নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

রিয়াজুল হক সাগরের ৩ টি কবিতা





১,
কবিতাঃ মনুষত্ব

আমি এসেছি এক মানুষ হয়ে এই জগৎ পানে
সত্যিকারের মানুষ হতে এসেছি আমি,
আজ হারিয়ে ফেলেছি তার মনুষত্ব ও বিবেক
তাকেই ভুলে আজ আমাদের চলার পথ।
হে মানব দেহ্ তোমাকেই বলছি
জেগে উঠ আমার বিবেকের দ্বার প্রান্তে,
তুমি একজন মহা-মানব তোমাকে
জাগতেই হবে আবার আমার বিবেক মাজারে।
আমি ভবের পুজারী নয় সৃষ্টির পুজারী,
তবে পাগল নেশায় ব্যস্ত এই ভবের সুখে
জাগ্রত হও হে মানব সমাজ এই ভবে।



2
হরিয়ে যাওয়া দিন

আমি ক্ষয়ে যাওয়া এক নাবিক মাত্র!
বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছি রোগে আর শোকে,
সাধ জেগেছে নতুন করে বাচার স্বপ্ন দেখছি
আবার যদি ফিরে পাই হারিয়ে যাওয়া শৈশব।
এই তো সে দিনের পথ চলা আমার
পাঠশালার দিন কত মাঠে প্রান্তে ছুটে বেড়িয়েছি,
পুকুড়ে আর জলাসয়ে অনেক সাতঁরিয়েছি
জীবন যুদ্ধে হেরে যাওয়া আমি এক সৈনিক।
ছিলাম শিশু হলাম বালক তারপর বাবা
দাদু হয়ে এখন আমি আবার শিশুর ন্যায়,
সময় কাটেনা কারও উপরে ভরদিয়ে চলছি
অথচ এই সময় আমার ছিলো না এক সময়।
হে যুবক শুনে রেখ আসছে সময়
হারিয়ে যাবে দিন ফুরিয়ে যাবে কথা,
চলার পথ চিরোতরে হারিয়ে যাবে
ফিরে আসবেনা সুদিন।
ক্ল্যান্ত আমি রক্তে মাংসে এখন শক্তি নাই
আগামির জন্য আমি রেখে যেতে চাই,
সু দিনের পথ চলার সঙ্গি হয়ে থাক
আমার আগামির প্রজম্ম থেকে প্রজ্ম্ম।





হেমন্তের  বাশিওলা

মাঠে প্রান্তে ভরে গিয়েছে সোনালী ফসলে,
ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষক দিন মজুর
নবান্নের উৎসবে গ্রাম বাংলার বধুরা,
পিঠা পুলির আয়োজন।
চারিদিকে কুয়াশার চাদরে ঢাকা পরেছে
আমাদের গ্রাম দুর থেকে মনে হয়,
কোথায় যেন হারিয়ে গেলাম আমি
কোন এক অজানা পথে।
শিশির ভেজা মুক্তো দানায় পুরো মাঠ
যেন মুক্তো দানায় শিক্তো বিন্দু কণা,
এযে এক নতুন দিনের আলোয় ভরা
সবুজ শ্যামল বাংলা আমার।
এই আমার গ্রামের নিত্য দিনের
হেমন্তের বাশিওলার প্রতি নিওতো,
এই বাংলায় বার বার ফিরে আসে
বছর ফিরে বাংলার ঘরে ঘরে।

মেয়েরা : সুমিত মোদক




মেয়েদের তৃতীয় নয়ন প্রখর ,
তাই তারা ঝড়ের পূর্বাভাস বোঝে  ;
মেয়েরা নমনীয় ,
তাই তারা প্রকৃতি ;
হাতে অস্ত্র তুলে নিলে ,
তং হি দুর্গে ..
অসুর নিধন ;
শক্তি রূপেণ .....

বলয়গ্রাস: মায়িশা তাসনিম ইসলাম



প্রিয়তমা অন্ধকার
"একাকীত্ব" শব্দটির কাছে একাধিক ছায়াও নিঃসঙ্গতায় আত্মাহুতি দেয়
সমাজ কবিতা শেখাতে আসলে নির্ণয় করি দ্রাঘিমা ও ব্যক্তিগত সারাংশ
দ্বীপের বুকে উঠে আসে সৌরজগৎ, কুয়োর থেকে ধীরে ধীরে সরে জলের গান
তৃষ্ণা থাকে না বলেই অসামাজিক কবির পটভূমিতে নির্লজ্জ শব্দেরা ঘর বাঁধে, সংসার ভাঙে


প্রিয়তমা অন্ধকার
এই বহুগামী সমাজ কবিতাকে 'অশ্লীল' বলতে বলতে ভুলে যায় গোপনাঙ্গ পরিষ্কার করার কথা!
দহনে ফুল ফোটাও প্রিয়তমা, জল ঢাললে মরে যাই....মরে যাই.....


