নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

পিনাকি কর্মকার লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
পিনাকি কর্মকার লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

গোপাল ভাঁড় : পিনাকি কর্মকার



বাংলাদেশের রসের রাজা, কি নাম বল তাঁর?
সমস্বরে বললে সবাই, তিনি গোপাল ভাঁড়।

নাদুসনুদুস গোপাল বাবু, টাকে ভরা মাথা ।
পেটটা যেন বটের গুঁড়ি, লম্বে খানিক নাটা।

কৃষ্ণনগর রাজার দেশ ,সেথায় তাঁর নিবাস।
রাজামশায়ের প্রিয়পাত্র, লোকটি তিনি খাস।

রসের রসিক ছিলেন তিনি, তীক্ষ্ণ বুদ্ধি তাঁর।
ধূর্ত গোপাল পেয়েছিলেন, রাজার সমাদর।

কৃষ্ণচন্দ্রের ভাগ্য ভালো, সঙ্গী এমন ব্যক্তি।
একা গোপাল বাড়িয়ে দিলেন, মহারাজের শক্তি।

যতই আসুক বিপদ আপদ, না থাক পাশে কেউ।
একাই একশ গোপাল ভাঁড়, সামলে দিতেন ঢেউ।

রসের রাজা গোপাল ভাঁড়, জন্ম নাপিত ঘরে।
হাস্যরসে মন মজিয়ে, বিখ্যাত দেশজুড়ে।।

স্পষ্টবক্তা ছিলেন তিনি, ছিলেন যুক্তিবাদী।
রাজার ভুলও ধরিয়ে দিতেন, পেলেন ভাঁড় উপাধি।

তাঁকে নিয়ে হাজার গল্প, মজার এবং ভালো।
ভূবনজুড়ে মজার ছলে, ছড়ায় জ্ঞানের আলো।

ছোট্ট বেলায় সব হারিয়ে, একা হলেন ভবে।
দুঃখ ব্যাথা লুকিয়ে রেখে, হাসিয়ে গেলেন সবে।

রসের রাজা জ্ঞানের রাজা, তিনিই গোপাল ভাঁড়।
ভূবনমাঝে যতই খোঁজ, তুলনা নেইকো তাঁর।

জীবনের গাঁথা : পিনাকী কর্মকার

মধ্যবিত্ত এ জীবন আকণ্ঠ পান করে যেতে চাই।
প্রতিদিন,প্রতিক্ষণ চেটেপুটে খেতে চাই।
জীবনের সবকটা রং আমি সবখানে মেখে,
তবেই বিদায় জানাতে চাই এই পৃথিবীকে।
এলোমেলো গেরস্থালি দেখে নাক সিটকালে,
জেনো তুমি এ জীবনের শুধু সিকিটুকু পেলে।
জেনো রাত কেটে ভোর হয় একদিন,
সেই ফাঁকে অভিমানে ভাঙো যদি জীবনের বীণ
পিপাসা তোমার মিটবে তবে বলো আর কবে?
ইচ্ছে অনিচ্ছে সব কিছু পিছে পড়ে রবে।
সাতরঙা এ জীবনের যতটুকু রস, গন্ধ,
কব্জি ডুবিয়ে খেয়ে যাও লাগবেনা কখনোই মন্দ।
দিনশেষে সন্ধ্যাবেলায় ঘরে ফিরে যদি দেখো,
বিছানার চাদরটা একেবারে টানটান মনোমত।
আনমনে যদি মনে পড়ে কারো কথা বারে বারে,
অজ্ঞাতসারে যদি দুই চোখ জলে ওঠে ভরে,
তবে জেনো সেটাও তো জীবনের একখানা রঙ।
মাখো তাকে সারা গা জুড়ে,সাজো জীবনের শেষ সঙ।
আমি তো সেটাই চাই, ভালবাসা, বিরহ ব্যথা,
সবটুকু নিয়ে হোক আমাদের  জীবনের গাথা।

