অমরেশ
*****
গতকাল অমরেশ এসেছিল -
রুক্ষ চুল , ক্ষয়াটে চেহারা , অগ্নিভ চোখ....
যেন সবকিছু ছিনিয়ে নিতে চায় ও ।
ওর মভ রঙ্গের ফাটা পাঞ্জাবীর পকেট থেকে বার করলো এক টুকরো হারানো স্বপ্ন ।
আমাকে দেখিয়ে বললো , 'খবর আছে ! '
আমি কোনও উত্তর দিই না ।
দেওয়ার মতো সাহসও আমার নেই ।
তারপর মুচকি হাসি মেখে অগ্নিগোলক চোখ ঠিকরে বেরিয়ে এলো , ' একটা বিড়ি দে তো ! '
আমি তাকে সিগারেটের ঠাসা প্যাকেট এগিয়ে দিই ।
' ও , আজকাল বিড়ি খাচ্ছিস না বোধহয় ! '
বিড়ি-পোড়া ঠোঁটে বিস্ময়কর প্রশ্ন ।
দুরন্ত ইংরেজী বলা ঠোঁট হটাৎ শুয়ে পড়ল আমার ডিভানে আর বিড়বিড় করে বলতে লাগলো জন কিট্স ।
আমার নিশ্চুপ থাকাটা ওকে আরও বিস্মিত করে তুলল -
' কিরে , কিছু বলছিস না যে ! ভুলে গেছিস নাকি ! '
' না.....মানে.....'
সিগারেটের ধোঁয়া কুন্ডলী পাকাতে পাকাতে অবশেষে মেঝেতে শরীর দিল ছেড়ে ।
কিছু জিজ্ঞাসা করার আগেই ঘাড় ঘুরিয়ে নিল ক্লান্তিতে ।
অমরেশ , আমার বন্ধু
শৈশব , যৌবন পার করে আজও....
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী ট্পার ।
বুকে ছিল পাহাড় উপড়ে ফেলার শপথ
ভূমধ্যসাগরে দুর্গমের অভিযান করার উন্মত্ত পাগলামি
আর মননে ছিলো প্রিয় রবীন্দ্রনাথ , কীটস , কাফকা আর চে' র মতো চিন্তাবিদরা ।
গনগনে আগুনের মতো তেজ আর নেই । কিছুটা নির্লিপ্ত ।
তবু পোড়া কাঠের মতো দেহ শ্বাপদ খুঁজে বেড়ায়....
খুঁজে বেড়ায় ধারাশ্রাবণ ।
চিরকুটটি পড়ে দেখলাম , ' তুমি শিলিগুড়ি থেকে ফিরে ফোন কোরো '
নীলা
ওর 'ভার্সিটির বন্ধু
ওদের আড্ডায় মাঝেমধ্যে থাকতাম আমিও ।
চা-গুঁড়ো মেশানো গরম জল খেতে খেতে কাফকা পড়ে শোনাতো ।
কতবার যে নীলা ওর ঠোঁট থেকে কেড়ে নিয়েছিলো বিড়ি-তা মনে নেই ।
হিমালয়ের কাঁপন ধরানো কন্ঠে হঠাৎ গেয়ে উঠতো নীলার প্রিয় রবীন্দ্রনাথ অথবা মহীনের ঘোড়াগুলি ।
দীর্ঘ সতেরো বছর পর ফিরে এলো স্মৃতি....ফিরে এলো কেডি স্যারের ইন্দ্রনাথ....আমার অরাজকতার সংসারে....দশ বাই বারোর জীবনযুদ্ধে....যেখানে আলো পরে না প্রখর সূর্যের , ছোঁয় না কোনও পক্ষের চাঁদ ।
সেখানে শুধুই অন্ধকার আর ধ্বংসের গাঢ় শীত
' আর চারিদিকে অদ্ভুত আঁধার এক ' ॥
*****
গতকাল অমরেশ এসেছিল -
রুক্ষ চুল , ক্ষয়াটে চেহারা , অগ্নিভ চোখ....
যেন সবকিছু ছিনিয়ে নিতে চায় ও ।
ওর মভ রঙ্গের ফাটা পাঞ্জাবীর পকেট থেকে বার করলো এক টুকরো হারানো স্বপ্ন ।
আমাকে দেখিয়ে বললো , 'খবর আছে ! '
আমি কোনও উত্তর দিই না ।
দেওয়ার মতো সাহসও আমার নেই ।
তারপর মুচকি হাসি মেখে অগ্নিগোলক চোখ ঠিকরে বেরিয়ে এলো , ' একটা বিড়ি দে তো ! '
আমি তাকে সিগারেটের ঠাসা প্যাকেট এগিয়ে দিই ।
' ও , আজকাল বিড়ি খাচ্ছিস না বোধহয় ! '
বিড়ি-পোড়া ঠোঁটে বিস্ময়কর প্রশ্ন ।
দুরন্ত ইংরেজী বলা ঠোঁট হটাৎ শুয়ে পড়ল আমার ডিভানে আর বিড়বিড় করে বলতে লাগলো জন কিট্স ।
আমার নিশ্চুপ থাকাটা ওকে আরও বিস্মিত করে তুলল -
' কিরে , কিছু বলছিস না যে ! ভুলে গেছিস নাকি ! '
' না.....মানে.....'
সিগারেটের ধোঁয়া কুন্ডলী পাকাতে পাকাতে অবশেষে মেঝেতে শরীর দিল ছেড়ে ।
কিছু জিজ্ঞাসা করার আগেই ঘাড় ঘুরিয়ে নিল ক্লান্তিতে ।
অমরেশ , আমার বন্ধু
শৈশব , যৌবন পার করে আজও....
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী ট্পার ।
বুকে ছিল পাহাড় উপড়ে ফেলার শপথ
ভূমধ্যসাগরে দুর্গমের অভিযান করার উন্মত্ত পাগলামি
আর মননে ছিলো প্রিয় রবীন্দ্রনাথ , কীটস , কাফকা আর চে' র মতো চিন্তাবিদরা ।
গনগনে আগুনের মতো তেজ আর নেই । কিছুটা নির্লিপ্ত ।
তবু পোড়া কাঠের মতো দেহ শ্বাপদ খুঁজে বেড়ায়....
খুঁজে বেড়ায় ধারাশ্রাবণ ।
চিরকুটটি পড়ে দেখলাম , ' তুমি শিলিগুড়ি থেকে ফিরে ফোন কোরো '
নীলা
ওর 'ভার্সিটির বন্ধু
ওদের আড্ডায় মাঝেমধ্যে থাকতাম আমিও ।
চা-গুঁড়ো মেশানো গরম জল খেতে খেতে কাফকা পড়ে শোনাতো ।
কতবার যে নীলা ওর ঠোঁট থেকে কেড়ে নিয়েছিলো বিড়ি-তা মনে নেই ।
হিমালয়ের কাঁপন ধরানো কন্ঠে হঠাৎ গেয়ে উঠতো নীলার প্রিয় রবীন্দ্রনাথ অথবা মহীনের ঘোড়াগুলি ।
দীর্ঘ সতেরো বছর পর ফিরে এলো স্মৃতি....ফিরে এলো কেডি স্যারের ইন্দ্রনাথ....আমার অরাজকতার সংসারে....দশ বাই বারোর জীবনযুদ্ধে....যেখানে আলো পরে না প্রখর সূর্যের , ছোঁয় না কোনও পক্ষের চাঁদ ।
সেখানে শুধুই অন্ধকার আর ধ্বংসের গাঢ় শীত
' আর চারিদিকে অদ্ভুত আঁধার এক ' ॥