অভিশপ্ত পৃথিবী : শাহীন রায়হান



বড় দুঃসময়ের মুখোমুখি হয়েছি আজ
যেন দুর্দিনের যাত্রী ছাইচাপা আগুন মাড়িয়ে
অভিশাপের বোচকা কাঁধে চাপিয়ে হেঁটে চলেছি
নিদারুন যন্ত্রনাময় মৃত্যু অবগাহনে।

আজ নিজেকে বড়-ই অচেনা মনে হয়
পৃথিবীকে মনে হয় বিধ্বস্ত শ্মশান
যেখানে প্রতিটি লম্পট হাত বুবুক্ষু মানুষের খাবার কেড়ে নেয়
তরুণীর কাজল মুছে দেয় পাষাণ মীরজাফর-
রক্তাক্ত মানচিত্র পোড়ায় আবু জাহেল ফেরাউন।

আর পৃথিবী কাতরায় মহমারী রোগে
তার শরীরে কুষ্ঠের দগদগে ঘা
আজ পৃথিবীর বুকে গোলাপের সুবাস নেই
আছে শুধুই বারুদের গন্ধ শুধুই অভিশাপ।

ডাস্টবিন : আমিনুল ইসলাম


ডাস্টবিন থেকে ধূলো উড়ছে, আর
আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত আবর্জনার আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়ে ওঠেনি কলম, যেহেতু তার সুডোল শরীরের যন্ত্রনায় একবিন্দু আফশোস মেখে নেই আমার।

'আমি' মানে এখানে 'আমিই' নই, এখানে 'আমি' হচ্ছেন উত্তম পুরুষ যাঁর চামড়া পুরু হওয়া বাঞ্ছনীয়
এবং যে সলতে হয়ে পুড়তে সক্ষমতা পেয়েছেন
কারণ পুড়তে অক্ষমতা থাকলে, আলো হওয়া যায় না...

নদীজলের সান্ধ্যভ্রমণ : অভিজিৎ দাস কর্মকার



ফেলে আসা পথ__
    ভয়ের পিছনে আবছায়া হয়ে ওঠে |

তবুও
আমি আগরবাতির ধোঁয়া হতে পারলাম না |

উদ্ভাসিমন সমস্যায় পড়েছিল---
হাতে চায়ের কাপ | কোলে সিন্ধুসভ্যতা ডুবছে পরিপাটি |

তখনই,
  সম্মোহিত অস্থিরতায় রুদ্রফল এবং পৃথিবীর গতানুগতিক জাড্য___
জিন্দাবাদ জানিয়েছিল  নদীজলের সান্ধ্যভ্রমন |
       ৫টি হরিণ শাবক ও ১টি সিগারেট সঙ্গী ছিল আমার,
                       তুমি তাও দেখা দাও নি!

জোরদার : জারা সোমা


আমাদের বন্ধুত্ব ছিল জোরদার,
 কখনো ছিলনা অকারণ দাবী,বরং
 অমাবস্যায় সিঁড়ির কোণে
  টিমটিমিয়ে জ্বলত প্রদীপ
 আলোছায়া সন্ধ্যা জমে উঠত মৌতাতে
সিঁথিতে ডুব দিতো অস্তগামী সূর্য

আমরা অপেক্ষা করতাম বর্ষার
অপেক্ষা করতাম স্রোতে ভেসে যেতে
পূর্বের খন্ডমেঘ ঢেকে ফেলেছিল আকাশ
রঙ বদলে গেল নীল থেকে অভিশাপে

আমাদের বন্ধুত্ব জোরদার ছিল
আমাদের আবেগ জোরদার ছিল
আমাদের যৌবন জোরদার ছিল

শুধু সম্পর্কে বাঁধন ছিল না
ভালোবাসায় ভরসা শব্দটা ছিলনা.....


দিনের শেষে : পলি ঘোষ



দিনের শেষে, নিদ্রা ভরা নয়নে --
তব কথা স্মরণে,
মোর নয়ন ভাসে।
আজি বৃষ্টি ভেজা রাতে,
তব কথা হৃদয়ে মোর বাজে।
মোর আকাশে সকল তারা আজি দেখি!
শুধুই মোর অশ্রু ভরা নয়নে টলমল;
বানভাসি সব মানুষ আজি কেমনে রবে?
তাহাদের কথা ভাবিয়াই আজি মোর নয়নে
অশ্রু নদী ঝরে।
কেমনে রহিয়াছে তারা সবাই,
মোর সকল বানভাসি মা, ভাই, বোন?
দেখো, তব মনের শক্তি দিয়া
উজাড় করিয়া দিও তাহাদের সকলকিছু,
দুই হাত ভরিয়া।
মোর মন থমকিয়া গেছে তাহাদের কথা ভাবিয়া।
ভালো যেনো রাখিও তাহাদের সকল বিপদ হইতে।

ভয়াবহ সূর্য উঠছে : গোলাম রসুল



পৃথিবীর মর্মর মূর্তি সমুদ্রের ধারে
অজানা ঢেউ
আমার প্রার্থনা আকাশ

জলে গভীর রাতের প্রতিবিম্ব
আশ্চর্য আমি বাজাই সেই দ্বীপপুঞ্জ
মনে করো যেখানে তুমি খুন হয়েছিলে

মনের অবস্থা ভালো নেই বলে আমি একটি খারাপ রাস্তা ধরে হাঁটছিলাম

দূরের বন্ধুর মতো জ্বর গায়ে কম্বল
মানুষটাকে আর দেখা যাচ্ছে না কুয়াশায়
তারপর স্টেশনের অরণ্য
যেখানে আমি অনেক  মুখ দেখতাম আয়নায়

গোড়ালিতে জমে থাকা নদী
এক সময় আমরা একাকার হয়ে যাই

সমুদ্রের ধারে সেই সব মর্মর মূর্তি
আর চামড়ার ভেতরে ফেটে বেরুচ্ছে রক্ত

ভয়াবহ সূর্য উঠছে
          __________________

জীবনের গাঁথা : পিনাকী কর্মকার

মধ্যবিত্ত এ জীবন আকণ্ঠ পান করে যেতে চাই।
প্রতিদিন,প্রতিক্ষণ চেটেপুটে খেতে চাই।
জীবনের সবকটা রং আমি সবখানে মেখে,
তবেই বিদায় জানাতে চাই এই পৃথিবীকে।
এলোমেলো গেরস্থালি দেখে নাক সিটকালে,
জেনো তুমি এ জীবনের শুধু সিকিটুকু পেলে।
জেনো রাত কেটে ভোর হয় একদিন,
সেই ফাঁকে অভিমানে ভাঙো যদি জীবনের বীণ
পিপাসা তোমার মিটবে তবে বলো আর কবে?
ইচ্ছে অনিচ্ছে সব কিছু পিছে পড়ে রবে।
সাতরঙা এ জীবনের যতটুকু রস, গন্ধ,
কব্জি ডুবিয়ে খেয়ে যাও লাগবেনা কখনোই মন্দ।
দিনশেষে সন্ধ্যাবেলায় ঘরে ফিরে যদি দেখো,
বিছানার চাদরটা একেবারে টানটান মনোমত।
আনমনে যদি মনে পড়ে কারো কথা বারে বারে,
অজ্ঞাতসারে যদি দুই চোখ জলে ওঠে ভরে,
তবে জেনো সেটাও তো জীবনের একখানা রঙ।
মাখো তাকে সারা গা জুড়ে,সাজো জীবনের শেষ সঙ।
আমি তো সেটাই চাই, ভালবাসা, বিরহ ব্যথা,
সবটুকু নিয়ে হোক আমাদের  জীবনের গাথা।

তুমি হীনা নবান্ন : শাহীন রায়হান


নিঝুম রাতের নীরব কান্নায় বৃত্তাকারে ভিজে যায়
ধানহীন প্রাণহীন অর্ধমৃত অস্তগামী নবান্নের
রংহীন নিষ্প্রভ দুটি চোখ-

তুমিহীনা নবান্ন আজ এক পৈশাচিক সভ্যতার
নগ্ন শেকল বন্দী অন্ধ বোবা বধির কয়েদি
তার বুকে কোন ক্লোরোফিল নেই, নেই পুষ্পিত গোলাপের
রং মাখা ভোর ধানে ধানে প্রজাপতির উড়াউড়ি ভ্রমরের
কানাকানি গুনগুন গান-

তুমিহীনা অগ্রহায়ণ যেন ভাতহীন কৃষকের
কুঁচকানো মুখ ক্ষুধার রাজ্যে একটানা দুঃখের বিলাপ-

আমাদেরই দেখি : সুমিত মোদক



টিলার ওপারে হাট বসে ;
শনিবারের হাট ...
ওখানে মোরগের লড়াই হয় ;
মৃত্যুর লড়াই ...

