।। নয় ।।
মানুষের পয়সা হলে কতরকম ভাবে মানুষ তার ব্যবহার করে।শিল্পী সুনীল দাসের কথা মনে পড়ে যায়। একদিন তাঁর চেতলার স্টুডিওতে বসে গল্প করছি। হঠাৎ সুনীলদা বলে উঠলেন, "জানো, আমার কিন্তু এখন অনেক পয়সা হয়েছে।" হঠাৎ এরকম একটা কথার জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না। তাই কথাটা শুনেই আমি হেসে উঠলাম। উনি বলে চললেন ----- চারপাশ থেকে যদি আমার কানে আসে কেউ পড়াশোনা করতে পারছে না, সঙ্গে সঙ্গে আমি তাকে ডেকে পাঠাই। তারপর তার অসুবিধার কথা শুনে আমি তার পাশে গিয়ে দাঁড়াই। টিভিতে যদি শুনতে পাই একটা ছাত্র তার ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও পড়াশোনা করতে পারছে না। আমি টিভি অফিসে ফোন করে তার পরিচয়টা জেনে নিই।" সুনীলদা আজ আর আমাদের মধ্যে নেই কিন্তু তাঁর কথাগুলো আজও মনের মধ্যে জ্বল জ্বল করছে। সমাজের নিঃস্ব মানুষগুলোর জন্যে সুনীলদার মতো মানুষের যেন আরও পয়সা হয়।
।। দশ ।।
সেই কোন ছোটবেলা থেকে আমার মনে একটা প্রশ্ন খুব উঁকি দিত। একজন শিল্পী একটা ছবি কতদিন ধরে আঁকেন? এর উত্তর আমি নিজেও জানি। তাহলে প্রশ্ন করছি কেন? করছি এই কারণে যে আমি এই প্রশ্নের চিরাচরিত উত্তরের অতিরিক্ত কিছু শুনতে চাইছি। শিল্পীদের সঙ্গে আমার যখন ওঠা বসা শুরু হল তখন একদিন শানু লাহিড়ীকে এই প্রশ্ন করলাম। উনি বললেন, "অদ্ভুত প্রশ্ন তো! দেখো একটা ছবি আঁকতে অনেক সময় লাগে। বিভিন্ন জনের কাছে সেই সময় বিভিন্ন হয়। তবে আমারটা আমি বলতে পারি, আমি একটা ছবি তিনমাসে আঁকলেও, আসলে ওই ছবিটা আঁকতে আমার লেগেছে আসলে মাত্র তিন মিনিট। কারণ ওই সময়টুকুতে আমি আমার মধ্যে ছিলাম না। আর ওইসময় আমার হাত দিয়ে যা বেরিয়েছে সেগুলোই আগামী দিনে চিত্রমোদী দর্শকেরা আলোচনা করবে।" সত্যিই সৃষ্টির মধ্যে কতই না রহস্য আছে। য়ত শুনি ততই অবাক হয়ে যাই।
(ক্রমশ...)