নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

বিচিত্র অভিজ্ঞতা ও অধিকার নিয়ে কিছু কথায় বিপ্লব সৎপতি

বিচিত্র  অভিজ্ঞতা ও অধিকার
                                       



                                বিপ্লব সৎপতি










Glocon-D না খেয়েও ভর দুপুরে সূর্য্য ও ভ্যাঁপসা গরমের সাথে লড়াই করতে করতে ডানপাশে ত্রিলোচন অটোমোবাইলের শোরুম,বাম পাশে থানাকে পিছনে রেখে, আমরা সিমলাপাল আটচালাগোড়া বাসস্টপে পৌছালাম। গরমে যা অবস্থা কোনোরকমে খাতড়াগামী বাসে উঠে লক্ষীসাগর পৌছালেই বাচি। 'যোগ' জলপ্রপাতের ন্যায় ঘামে ভেজা শরীর নিয়ে সিনেমার হিরোদেরের রোমান্টিকতা আসে। ওসব আমার কর্ম নয়। তাই চোখ,মুখের ঘাম মুছে  দোকানের গায়ে সাঁটানো 'বিক্ষোভ ও সমাবেশ, ১২দফা দাবী নিয়ে ধর্মতলা চলুন ' পোস্টারগুলি পড়ার চেষ্টা করছি। ছোটোবেলায় 'কেন্দ্রসরকারের কালোহাত ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও' শুনলেই মনে হত, এরা কতো বোকা  বাঁশের কঞ্চির উপরে পতাকা   না নিয়ে  মোটা  লাঠি নিলেই তো পারে।  যাইহোক হাতকে দূরবীন করে পড়ার চেষ্টা করছি। ভাবটা এমন যেন -যত কষ্ট হোক ওটা পড়তেই হবে। পাশে দেখি-'সেও' একবার রাস্তা নিয়ে গবেষণা করছে পরক্ষনেই আবার জুতো নিয়ে গবেষণা করছে। মানে এত নিখুঁত ভাবে একদৃষ্টি তাকাচ্ছে যে গবেষণার থেকে কম বলা যায় না।  ইতিমধ্যে খাতড়াগামী একটি বাস  স্টপে এসে ইঞ্জিন বন্ধ করেদিল। মিনিট পনেরো বাদে ছাড়বে। ভিড় হালকা কিন্তু সিট খালি নেই। 'কাকের' বসা আর 'তাল' পড়ার সম্পর্কের মতো, আমরা সামনের গেটে উঠা মাত্রই, সামনের গেটের সোজাসুজি দ্বিতীয় সিট থেকে একজোড়া নতুন দম্পতি নেমে গেলেন। তাদের আগের স্টপে নামার কথাছিল কিন্তু ভুলেগিয়ে আমাদের সুবিধা করেদিলেন। বাসের হাওয়া লাগলেই দুনিয়ার সবচেয়ে অসম্ভব কাজ কে সম্ভব করে তুলি। মানে 'হলিউড' সিনেমাগুলিকে আমেরিকা থেকে সমূলে উৎপাটিত করে বাঁকুড়াতে আছড়ে মারি। এই গরমে নায়ককে অবশ্য কষ্ট করে আসতে হয় না। এখানে ফ্রীতে একটা নায়ক পাওয়া যায়। কিন্তু আজকে ওসব ভাবলে চলবে না। আসার পর থেকে গরমের চোটে চারপাশে চিৎকার চেচাঁমেচি শোনাগেলেও,আমাদের মধ্যে এক অদ্ভুত নীরবতা বিরাজ করছে। অনেক কথাই বাকি  বাসে বলতে হবে, পাছে 'হলিউডি' চিন্তা মাথায় চলে আসে- তাই মাথাকে বারকয়েক ঝাঁকিয়ে নিলাম। ইতিমধ্যে বাসের হেল্পার বাস চাপড়ে সবাই কে জানান দিচ্ছে যে এবার বাস ছাড়বে। টিউশন পড়তে আসা কিছু ছেলেমেয়ে বাস ভিড় করে এমন জটলা করছে যে কথা বলার উপায় নেই। বাস চলতে শুরু করল, আমি চুপ করে আছি, চাইছিলাম শুরুটা পাশের সিট থেকে হোক।এর মধ্যে এক ভদ্রলোক আমার দিকে ঝুকে বিশ্ববিখ্যাত ডায়লগ বলে চলেগেলেন,'দাদা কোথায় নামবেন?।' পরের স্টপেজে একজন মহিলা বছর আটেকের  একটি মেয়েকে কোলে নিয়ে সামনের গেটে উঠল।  মেয়েটি পোলিও খোঁড়া,মুখ দিয়ে লালা ঝরছে।এক কথায় প্রতিবন্ধী।  