নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

ডাস্টবিন : আমিনুল ইসলাম


ডাস্টবিন থেকে ধূলো উড়ছে, আর
আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত আবর্জনার আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়ে ওঠেনি কলম, যেহেতু তার সুডোল শরীরের যন্ত্রনায় একবিন্দু আফশোস মেখে নেই আমার।

'আমি' মানে এখানে 'আমিই' নই, এখানে 'আমি' হচ্ছেন উত্তম পুরুষ যাঁর চামড়া পুরু হওয়া বাঞ্ছনীয়
এবং যে সলতে হয়ে পুড়তে সক্ষমতা পেয়েছেন
কারণ পুড়তে অক্ষমতা থাকলে, আলো হওয়া যায় না...

নদীজলের সান্ধ্যভ্রমণ : অভিজিৎ দাস কর্মকার



ফেলে আসা পথ__
    ভয়ের পিছনে আবছায়া হয়ে ওঠে |

তবুও
আমি আগরবাতির ধোঁয়া হতে পারলাম না |

উদ্ভাসিমন সমস্যায় পড়েছিল---
হাতে চায়ের কাপ | কোলে সিন্ধুসভ্যতা ডুবছে পরিপাটি |

তখনই,
  সম্মোহিত অস্থিরতায় রুদ্রফল এবং পৃথিবীর গতানুগতিক জাড্য___
জিন্দাবাদ জানিয়েছিল  নদীজলের সান্ধ্যভ্রমন |
       ৫টি হরিণ শাবক ও ১টি সিগারেট সঙ্গী ছিল আমার,
                       তুমি তাও দেখা দাও নি!

জোরদার : জারা সোমা


আমাদের বন্ধুত্ব ছিল জোরদার,
 কখনো ছিলনা অকারণ দাবী,বরং
 অমাবস্যায় সিঁড়ির কোণে
  টিমটিমিয়ে জ্বলত প্রদীপ
 আলোছায়া সন্ধ্যা জমে উঠত মৌতাতে
সিঁথিতে ডুব দিতো অস্তগামী সূর্য

আমরা অপেক্ষা করতাম বর্ষার
অপেক্ষা করতাম স্রোতে ভেসে যেতে
পূর্বের খন্ডমেঘ ঢেকে ফেলেছিল আকাশ
রঙ বদলে গেল নীল থেকে অভিশাপে

আমাদের বন্ধুত্ব জোরদার ছিল
আমাদের আবেগ জোরদার ছিল
আমাদের যৌবন জোরদার ছিল

শুধু সম্পর্কে বাঁধন ছিল না
ভালোবাসায় ভরসা শব্দটা ছিলনা.....


দিনের শেষে : পলি ঘোষ



দিনের শেষে, নিদ্রা ভরা নয়নে --
তব কথা স্মরণে,
মোর নয়ন ভাসে।
আজি বৃষ্টি ভেজা রাতে,
তব কথা হৃদয়ে মোর বাজে।
মোর আকাশে সকল তারা আজি দেখি!
শুধুই মোর অশ্রু ভরা নয়নে টলমল;
বানভাসি সব মানুষ আজি কেমনে রবে?
তাহাদের কথা ভাবিয়াই আজি মোর নয়নে
অশ্রু নদী ঝরে।
কেমনে রহিয়াছে তারা সবাই,
মোর সকল বানভাসি মা, ভাই, বোন?
দেখো, তব মনের শক্তি দিয়া
উজাড় করিয়া দিও তাহাদের সকলকিছু,
দুই হাত ভরিয়া।
মোর মন থমকিয়া গেছে তাহাদের কথা ভাবিয়া।
ভালো যেনো রাখিও তাহাদের সকল বিপদ হইতে।

ভয়াবহ সূর্য উঠছে : গোলাম রসুল



পৃথিবীর মর্মর মূর্তি সমুদ্রের ধারে
অজানা ঢেউ
আমার প্রার্থনা আকাশ

জলে গভীর রাতের প্রতিবিম্ব
আশ্চর্য আমি বাজাই সেই দ্বীপপুঞ্জ
মনে করো যেখানে তুমি খুন হয়েছিলে

মনের অবস্থা ভালো নেই বলে আমি একটি খারাপ রাস্তা ধরে হাঁটছিলাম

দূরের বন্ধুর মতো জ্বর গায়ে কম্বল
মানুষটাকে আর দেখা যাচ্ছে না কুয়াশায়
তারপর স্টেশনের অরণ্য
যেখানে আমি অনেক  মুখ দেখতাম আয়নায়

গোড়ালিতে জমে থাকা নদী
এক সময় আমরা একাকার হয়ে যাই

সমুদ্রের ধারে সেই সব মর্মর মূর্তি
আর চামড়ার ভেতরে ফেটে বেরুচ্ছে রক্ত

ভয়াবহ সূর্য উঠছে
          __________________

জীবনের গাঁথা : পিনাকী কর্মকার

মধ্যবিত্ত এ জীবন আকণ্ঠ পান করে যেতে চাই।
প্রতিদিন,প্রতিক্ষণ চেটেপুটে খেতে চাই।
জীবনের সবকটা রং আমি সবখানে মেখে,
তবেই বিদায় জানাতে চাই এই পৃথিবীকে।
এলোমেলো গেরস্থালি দেখে নাক সিটকালে,
জেনো তুমি এ জীবনের শুধু সিকিটুকু পেলে।
জেনো রাত কেটে ভোর হয় একদিন,
সেই ফাঁকে অভিমানে ভাঙো যদি জীবনের বীণ
পিপাসা তোমার মিটবে তবে বলো আর কবে?
ইচ্ছে অনিচ্ছে সব কিছু পিছে পড়ে রবে।
সাতরঙা এ জীবনের যতটুকু রস, গন্ধ,
কব্জি ডুবিয়ে খেয়ে যাও লাগবেনা কখনোই মন্দ।
দিনশেষে সন্ধ্যাবেলায় ঘরে ফিরে যদি দেখো,
বিছানার চাদরটা একেবারে টানটান মনোমত।
আনমনে যদি মনে পড়ে কারো কথা বারে বারে,
অজ্ঞাতসারে যদি দুই চোখ জলে ওঠে ভরে,
তবে জেনো সেটাও তো জীবনের একখানা রঙ।
মাখো তাকে সারা গা জুড়ে,সাজো জীবনের শেষ সঙ।
আমি তো সেটাই চাই, ভালবাসা, বিরহ ব্যথা,
সবটুকু নিয়ে হোক আমাদের  জীবনের গাথা।

তুমি হীনা নবান্ন : শাহীন রায়হান


নিঝুম রাতের নীরব কান্নায় বৃত্তাকারে ভিজে যায়
ধানহীন প্রাণহীন অর্ধমৃত অস্তগামী নবান্নের
রংহীন নিষ্প্রভ দুটি চোখ-

তুমিহীনা নবান্ন আজ এক পৈশাচিক সভ্যতার
নগ্ন শেকল বন্দী অন্ধ বোবা বধির কয়েদি
তার বুকে কোন ক্লোরোফিল নেই, নেই পুষ্পিত গোলাপের
রং মাখা ভোর ধানে ধানে প্রজাপতির উড়াউড়ি ভ্রমরের
কানাকানি গুনগুন গান-

তুমিহীনা অগ্রহায়ণ যেন ভাতহীন কৃষকের
কুঁচকানো মুখ ক্ষুধার রাজ্যে একটানা দুঃখের বিলাপ-

আমাদেরই দেখি : সুমিত মোদক



টিলার ওপারে হাট বসে ;
শনিবারের হাট ...
ওখানে মোরগের লড়াই হয় ;
মৃত্যুর লড়াই ...

ধারালো দুটো ছোট ছুরি বাঁধা থাকে
মোরগ গুলোর পায়ে ;
তাদের মালিক লড়াই বাঁধিয়ে দেয় ;

লড়াইটা ততক্ষণ চলে ,
যতক্ষণ না একটা মারা পড়ছে ;
আর সেই লড়াইয়ের উপর চলে জুয়া ;
জুয়া--জুয়া--জুয়া---

টিলার এপারে আগুন জ্বলে ;
যেখানে ঝলসে খাওয়া হবে ;
পরাজিত মালিকরাও আমন্ত্রিত
প্রীতিভোজে ;

টিলার উপর দাঁড়ালে দেখি আমাদের ,
আমাদেরই ঝলসানো শরীর ।।


সব কিছু দূরে সরে যাচ্ছে : আহাম্মেদ হৃদয়



সব কিছু দূরে সরে যাচ্ছে
হারিয়ে যাচ্ছে সোনালি দিনগুলো।

আমার জন্মের মায়া ভরা ভিটে
জামতলা বৃক্ষের অমল ছায়া।
হারিয়ে যাচ্ছে আমার সকল
চির চেনা মানুষের মুখ।

হারিয়ে যাচ্ছে পদ্মার মতো
বিস্তৃত সকল নদী
হারিয়ে যাচ্ছে রকমারি পাখিদের
মনোমুগ্ধকর কোলাহল।

হারিয়ে যাচ্ছে শৈশবউত্তীর্ণ
সকল প্রকার খেলা
হারিয়ে যাচ্ছে এদেশের
গ্রাম -গন্জের মেলা।

আমিও হারিয়ে যাচ্ছি
প্রবল স্রোতের টানে অতল সাগরে
হারিয়ে যাচ্ছি সংচূর্ণিত কাচের মতোন
বিশাল সাগরের জলে।

রিয়াজুল হক সাগরের ৩টি কবিতা



১.
মন আঙ্গিনা

চোখ বুঝলে দেখি তোমার প্রতিচ্ছবি
অকারনে পুড়লো হাত,
বুক পকেটে তোমার সেই লাল গোলাপ
আজও সযত্নে রেখে দিয়েছি।
পাড়ার সবাই তোমার দিকে তাকিয়ে থাকতো
আমায় দেখে তুমি আলতো করে হেসে ফেলতে,
আমি সন্ধে হলে তোমার দেয়া ঠিকানায় যেতানা
রোজ দেখা হতো কথা কেউ টেরও পেতনা।
সন্ধের আলোয় ফুরিয়ে যাওয়ার আগেই তোমার দেখা মিলতো
সেই গাঁয়ের বড় পুকুড় পাড়ে দাড়িয়ে থাকতে,
নীল জামা আর খয়েরী রঙের সেই টিপ, আজও আমার চোখে ভাসে,
কি অদভূত দৃশ্য ভুলিবার নয়।
তুমি বিকেলে খেলার মাঠে খেলা দেখার ছলে আমাকে
দেখতে আসতে বুঝার সাধ্য নেই,
আমি তোমায় চুপি চুপি দেখতাম তুমি আমাকে
বুঝাতে তুমি এসো কিন্তু।

2.
শীতের জ্বরে

কনকনে শীতে বুড়ো দাদুটি ঘাপটে বসে আছে
আগুনে তা দিতে ব্যাস্ত ,
নুয়ে পড়েছে বয়সের ভারে রক্তে ঝটলা ধরেছে
র্নিবোধ এখন দাদু আমার।

গ্রামের অধিক মানুষ সকালের রোদ একমাত্র ভরসা
শীতে কাতর ধর ধর কাপছে চারিদিক,
ছমিরন কমিরন ছকমল সবারি একই কষ্ট
এই শীতের জ্বরে কাপছে ।

শহরের বাবু এসে দেখে গ্রামের এ কি হাল এই বুঝি প্রাণ গেল
অকাতরে গরীবের,
কঠিণ এই সময়ে চারিদিকে চিৎকার শীত শীত শুধুই শীত
এই অসহায় মানুষের ।

খড় কুঠো জ্বালিয়ে আগুনে তাপিয়ে শীতকে মোকাবেলা করে
সহজ সরল অবুঝ শিশু,
একটু তাপদাহের আশায় যেন মৃতু যাত্রির দুয়ারে
হে বিত্তবা চোখে পড়েনা এই আতর্নাত শীতে কাপড়ে
মরতে বসেছে এই গরীব অসহায় মানুষ ।

৩.
দাড়িয়ে-----


পুর্নিমার চাঁদের মত দেখতে আমার প্রিয়ার মুখ
তার দৃষ্টির ভাজে কি মায়া বুঝতে কষ্ট হবে,
স্বাধ্য নেই তার প্রেমের ভাজে পরতে সময়
লাগবেনা অমনি প্রেমে পরে যাবে যে কেউ।

দাড়িয়ে নদীর কিনারে আনমনে এক দৃষ্টিতে
চোখের পলক পরার আগেই অদৃশ্য,
পায়ে নুপুড়ের আওয়াজ কানে ভেসে আসলো
ঝন ঝন শব্দে শুনতে পেলাম।

নৈাকায় বসে গুনগুন শব্দে কাকে যেন ডাকছে
নতুবা গানে মুগ্ধ সেই সুন্দরী,
আবার দাড়িয়ে কাঁশ ফুলের মাঝ খানে সেই আওয়াজ
খুজতে হারিয়ে ফেলেছি তাকে আমি।
হটাৎ আবার একটি কন্ঠ শুনতে পেলাম সেই
আগের মত দেখার সাধ্য নেই,
হারিয়ে ফেলেছি তাকে আর খুজে পেলাম না
সে আবার দাড়িয়ে নদীর তীরে।