নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

রাণা চ্যাটার্জী




পর্দা ফাঁস
*********





বাড়ির অমতেই হোক আর অবশেষে ছেলের ভালোবাসায় সিলমোহর দিয়ে পাত্রী নির্বাচনে বিবাহের প্রস্তুতি শুরু করার পরই হবু শশুর মশাই ঢাক পেটাতে শুরু করলেন, "বৌমা দারুন বুদ্ধিমতী,কোনো এক কোচিং সেন্টারে রিসিপশনিস্ট পদে জব করেই নাকি আঠারো হাজার টাকা বেতন পান! " কথাটা  এখনকার  হলেও না হয়  বটে কিন্তু দশ বছর আগে কোন মফস্বল শহরের কোচিং সেন্টারের বেতন এত ! শুনে হেঁচকি উঠলেও বাড়িয়ে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে বলাটা দারুন টেকনিক ,সবাই পারে না!
যেখানে সেই সময়ে সরকারি স্কুল টিচার এর মাইনে শুরু হতো আঠারো হাজারের  কিছু বেশি দিয়ে! কিন্তু তাতে কি?  উনার ঢাক পেটানোকে গ্রামের অনভিজ্ঞ মহল আত্মীয়-স্বজন পাড়া-প্রতিবেশি বিস্ময় চোখে "তাই নাকি ,আরে বাহ" বলেই খুশি  সেখানে নীরব না থাকলে বদনাম জুটবে,হিংসা করছে বলে!

কিছু কিছু মানুষ এমন টা করে মানে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে বলে বেশ মজা পান ।ভাবখানা এমন,"কেমন চমকে দিলাম ,বোকা হাঁদার দল কিচ্ছু টেরও পেলো না! কিন্তু সে বা তিনি এটা বোঝেন না ,যে তার সাধের ফোলানো বেলুন, ফুটো হলেই চুপসে যাবে । যে টুকু হৃৎগৌরব এসেছে, সেটাও লোক হাসি  হয়ে গিয়ে পড়ে থাকবে রসকষহীন এড়িয়ে যাওয়া,বা গুরুজনদের বলা যায়না ,সামনে বলা উচিতও নয়, সেই অন্তঃসারশূন্য সমীহ টুকু।

বিয়ের পরে পরেই কোন এক দুঃসম্পর্কের আত্মীয়ের বিয়ে বাড়ি গিয়েছিলাম। নতুন জামাই পেয়ে বাড়ির কর্তা, সারাদিন যে কতবার, ফিরিস্তি দিলেন,রাজকীয় খাওয়া-দাওয়ার  আয়োজন করেছেন বলে। খাওয়া-দাওয়া ,মাংস নাকি প্রচুর পরিমানে,এলাহী ব্যাপার ! রাজকীয় বিয়ে বাড়ির পরিবেশে এসে পড়েছি ভেবে বেশ গর্বিত হচ্ছিলাম  কিন্তু ভুল ভাঙলো বাস্তবের ছবি কড়া নাড়াতে! · হলোটা কি তিন নম্বর ব্যাচ থেকে মাংসের টান!  চার নম্বর ব্যাচ থেকে মিষ্টির কমতি শুরু হলো! আমরা যখন ছয় নম্বর ব্যাচে খেতে বসলাম, গোটা কয়েক শুকনো কচুরি  ছাড়া কিছুই নেই !

এখানে আমি দোষের কথা বলছি না ,বিয়ে বাড়ির মত পবিত্র অনুষ্ঠানে এত লোককে খাইয়ে ভবিষ্যতের ভাঁড়ারে টান পড়ানোর কোনো মানেই হয় না ,কিন্তু তবু এই যে বাড়িয়ে বাড়িয়ে বলা, বাস্তবের সঙ্গে এমন অসামঞ্জস্য এটা বোধহয় ঠিক নয়। 

কোন কোন বাবা-মাকে দেখি, বাইরের লোকের সামনে ছেলে-মেয়ের দারুণ প্রশংসা করেন। সাবাস ,বলে পিঠ চাপড়ে দেন আবার এটাও দেখি যত ভালোই পড়াশোনা করুক না কেন,অনেক বাবা মা বেশিরভাগই নিন্দা করে ,বকা ঝকাও। ওনাদের উদ্দেশ্য একটাই যে,সন্তান যেন শেখে ,আরো ভালো করে পড়াশোনা করে ,মানুষের মতো মানুষ হয়।

কোন এক কাক,ভাইপোর ওকালতি পড়তে যাবার খবর, যেভাবে গ্রামের লোকের সামনে দিয়েছিলেন , বেশ মজাই লাগছিল শুনে ,"বাপরে বাপ, পাঠ্যক্রমে ভর্তি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কিনা ভাগ্না হাইকোর্টের উকিল হয়ে গেছে !এমন বাড়িয়ে প্রচার  সিনেমার গতিকেও হার মানায়!

ছোটবেলা থেকে বাড়িতে অনেক পত্রপত্রিকা, সৌজন্য সংখ্যা আসার সুবাদে অনেক গল্প পড়তাম সে সব স্মৃতির অতলে তলিয়ে গেলেও একটা অবাক করা মজার গল্প পড়েছিলাম ।লেখকের নামটা ঠিক মনে নেই তবে গল্পের নাম ছিল," রুপার বর মাস্টার"। সংক্ষেপে বিষয়টা ছিল," গ্রামের এক সাধারণ মেয়ের হঠাৎ বিয়ের সম্বন্ধ আসে মাস্টার পাত্রের সাথে ! চাকরির এমন আকালে,ভালো পাত্র হাত ছাড়া কি করা যায় ! তাই মহা ধুমধামে বিয়ে হয়ে গেল রুপার।

অষ্টমঙ্গলায় বেড়াতে আসা জামাই কে ফুরসৎ পেয়ে,কেউ ইস্কুল টা কোথায় জানতে চাইতেই বিপত্তি। ঝোলা থেকে বিড়াল বেরিয়ে পড়ার উপক্রম। জামাই ও অবাক,সে জানালো ,"স্কুল মানে?আমি তো ব্যান্ড পার্টির ব্যান্ড মাস্টার!!" এক্ষেত্রে অবশ্য বড় মিসান্ডারস্টান্ডিং ই দায়ী।ভালো পাত্র হাতের নাগালে চলে  যায় পাছে, নানা প্রশ্নে! আবার পাত্রপক্ষ জানিয়েছেও ভাসা, ভাসা যে পাত্র মাস্টার! তবু তথ্যের অভাবে এত বড় অঘটন ! 

কখনো দেখি পাড়ার কোন বাড়ির গার্জেন, পাড়ার অন্যান্যদের প্রতি  দৃষ্টি নিক্ষেপ করে কথা ছোড়েন ! ভাবখানা এমন যেন,আমার ছেলে বা মেয়ে সোনার টুকরো আর বাকিরা দোষে ভরা!কিন্তু চোখ ,কান মাথা খেয়ে ,অধিক প্রশ্রয়ে সেই বাড়ির ছেলে বা মেয়ে, প্রেম-ভালোবাসা,প্রণয়ে জড়িয়ে অঘটন ঘটায় যখন ,মুখে কুলুপ এঁটে,খিল দিয়ে স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করে দেন সেই বাড়ির অভিভাবক গণ। কোন সমালোচনা করে বলছি না,রোমিও দাপটে ধোঁকা খাওয়া সত্যি খারাপ কিন্তু তা বলে বাকিরা সব খারাপ, আমি ভালো আর আমার দুধে ভাতে থাকা সন্তানরা সেরা,কেবল, এটা ঠিক  নয়।

একবার  বন্ধুর পিসির বাড়ির ছোটখাটো  বারোয়ারি পুজোতে গিয়ে বেশ অভিজ্ঞতা হয়েছিল।সামান্য আয়োজনের দু চারটে দোকান আসা মেলায় কোনো এক মধ্য বয়সী আধিকারিক জামাই ঘুরে ফিরে দেখছিলেন। কেউ কুশল কামনা করলেই ,তাদের ঘুরে ফিরে উত্তর দিচ্ছিলেন যে,ওনার ছেলে এবার,মাধ্যমিকের রেসাল্ট বেরুলে মেধা তালিকায় প্রথম না হলেও পাঁচের মধ্যে থাকবেন।

এতবার করে উনি ফাটা  ক্যাসেট বাজাচ্ছিলেন ছেলের কি বলবো!গ্রামের সাদা সিধে সরল মুখের মানুষ গুলো চমকে ধন্যবাদ দিচ্ছিলেন ওনাকে।এরই মাঝে ওনার ছেলেটি ,সমবয়সীদের সঙ্গে খেলতে খেলতে বাবার কাছ থেকে কুড়ি টাকা নিয়ে জিলাবি কিনে,  পিছন দিক দিয়ে একাই খেতে খেতে চলে গেল ! একা যে খেতে নেই ,ভাগ করে খেতে হয় কে শেখাবে ওকে? এটা ওকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। একা খেয়ে খেয়ে আর  পিঠ চাপড়ানো প্রশংসা দেখেই বড় হয়ে ওঠা তার।

এই বিষয়ের উপর যত আলোকপাত করব,তার শেষ নেই।মানুষের চরিত্রের নানা দিক নগ্ন ভাবে ফুটে উঠতেই থাকবে । ফেসবুক হোয়াটসঅ্যাপ জমানায় নিত্যনতুন অ্যাপের দৌলতে , সবাই এমন ঝাঁ-চকচকে নিজেদের ছবি আপলোড করে,বেশ দারুন লাগে। কিন্তু সে বা তিনির সঙ্গে বাস্তবের ছবির  মিল থাকাটাও জরুরি।তবেই না আমার আমিতে আমার বাস! জানিনা বাপু এতে, মনের কনফিডেন্স ঠিক কতটা বাড়ে বরং মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষনে  এটা এক প্রকার হতাশা, ফুরিয়ে যাবার বহিঃপ্রকাশকেই ইঙ্গিত করে।

এইভাবে কখনো কেমন পর্দাফাঁসের বিষয় প্রকাশ্যে,গোপনে,মনের গহনে বেআব্রু হয়ে যায়।আজ  মানুষের কিছু চেনা প্রকৃতির,এক ঝলক ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করলাম ।এখানেই শেষ নয় আসলে এই আলোচনার সত্যিই কোন শেষ নেই।

কার্তিক ঢক্






মালিনী 
******

  

কে তুমি বাজাও শাঁখ
সন্ধ্যারতি শেষে। 
সুগন্ধি জ্বেলে দাও
উন্মুক্ত দ্বারে --

এতোটা নমনীয়তা 
কি করে রেখেছো ধরে
বুকের ভিতর ! 

ইঁট-কাঠ পাথরের স্তুপ --
পায়ের যন্ত্রণা ভুলে
কি ভাবে রেখেছো তুলে দুই হাতে
সবুজ ঘাসের ঘর --
অপরূপ সৌন্দর্য্য তার...

চন্দন বাসুলী





                 রক্তাক্ত অন্তর্বাস 





 উন্নয়নের খাম খেয়ালী হওয়ায় জঙ্গলে রাজপথে ,
 প্রাসাদে বস্তিতে উড়ে বেড়াচ্ছে রক্তাক্ত অন্তর্বাস ;
 ডিজের শব্দে চাপা পড়ছে ধর্ষিতার তীব্র আর্তনাদ ,
 ক্ষিপ্র কাম দণ্ডের প্রবল আঘাতে ছিন্নবিন্ন 
 সহস্র শান্ত গোলাপের কোঁকড়ানো পাপড়ি ।

ডান বাম , উত্তর দক্ষিণ দাবি করে আমাদের বলে 
তখন মহামন্ত্রী নিলাম চালায় বয়সের বিচারে ;
শোক মিছিলে পায়ে পা মিলিয়ে রাস্তায় নামে বুদ্ধিজীবর দল ,
অবশেষে ভাষণ শুনে মুগ্ধ হয়
এই বাংলার আপামর মূর্খ  জনসাধারণ !

অক্ষয় কুমার সামন্ত






মৎস্যকন্যা
********* 



ঠিক করে উঠতে পারছিল না কিভাবে কথা বলবে। আসা-যাওয়ার পথেই আলাপ। খুব স্মার্ট মেয়ে মধুরীমা। তার দামী দামী স্কার্ট দেখে অল্পেশের কথা বলার সাহস হারিয়ে যেত।
খুব সাদা মাটা অল্পেশ। ধুলো কাদা মেখে একটি প্রত্যন্ত গ্রামে তার বড় হওয়া। ছোটবেলা থেকে তার পড়াশোনায় ঝোঁক ছিল। তাই দারিদ্র্যকে পিছনে ফেলে সে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করল। সরকারি স্কলারশিপ পেয়ে একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হয়। কলেজে 1st সেমেস্টারে সে রেজাল্টও ভালো করে।  বাসে দেখা হলে কথা হতো। তারপর কলেজমোড় থেকে দশ মিনিটের হাঁটা পথে তার সঙ্গী হওয়ার চেষ্টা করতো মধুরীমা।
অল্পেশের ছাতা হারানোর ব্যামো ছিল খুব। প্রত্যেক বছর মা একটা করে ছাতা দিতেন। কিন্তু কতোবার যে চায়ের দোকানে ছাতা ফেলে আনমনে হাঁটতে শুরু করেছে তার হিসেব নেই। তাই তার কাছে ছাতা না থাকাটাই স্বাভাবিক। বৃষ্টি থামার অপেক্ষায় কলেজমোড়ে দাঁড়িয়ে থাকতো সে। কিন্তু মধুরীমা তাকে ছাতার তলায় ডেকে কথা বলতে বলতে কলেজে যেতো। গ্রীষ্মের রোদেও সে ছাতা নিয়ে অল্পেশের অপেক্ষায় থাকতো। ধীরে ধীরে কথাগুলো গভীর হয়। তাদের কথার সুরে হাওয়া বৃষ্টিকে ডেকে আনতো। অল্পেশ বুঝতেই পারে নি কখন সে তার মনের গভীরে মধুরীমার জন্য আসন পেতে ফেলেছে। অনেককিছু বলবে ভাবে কিন্তু নিজের ছেলেবেলা মনে এলে সব ইচ্ছেগুলো আহত হয়। কথায় কথায় একদিন মধুরীমা বলেঃ আমি শুধু ছাতা হাতে নয়, সারাজীবন তোমার ছায়াসঙ্গী হয়ে থাকতে চাই।
অল্পেশের ভয় হয়। চোখের সামনে দেখতে পায় কতো সুন্দর প্রেমগুলো বিয়ের পর কেমন যেন হুড়মুড়িয়ে পড়ে। কথা রাখার থালায় অভাব পড়লেই ওঠে তোলপাড়।
সেটা ঝড় হয়ে নিভিয়ে দেয় ছোট্ট সংসারের ছোট্ট উনোনকেও। সাজানো কল্পনার ডানা হঠাৎ যেন বাস্তবের ঝড়ে পথ হারিয়ে ফেলে। একসঙ্গে বয়ে যাওয়া দুটো জীবন যেন উবু হয়ে বসে থাকা সারি সারি প্রস্তরখণ্ডে ধাক্কা খেয়ে নদীর মতো দুদিকে বইতে থাকে। রাতের বিছানাগুলো যেন দম্ বন্ধ হওয়া শ্বাস-প্রশ্বাসের গুমোটে ঘন্টার কাঁটার একটু হেঁটে চলা। এইসব ভাবতে ভাবতে তার ইচ্ছার রং গুলো যেন মরা স্রোতে ভাসতে ভাসতে জল-কাদা-বালুকণায় ডুবে যায়।
সেদিন মধুরীমা কলেজে আসে নি। সল্টলেক থেকে একা একা ফিরছিল অল্পেশ। যাদবপুরে নেমে একা একা হাঁটতে হাঁটতে ঝিলপাড়ের কাছে গিয়ে বসল। তার চঞ্চল মনের ভাবনাগুলো স্থির হতে হতে সে দেখতে পেল মাছগুলো শ্বাস নিতে নিতে জলের ওপর ভাসতে শুরু করছে। চিন্তার ঘনঘটায় ক্লান্ত চশমার ফাঁক দিয়ে দেখতে পেল মধুরীমা যেন মাছ হয়ে তার সংগে কথা বলতে ভেসে উঠছে। সেও বিড়বিড় করে একান্তে তার সংগে কথায় মগ্ন হলোঃ

- যদি তোমাকে সাগর থেকে তুলে আনি?
আমার এ ঘরের উষ্ণ মরুতে থাকবে কেমন করে?

- যদি সত্যিকারে চোখ তুলে তাকাও
তোমার তারায় খুঁজে নেব জল- জীবনের সম্বল।

- আমার সামান্য জীবন- পায়ে আটকায় পথ
টিউশানের টাকা চলে যায় মেসের খরচায়
তোমাকে রাখবো কোথায় ?

- ভালোবাসার ভিক্ষা চেয়ে চেয়ে যে আগুন ওঠে
মনের ভেতর তারও আঁচ লাগে আত্মায়
তুমি শুধু রেখো হৃদয়ের বারান্দায়।

- যদি আর না ফেরাই চোখ তোমার চোখে?
- আমার চোখের কোনে খুঁজে নেব জল
আমার ভেসে থাকার আজীবন সম্বল!...

কুনাল গোস্বামী




রূপকন্যা......
 ********



জন্মান্ধ মেয়েটি স্বপ্ন দেখেছিল..
হয়তো কোনোদিন সেও দেখবে শরতের সোনালি রোদ্দুর,
কিংবা বসন্তের কচি বাতাবির মতো সবুজ ঘাসে শিশিরবিন্দু জমে থাকবে তার অনুভূতি গুলো
তার আগুনলাগা ডানা মেলে উড়তে চেয়েছিল দিগন্তরে
যেখানে সাদা সাদা মেঘপুঞ্জ তার ঘনকালো চুলের মতো ছড়িয়ে থাকবে নীলাম্বরে;
ছিল এক বামুনের ছেলে----
সে খুব পিরিত করে ডাকতো তাকে রূপকন্যা বলে
সেও কি জানতো এমন অদৃষ্টের নিষ্ঠুর পরিহাস অপেক্ষা করেছিল তাদের তরে?
মেয়েটি চিৎকার করতে চেয়েছিল....
    তবে তাকে চিত করা হল
সে ধর্ষিত হল এক পাশবিক ধর্ষকের কাছে
   সেই ছেলেটির চোখের সামনে
সে শুধু নিরুপায় হয়ে দেখেছিল সব,
  দেখেছিল তার রূপকন্যা কিভাবে
শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করা পর্যন্ত বারেবারে আঁতকে উঠেছিল!
আর আজ এক আত্মহারা কবি এইসব লিখতে বসে রক্তঅশ্রু ঝড়িয়ে বারংবার বলছে------
       ধংস হোক, ধংস হোক এমন বর্বরতার।

শোভন মণ্ডল




নিথর অবয়ব
                                

 
রেডিও-বার্তায়  কে যেন ছড়ালো গুজব
সেসব আগুনের ধোঁয়ায় নীল হয়ে যাচ্ছে শিরা-উপশিরা
পোর্সেলিনের টব থেকে ঝরে গেল সন্ধের ফুল
হাওয়াকল শুষে নেয় পুরনো নুন
আধো প্রেমে চোখ জুড়িয়ে যাচ্ছে দেখে 
থেমে যায় সাধের দোলনা
প্রাচীন গাছের গায়ে যে ক্ষত লেগে আছে তার দখল নিচ্ছে লাল পিঁপড়ের দল
একটা ফ্যাকাসে সভ্যতার বুকের ওপর খেলায় মগ্ন 
অজস্র নেকড়ে
এসবের মধ্যে থেকে এভাবেই লাল মোরামে ছড়িয়ে পড়ছি নিজে

কাক এসে খুঁটে খাচ্ছে নিথর অবয়ব