মহিলার হাতে 'ঔষধ দোকানের 'পলিথিলিন' দেখে বোঝা যায়-হসপিটাল এসেছিল মেয়েটিকে ডাক্তার দেখাতে। আমার  বিপরীত দিকের ভদ্রলোককে দেখলাম, মাথা নামিয়ে মোবাইলে মন দিলেন।  চোখাচোখি হলে পাছে সিট চেয়ে বসে। মহিলাটি আমার সিট বাম হাতে  ধরে এর ওর দিকে অসহায় ভাবে তাকাচ্ছে। একবার মনে হল- আমরা দুজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ। পুরো রাস্তা দাড়িয়ে গেলেও কিছু মনেই হবেনা।  এতএব সিট দুটো মহিলাকে দিয়ে দি। 'পাশের জনের' দিকে তাকিয়ে দেখি,'সেও' ইশারায় একেই কথা বলছে। পরক্ষনেই ভাবলাম, আমরা কেন ছাড়ব? এটা তো পাবলিক বাস, প্রতিবন্ধী  যাত্রীদের জন্য একটি সিট রির্জাব আছে। আমরা সিট ছেড়ে দিলে,বাসের পাবলিক আমাদের দিকে প্রশংস্য দৃষ্টিতে তাকাবে। হয়তো বাড়ি ফিরে, চায়ের ঠেকে বন্ধুদের শোনানোর মতো একটি গল্প পেয়ে যাবো। কিন্তু ঔই মহিলাটির অবস্থার কোনো পরিবর্তন হবে কি? বাসে উঠলেই তো আবার কোনো দয়াবান মানুষের সিট ছাড়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। কতকটা ধর্মীয় সংগঠন বা এনজিওর পূজোতে গরীব দুখিদের পোষাক বিতরনের মতো।এতে বিতরন কারীদের সামাজিক টেস্টাস বাড়ে কিন্তু গরীবদের অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয় না। প্রশ্নটা যেখানে অধিকারের, দয়া বা অনুকম্পা কোনো স্থান পেতে পারে না।  সিট থেকে দাড়িয়ে বাসের কনডাক্টর  কে খোঁজার চেষ্টা করলাম। ভিড়ের মধ্যে দেখতে না পেয়ে, সামনে প্রতিবন্ধীদের জন্য রির্জাব সিটের দিকে এগিয়ে গেলাম। দেখি, বছর কুড়ি বাইশের দুটি ছেলে সিট অধিকার করে নিজদের মধ্যে খোশ মেজাজে গল্প করছে। বললাম, 'দাদা আপনাদের সিট ছাড়তে হবে। এই মহিলা তার মেয়েকে নিয়ে বসবেন '। 'ছাড়বো কেন!', সামনের ছেলেটি বিস্ফারিত মুখ করে বলল। 'সামনে কি লেখা আছে পড়ুন ',লেখাটার দিকে আঙুল বাড়িয়ে বললাম। জানালাধারে যে ছেলেটি এতক্ষণ চুপ করে বসেছিল,এবার সে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে বলল,  'উঠব মানে! সেই বাঁকাদহ থেকে আসছি!ভাড়া দিয়েছি!কনডাক্টর আমাদের সিট দিয়েছে'। 'সাথে মেয়ে আছে বলে হিরোগিরি দেখাচ্ছে ',প্রথমের ছেলেটি ফিসফিস করে বলল। আমি দৃঢ় কন্ঠে বললাম,'সেটা কনট্রাকটর ও আপনার নিজস্ব  ব্যাপার'। কিন্তু আপনাদের উঠতে হবে। সে কিছু বলতে যাচ্ছিল কিন্তু আগের যে ভদ্রলোক চোখ নামিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি বললেন,'উঠবেন না মানে! উঠে যান বলছি। '
তার দেখাদেখি বাসের হাতল ধরে দাড়িয়ে থাকা দু - তিনজন ভদ্র লোক,  একস্বরে চিংকার করে বললেন, 'না উঠলে ভালো হবে না বলছি। ' এতজনের চাপে ছেলেদুটি কনডাক্টরকে শাসাতে শাসাতে উঠে গেল।'শালা আমাদের রাস্তা দিয়ে পেরোবি না।  দেখে নেবো। ' আমি বললাম, 'দাদা কি সব মেয়ে হিরোইজম বলছিলেন না। ' কোনো উত্তর না দিয়েই ছেলে দুটি পিছন দিকে এগিয়ে গেল। এরপর আমি মহিলার দিকে ঘুরে বললাম, ' বসুন। আর শুনুন বাসে উঠলে মনে রাখবেন, আপনার মেয়ে সঙ্গে থাকলে একটি সিট পাওয়া আপনার  অধিকার। কারোর কাছে সিট চাওয়ার দরকার নেই।কনডাক্টরকে বলবেন, ব্যাবস্থা করে দেবে।'