লটারি : পিনাকী কর্মকার


বোধনের বাজনা বাজে ধরার বুকে আজ।
 কৈলাসে দেবদেবীরা করছে নতুন সাজ।
আজকে সবে মহাখুশি মামার বাড়ি যাবে।
শুয়ে বসে চারটি দিন মণ্ডা-মেঠাই খাবে।
সাজগোজ মিটলে পরে বাজলো কাঁসর ঢোল।
কিসে চড়ে যাবে তারা বাঁধল বিষম গোল।
কার্তিক বলে এই বছরে ঐরাবতের পিঠে।
চড়ে যাবো মামার বাড়ি, রোদ্দুর খুব মিঠে।
গণপতি চেঁচিয়ে বলে কি যে বলিস ভাই।
চলনা এবার সবাই মিলে নৌকা চেপে যাই।
সরস্বতী বিরক্ত হয়ে পিছিয়ে যায় দুপা।
নৌকায় আমার ভয় করে তুই তো জানিস তা।
তারচে' চল দোলায় চড়ে মামাবাড়ি যাই।
এই না শুনে লক্ষ্মীদেবী তোলেন বিষম হাই।
ঘোড়ায় চড়ে যাব মোরা চেঁচিয়ে বলে ইন্দিরা।
মাথায় সবার কিলবিল করে নিত্যনতুন ফন্দিরা।
দুর্গা একটা বুদ্ধি করে বলল সবে একসাথে।
আসা-যাওয়া হবে কিসে ঠিক হবে লটারি তে।


মা দুগ্গা এসে গেছে: পিনাকী কর্মকার



বৃষ্টি-বাদল থেমে গেছে ,
বন্যার জল নেমে গেছে ,
আলোয় ভূবন ভেসে গেছে,
মা দুগ্গা এসে গেছে। ।

শরত্ ঋতু এসে গেছে,
হাওয়ায় মেঘ ভেসে গেছে,
বুলবুলিটা ডেকে গেছে,
মা দুগ্গা এসে গেছে ।

 কাশের দোলায় মাঠ ভরেছে,
শিউলি তলায় ফুল ঝরেছে,
শিশির কণা ধরেছে ঘাসে,
মা দুগ্গা এসে গেছে ।

ঐ দেখ ভাই চাঁদ উঠেছে,
হিমেল হাওয়া গায় লেগেছে ,
আনন্দে আজ মন মেতেছে,
মা দুগ্গা এসে গেছে ।

নতুন জামা গায়ে পরেছে,
ঢ্যাম্ কুড়াকুড় ঢাক বেজেছে,
ধুনুচি হাতে খুব নেচেছে,
মা দুগ্গা এসে গেছে ।

নবমী নিশি ফুরিয়ে গেছে,
আনন্দ আজ জুড়িয়ে গেছে,
বিসর্জনের ঢাক বেজেছে,
মা দুগ্গা ভেসে গেছে ।

স্বাগত : পিনাকি কর্মকার




নিয়নের নীল আলোয় শোভে শহর,
মাঝে মাঝে কাঁপিয়ে দিয়ে যায় মোটরের শব্দ।
দিগন্তে তখনও কুমড়োর ফালির মত চাঁদ,
রুগ্ন,শীর্ণ হয়ে প্রহর গুনে চলে।
বিদ্যুতের তারে ভোরের প্রথম কাক,
থেমে থেমে তার ডাক ছাড়ে।
সারারাত জেগে থাকা খ্যাপাটে শহর,
আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসে।
রাস্তার মোড়ে মোড়ে ধোঁয়া ওঠে।
দূর থেকে ভেসে আসে নামাজের রব,
শোনা যায় সাইকেলের ক্রিং ক্রিং।
ঘরে ঘরে পৌঁছায় নতুন দিনের খবর।
আলসেমি মাখা শরীর খুঁজে নেয় টুথব্রাশ।
কোথাও বেসিন, কোথাও রাস্তার ট্যাপকল,
ঘষামাজার কত না রকমফের।
ধোঁয়া ওঠা কাপে স্বাগত নতুন দিন।

চাই না কারগিল : পিনাকি কর্মকার


বন্ধ হোক রক্তস্রোত নিয়ত দুইবেলা,
বন্ধ হোক পড়শির সাথে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা।
বন্ধ হোক দেশের মধ্যে আরেকটা দেশ গড়া,
 বন্ধ হোক প্রত্যহ এই লাশগুনতির ছড়া।
সীসের টুকরো বোঝেনা যে কে আপন কে পর,
মৃত্যুদূতের কোলে তুলে সে ভাঙছে শুধুই ঘর।
যুদ্ধের মুখে ছাই দাও আর বারুদের ঘরে খিল,
চাইনা কারুর রক্ত যে আর চাইনা কারগিল।