ধারালো দুটো ছোট ছুরি বাঁধা থাকে
মোরগ গুলোর পায়ে ;
তাদের মালিক লড়াই বাঁধিয়ে দেয় ;

লড়াইটা ততক্ষণ চলে ,
যতক্ষণ না একটা মারা পড়ছে ;
আর সেই লড়াইয়ের উপর চলে জুয়া ;
জুয়া--জুয়া--জুয়া---

টিলার এপারে আগুন জ্বলে ;
যেখানে ঝলসে খাওয়া হবে ;
পরাজিত মালিকরাও আমন্ত্রিত
প্রীতিভোজে ;

টিলার উপর দাঁড়ালে দেখি আমাদের ,
আমাদেরই ঝলসানো শরীর ।।


সব কিছু দূরে সরে যাচ্ছে : আহাম্মেদ হৃদয়



সব কিছু দূরে সরে যাচ্ছে
হারিয়ে যাচ্ছে সোনালি দিনগুলো।

আমার জন্মের মায়া ভরা ভিটে
জামতলা বৃক্ষের অমল ছায়া।
হারিয়ে যাচ্ছে আমার সকল
চির চেনা মানুষের মুখ।

হারিয়ে যাচ্ছে পদ্মার মতো
বিস্তৃত সকল নদী
হারিয়ে যাচ্ছে রকমারি পাখিদের
মনোমুগ্ধকর কোলাহল।

হারিয়ে যাচ্ছে শৈশবউত্তীর্ণ
সকল প্রকার খেলা
হারিয়ে যাচ্ছে এদেশের
গ্রাম -গন্জের মেলা।

আমিও হারিয়ে যাচ্ছি
প্রবল স্রোতের টানে অতল সাগরে
হারিয়ে যাচ্ছি সংচূর্ণিত কাচের মতোন
বিশাল সাগরের জলে।

রিয়াজুল হক সাগরের ৩টি কবিতা



১.
মন আঙ্গিনা

চোখ বুঝলে দেখি তোমার প্রতিচ্ছবি
অকারনে পুড়লো হাত,
বুক পকেটে তোমার সেই লাল গোলাপ
আজও সযত্নে রেখে দিয়েছি।
পাড়ার সবাই তোমার দিকে তাকিয়ে থাকতো
আমায় দেখে তুমি আলতো করে হেসে ফেলতে,
আমি সন্ধে হলে তোমার দেয়া ঠিকানায় যেতানা
রোজ দেখা হতো কথা কেউ টেরও পেতনা।
সন্ধের আলোয় ফুরিয়ে যাওয়ার আগেই তোমার দেখা মিলতো
সেই গাঁয়ের বড় পুকুড় পাড়ে দাড়িয়ে থাকতে,
নীল জামা আর খয়েরী রঙের সেই টিপ, আজও আমার চোখে ভাসে,
কি অদভূত দৃশ্য ভুলিবার নয়।
তুমি বিকেলে খেলার মাঠে খেলা দেখার ছলে আমাকে
দেখতে আসতে বুঝার সাধ্য নেই,
আমি তোমায় চুপি চুপি দেখতাম তুমি আমাকে
বুঝাতে তুমি এসো কিন্তু।

2.
শীতের জ্বরে

কনকনে শীতে বুড়ো দাদুটি ঘাপটে বসে আছে
আগুনে তা দিতে ব্যাস্ত ,
নুয়ে পড়েছে বয়সের ভারে রক্তে ঝটলা ধরেছে
র্নিবোধ এখন দাদু আমার।

গ্রামের অধিক মানুষ সকালের রোদ একমাত্র ভরসা
শীতে কাতর ধর ধর কাপছে চারিদিক,
ছমিরন কমিরন ছকমল সবারি একই কষ্ট
এই শীতের জ্বরে কাপছে ।

শহরের বাবু এসে দেখে গ্রামের এ কি হাল এই বুঝি প্রাণ গেল
অকাতরে গরীবের,
কঠিণ এই সময়ে চারিদিকে চিৎকার শীত শীত শুধুই শীত
এই অসহায় মানুষের ।