বৈশাখী চ্যাটার্জী এর গল্প





               দীপাবলী 

             বৈশাখী চ্যাটার্জী 



      গরীবের শহর -বড়লোকের শহর গোটা শহর জুড়ে কত আলো -পাশের বাড়ির বিট্টুরাও তাদের একচালা টিনের চালের ঘরটাকে ছোট ছোট টুনি আলো দিয়ে সাজিয়েছে -দেওয়ালী ঘর -দেওয়ালী ঠাকুর ।চরকি, তুবড়ি ,রসবাতি -আলোর বৃষ্টি হচ্ছে উঁচু কংক্রিটের দেওয়াল -আর একচালার ছোট্ট ঝুপড়িতে ।গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে ভিজে যাচ্ছে গোটা শহর ভিজে যাচ্ছে মন -।
       মনে কত জমা অন্ধকারের খোঁজ রাখে এই আলো, এই দীপাবলীর রাতে ঝড় ওঠে -আলোর ঝড়, মনের সব অন্ধকারের ইতিকথা গুলো ভুলে- কয়েক আলোকবর্ষ দুর থেকে কত আলো আসে লাল, নীল, সবুজ ,হলুদ -রঙীন মনের প্রতিটা ভাঁজ হারায়- ব্যথার কথা -মুখ হাসে ,চোখ হাসে, -হাসে বেদনার রঙ, -উঁচু বাহারি ঘর -রঙিন দেওয়াল সাজে রকমারি দামী আলো দিয়ে ।-ছোট্ট ঝুপড়ির মরচে পড়া জানলায় সাধ্য আর সাধের একটা ছোট্ট ইলেকট্রিক তার,- তাতে গুটিকয় ছোট ছোট নক্ষত্ররা মিটমিট করছে ।-
        আলো সবার, -সবাইকে আলোতে ভরে দেওয়া  তার কাজ -তাই সে জড়িয়ে ধরে চুমু দিচ্ছে সমস্ত অলি- গলি, পারা ,রাস্তা -বস্তি আর উঁচু উঁচ বাড়ির চূড়া গুলোকে ।
         
             বিট্টুরা তুবড়ি জ্বালাচ্ছে আগুনের আলো ফোয়ারা হয়ে উঠছে- আবার নিভে নেমে আসছে -কিন্তু শেষ নয় এই আলো, এর রেশ থেকে যায় মনে --।
          আমি দাঁড়িয়ে দেখছি ওইখানে ওই  দোতলা বাড়ির ছাদে তুবড়ির আলো জ্বলছে আর নিভে যাচ্ছে ,-মোমবাতির শিখা দোতলা থেকে একতলা হয়ে মিশে যাচ্ছে মাটির সাথে ।শুধু শেষে কিছু অনুভুতি বাকি থেকে যায়  -আমি দেখছি, আমি ভাবছি ,আমার অন্ধকারের জেগে থাকা ঘুম আজ আলোময় -আমার  রাত্রি গুলো ঘুমাবে বলে আলো জ্বেলেছে, দীপাবলীর আলো --অন্ধকারে ঘুমোতে বড্ড ভয় করে ঘুম আসেনা ,-গোটা শহর অন্ধকারে হাতড়ায় ঘুম ।জেগে থাকে নিঃশব্দ রাত। আজ আলো আছে -বাতাসের বুকে কত শব্দ কোলাহলের -আনন্দের -উৎসবের -মিলনের । আলোয় ভাসছে  শহর ,ভাসছে জীবন ।তবুও ছায়ায় কিছু অন্ধকার এখনো লুকিয়ে ॥


কবিতা -দীপাবলী সংখ্যা









                   *দীপাবলি*


                        শাল্যদানী



এই আলোতে নিয়নলাইট
আঁধারিয়া উৎসুক
কালো আলো লাগে ভালো
সিগারেট ছাই ছায়া দোলে।
রংমশাল
আলাপন মেহেন্দি আঁকা হাত
তাতে আমি লেখা।
এই আমিটা আলোর দিন
এই আমিটা হাওয়াই
এই আমিটা ল্যাম্ফো জ্বালা
এই আমিটা নাই
এদিনে মিষ্টিমুখ হয়ে যাক। কিন্তু
একটা আলোর বলি লেপ্টে থাকে
কান্নাখেকো রাতে আসে যায়
সে এবং তার আলো
আলেয়া
আলোর রাত।





দীপ।আ।বলী




জ্যোতির্ময় মুখার্জি





দলাপাকানো আঁশটে রোদের মশারি বেয়ে
           ক্রমশ নিভৃত অন্ধকারে
অ্যাসিডিক ক্রোমোজোমের নীলাভ আয়নায়
       আঠালো।চ্যাটচ্যাটে।আত্মঘাতী
                   কিছু আলো
বারুদপোড়া চামড়া আর রক্তের মাঝে
   স্প্রিংয়ের মতো জড়িয়ে আমাদের
             শান্তিতে ও শ্রান্তিতে
                অর্থ খুঁজে নেয়
              এ-তে-গন্ধ-পুষ্পে…..।







দীপাবলি





সঙ্গীতা পাল


আশ্চর্য শূন্যতায় ভরেছে সময়
চারিদিকে টুনির রোশনাই
এখন আর কেউ মাটির পিদিম জ্বালেনা।
চারিদিকে মানুষ চায়নিজ ফানুস উড়ায়
বিদেশি পটকা বাজীতে আকাশ মুখরিত হয়।
কোন ক্লাব কত টাকার খেলায় মাতবে,
 সবাই সবার প্রতিদন্দী আলোর স্ফূরণ।
বন্ধু লক আউটের চা বাগানের শ্রমিক দল
 হাড়িয়ার গন্ধে বিভোর হয়।
বধুনি এক্কা বা ফুলমনি ওড়াও দের মাদল নৃত্য শুরু হয়।



~*** আলো জ্বেলো "মা" ***~



               মনিকান্ত সর



হালকা শীতের আমেজ গায়ে, কুয়াশা ভেজা ভোরে,
শ্যামা মায়ের পূজা আজ, ভুত চতুর্দশীর পরে ।
শহর গ্রামের নেইকো ফারাক, মিলেমিশে এক সবাই,
আজ মাতবে ছেলে, মাতবে বুড়ো, মায়ের আরাধনায়।
মোমবাতি আর মাটির প্রদীপ, জ্বলবে সবার ঘরে,
আলোয় আলোয় কাটবে আঁধার, অনেক দিনের পরে।
পুড়বে বাজি, জ্বলবে মশাল, আকাশে রঙের মেলা,
চোখ জুড়াবে টুনি আলোয় আর ঝাড়বাতির খেলা ।
বিষাদ যেন না থাকে আর, তোমার আশীষ পেয়ে,
আঁধারগুলোকে মুছিয়ে দিও, যাবার আগে ধুয়ে ।
চাওয়া বলতে মায়ের কাছে, শুধু একটি দিন নয়,
আলো যেন সবার জীবনে প্রতিটা দিন রয় ।



                     অন্ধকারের আলো



                        জয়তী দাস





  এভাবেই পুড়ে যাও কালিমা ঘুচাতে,
  কতটুকু আলো জ্বলে মাটির সরাতে!
 
  বিছানো আসন, সামনে কলাপাতা
  চাল কলা মেখে, পরমান্ন এক হাতা
  কোথাও হাসছে শোক কলিঙ্গের মাঠ
  কোথাও কান্না ছাপায় ভরানদী থাক ।
  কেউ ডাকে চিন্ময়ী, কেউ জানে মৃন্ময়
  আমি তো দেখি তার জলেতেই ক্ষয় ।
  জবারা রাতেই ফোটে, তুমিও তো চেনো
  শিউলিকে না ঝরিয়ে বুকে রাখো বলো !
  কানা বলে যাকে ডাকি, সেকি আমায় জানে
  দিইনি জানলা খুলে, ঢাকা অন্তরালে ।
  ভাত বলে যাকে জানি,সেতো আমার খিদে
  ছড়িয়ে খায় কাক, কাদের কাদের দিলাম সিধে !
জ্বালাতে পারলাম কই দীপালীর আলো ,
প্রদীপের শিখা জানে কে রাত,আর কে কালো ।।




                দীপাবলী




           মৌসুমী ভৌমিক





শ্যামা মায়ের আশীষে জ্বলুক দীপাবলীর আলো
আলোর প্লাবনে আঁধার শেষে উদিত হোক ভালো।
তমসাচ্ছন্ন পৃথিবীর হাজার যন্ত্রণায় জমেছে গভীর ক্ষত
হৃদয়ে হৃদয়ে গ্লানি কলুষতা, মানবতার ক্ষয় অবিরত।
ভবতারিণীর শুভেচ্ছায় গৃহ আলোকিত, আনন্দের দীপ জ্বালি
প্রাণেতে বাজুক সুর, অন্তরেও বিকশিত হোক দীপাবলী।





   
        কিছু প্রদীপ




কৃষ্ণেন্দু দাসঠাকুর



আজ একটা প্রদীপ জ্বালিয়ে দাও--
ফসলের দাম না পেয়ে আত্মঘাতী চাষির,
ছবির নিচে।
কালশিটে পিঠ নিয়ে ঘুমিয়ে পড়া ছেলেটার
মাথার পাশে।
প্রতিরাতে ক্ষতবিক্ষত হওয়া আমার মায়ের
বিছানার পাশে।
প্রচণ্ড যন্ত্রনায় ককিয়ে উঠেও ছাড় না
পাওয়া,নিশ্চিন্ত ঘুমে,আমার বোনটার
পাশে।
একটা প্রদীপ জ্বেলে দাও--
জল না পড়া দাওয়ার কোনটায়।
ফেনভাতের উপরে।
স্কুলের গেটের সামনে।
বাকিসব প্রদীপ তোমাদের।
তোমরা সাজিয়ে দাও সারা আকাশ ।



