নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

সুজান মিঠি



প্রতিবাদ
********




শোন্-রে হলো বুক শুলো হয়েছে অনেক, নয় আর,
বাসী পোড়াতে তেজি এখন খাবি উল্টো মার।
কি বললি, পাতবো হাত তোর সামনে? গেছে দিন তোর।
শোন্-রে হলো বুক শুলো মুখ লুকানো চোর।
লুকিয়ে খাবি, সামনে চা'বি চলবে না এসব ছুতো,
অনেক আগে বিড়ালি তোর ভয়ের চোটে শুতো ।
আজ বিড়ালি মানুষ ওরে চরবড়িয়ে ফোটে,
হির হিড়িয়ে তুলবো চল নারী আইন কোর্টে।
ঘরের কোণে মরদ-রে তুই সাপের তেল খুঁজিস,
এসব ছেড়ে কত মুরোদ দ্যাখা দেখি, ইইস।
লেকচার-টা মারবি পরে আগে ঠান্ডা কর,
ভারী বুঝি জোয়ান মরদ হয়েছিস যে বর।
ওসব নাটক চলবে না আর মুখ চেপে মার দিবি ,
হাত-টা লাগা দেখি সাহস এক ছোবলেই ছবি।
শোন্-রে হুলো বুক শুলো করগে রান্না আজ,
শরীর-টা নেই ভালো করে গুচ্ছেন কাজ।
সারাদিনের ছুটি আজ ঘুমাবো একটা দিন,।
কি-রে হুলো যা শিগগির, করছিস্ মিনমিন!
বড্ড জ্বালাস নরম পেয়ে এবার উল্টো হবে,
মার কখন দিয়েছিলিস কখন কখন কবে,
ভাব ভাব বসে এবার মিথ্যে নাটক ছেড়ে,
বা-রে হুলো রান্না খানা করেছিস তো বেড়ে।
করবি এমন মাঝেমাঝে আমিও বসে খাবো,
আজ বিকালে ভাবছি একবার পার্ক বেড়াতে যাবো।
নিয়ে যাবি সঙ্গে করে কিনে দিবি চাইবো যা,
দেখবি আমায় লাগে কেমন গয়না ভরা গা।
না না পা আর টিপতে হয়না রাখ,
ভয় পেয়েছিস বুঝছি ভালোই তবু এসব থাক।
তবে কান খোল্ শোন রে হুলোর জাত,
ভাববি মানুষ আছে ঘরে যতই রাঁধুক ভাত।
তোর ছেলেটা ধরেছে পেটে তুইও ছিলিস গর্ভে কারো,
পুরুষ বলে হম্বিতম্বি এগুলো এবার ছাড়ো।
নারীদিবস চাইনা ওসব বাসবি ভালো রোজ,।
কানটা খুলে এসব কথা ভালো করে বোঝ।
একটা বোতল কিংবা বিড়ি ঘরে যদি পাই,
সব পুড়িয়ে দেখবি তখন থাকবে পড়ে ছাই।
ভাববি মানুষ বউ-টা তোর, তোর ঘরেতেই থাকে,
সব ছেড়ে তোর্ জন্য সবকিছু তোর্ রাখে।
বুঝিস্ যদি ভালো কথা আদর পেতেও পারিস্,
তা নইলে ধরবো টুঁটি দেখবি কেমন মরিস্!

অভিষেক মিত্র




ক্ষুধার্ত শিশু আর ঈশ্বর

ক্ষুধার্ত শিশুটিকে বললেন ঈশ্বর,
“আমি তোর জন্য দুনিয়ে বানাইনি,
তুই কি স্টক মার্কেটের শেয়ার কিনেছিস?
ইনভেস্ট করেছিস আমার কর্পোরেশনে,
তেলের ক্ষনি বা ক্রুডে?
দুনিয়াটা ধনীদের জন্য,
যারা ধনী হতে চায় তাঁদের জন্য।

আমি এত কষ্ট করে দুনিয়াটা তোর মত
ভিখিরিদের জন্য বানাইনি।”

অজাত শত্রু




দেশদ্রোহীর প্যারোডি
*****************
(এ মৃত্যুর উপত্যকায়)



জনগণ মন অধিনায়ক ভাগ্য বিধাতা ,
জ্বলছে দেশ ,রক্ত ভীষণ,"স্বাধীনতা"।
পাঞ্জাব সিন্ধু গুরুরাট মারাটা
মোমবাতি জ্বালিয়ে প্যারোডি লিখছে বিধাতা।।

         এ আমার ভারত হে ,আমার ভারত হে..

গাড় মেরে দিয়ে দেশের ,গাড় মেরে দিয়ে ডেমোক্রেসি,
কৃষক শ্রমিক আত্মহত্যা করে, কেউ চুষে খায় আরো বেশি ।
দ্রাবিড় উৎকল "বাংলা" হয়েছে বঙ্গ ,
মুখ খুলে দেখো "দেশদ্রোহী" বলে করবে উরু ভঙ্গ।।

     এ আমাদের মৃত্যুর উপত্যকা হে ..মৃত্যুর উপত্যকা হে....

