নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

তৌশিক ঢালী




বর্তমান সমাজ
**************



গর্ব করে বলি মোরা স্বাধীন ভারতবাসী,
মাতৃক্রোড়ে কন্যা মোদের হয়ে যায় বাসী।
রাজনীতির বেড়াজালে বদ্ধ মোরা,
খুনখুনি,মারামারি অশান্তিতে ঘেরা।
সবদেখে সববুঝে পথ চলি আজও,
প্রতিবাদের ভাষাটুকু মুখে নেই কারও।
ঘর ভাঙছে,মন ভাঙছে, ভাঙছে নদীর কূল
শিক্ষিত হয়েও মোরা করে যাচ্ছি ভুল।
স্বাধীন,স্বাধীন,স্বাধীন মোরা করি হইচই,
নিভৃতে একান্তে ভাবি স্বাধীনতা কই।

অভিজিৎ দাসকর্মকার




খামোশী
********



ভিনদেশী তারারা রাতের চিলেকোঠার দরজায় শিকল তোলে ট্রয় পড়ে সিয়াচেন পড়ে ভৌগলিক লাভা গলে যায় ম্যাকমোহন বরাবর

লাল-নীল টেবিল পাতে
ঘুলঘুলি তে অসংখ্য রিমিক্স গান 
পরকিয়ায় ব্যস্ত কূটনৈতিক  লিরিক 

খণার কোটেশন পড়ি
কক্ষপথ থেকে নেপচুন পাঠ করি তিব্বতীয় মহামন্ত্রের গায়ে অঙ্ক লিখি আর-
         দশ ঘরের ধারাপাতি পথ
          আঠারো ঘরের নামতায়
কবি জীবনের জড়তা ত্রিকোণমিতির তালগাছ হয়ে যায় 
লম্ব আর ভূমীর বর্গ-যোগফল: বাঁট রাহা থা যাব খুদা...
দু-বাহুর দূরত্বে সংসার বাড়ে:দো প্যায়র বাড় রাহা হ্যায়...

সন্দীপ ভট্টাচার্য



তোর জন্য
 *********         

           (১)
তোর মায়াবী মনের ছায়াপথে
আমার নামাজি আকুতি
হাটখোলা বুকে আরও একবার
নিঃস্ব হবার প্রণতি
           (২)
গজল সুরের রোদ্দুরে তুই
হেঁটেছিস শুধু উদাসীন
নূপুরের গান মনের উঠোনে
লুকোনো ব্যথার অংশিন্
          (৩)
আস্কারা দিলে বসন্ত আর
আড়াল খুঁজলে বর্ষা
দখিনা বাতাসে বৃষ্টি ফোঁটাতে
স্বপ্ন সুখের তিয়াসা
          (৪)
আগুন হয়ে আয় না ধেয়ে
জ্বলবো আমি দাবানলে
নতুন করে উঠবো বেঁচে
তপ্ত ছোঁয়ায় মরার ছলে
         (৫)
পারলে চোখের জল হয়ে যা
ভাসবো আমি পাল তুলে
চাইলে না হয় ঝাঁপই দেবো
কপালে ভাসা উদাস চুলে

বিকাশ দাস






দুষ্টুমি



তোমার নিঃশ্বাস আচম্বিত চুম্বনের গহনে
উড়িয়ে দিগন্তে    অন্তহীন রহস্য গোপনে
মোহের দরজা জানালা ভেঙে নিজের মনে
আলাপী আকাশ মেঘবরণ আমার শিহরণে 

তোমার সোহাগ মাখা বিলোল দুষ্টুমি
কবিতার মতো দৃষ্টি কাড়া স্বাধীন ভূমি
সৃষ্টি ছাড়া বৃষ্টি          প্রসন্ন মুখর সৃষ্টি
সঙ্গোপনে লুকানো ঝনৎকারে
উষ্ণ মধুর আলিঙ্গনে   তুষার-শীতল শরীর
নিরাময় 
উচ্ছিত সব কথার স্তব্ধতার  গভীরে হৃদয়
ঋতুময়  

হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়



বৃষ্টি দুপুর






মেঘ করেছে এখানে খুব
আকাশ কাজল কালো
বৃষ্টি দুপুর আজকে হলেও
বৃষ্টি দুপুর নয় ।
বৃষ্টি দুপুর মানে জানি 
তোমার আমার বৃষ্টি
সেই তুমি আজ নাগালে নেই
অনেক দূরে ব্যস্ত ।
তুমিই যদি না থাকো তো
ঝরবে কোথায় বৃষ্টি ?
মনের মাঝে তুমি মানেই
বৃষ্টি মিষ্টি মিষ্টি ।
এখানে তাই বৃষ্টি মানে
সারাটাদিন কালো
সেই কালোতে ঢেকে আছে
ইজেল ক্যানভাস।
বৃষ্টি আজকে রঙ ঢেলেছে
বৃষ্টি আজকে তুলি
চোখের সামনে বৃষ্টি প্যালেট
বৃষ্টি ক্যানভাস ।
বৃষ্টি মেখে বৃষ্টি হেসে
বৃষ্টি নামে তুমি
বৃষ্টি জলের শরীর নিয়ে
ঝরছে অঝোর বৃষ্টি ।

তপন জানা



আমার দুর্গা
**********


দুর্গা দেখি পথের পাশে;ঝুপড়ি ঘরে।
দুবেলা দুমুঠো ভাতের অভাবে শুকিয়ে মরে।
ছেঁড়া পোষাকে;নোংরা চুলে
রাস্তার মাঝে ভিক্ষা করে;
উত্সব ভুলে।
দুর্গা দেখি খাওয়ার দোকানে চায়ের ঠেকে;
বাসন মাজে; কাপ ধোয় দুঃখ শোকে।
সন্ধ্যা বেলা বাড়ি ফিরে জ্বর গায়ে;
ঠান্ডা ভাতে পেট ভরায় মায়ে ঝিয়ে।
দুর্গা দেখি বেশ্যালয়ে;খোলা শরীরে
সারাদিন রাত শরীর বিকোয় টাকার তরে।
শরীর নয়তো ;বিবেক বিকায় অনাহারে মরার ভয়ে।
দুর্গা দেখি পাহাড় কোলে তপ্ত রোদে
মাথায় কাঠের বোঝা নিয়ে।
বুকের পাঞ্জরে মচকা লাগে হাওয়া র ঘায়ে।
দুর্গা দেখি খনির ভেতর কয়লা  কালো চামড়া নিয়ে;
জট পাকানো লাল চুলে পাগড়ি বেঁধে।
দুর্গা দেখি ইট ভাটায়;চা বাগানে ;তামা খনির গর্ভে
কাদে অর্ধাহারে;অনাহারে।
জীবন যুদ্ধের ইতিহাস লেখে
বন্ধ কারখানার হাড় পাঞ্জরে।
দুর্গা  দেখি ঝোপের আড়ালে;ফাঁকা মাঠে;বন্ধ কারখানার ফাঁকা ঘরে
রক্তাক্ত উলংগ শরীরে মরে পড়ে।
রাতের হিংস্র অসুরের দল ভীষণ লোলুপতায়;ধারালো কামফলাকাগ্রে তারে খেয়েছে ছিঁড়ে।
তবু দেখি আমার দুর্গা
রোদে পুড়ে তামাটে শরীরে
সকরুন দৃষ্টি নিয়ে হেটে যায় জীবনপথে।
আগামীর নব অরুন প্রভাত দেখাবে বলে এই নতুন সভ্যতাকে।