কাঠের ফুল
                     

           অসীম মালিক 





সোনাঝুরি গাছের খাটে ঘুমিয়ে সমাজ l
আশার আলো নিয়ে জেগে ,
কাঠমিস্ত্রির করাত ,ছেনি ,রাঁধা ,হাতুড়ি ...
আর রংমিস্ত্রির তুলি l 
কাঠগোলায় বসন্ত আসেনি ,
শাল ও মেহগিনি গাছের গুঁড়িতে গুঁড়িতে লেগে আছে
কোকিল পাখির পায়ের ছাপ l 
করাত কলের বাতাসে উড়ছে ,
মিহি মিহি কাঠের গুঁড়ো l
গোলায় ফুটেছে করাত ফুল ...
পলাশ ফুলের কবিতা কণ্ঠে নিয়ে উড়ে যাচ্ছে
কতশত রঙিন প্রজাপতি l
কিন্তু তারাও খাটের পায়ায় শিকড় ছড়াতে পারেনি ,
তাই ঘরময় ফুটেছে কাঠের ফুল l 
জানালাটা খুলে দাও ,
ভেসে আসুক সোনাঝুরি গাছের অক্সিজেন l




         কালো-আলোময়



                   ইন্দিরা ব্যানার্জী



করালবদনা; মুক্তকেশী; চতুর্ভুজা; মুণ্ডমালা বিভূষিতা।
ত্রিনয়না; বরমুদ্রা-অভয়মুদ্রা প্রদানকারী; খড়্গ হস্তশোভিতা।।
শুম্ভ-নিশুম্ভ বিনাশকারী; চণ্ড-মুণ্ডের মুণ্ডদ্বয় খণ্ডিতা; চামুণ্ডা; শিষ্টের পালন দুষ্টের দমনে সিদ্ধহস্তা।।
স্বামীর বুকে রাখেন পা; শ্মশানে অবাধ বিচারিতা; তন্ত্র সাধনায় তুষ্টা দেবী; পূজার দিন আলোর সাজে জগৎ সাজে দ্বীপান্বিতা।।
আরাধনায় মাকে অহংবোধ ঘোচে; রিপুদমনে জাগে আত্মনিবেদন।
তনু-মন এক করি ভেদাভেদ ভুলি আত্মশুদ্ধিতে সার্থক জীবন।।
"জয়ন্তী মঙ্গলা কালী ভদ্রকালী কপালিনী; দুর্গা শিবা ক্ষমা ধাত্রী স্বাহা স্বধা নমস্তুতে।।"





     শ্যামাঙ্গি মা আসে 


             কাকলী দাস ঘোষ 



আজ জ্বলে দ্বীপ হাজার জড়য়া অলংকারে ,
আজ গলে মোম হাজার  কাঁচের  ঝাড়ে ,
মুখরিত আজ আলোয় আকাশ
মাটির দাওয়া -কুটির -বাতাস ,
ফুলঝুড়ি জ্বলা লক্ষ্য ফুলকী হীরক ঝিলিকে হাসে ;
কোটি হাসির রঙ মশালে
আমার শ্যামাঙ্গি মা আসে l 





 
নজরুল স্মরণে


- অভিজিৎ পাল



মসজিদে​ বাজাই শ্যামার গান
বন্দনা গাই নামাজের সুরে
আনমনে হেঁটে চলেছেন দুখু
ডাবড় চোখে তার অদ্ভুত স্বপ্ন
এখানে কোথাও ক্লান্তি নেই
নতুনতর সীমারেখা নেই
অবিচ্ছেদ্য একবাচক নব্য অদ্বৈতবাদ
নতুনতর চেতনায়​ জেগে ওঠেন​
রুদ্রনীলাভ নজরুল ।





= * অনু-রাধা প্রাণে * =




      তপন সত্পথী




ইচ্ছে ডানায় ভেসে চলি দিনরাত
মন খেয়ালেই ঘুরিফিরি ভিন দেশে ,
সবুজ ভূমির শান্ত চরণ চুমি
দিগদিগন্তে উড়ি মেঘ গায়ে ভেসে ।
সরু পথে আছে ঘাসের মেঠো আল
নদী নালা মিশে সাগরের জল ছুঁয়ে ,
দেখো দিকে দিকে আমার সকল চিহ্ন
নিষ্পাপ চোখে দূরে আছি পথ চেয়ে !
যে কোনো গ্রামের শান্ত ছায়ায় এসো
রাখালিয়া বাঁশি ভরাবে হৃদয়খানি ,
কিংবা কোথাও শাল পিয়ালের বনে
ঝিঁঝিঁ পোকা সুরে আমার পদধ্বনি ।
শীতের সকালে শিউলির ঝরা ফুলে
ভিজা ঘাস ছুঁয়ে নীরব সবুজ প্রাণ ,
সূর্যের আলো পড়বে ঘাসের 'পরে
প্রভাত ক্ষণেই পাবে তুমি চেনা ঘ্রাণ ।
বেলা বয়ে যাবে নিয়মের পথ ধরে
নিখিলের মাঝে সজীব প্রানের রেশ ,
ঠিক অবেলায় গোধূলির লাল আভা
তোমার দুয়ারে সীমানার হবে শেষ !
নিঝুম প্রদোষ উৎসুক চুপি মন
অনু-রাধা প্রাণে আলোর অকুলান ,
অকথন যত প্রকাশ নীরব ভূমে
স্থির কনীনিক অশ্রুতে রবে ম্লান !
বহু পুরাতন কোন নির্জন স্থানে
জোনাকি আলোয় রাত হবে চুপ চাপ
ফিরে দেখো তুমি আঁধারের মুখ পানে
উজ্জ্বল হাসি নেই কোনো অনুতাপ ।



