বৈশাখী চ্যাটার্জী
গরীবের শহর -বড়লোকের শহর গোটা শহর জুড়ে কত আলো -পাশের বাড়ির বিট্টুরাও তাদের একচালা টিনের চালের ঘরটাকে ছোট ছোট টুনি আলো দিয়ে সাজিয়েছে -দেওয়ালী ঘর -দেওয়ালী ঠাকুর ।চরকি, তুবড়ি ,রসবাতি -আলোর বৃষ্টি হচ্ছে উঁচু কংক্রিটের দেওয়াল -আর একচালার ছোট্ট ঝুপড়িতে ।গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে ভিজে যাচ্ছে গোটা শহর ভিজে যাচ্ছে মন -।
মনে কত জমা অন্ধকারের খোঁজ রাখে এই আলো, এই দীপাবলীর রাতে ঝড় ওঠে -আলোর ঝড়, মনের সব অন্ধকারের ইতিকথা গুলো ভুলে- কয়েক আলোকবর্ষ দুর থেকে কত আলো আসে লাল, নীল, সবুজ ,হলুদ -রঙীন মনের প্রতিটা ভাঁজ হারায়- ব্যথার কথা -মুখ হাসে ,চোখ হাসে, -হাসে বেদনার রঙ, -উঁচু বাহারি ঘর -রঙিন দেওয়াল সাজে রকমারি দামী আলো দিয়ে ।-ছোট্ট ঝুপড়ির মরচে পড়া জানলায় সাধ্য আর সাধের একটা ছোট্ট ইলেকট্রিক তার,- তাতে গুটিকয় ছোট ছোট নক্ষত্ররা মিটমিট করছে ।-
আলো সবার, -সবাইকে আলোতে ভরে দেওয়া তার কাজ -তাই সে জড়িয়ে ধরে চুমু দিচ্ছে সমস্ত অলি- গলি, পারা ,রাস্তা -বস্তি আর উঁচু উঁচ বাড়ির চূড়া গুলোকে ।
বিট্টুরা তুবড়ি জ্বালাচ্ছে আগুনের আলো ফোয়ারা হয়ে উঠছে- আবার নিভে নেমে আসছে -কিন্তু শেষ নয় এই আলো, এর রেশ থেকে যায় মনে --।
আমি দাঁড়িয়ে দেখছি ওইখানে ওই দোতলা বাড়ির ছাদে তুবড়ির আলো জ্বলছে আর নিভে যাচ্ছে ,-মোমবাতির শিখা দোতলা থেকে একতলা হয়ে মিশে যাচ্ছে মাটির সাথে ।শুধু শেষে কিছু অনুভুতি বাকি থেকে যায় -আমি দেখছি, আমি ভাবছি ,আমার অন্ধকারের জেগে থাকা ঘুম আজ আলোময় -আমার রাত্রি গুলো ঘুমাবে বলে আলো জ্বেলেছে, দীপাবলীর আলো --অন্ধকারে ঘুমোতে বড্ড ভয় করে ঘুম আসেনা ,-গোটা শহর অন্ধকারে হাতড়ায় ঘুম ।জেগে থাকে নিঃশব্দ রাত। আজ আলো আছে -বাতাসের বুকে কত শব্দ কোলাহলের -আনন্দের -উৎসবের -মিলনের । আলোয় ভাসছে শহর ,ভাসছে জীবন ।তবুও ছায়ায় কিছু অন্ধকার এখনো লুকিয়ে ॥
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন