নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

তপন জানা লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
তপন জানা লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

তপন জানা




হিংসা বিষে 



হিংসা বাষ্পে ছেয়েছে আকাশ
   মাটির পৃথিবী রক্তাক্ত।
অমানবিকতার গরল গিলে
   মানব জাতি বিধ্বস্ত।
হিংসায় আজ উন্মত্ত পৃথিবী
   কেউ চায় না কারো ভাল
জীবশ্রেষ্ঠ হয়েও মানুষ
  মানুষের ই চিতা জ্বালো।
বিশ্বাসের কোন বালাই নাই
   প্রতারণার ফাদ পাতা।
স্বার্থসিদ্ধির নিষ্ঠুর খেলায়
   কে কাটে কার মাথা?
ধর্মের নামে দাঙ্গা করে
  গুলি বন্দুক বোম বারুদে।
হাজার অসহায় প্রান মরে
   স্বজন হারার দুঃখে কাদে।
মৃত্যু এখন দাড়িয়ে রাস্তায়
   খড়্গ নিয়ে হাতে।
সুযোগ পেলেই কাটবে গলা
  অন্যায় প্রতিবাদ না হয় যাতে।
মাতৃ জঠরে কাঁপছে  শিশু
   ভুমিষ্ঠ হবার ভয়ে।
ধরার বায়ু বারুদে ভরা
   সে বাঁচবে কি লয়ে?
সভ্যতার গায়ে অকাল আধার
  চন্দ্রকায়ায় রক্ত দাগ।
সূর্য ডোবে বারুদ স্তুপে
   সৃ‌ষ্টি স্রোতে ঘূর্ণি পাক।

তপন জানা




দেবী "মা "ই তোর মা
"""""""""""""""""""""""""""""""""


জয় মা দুর্গা বলে প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে,
হাজার মানু‌ষের ভিড়, দুহাত জড়ো করে।
প্রতিমা দর্শনের নামটি করে,
আড় চোখেতে তাকিয়ে দেখে দেবী অংগের ভাজ।
চক্ষু কটিদেশে, চায় বক্ষ মাঝে।
তাই তো সেদিন গলির শেষে,
পোড়ো বাড়ির ভেতর
বিবস্ত্র এক দেবী দেহ সাজিয়েছিস রক্ত সাজে।
"মা " "ম " বলে যার পায়েতে আজ লুটিয়ে দিলি মাথা।
সেদিন রাতের ঘন আধারে নিজের মা কে তাড়ালি,
দিয়ে দুঃখ, ব্যাথা।
দেবী মায়ের পুজোর কত আয়োজন, কত আড়ম্বর।
কিন্তু নিজের জন্মদাত্রী কে
পাঠিয়েছিস বৃদ্ধাশ্রমের এক চিলতে ঘর।
যার জন্য এত প্রসাদ, এত ভূষন
সাজিয়েছিস শ্রদ্ধা ভরে।
সেই মায়েরে দুবেলা দুমুঠো দিস না খেতে ঘরে।
"মা দুর্গা "র মূর্তি সাজালি দামি শাড়ি গহনায়,
সেই মা তোর ছেঁড়া কাপড়ে শুয়ে মাটির বিছানায়।
মৃন্ময়ী মা তো চিন্ময়ী রুপে
  সে যে তোর মা,
নিজের মায়েরা দিস না কষ্ট কর ভক্তি শ্রদ্ধা।
বিজয়াতে বাঁচিয়ে রাখিস একটু চোখের জল।
জন্মদাত্রী র জন্য ফেলতে হবে  ওই বাঁচানো জল।
নিজের মা কে শ্রদ্ধা করলে
   খুশি দেবী মা।
জন্মদাত্রী মা যে তোর দেবীরুপী মাতৃ প্রতিমা।
মেয়ে মানেই তো সুলভ, নয়তো লেহ্য চুস্য।
রাস্তার ওই মেয়েটি ও তো, তোর মা বোনের ই মতন।
নিজের মায়ের পায়ে মাথা রাখ,
দেবী মায়ের আগে।
তাহলেই তোর সব পাপ "মা "দেবেন ক্ষমা করে।