        উদযাপনে দীপাবলী



                 অনন্যা রায়



গোধূলীর শেষ আলোটাও
লেপে নেয় দিনান্তের সুখ আঁচল ভরে ।
আর তারাদের কানাকানিতে শোনা যায় পূর্ণ ইশারা ।
একে একে জ্বলে ওঠে আকাশপ্রদীপ
চোখের বারান্দায় সুখী ম্যানিকুইন
আর জীবনের সেতু বাঁধে আলোর খেয়া ।
আমার কুসুম রঙা টিপ উৎসবের বাতিদান
বিকিকিনির জীবনে নিঃশর্ত ভালোবাসার বর্ণমালা।
নিবেদনের রাজপথে যাপন মোম হাতে
হেঁটে চলে উৎসবের ভোর
তোমার চোখে উদযাপনের স্বপ্ন দেখবে বলে।






                 আলো রে, জ্বালো রে



                      গোলাম কাদের




                সেই-দিনটাই ভালো ছিল।
      বাল্যের সোনাঝরা দুষ্টুমির অমোঘ টানে
                বৃষ্টির মতো ফুলকি ঝরতো
                  পুকুরের প্রান্ত বরাবর,
       শুশতানির মাঠ হয়ে রমাদের বাঁশঝাড়
           পরিব্যাপ্ত টুকরো টুকরো আলো
    পাড়াময় হয়ে জ্বলতো নিঃসীম অন্ধকারে ।
             অশরীরী উৎপাত মনে হলেও
    মা-মাসির কন্ঠে ভালোবাসার রেওয়াজ ছিল।
        বড়োদের বকাঝকা, কাঁচা কঞ্চির স্বাদ 
            খুশিময় এপাড়া থেকে ওপাড়া
       কাঠি সাজিয়ে আলোর বিক্ষিপ্ত নিশান ।
                 সে-দিনটাই ভালো ছিল।
          দরজায় দরজায় কড়া লাগানো ঘরে
                     আলোর গভীরতা,
                       মাপা সহজ নয়
           সম্পর্কের রোশনাই ফিকে হচ্ছে ।
         অবোধরা অভিশাপ আঁকছে প্রত্যহ।
    কষ্টের নীরবতা বাল্যসখীর মতো আনমনা ।
            কেমন যেন হয়ে যাচ্ছি দিনরাত!
      সীমাবদ্ধ ঘরে ছাত্ অবধি বিচরণে ক্লান্ত
   ঐশ্বরিক টানে দিশেহারা স্মৃতিদের হাত ধরে
               ঘরে ঘরে আলো খুঁজছি ।
        সেই-দিনটাই বড্ড বেশি ভালো ছিল
                 যেদিন খুব সহজেই -
কাঁচা আগুনের খোঁচাই পুড়িয়ে ফেলতে পারতাম
            অশুদ্ধ, অশুভ অন্ধকারকে!







                           অমা 

                        জয়দীপ রায় 


        আলো মাখা অমা   নিলয় ফুটে ও পজিটিভ
               রেয়ার রক্ত জমা
শ্যামবর্ণ মেয়েটি    পান আঁকা তার মুখ
         গরিব হলেও কয়লা ভেঙে,কিনত কিছু সুখ
       আলো আঁকা রোয়াক থেকে   রকেট উড়ল শেষে
       মিথ্যে নয় রুপকথা নয়      আর্ফিয়ুসের দেশে l






              মৎস্য কন্যা




              তাপসকিরণ রায়



তুমি খেয়ে প’রে ভাল আছ,
সুখে থাকতে থাকতে সময় কাটে না তোমার
ভাবো, এই কি জীবন ? শুধু খাওয়া পরা ?
সময় ও বাতাসের মাঝে দিন গড়িয়ে যাচ্ছে
কখনও মনে হয়, আমি বেঁচে আছি তো ?
নড়েচড়ে দেখি, হ্যাঁ, কিছু দুঃখ তো নেই ?
তা কি করে হয়,
শ্রাবণ দিনের বিয়োগ ব্যথার কথা সে তো ভুলবার নয়
এসো তার কথা ভাবি, পথ হারা  শিশুটার কথা,
তার ভিক্ষা পেটারার কথা ভাবি। 
তারপর একদিন তুমি ঝাঁপ দিলে জলে
কাপড় শূন্য হল তলদেশ
নাসা রন্ধ্রে ঢুকে গেলো এক মৎস্য কন্যার কথা ও ঘ্রাণ।
একাধারে তোমার রসনা ও দেহ উথলে উঠলো।
--কি করে পাবে তাকে ?
বুকের দড়ি ফাঁস খুলে তুমি জাল পাকালে
ঘূর্ণন সৃষ্টি করে ডেকে নিলে সেই কন্যাকে
আপাত সে মাছের আঁশ ছেড়ে গেলো,
তুমি জলের ধারে বসে চমৎকারী খেলা খেলছো !
তাও কিছু যেন ভাল লাগছে না --
তাকে একদিন ব্যঞ্জনায় পেয়ে যাবার ঢেক তুললে 
ভারী পেটে হজমি গুলি খেয়ে
শেষে আপাত পালক-শয্যা গ্রহণ করলে।



