কবি শুভ্রা দে
(লন্ডন)
সাক্ষাৎকার
***********
১:- আপনার কাছে কবিতা কি ?
উত্তরঃ: কবিতা হল আত্মার ঔষধ ,মন খারাপির ঔষধ, নতুন করে বাঁচতে শেখার ,নতুন করে ভালোবাসার কিছু না বলা কথার প্রকাশ ।
২:- আপনার প্রিয় কবি কে ?আপনার অনুপ্রেরণা কে বা কি ?
উত্তরঃ শরৎ চন্দ্র আমার প্রিয় লেখক ,প্রিয় কবি হল রবীন্দ্রনাথ
আমার অনুপ্রেরণা হল কবি অতনু নন্দী
৩:- কেন লেখেন আপনি কবিতা ?
উত্তরঃ ওই মন খারাপে কিংবা ভীষণ ভেঙে পড়লে ওই কবিতাই নতুন করে বাঁচতে শেখায় ,তাই মনের খেয়ালে লিখে চলি কিছু কথা ।
৪:- আপনার প্রথম কবিতার নাম ও কাব্য গ্রন্থের নাম (প্রকাশিত/ অপ্রকাশিত)
উত্তরঃ প্রথম বই ( পঞ্চদর্শী)প্রকাশিত
প্রথম লেখা কবিতা ( আমার মা)
৫:- কবিতা/কবি সঙ্গে পাঠকের সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিৎ ?
উত্তরঃ কবি/কবিতার সঙ্গে পাঠকের সম্পর্ক ভীষণ আত্মীয়র। আত্মার টান থাকাটা খুব জুরুরী । মনের খুব কাছের মানুষ হচ্ছে ওই পাঠক ।
৬. ফেসবুকিয় কবিতা বা সাহিত্য বাংলা সাহিত্যে জগতে কতখানি গুরুত্ব রাখে ?
উত্তরঃ ফেসবুকের কবিতা বা সাহিত্য বাংলা সাহিত্যের ভবিষ্যতে এর এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ।এখন হয়তো এর গুরুত্ব আমরা সেরকম দেই না ,কিন্তু ফেসবুকে এর মাধ্যমে অনেক পাঠকের সঙ্গে অনেক কবির সঙ্গে ,কবিতার সঙ্গে পরিচয় হয় ।
৭.ছাপা ম্যাগজিন ও ব্লগ ম্যাগজিন বা ওয়েব ম্যাগজিনের মধ্যে কার বেশি গুরুত্ব ? এবং কেন ?
উত্তরঃ ছাপা ম্যাগাজিন এর গুরুত্ব অবশ্যই বেশি ।তবে ব্লগ বা ওয়েব ম্যাগাজিন এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ,করছে ।
৮. আজ কাল অনেক কবি জন্ম নিচ্ছে ,কেউ বা প্রেমে আঘাত খেয়ে ,কেউ বা ব্যর্থতায় আবার কেউ কবি হবে কবিতা লিখছে , কিন্তু যখন লেখা ছাপাতে চাইছে টাকার অভাবে বই করতে পারছে না ,বা করলেও বই বিক্রি হচ্ছে না , মানুষের এই বই বিমুক হওয়ার কারণ কি ? বইয়ের অভিমুখে আনতে গেলে কি করা উচিৎ বলে আপনার মনে হয় ?
উত্তর: বই বিমুখ হওয়ার মূল কারণ হিসেবে আমি মনে করি এই ইন্টারনেট ,এখন হাতের মুঠোয় সব জিনিস সবাই পেয়ে যাচ্ছে ।
বই মুখী করার উপায় হিসাবে আমার মনে হয় ,যে বই মেলা ,বই দিসব পালন ইত্যাদির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মাধ্যমে করা যেতে পারে ।
৯. উত্তরাধুনিক কবিতা বলতে কি বোঝেন ? অনেক জনই আজকাল কিছু কঠিন কঠিন ইংরেজি শব্দের পর শব্দ সাজিয়ে বলছে এটা উত্তরাধুনিক কবিতা , কিন্তু কবিতা পড়তে গেলে দাঁত ভাঙার উপক্রম কিংবা মাথার উপর দিয়ে চলে যায় সেক্ষত্রে আপনার কি মতামত ?
উত্তরঃ কবিতা হবে সহজ ও সরল , যা এটি সহজে বলে দেবে অনেক কথা ।
১০. গদ্য কবিতা ও গদ্য-পদ্য কবিতা কি ? গদ্য কবিতায় কি ছন্দ বা নির্দিষ্ট তাল থাকার প্রয়োজন নেই ?
