নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

মৌসুমী ভৌমিক




লাফিং ক্লাব 
*********




জানিস তো
কেউ আজকাল হাসতে চায় না।
কাল যে মেয়েটি কথায় কথায়
খিলখিল করে হেসে উঠতো-
জীবনের যাঁতাকলে পড়ে আজ
সে হাসতে ভুলে গেছে।
হ্যাঁ, কথায় কথায় কান্নাটা ঠিক চলে আসে।

জানিস তো, কিছু কিছু কথারা শুধুই কথা।
যেমন ধর - ছেলেদের নাকি চোখে জল আসতে নেই।
অথচ দেখ - ছেলেগুলোকেও হাসতেই দেখি না।
ছুটছে তো ছুটছেই
পিষছে তো পিষছেই।
দিনান্তে জামার কলারে দীর্ঘশ্বাস মুছে গোপনে
জলটাও মুছে রাখে।

জানিস তো
সবাই এখন অভিনয়টা ভাল শিখে গেছে।
প্রতিটা বাড়ি - যেন এক একটি রঙ্গমঞ্চ।
আজ আর রিহার্সালের প্রয়োজন পড়ে না।
হ্যাঁ, হাসির জন্য শুধু রিহার্সাল দরকার।
তাই আজ পাড়ায় পাড়ায় লাফিং ক্লাব।

রূপা রায়




শীত নামুক
*********




বেশ শীত নেমেছে তোমার শরীর  জুড়ে
বেশ তো আরো একটু শীত না হয় জড়িয়ে ধরুক তোমার ফাটা ঠোঁট দুটিতে।
পিঠের শিড়দাঁড়ার ভিতর  কেঁপে উঠুক না হয় আর ও একটু জোরে।
 বেশ শীত নেমেছে তোমার বুকের উপর;
নামুক না হয় আর একটু বেগে
প্রশস্ত ওই বুকের উপত্যকা ডুবে যাক বরফে।
তুমি ভাবছো হয়তো আমি ভুল বকছি,
 তবু আমি চাইবো তোমার চোখে উঠুক তুষার ঝড়,
সেই তুষারে চাপা পড়ুক  আমার চোখ ,মুখ, হাত, পা
হিম হয়ে যাক উষ্ণতা, তবু ঠোঁট চেপে থাক ঠোঁটে,
 হাত ধরে থাক হাত , মুখ গুঁজে থাক বরফের উপত্যকায়,
তবু আমি চাইবো শীত নামুক তোমার শরীর বেয়ে
 আরো বেশী শীত  ঝরুক তোমার কপাল চুঁইয়ে শক্ত দুটি  কপোলের পরে,
আরো একটু শীত নামুক...


জয়তী দাস




এখনো অপেক্ষা
*************




  আমার তো প্রতীক্ষা ছিলো --
  আসতে আসতে, সকল দরজা জাগিয়ে এসেছি
  অন্ধকারের পাতায় লিখেছি আগামী আলোর নাম,
  অসুস্থ-মৃত, শরীরী-অশরীরীদের দিয়েছি কথা --
  সেই জীবনদায়ী ছোঁয়া,যা তোমার কাছে ওদের পাওয়ার !

  আমি তো দিয়েছি কথা --
  প্রতিটা ফুলের একটা বিশুদ্ধ আকাশ দেবো,
  নুড়ি-পাথর থেকে বাছা হবে না শালগ্রাম শিলা
  শালগ্রাম শিলায় জন্ম নেবে অবহেলিত নুড়ি-পাথর-

  তাদের চাঁদ জোৎস্না একাদশী সবটুকু দেবো করেছি অঙ্গীকার !
  রক্ত লবণ মাটির রোদকণায় ওদের প্রাপ্তি টুকু--
 মেরুদন্ড সোজা করে লিখবে নিজের নাম -
 বলো, আর কতক্ষণ অপেক্ষায় রাখবে !! তোমার দরজায়  --

        

মনিকান্ত সার



~*** নীলাভ অবয়ব ***~
         ***********



ভাবছি, একটা নীল ছবি আঁকবো
তোমার অবয়বের।
নীল বললাম........
কারণ, নীল রঙটা তোমায় বড্ড মানায় ।