 





দীপাবলী নিয়ে কিছু কথা





















বাংলায় ‘দীপাবলি’, হিন্দিতে ‘দিওয়ালি’-যার সংস্কৃত অর্থ “প্রদীপের সারি”। এই দিন হিন্দুরা ঘরে ঘরে ছোটো মাটির প্রদীপ জ্বালেন। এই প্রদীপ জ্বালানো অমঙ্গল বিতাড়নের প্রতীক। হিন্দু ধর্মশাস্ত্র মতে, কালী হচ্ছেন অগ্নির সপ্তম জিহ্বা আর অগ্নি হচ্ছেন স্বয়ং ঈশ্বর; যা কালী বা শ্যামা নামে ভক্তদের কাছে উপস্থিত হয়। মাতৃ আরাধনার আরেক রূপ হচ্ছে শ্যামা পূজা। দীপাবলি হচ্ছে এই পূজার অন্যতম আকর্ষণ। এই দিন বাড়িঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে সারা রাত প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখলে ঘরে লক্ষ্মী আসেন বলে হিন্দুরা বিশ্বাস করেন।

হিন্দু পুরাণ মতে, দেবী কালী- দুর্গারই একটি রূপ। সংস্কৃত ভাষার ‘কাল’ শব্দ থেকে কালী নামের উৎপত্তি। কালীপূজা হচ্ছে শক্তির পূজা। জগতের সব অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে শুভশক্তির বিজয়ের মধ্যেই রয়েছে কালীপূজার মাহাত্ম্য। কালীদেবী তার ভক্তদের কাছে শ্যামা, আদ্য মা, তারা মা, চামুণ্ডি, ভদ্রকালী, দেবী মহামায়াসহ বিভিন্ন নামে পরিচিত।

উত্তর ভারতীয় হিন্দুদের মতে দীপাবলির দিনেই শ্রীরামচন্দ্র চৌদ্দ বছরের নির্বাসনের পর অযোধ্যা ফেরেন। নিজের পরমপ্রিয় রাজাকে ফিরে পেয়ে অযোধ্যাবাসীরা ঘিয়ের প্রদীপ জ্বেলে সাজিয়ে তোলেন তাঁদের রাজধানীটাকে। এই দিনটিতে পূর্বভারত বাদে সম্পূর্ণ ভারতবর্ষে লক্ষ্মী-গণেশের পুজোর নিয়ম আছে। জৈন মতে, ৫২৭ খ্রিস্ট পূর্বাব্দে মহাবীর দীপাবলির দিনেই মোক্ষ বা নির্বাণ লাভ করেছিলেন। ১৬১৯ খ্রিস্টাব্দে শিখদের ষষ্ঠ গুরু হরগোবিন্দ ও ৫২ জন রাজপুত্র দীপাবলির দিন মুক্তি পেয়েছিলেন বলে শিখরাও এই উৎসব পালন করেন। আর্য মাজ এই দিনে স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতীর মৃত্যুদিন পালন করে। তারা এই দিনটি “শারদীয়া নব-শস্যেষ্টি” হিসেবেও পালন করেন।

দীপাবলি ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার, মরিশাস, গুয়ানা, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো, সুরিনাম, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ফিজিতে একটি সরকারি ছুটির দিন।

প্রত্যেক সার্বজনীন আনন্দের উৎসব মন্দের বিরুদ্ধে ভালোর জয়কে উদযাপন করে। আলোকসজ্জার এই দিবস অন্ধকারের বিরুদ্ধে আলো জ্বালার দিন। নিজের ভেতরের বাহিরের সকল অজ্ঞতা ও তমঃকে দীপ শিখায় বিদূরিত করার দিন। প্রেম-প্রীতি-ভালবাসার চিরন্তন শিখা প্রজ্বলিত করার দিন। দেশ থেকে দেশে, অঞ্চল থেকে অঞ্চলে- এই দিনের মাহাত্ম্য ভিন্ন ভিন্ন; তবু মূল কথা এক। আর আধ্যাত্মিকতার গভীর দর্শনে এই দিন- আত্মাকে প্রজ্বলিত করে পরিশুদ্ধ করে সেই পরমব্রহ্মে লীন হওয়ার দিন।

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এ প্রসঙ্গে বলেছেন-
‘‘ঘরে ঘরে ডাক পাঠালো
দীপালিকায় জ্বালাও আলো,
জ্বালাও আলো, আপন আলো
সাজাও আলোয় ধরিত্রীরে।’’

তথ্য- উইকিপিডিয়া

দীপাবলী সংখ্যা - সম্পাদকীয় ✒️

       





 


















                     🙏  দীপাবলী 🙏
             *******সংখ্যা 
                                       ********
      🌼🌼🎆🎆🎆🎆🎆🎇🎇🎉🎉🎆🎆🌼🌼
                  