উত্তরঃ অবশ্যই একটা নির্দিষ্ট রীতি ও তাল ও ছন্দ থাকবে কবিতায় ,তা আধুনিক হোক কিংবা মধ্যযুগীয় হোক
কিছু কবিতা:
তুমি বলেছিলে ভালোবাসি
********************
নীল পাহাড়ের পিছন থেকে লাল সূর্যটা কেমন ফুটে বেরুলো। ।
হিমেল বরফচুড়া গুলি থেকে একের পর এক সোনা গলে পড়ছে।
বল তো( তুমি ) কত সুন্দর হবে আমাদের সেই দিন গুলি
৷ কি চমৎকার অপরূপ চাঁদ লাখো তারাদের নিয়ে আকাশটাতে কেমন সাজাবে নতুন করে।।
মামুলি এলোমেলো নদীটা কখন ঝিলমিল ঝিলমিল করে জলতরঙ্গের মত বাজবে।
নদীর ধারে পলাস ফুলের গালিচায় আমরা হাত ধরাধরি করে বসে থাকবো দুজনে।।
এক শুন্য জীবনে এসবই এক স্বপ্নের মত ভেসে গেলো।।
কেননা কালরাতে আমায় তুমি বলেছিলে,“ভালোবাসি। ”
এদেশ ও বিদেশ
************
জন্মভূমি তুমি মাগো,
তোমার কোলেই মানুষ আমি,
কর্মসূত্রে মাগো আমি এখন পরদেশ বাসি।
বেদনা ছাড়া জোটেনি কিছু তোমার ভূমিতে,
পেয়েছি যা কিছু আমি এই বিদেশে।
সভ্যতার নজরানা
শিখেছি মাগো পরবাসী হয়ে, সম্মান ও শিক্ষার আলো পেয়েছি এখানে।
শিশুদের শ্রমিক বানায় না এ দেশ
শৈশব শিকারি নয় এ দেশ।
হয়েনা নারী অত্যাচার
করেনা শ্লীলতা হানি
কোনো নারীর
মাগো মাটি আমার
আমার ভারত জন্মভূমি,
তোমার মাটি আমার কাছে
এখনো বড় দামি।
এখনো!
*******
ভালোবাসার মশাল জ্বলেছিল একদিন আজ নিভে গেছে।
বৈদ্যুতিক কারিকুরি সব কবে যে বিকল হলো।
লণ্ঠনের তেল ফুরিয়ে দপ্ করে নিভে গেলো।
ভোর হতে ঢের দেরী জেনে গেছে আকাশের তারারা আজ।
এস পরম মমতায় ভালোবাসায় ফের হাত ধরি।
ভয় কি? এখনও আকাশে জেগে আছে মায়াবি চাঁদ ।
পূজোয় প্রবাসে
************
এখানে জাঁকালো সড়ক আর টেমসের জলকে কুয়াশারা হিংস্র বাজের মত অহরহ শীকার করে।
অথচ আমার স্বভূমি,আমার বাঙলায় আজো কিছু শারদ শিউলি, কিছু কাশফুল ফোটে ।
বন্যার জলের মত সোনালি রোদ গৃহস্থের আঙিনা ভাসিয়ে জানালা দিয়ে কখন যে ঢুকে পড়ে ন্যাংটো খোকার সাথে খেলতেএ শুরু করল!
আমার স্বদেশবাসী আজো তেমন শেখে নি কেতাবি সহবত, মাপা হাসি বা রুমালী কান্না।
খিদে পেলে তারা আজো বড় তারস্বরে চীৎকার করে।
তবু আমার স্বদেশে আজ সন্ধ্যায় লাখো লোক তেঁতুল গোলা জলে ফুচকার উদগীরণ তুলবে ।
একজনের উচ্ছিষ্ট শালপাতা মাড়িয়ে সহস্র লোক মাতৃদর্শনে যাবে প্যান্ডেলথেকেপ্যান্ডেলে।
জৌলুস প্রাচুর্য জমকে লন্ডন নয় স্বদেশআমার।
তবু সে ই শুধু আমার আমি, আমার সমগ্র।
চিরকালের দুখী সামান্য সুখেই হিল্লোলিত আমার জন্মভূমি আমার বাংলা মা, আমার গর্ভধারিণী মা আর জগজ্জননী উমা কবে যে এমন মিলেমিশে
একাঙ্গী হযে উঠল!
অচেনা বন্ধু
*********
রাঙা মেঘ হলুদ জোছনা
ঝিক মিক তারা
চেনা মুখ ! মুখোস পড়া বন্ধু
চেনার মাঝে, চিনি নি তাকে
বর্ষা কাজল চোখে
ভা লো বা সা র অভিনয়
রক্তের ফোঁটা ফোঁটা
কৃষ্ণচূড়ার লাল, সবুজ জলতরঙ্গ
বেজে ওঠে মুখরিত ঝঙ্কার
অহেতুক কৌতূহল অগ্নিবলয়
কৌতুকের ছলে বলে যাই
বেঁচে রব কবিতার আনাচে কানাচে
বিদ্রোহী বৃষ্টি ভিজিওনা আমাকে
সাক্ষাৎকারে: জ্যোতির্ময় রায়
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন