" Life always wants to sustain itself, if possible then eternally. "
'অল-ইকসির' অর্থাৎ আশ্চর্য বস্তু। সময়টা সপ্তম শতাব্দী, তার আগে 'Elixir' শব্দ টা আসেনি। যদিও শব্দ দুটো ৫২-৫৩, তবুও এই একুশ শতকে দাঁড়িয়ে ঔষধি বস্তু আর আশ্চর্য বস্তু এক জিনিস নয়। কিন্তু ওষুধ টা যদি অমরত্বের বা চিরযৌবনের হয় ? কি ? হোঁচট খাচ্ছেন তো ! এগোতে থাকুন আরো খাবেন।
জীবনের শুরুর সময় থেকেই আশ্চর্য বস্তু খোঁজ এখনো অবধি অবিচল আছে বরং বেড়েছে কয়েকশো গুণ। প্রোক্যারিওটস্ থেকে শুরু করে এখনো অবধি জীবন যে কোন উপায়ে অমরত্ব পেতেই চায়। তার বিভিন্ন উপায়ে অবশ্য জীবন ইতিমধ্যে খুঁজে ফেলেছে। মানবজাতি সেটা বুঝতে আজও অক্ষম, কারণ মানুষ জীবনের থেকে অনেক পিছিয়ে। আর ঠিক সেই জন্যই অমরত্ব বলতে যা আমাদের মাথায় আসে তা হল অমৃত, philosopher's stone, আব-ই-হায়াত্ , ochimizu ইত্যাদি ইত্যাদি। এরকমই একটা নাম "The Elixir of Life", যার মানে অমরত্বের বা চিরযৌবনের একটা সিরাপ ।
প্রশ্ন আসছে নিশ্চয়ই এসবের সাথে বারুদ এর কি সম্পর্ক ! খুব স্বাভাবিক। আসুন তবে;
পুরাকালে 'অমৃতের খোঁজে হলাহল' , বা philosopher's stone এর জন্য অসংখ্য মৃত্যু - এসব জানে অনেকেই। তবে তা নিছক রূপকথা এমন দাবি করতে আমার দ্বিধা নেই। কিন্তু রূপকথা সত্যি হবে না এমনও তো কোনো মানে নেই।
" Accidents are normal in life." , এই কথাটায় আমি খুব বিশ্বাস করি। দেশটা চীন, সময়টা তখনও আন্ত-সাম্রাজ্য যুদ্ধের। বহু রোগ-ব্যাধি-ক্ষত এসবের উত্তর খোঁজা চলছে বিশ্বব্যাপী, এবং চীনেও। বহু ওষুধে সালফার, পারদ এর ব্যবহার অপরিহার্য। এর মাঝেই জীবনের চির চাহিদা মেনে নিয়ে কিছু মানুষ খুঁজছিল 'Elixir of Life' । বিভিন্ন মিশ্রণ, তাতে সালফার, পারদ, চারকোল এসব থাকতো। প্রথম শতকের অর্ধেকের দিকে তারা সন্ধান পান সল্টপিটার এর, এক ধরনের জারক লবণ। 'টাও' নামে এক জনজাতি, তারা এসব মিশিয়ে রোগমুক্ত, জড়ামুক্ত, মৃত্যুমুক্ত জীবন খুঁজছিল। যদিও তা পাওয়ার একটা পথ গৌতম বুদ্ধ বহুকাল আগেই বলে গিয়েছেন, তবুও ওই যে "যত মত তত পথ" । এরকম খোঁজের এক মিশ্রণে ছিল সালফার, পারদ, চারকোল, সল্টপিটার এসব। সালফার আর চারকোল জ্বালানী অন্যদিকে সল্টপিটার জারক। ব্যাস ঘটে গেল 'magical accident' । মন্থনে উঠে এলো 'বিষ', নাম পরল 'huoyao' অর্থাৎ 'fire medicine' । খেয়াল করুন শব্দ দুটো fire এর সাথে medicine । হ্যাঁ, একটা Taoist লেখা অনুযায়ী, 'huoyao' was an accidental by product from the experiment seeking to create the Elixir of Life .
এই huoyao আর কিছুই নয়, যাকে আপনি বারুদ বা gunpowder বলে থাকেন। তারপর এর দৌলতে যে কাল সাম্রাজ্য এখনো চলছে বিশ্বব্যাপী তাতে আমার 'black powder' নামটা বেশি প্রযোজ্য বলে মনে হয়।
Elixir of Life পাওয়া যাবে কিনা সে নিয়ে আমি বিন্দুমাত্র সংশয়ে আচ্ছন্ন নই, কারণ জীবন তার অমরত্বের পথ খুঁজে ফেলেছে কোটি বছর আগে। কিন্তু অবিরাম মন্থনে এই যে সব 'বিষ' উঠে আসছে, তা গলায় ধারণ করার জন্য গাঁজাপেয়ী পাগলের যে খুব দরকার, আর বিশ্বের হিরোশিমায়ন বা নাগাসাকি-করণ হওয়ার আগেই দরকার ।
1 টি মন্তব্য:
অসাধারণ....! কঠিন বাস্তব তুলে ধরেছিস একদম অন্য আঙ্গিকে। এরকম content আরও চাই।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন