ছুটেছি চড়াই উতরাই বেয়ে।
চলে গেছ তুমি, দিয়ে মোরে ফাঁকি!
ভেবেছিলাম, মেখে নেব রঙ
যা ছুঁয়ে যায় তোমায়, গোধূলি বেলায় কিংবা চাঁদের রাতে।
রঙতো নয়, পেলাম ধূম্রশীতলতা!
বুঝিনি সেদিন, কার পথও চেয়ে
ছুটেছি নিতি!
আলেয়া তুমি, না মরীচিকা!
তবুও এপরানে আজও  রয়েছে তুমি
ও মেঘ বালিকা, মোর মেঘ বালিকা।
পেরিয়েছি আজ অনেক সময়
মেপে ঘড়ির কাঁটা।
গড়িয়েছে অনেক জল
সপ্তসিন্ধু পারে।
তোমায় আজ দেখি জান
দূর থেকে, চলে যাও তুমি!
খুলে রাখি, জানালা তবু
যদি আস তুমি
পথ ভুল করে,  কিংবা
কালচক্রের উল্টো পথে হেঁটে!!!

বাঁচতে চাই আমি :তপন কুমার মাজি



পুড়তে চাই না আমি বৃষ্টিহীন
বাসন্তী আগুনে,
ভিজতে চাই আমি বাসন্তীহীন
চিরবৃষ্টির ফাগুনে !

পাতার আচ্ছাদন নেই যে গাছে,
নেই সবুজের ভরাট-
থাকুক যতই তার ফুলের বাহার
কিংবা রক্তিম ললাট,

আমি চাই না রাঙতে সেই রঙে...
চাই না মৃত্যু পলাশীর যুদ্ধে,
বাঁচতে চাই আমি আম্রকাননে
হাজার মুকুলের গন্ধে !


অসমরেখ :সামসুল হক



জীবনের প্রত্যেকটা বাঁক ঘুরে ঘুরে
 এক একটা যাপন ঘর
সুখের পরোয়া করিনি কোন দিন
আজও করি না
জীবন আমার নিজের ভালোলাগা, 
 হিংসাহীন হালকা চালে নিজেকে ফিরে দেখা ।

হে মহাজীবন, চলেছি তোমার দেখানো পথে ...
মিথ্যা আর হিংসার শরক্ষেপ
রক্তাক্ত হই রাত্রি-দিন,
গ্রহণ চলছে সভ্যতার হৃৎপিণ্ডে
ছায়াহীন-কায়াহীন-মায়াহীন
ধূ-ধূ ঊষর মানব-জমিন ।

আজীবন তৃষ্ণা বেড়ে চলে
মরনেও নাই সুখ
সরলরেখা ভুলে সবাই বিন্দুতে দেখে মুখ ।
           

চাঁদের দিকে চেয়ে : অনিন্দ্য পাল


চাঁদের দিকে হাঁটতে হাঁটতে কখন
পেরিয়ে এসেছি পিচ রাস্তার মোড়
ঝিঁঝিঁ ডাকা আগাছার ঝোপ
আর বৈদ্যুতিক আনন্দ
চোখ নামিয়ে অস্তিত্ব বুঝলাম যখন
চাঁদের দিকে তাকিয়ে দেখি তারপর
আমার দিকে চেয়ে আছে যেন এক আফ্রিকান মেয়ের
চওড়া কপালে হলুদ কাদার টিপ
আমি চোখ নামিয়ে নিয়ে ফিরে যেতে যেতে বললাম
তোমাকে যখন প্রথম দেখি
তখন তুমি শিউলির হাঁসুয়ার মত ধারালো ছিলে
আমি তাইতো আসছিলাম
রাত পেরিয়ে
নিজেকে সঁপে দেবো বলে।

কল্পনার শেষ নেই : মান্নুজা খাতুন (মালা)





ধরে নাও!  একই পথের সারথি হবো দুজনে,

এক পা দু পা ফেলে এগিয়ে যাব গঙ্গার পাড় বেয়ে

মুগ্ধ দু নয়নে দেখব সন্ধ্যার প্রথম সাজ; তারপর!

ধীরে ধীরে পালটে যাবে শহরটা, গাঢ় হয়ে আসবে অন্ধকার।

গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে যাব বড় রাস্তার পাড় বেয়ে

বড় জোর স্টেশন অবধি যাব,  ল্যাম্পপোস্টের নীচে বসে

ধূমায়িত চায়ে চুমুক দেব;

তারপর!

স্টেশনে এসে ভীড়বে সন্ধ্যার প্রথম ট্রেন

দুরের বেঞ্চে বসে প্ল্যাটফর্মের অপর প্রান্ত থেকে

যাত্রীদের ঘরে ফেরা দেখব; স্টেশন শুন্য হয়ে এলে

আকাশের পানে চেয়ে নক্ষত্র ও তারাদের

লুকোচুরি খেলা দেখব!

তারপর! নির্লিপ্ত পায়ে এগিয়ে যাব বাসস্ট্যান্ডের  দিকে

চার পয়সায় টিকিট কেটে ফিরব গৃহের পথে;

গন্তব্যস্থলে পৌচ্ছে জানাব দিনের শেষ সম্ভাষন।

এ সব কি মন্দ দেখাবে অনুপম?