মুখোশ গুলো আজ দারুণ,পতাকা হাতে উজ্জাপন স্বাধীনতা'র
কালো টাকার করোপসন ,খুনি ,ধর্ষক চালাচ্ছে দেশ,তারাই মহান নেতা।

    এ আমাদের ডেমোক্রেসি হে ,ডেমোক্রেসি হে

চাকরি দেবে প্রতিশ্রুতি,ফর্ম ভরে দেয় গাড় মেরে
ব্রেকিং নিউজ অভিনেতারা সংবাদ শিরোনামের ।
এমনি ভাবেই দেশ চলছে আবার ছাপ্পা ভোটে রক্ত চোষা ,
শহীদের রক্তের সাদা পাতায় ভাগ্য লিখছে নেতা ...।

এ আমাদের স্বাধীনতা হে ,এ আমাদের স্বাধীনতা হে

কটা সৈনিক মরলো বর্ডারে ,নেই কোনো খোঁজ
সেলেব্রিটি ধর্ষক আবার নেতাও আজকে করে আপসোস,
তবুও আমরা "দেশদ্রোহী"মুখ খুলেছি যেই,বাক স্বাধীনতা।
ভাতের অভাব ফুটপাতে,প্যারোডি লিখছে বিধাতা....

জয় হে ,ভয় হে ভয় হে ,এ স্বাধীনতা হে ,এ ভারত বিধাতা হে ,

ভয় ভয় ভয় ভয় হে.....



(বিঃদ্রঃ ক্ষমা করে দেবেন প্রিয় কবি রবীন্দ্রনাথ, জাতীয় সংগীত লিখতে গিয়ে অন্য কিছু লিখে ফেলেছি।

জনগণের কাছেও আমি ক্ষমা প্রার্থী ।ক্ষমা করবেন মন্ত্রী মশাই,নেতা ...
ক্ষমা করবেন বিধাতা ...)

শুভ্রা দত্ত






নারী/নাড়ি
**********



কিছু কামোন্মোত্ত, বিকৃত মনের, দুপেয়ে জীব,
যাদের ক্রিয়াকলাপে বনের পশুরা কাটে জিভ।

তাদের কাছে নারীর সিম্বল,
  অনলি ব্ল্যাকহোল।

কিন্তু নারী, আপন সংসারে
সমাজের সর্বস্তরে,
শিরা উপশিরা রক্ত জালিকা সংবলিত নাড়ি।

সুদীপ্ত বিশ্বাস





উন্নয়ন
*******


চড়াম চড়াম ঢাকের বাদ্যে
বাংলাটা আজ কাঁপে,
কিছু বোকা লোক বেঘোরে মরলো
উন্নয়নের চাপে!
ভোট নিতে গিয়ে কেউ হল লাশ
ফিরল না কতজন
গণতন্ত্রের মৃত্যুর পরও
দাঁড়িয়ে উন্নয়ন!
গণতন্ত্রের লাশ পড়ে গেছে
কফিনে পচছে দেহ
কিছু লোক তবু বিশ্বাস রাখে
প্রতিবাদ করে কেহ!
তবু কিছু লোক হয়নি বিক্রি
কিছু লোক আজও খাড়া
অমেরুদণ্ডী দলে ভারি তবু
সোজা কিছু শিরদাঁড়া!

রণধীর রায়




আমি কেন মেয়ে 
 **************




নদীর গোপন স্রোতে ভেসে আসা রাগভৈরবী সকাল- এক মেয়ে। যদিও তীব্র আপত্তি ছিল প্রসবঘরে - আবার মেয়ে? মায়ের কাতরানি আজ হাতছানি দেয় বিশ্বব্রহ্মণ্ড্য জুড়ে- "মা...আমি আজও মেয়ে- মাগো আমার শরীরের শিরায় শিরায় শুধু মেয়েরক্ত- বইছে- মানুষরক্ত না" - আমি কেন মেয়ে? খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থান আমি সব পাই নিয়ম করে কিন্তু শিক্ষ্যা-পুষ্টি-সংস্কৃতি চুরি করতে হয় ভাইদের কাছ থেকে- খুব গোপনে- নিঃশব্দে- সরীসৃপ! আমি জোর করতে পারিনা- ছোটথেকে শেখানো হয়- আমরা দুর্বল! " মা...আমি আজও মেয়ে- মাগো আমার শরীরের শিরায় শিরায় শুধু দুর্বলরক্ত বইছে..."

 কোনও পুরুষ জানে প্রসব যন্ত্রনা কাকে বলে?   

আমি কেন মেয়ে?   

বিদ্যুতের চোখ রাঙানি তীব্র গর্জন মেঘ আমি মেয়ে। মহিষাসুরমর্দিনী দশভুজা শক্তি আমি মেয়ে।  ঘামেভেজা দুপুরের একবুক তৃষিত জল আমি মেয়ে। যুদ্ধশেষে শান্তির সাদা পতাকা-সুখ আমি মেয়ে। কুলেফেরা দিশেহারা নাবিকের উত্তাল নাচ আমি মেয়ে। পানশালায় মদিরার শেষ চুমুক আমি মেয়ে। ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশের সৃষ্টি-পালন-বিনাশ আমি মেয়ে। তবুও আমি মেয়ে, মানুষ নই। 

আমি কেন মেয়ে?
আচ্ছা আমি যদি মেয়ে না হয়ে অন্যকিছু হতাম? অন্যকিছু-কেমন হতো? ধরো, আমি আগুন- বিভিশিখা- তান্ডব- তোমার ভালো লাগতো? ধরো  আমি ব্যাধি- জরাজীর্ণ সমাধি-তোমার ভালো লাগতো? ধরো আমি হত্যা-নারকীয় বাগদত্যা- তোমার ভালো লাগতো? ধরো আমি বিষ- মৃত্যু অহর্নিশ - তোমার ভালো লাগতো? 

হে ঈশ্বর যদি তুমি মেয়ে হও বদলে নাও!