 📝 সম্পাদকীয়____✒️


"এবার শহর সাজবে আলোয় আলোয়
ফুটপাত থেকে গলি পথও।
মনের মধ্যে অন্ধকারে জ্বলবে এবার আলো ।।"
                       
                        হ্যাঁ এবার মনের যে আন্ধকার গুলো আছে সেগুলোতে জ্বালাতে হবে আলো । ঠিক যেমন দীপাবলীতে অমাবস্যার অন্ধকার কে সরিয়ে জ্বলে উঠে মোমবাতি গ্রাম থেকে শহর ,কিংবা কোনো গলির ভেতর যেখানে হয়তো দিনের এই ব্যস্ত শহরের আলো পৌঁছায় না সেখানেও জ্বলে উঠে কিছু মোমবাতি ,কিছু হাসি মুখ আর কিছু অধরা স্বপ্নে বাঁচতে থাকে রোজ আরও একটু বাঁচার লোভে । আজ যেদিকে তাকাও দেখা যাবে একটা চলমান ট্রেন যেন ছুটে চলেছে কোনো নিদির্ষ্ট ঠিকানায় । আমরা সবাই যাত্রী যেখানে ,সবাই একটু বসার যায়গা খুঁজছে ,যেমনটি দূরপাল্লার ট্রেনে জেনারেল বগিতে হয় ঠিক তেমনি ।কেউ কারো নয় এখানে ,কেউ কারো জন্য নয় সবাই চলমান ,আপেক্ষিক । তবুও প্রশ্ন থেকে যায় যখন নিউজ পেপারের হেড লাইন হয় "মেয়েটা বাস স্ট্যান্ডে ধর্ষিত"
কিংবা "ডাইনি বলে একটি মহিলাকে জ্বালিয়ে দিল গ্রামের লোক " । আরো কত কিছু ।
                  আজ আধুনিক যুগ পেরিয়ে আমরা উত্তরাধুনিকে  ,ডিজিটাল যুগে ,গ্রামে গ্রামে বিজলি বাতি এখন জ্বলে ,হ্যারিকেনে আর পড়তে হয় না কৃষকের ছেলেকে ।কিন্তু অন্ধকারটি কি গেছে ? মোমবাতির বদলে চাইনিজ লাইট কিংবা বিজলি বাতির আলোয় ? প্রশ্নটা থেকে যায় ,থেকে যাবে ....তবুও বাঁচতে হবে ,বেঁচে থাকতে হবে ,হাসির মাঝে দুঃখ গুলোকে লুকিয়ে ।

                           নিকোটিনের এবারে দীপাবলী সংখ্যায় অনেক গুণী জনকে পাশে পেয়েছি ।সকলকে নিকোটিনের পক্ষ থেকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা ।ভালো থাকবেন ,ভালো রাখবেন প্রিয় মানুষটিকে । আর এভাবেই পাশে থাকবেন নিকোটিনের এই আশা রাখি ।।
                                                     জ্যোতির্ময় রায়
                                                 কার্যকরী সম্পাদক



নিকোটিন টিম
***********
চেয়ার ম্যান                    সম্পাদিকা
সুধা সরকার                    সুস্মিতা কর্মকার

সহ সম্পাদক                   কার্যকরী সম্পাদক
পিন্টু মাহাতো                      জ্যোতির্ময় রায়
ঈশিতা দাস


       

কবি রুদ্রপতি এর একটি কবিতা

           


              বাংলা কবিতায়
                ***********

           

হরি ও আল্লা ভরসা
যখন ব্যর্থতা আসে, মন ভেঙে যায়
এপারে নৌকা মাঝে ভয়ংকর স্রোত
ওপারে জরুরি যাওয়া, চোরও নিশ্চুপ
আমিও চোরের মতো নদীটি পেরিয়ে
ওপারের লোকাল গঞ্জে গিয়ে
 চুরি করতাম প্রেম, জ্যোৎস্না, ফুলের গন্ধ
মনে পড়ে? তুমি তখন কলেজে পাওনি;
কিন্তু এখন নদী ভয়ংকর
ফেরি চলাচল বন্ধ, মাঝি ও যাত্রীরা অসহায়
মাঝির জীবিকা বন্ধ
চোরের চুরি বন্ধ
আমার প্রেম বন্ধ
কিন্তু কবির সুবিধে এই
লিখতে পারে লোকাল কবিতা
যেখানে বাজে লোকায়ত শব্দ ও অভিমান
ভরসা অনেক ছিল, কিন্তু এই যে কবিতা লেখার নেশা
যা সায়েন্স পড়ুয়াদের মাথায় একবার ঢুকে গেলে
বিপদ, ব্যর্থতা নামে;
তবু একদিন আল্পস পর্বতে উড়ে যাওয়া পাখি দেখে
যে মানুষ বানিয়েছে উড়োজাহাজ
তার কাছে আমার অনন্ত ঋণ
কারণ এই নদী পেরোতে পারি এখুনি
উড়োজাহাজ যদি ব্যবহার করি।