তপন জানা





শরৎ প্রভাতে
************


আজি প্রভাত আকাশে ;শরৎ কাশে।
আগমনীর সুর বাজে শিউলি সুবাসে।
শুভ্র মেঘেরা পাখনা মেলে
    আকাশতলে মেশে।
কচিকাঁচা রা দলে দলে
  ছুটে চলে আনন্দ আবেশে।
শিশির কনা ঘাসের ডগায়
   মুক্তো বিন্দু গড়ে।
নরম সিক্ত কচি দুর্বায় প্রকৃতি হৃদয় ভরে।
আলতো আলোর স্নিগ্ধ ছোঁয়ায় ফুলেরা ফুটে বনে।
মন খারাপের পোকা গুলো
মৃত্যুর দিন গোনে।
কান পাতলেই শোনা যায়
  মায়ের আগমনী বার্তা।
স্নিগ্ধ সমীরনে নদীর কোলে
  পালতোলাদের যাত্রা।
মন মানে না জড় হয়ে বসে থাকতে ঘরের কোনে।
মনে হয় ছুটে যাই ওই সুদুরের পানে।
যেখানে আকাশ মাটির পরে
সবুজ শ্যামলে মেশে।
পদ্মপুকুরে শান্ত সলিলে হাসেরা ভাসে;একান্তে ভালবেসে।
কাশের বনে নদীর ধারে সূর্য ডোবার পরে;
আলো আধারি আবছা ছায়ায় ;মনের আধার সরে।

তপন জানা



আমার দুর্গা
**********


দুর্গা দেখি পথের পাশে;ঝুপড়ি ঘরে।
দুবেলা দুমুঠো ভাতের অভাবে শুকিয়ে মরে।
ছেঁড়া পোষাকে;নোংরা চুলে
রাস্তার মাঝে ভিক্ষা করে;
উত্সব ভুলে।
দুর্গা দেখি খাওয়ার দোকানে চায়ের ঠেকে;
বাসন মাজে; কাপ ধোয় দুঃখ শোকে।
সন্ধ্যা বেলা বাড়ি ফিরে জ্বর গায়ে;
ঠান্ডা ভাতে পেট ভরায় মায়ে ঝিয়ে।
দুর্গা দেখি বেশ্যালয়ে;খোলা শরীরে
সারাদিন রাত শরীর বিকোয় টাকার তরে।
শরীর নয়তো ;বিবেক বিকায় অনাহারে মরার ভয়ে।
দুর্গা দেখি পাহাড় কোলে তপ্ত রোদে
মাথায় কাঠের বোঝা নিয়ে।
বুকের পাঞ্জরে মচকা লাগে হাওয়া র ঘায়ে।
দুর্গা দেখি খনির ভেতর কয়লা  কালো চামড়া নিয়ে;
জট পাকানো লাল চুলে পাগড়ি বেঁধে।
দুর্গা দেখি ইট ভাটায়;চা বাগানে ;তামা খনির গর্ভে
কাদে অর্ধাহারে;অনাহারে।
জীবন যুদ্ধের ইতিহাস লেখে
বন্ধ কারখানার হাড় পাঞ্জরে।
দুর্গা  দেখি ঝোপের আড়ালে;ফাঁকা মাঠে;বন্ধ কারখানার ফাঁকা ঘরে
রক্তাক্ত উলংগ শরীরে মরে পড়ে।
রাতের হিংস্র অসুরের দল ভীষণ লোলুপতায়;ধারালো কামফলাকাগ্রে তারে খেয়েছে ছিঁড়ে।
তবু দেখি আমার দুর্গা
রোদে পুড়ে তামাটে শরীরে
সকরুন দৃষ্টি নিয়ে হেটে যায় জীবনপথে।
আগামীর নব অরুন প্রভাত দেখাবে বলে এই নতুন সভ্যতাকে।