শেষ ট্রেন
********
রাতের শেষ ট্রেনটা ভীষণ একা হয়ে প্লাটফর্ম ছাড়তেই একরাশ বিষণ্নতা জমিয়ে ধরে কালো আঁধারের মতো।
শূন্য কামরায় একাকী যাত্রী হতে ভীষণ হচ্ছে করে। ইচ্ছে করে মাঠ ঘাট প্রান্তর পার হয়ে পৌঁছে যেতে সুদূর দিকশূন্যপুরে। ছোট্ট বেলায় শোনা ব্যাঙ্গমা ব্যাঙ্গমী হয়তো বসে থাকে নিরালা কোনো কামরায়। একাদশীর চাঁদ তার বুকের সমস্ত আলো ঢেলে দিচ্ছে নিজেকে উজাড় করে। ঠিক তখনি রাতের লক্ষীপ্যাঁচা ডেকে উঠে প্রহর শেষের জানান দিয়ে।
ইচ্ছে থাকলেও ( সময় করে?) উঠতে পারি নি কখনোই। মায়া মমতা জড়িয়ে ধরেছে আষ্টেপৃষ্ঠে। অধরাই রয়ে গেছে দিকশূন্যপুর,দিগন্ত যেখানে দূর্বাঘাসের বুকে মাথা রেখে ঘুমায়। পৌঁছাতে পারি নি কখনোই ( পদ্মবিলের পাড়ে? ) তাই দেখতেও পেলাম না পদ্মপাতায় সাপের নৃত্য।
গর্ভবতী পুকুরে সাঁতার কাটে সাদা রাজহংসী। যেন জলই তার সম্রাজ্য, পেছনে অধীনতা মেনে নেওয়া পরাজিত রাজার মতো রাজহংস। বঙ্কিমচন্দ্র সে জন্যই তো বলেছিলেন সুন্দর মুখের জয় সর্বত্রই।
ফোঁকলা দাঁতে হাসে মাঠের সম্রাট। মহাজনের গোলায় ভরে দিতে হবে গোটা বছরের তামাম পরিশ্রম। হয়তো রাতের আঁধারে একান্ত আপন নারী - ইজ্জত - সম্ভ্রম।
পাঠ্যবই থেকে আজো ডাক আসে দুনিয়ায় মজদুর এক হও। এক হওয়া কি এতোই সহজ? এতোই সহজ রাতের শেষ ট্রেনে চেপে বসা?
নিজের মাংসে হরিণী নিজেই তার শত্রু। আর কে না জানে তার চেয়ে অধিক সুস্বাদু নারীর শরীর! তাই পথে ঘাটে বাসে ট্রেনে ( আদিম নখর) খুবলে নেয় কাঁচা মাংস। মিটিং হয়, মিছিল হয় একটার পর পরবর্তী মিছিল। সময় টা ভীষণ কম,প্রস্তুতি নিতে নিতেই প্লাটফর্ম ছাড়ে রাতের শেষ ট্রেন।