পুজো এলে
**********
পুজো এলে -পুরনো উঠোনটায় একটা স্থলপদ্মের গাছ মনে পরে ।
ফ্রক পড়া একটা মেয়ে -ঝুড়িতে স্থলপদ্ম গুলো সাজিয়ে দুর্গা মণ্ডপে নিয়ে যেত পুজোর চারটে দিন ।
ষষ্ঠীর সকালটা কি দারুণ প্রত্যাশা নিয়ে আসত ।
মণ্ডপে তখন ব্যস্ততার চূড়ান্ত প্রস্তুতকরণ ।
বাবা বলতেনা -'মা এসে গেছে ষষ্ঠী তলায়' ।
মেয়েটা কোথায় যে খুঁজবে সেই ষষ্ঠীতলা বুঝেই পেতনা ,
তবু অলীক স্বপ্ন সাজিয়ে নিয়ে দেখত কোন একটা গাছের তলায় মা দুর্গা দাঁড়িয়ে রয়েছে ছেলেমেয়েদের নিয়ে । পুলক লাগত মনে --!
শরৎকালীন সকালগুলো নদীর চর ধরে আজও আসে ।
ফ্রক পড়া মেয়েটা প্রবাহিনীর চরের ওপর সাদা কাশফুলের পথে হাঁটতে হাঁটতে কখনো যেন বদলে গেলো ।
বদলে গেলো মহালয়ার ভোর ,
শরৎ আকাশ -
কাশফুল -
এমনকি দুর্গাপুজোর মন্ডপটাও ।
পুরনো উঠোনটা এখন সিমেন্ট দিয়ে বাঁধানো ।
স্থলপদ্ম আর ফোটে না ।
মেয়েটাও আর এ পাড়ায় আসে না পুজোতে ।
তবে তার চোখ এখনও সাদা সাদা মেঘে, সাদা কাশফুল খুঁজে বেড়ায় ।
উঁকি মেরে খুঁজে আনতে চায়-
সেই সকালটা -ঢাকের শব্দ , নদী থেকে ঘট তুলে আনা , কলাবউ এর স্নান ।
চণ্ডীপাঠের শব্দ ভেসে আসলে -!
রোমকূপে কেমন শিহরণ হয় ,
মনে পড়ে, দূরে অনেক দূরে একটা ফ্রক পড়া মেয়ে ।
অমনি আনমনে কেঁদে ওঠে ভেতরটা ।
শারদ সকালগুলো এখন নতুন শহরে ভাসে ।
ফ্রক পড়া মেয়েটির মুখে , মনকেমনগুলো সাদা কাশফুল হয়ে এখনও দিব্যি হাসে ।