চুলগুলোকে এলিয়ে দেবো কানের পাশে -
সমুদ্রের মতো ক'রে,
কয়েকটা তবুও গড়িয়ে পড়বে তোমার গাল বেয়ে
ঢেউয়ের মতো হয়ে ।
তোমার গায়ে জড়িয়ে থাকা পোশাকে
লুকিয়ে থাকবে আমার ভালোবাসারা,
প্রতিটা ভাঁজে আমি খুঁজে নেবো তাদের,
খুঁজে নেবো উদ্ভাসিত যৌবনের রূপ-রস-গন্ধ ।

প্রথমে ভেবেছিলাম.......
কাজল এঁকে দেবো তোমার চোখে,
তার দরকার নেই, মৃগনয়না তুমি,
তোমাতে হারানোর জন্য দুটো চোখই যথেষ্ট ।
যখন মিষ্টি সূর্য এসে ছুঁয়ে যাবে ক্যানভাস,
চোখের সামনে ভেসে উঠবে তোমার মায়াবী মুখ,
আমি হয়তো স্থবির তখন, ভাবলেশহীন,
হয়তোবা নি:স্ব হাত দুটো ছুঁতে চাইবে তোমায়।

আঁকবো.......
আঁকবো আমি তোমার "নীলাভ অবয়ব" ।

কৃপা বসু




ভ্যালেন্টাইন ও প্রেমজেহাদ
***********************



    ১.
পাশের পাড়ায় আট মাসের পোয়াতি সিঁদুরের কৌটো হাতে সুইসাইড করেছে। আমি বলেছি খুন, মেঝেতে গড়ানো নিরীহ ঘুমের শিশিতে লেখা ছিল খুনির বায়োডেটা।

    ২.
মঙ্গল ঘট উল্টে যুবতী নদী নামাজ পড়ার প্র্যাকটিস করে রোজ। খিদের থালায় ধরে রাখে মাগরিবের দ্বিধাগ্রস্থ চাঁদ।

    ৩.
প্রেমিকজল মেখে আসা প্রতিটি পাখি দাহকাল পেরিয়ে শুকনো কালভার্টের দিকে এগিয়ে যায় আধফোটা ফুল নিয়ে ঠোঁটে।

    ৪.
যে কুকুররা দুপুরের শোক ছিঁড়ে খেত একদিন, তাদের পাশ দিয়ে পান্তা ভাত মুখে নিয়ে হেঁটে যায় নিরীহ ভিখারি।

    ৫.
রাতের মফঃস্বলে বালিকা বিলাসের স্বরলিপি ভুলে শিরায় শিরায় স্পষ্ট হয় আদরের নীল ক্ষতদাগ। দ্রাক্ষামদে মেশে বীর্য ও থুতু।

    ৬.
যোগাযোগ নিভে যাওয়া সেন্ট্রাল জেলের মতো ঘর, ধুলোবালির সেলাই করা মেশিনের একটানা ঘরঘরে ছেলেটি কান্না পুষে রাখে।

    ৭.
ছেঁড়াখোঁড়া শরীর নিয়ে মেয়েটি হলুদ আঁচলের ভাঁজে বশমানানো চাবিকাঠি বেঁধে রাখে। স্মৃতির ওয়ার্ডরোবে তোলা তার এক্কাদোক্কার সংসার।

জ্যোতির্ময় রায়




ছুঁয়ে দিও 
**********



ঠোঁটের ভিতর জমছে কথা ,অল্প
শুধুই মিথ্যে ,প্রেমীকি ছোবল নয়'ত?
নাকি বাহানা হ্যাঁ জি ,রঙিন শরীরী ।
ইমোশন জাস্ট ,তবে মিথ্যে সত্যি কি?


আমিও পথে কথার দূর্গন্ধ ছড়াই ,রুমালে
চোখ মুছে নিও ,হঠাৎ স্বপ্ন ভেঙে গেলে ।।
"শুধু তোকে রেখেছি" যত্নে বুকপকেটে ,
দাগ কেটে দিও বালুচর কিছুটা অযত্নে ,অকপটে ।।