শরতের আহ্বান
শরৎ বাবু বলছে ডেকে
যাবে আমার সাথে?
শিউলি ফুল মালা গেঁথে
দেব তোমার হাতে।
শিশির ভেজা দূর্বাঘাসে
হাঁটবো দুজন মিলে,
শাপলা হাসে চেয়ে দেখ
দুপুর বেলা ঝিলে।
ইচ্ছে করে মেঘের দেশে
দেই দুজনে পাড়ি,
নীল আকাশটা ছুঁয়ে দেখব
চড়ে হাওয়াই গাড়ি।
নদীর তীরে ফুলে ফুলে
কাশবন গেছে ভরে,
আসমানি রং শাড়ি পরে
থাকবে হাতটা ধরে।
মাঝে মাঝে উড়ে যাবে
শালিক ময়না টিয়ে,
সুখের তরী বাইবো রানি
শুধু তোমায় নিয়ে।
সুখের চাবি
ক্যালেন্ডারের পাতায় চোখ পড়ে ভাবি!
জীবনের ঢের দিন হয়ে গেছে পার,
অর্থকে ভেবেছি সুখ দুয়ারের চাবি
মৃগতৃষ্ণায় ছুটে যে খেলাম আছাড়।
আপন কে দূরে ঠেলে পেয়েছি বিষাদ
চারপাশে শূন্যতায় খাঁ-খাঁ মরুভূমি!
ছুটে চলেছি শুধুই গড়তে প্রাসাদ,
সিদ্ধান্ত নিয়েছি ভুল করে গোঁয়ার্তুমি।
দু'চোখের আয়নাতে ভাসে কত ছবি!
দিশেহারা ক্লান্ত যাত্রী পথ খুঁজে চলে,
আঁধার শেষে উঠবে নিশ্চয়ই রবি,
হৃদয় কানন পুনঃ ভর্তি হবে ফলে।
ব্যথা সব ছুড়ে ফেলে বাঁধি নব আশা,
সবচেয়ে বড় সুখ শুদ্ধ ভালোবাসা।
সুখের তালাশে
ও পারে সুখের ঠিকানায়
এ আমি তালাশে নিরালায়
কি এক জটিল মায়াজালে,
এ মন প্যাঁচালো কুটচালে।
সে পীড়া মনের মোহনায়,
এ আঁখি জোয়ারে কান্নায়।
সে জ্বালা সবার অগোচরে,
তা ক্ষত হয়েছে গহ্বরে।
ও মাঝি নাওনা কিনারায়,
এ আমি ভাসছি নিরাশায়।
পা ফেলে নদীর লহরীতে,
সে চলে গতির বিপরীতে।
না জেনে নেমেছি তটিনীতে,
এ মোর বেদনা ধমনীতে।
কি করি বলো'না প্রতিকার,
সে হেতু ভাবনা লেখিকার।
ও মাঝি ধরো'না দুটিহাত
এ হৃদে লাগছে করাঘাত
সে আমি করছি আহবান,
এ প্রাণ পেয়েছে জ্ঞানদান।
ধ্বংসযজ্ঞ
আরও একটা বিশ্বযুদ্ধ যেন চলছিল অন্তর প্রদেশে,
তীর ধনুক কিংবা বর্শার আঘাত নয়!
যুদ্ধাস্ত্র ছিল নিউক্লীয় বোমা!
এ ধ্বংসযজ্ঞ আরেকটি বার হিরোশিমার কথা মনে করিয়ে দেয়,
প্রাণচঞ্চল হিরোশিমা নাগাসাকি শহর হয়েছিল পঙ্গুত্বের গহ্বর।
ঠিক সেইরকমই যেন আকষ্মিক ভাবে মর্মদেশ কম্পিত হয়ে ওঠে!
স্বপ্ন শহর হলো মূর্ছিত! হলো নিষ্ক্রিয় পাথর!
যে হৃদয় নগরীতে নির্মিত ছিল ব্যাবিলনের উদ্যান,
ধুলোয় মিশে ধ্বংস স্তুপে আজ হয়েছে ম্রিয়মাণ।
সেখানে আজ অঙ্কুরিত হয় না সবুজের সমারোহ,
বাসা বাঁধে না কোনো পাখি,
বাতাসে ভেসে বেড়ায় না মিষ্টি সুরের মূর্ছনা।
বয়ে চলছে সেথায় শব্দহীন শুকনো অশ্রু প্রপাত।
শ্যাওলা জমে স্যাঁতসেঁতে হৃদয়ের কুঠুরিটা,
হিরোশিমা আর জাগবে না,আর জাগবে না,
পাবে না ফিরে সেই যৌবনের মুখশ্রীটা।
কঙ্কাবতীর দুঃখ
এক যে ছিল দস্যি সর্দার দেখতে ঠিকই মানব,
কিন্তু সে যে আঁধার রাজ্যের মহা একটা দানব,
কঙ্কাবতী কে আনে ধরে এমন বিকট মূর্তি,
অনুরাগের ছোঁয়া পেতে ঘটায় অদ্ভুত কীর্তি।
কঙ্কাবতী তোমায় আমি রাখবো রানি করে,
হীরা পান্নার মালা দিয়ে দেবো তোমায় ভরে।
রাজকুমারীকে নাকি সে করতো বহুত পেয়ার,
কারাগারে বন্দী করে চালায় ভীষণ প্রহার।
দৈত্য সম্রাট বুঝে না যে রাজকুমারীর মন,
নারকীয় তাণ্ডব লীলায় করতো আক্রমণ।
মিথ্যাচরণ আর লুকোচুরিতে করে নিত্য খেলা,
রাজকুমারীকে কয়েদ রেখে
বসায় জলসার মেলা।
সোনার পালঙ্কে ঘুম কি হয়! দৈত্য রাজের ভয়ে,
কত পালানোর উপায় খুঁজে চুপিচুপি সংশয়ে।
শক্তি দিয়ে কেনা যায় কী খাঁটি ভালোবাসা?
দোহাই লাগে দৈত্য সম্রাট করিস না আর তামাশা।