খড় কুঠো জ্বালিয়ে আগুনে তাপিয়ে শীতকে মোকাবেলা করে
সহজ সরল অবুঝ শিশু,
একটু তাপদাহের আশায় যেন মৃতু যাত্রির দুয়ারে
হে বিত্তবা চোখে পড়েনা এই আতর্নাত শীতে কাপড়ে
মরতে বসেছে এই গরীব অসহায় মানুষ ।

৩.
দাড়িয়ে-----


পুর্নিমার চাঁদের মত দেখতে আমার প্রিয়ার মুখ
তার দৃষ্টির ভাজে কি মায়া বুঝতে কষ্ট হবে,
স্বাধ্য নেই তার প্রেমের ভাজে পরতে সময়
লাগবেনা অমনি প্রেমে পরে যাবে যে কেউ।

দাড়িয়ে নদীর কিনারে আনমনে এক দৃষ্টিতে
চোখের পলক পরার আগেই অদৃশ্য,
পায়ে নুপুড়ের আওয়াজ কানে ভেসে আসলো
ঝন ঝন শব্দে শুনতে পেলাম।

নৈাকায় বসে গুনগুন শব্দে কাকে যেন ডাকছে
নতুবা গানে মুগ্ধ সেই সুন্দরী,
আবার দাড়িয়ে কাঁশ ফুলের মাঝ খানে সেই আওয়াজ
খুজতে হারিয়ে ফেলেছি তাকে আমি।
হটাৎ আবার একটি কন্ঠ শুনতে পেলাম সেই
আগের মত দেখার সাধ্য নেই,
হারিয়ে ফেলেছি তাকে আর খুজে পেলাম না
সে আবার দাড়িয়ে নদীর তীরে।

রোজনামচা : জারা সোমা



ঘুম ভাঙলেই জরিপ করি প্রতিবিম্ব
গোপনে হাত রাখি কাঁধের কাছে
অর্ধ মেলানো যতি চিহ্নে
দৃশ্য বিভ্রমের মতোই ভেসে ওঠে
একের পর এক স্মৃতি

ইচ্ছে গুলো কখনও হয়ে যায়
মেঠো ইঁদুর, রমন পারদর্শিতায়
খুবলে নেয় শস্যের অধিকার
কখনওবা ময়াল সাপের মতোই
আষ্টেপৃষ্টে বাঁধে মোচড়ে,
কখনও বা উঠোনের গন্ধরাজ
সুবাসে মাতোয়ারা সকালে

ক্রমশ বয়েস বাড়ে সকালের
সাতটা বাজলেই টিভিতে
শুরু হয় আরেক আমন্ত্রণ
গানে গানে মুখোরিত সকালে
আত্মজদের স্কুল কলেজের তোড়জোড়

রোমনামচার মাঝে অপেক্ষা করে
 মাথা ভর্তি কুমন্ত্রণারা।।।।


নতুন পৃথিবী চায় : গোলাম মোস্তাফা লিটু



যে শিশুটির নেই ঠিকানা
নেইকো আপন ঘর
যে শিশুটি গ্রীষ্ম বর্ষা শীত নয় শুধু
সারাবছর থাকে পথের 'পর।

সেই শিশুটির জন্য একটা
নতুন পৃথিবী চাই
যে পৃথিবীর বুকে শিশুর
ঘরের অভাব নাই।

যে শিশুটি ক্ষুধার জ্বালায়
ময়লার'পর খাবার খুঁজে ফেরে
যে শিশুটির দিন কেটে যায়
অর্ধাহারে কিংবা অনাহারে।

সেই শিশুটির জন্য একটা
নতুন পৃথিবী চাই
যে পৃথিবীর বুকে শিশুর
খাবারের অভাব নাই।

যে শিশুটি পায়না আদর
মায়া-মমতার স্নেহ ভালোবাসা
যে শিশুটির জীবন জুড়ে
নিদারুণ দুঃখ্য-কষ্ট ঠাসা।

সেই শিশুটির জন্য একটা
নতুন পৃথিবী চাই
যে পৃথিবীর বুকে শিশুর
স্নেহ ভালোবাসার কোন অভাব নাই।

যে শিশুটির সাধ আহ্লাদ
হয়না কভু পূরণ
যে শিশুটি অনেক কষ্টে
কোনমতে করছে জীবন ধারণ।

সেই শিশুটির জন্য একটা
নতুন পৃথিবী চাই
যে পৃথিবীর বুকে শিশুর
জীবনধারণে কোনও কষ্ট নাই।


জয়দেব বেরার দুটি কবিতা



১.
শাহরুখ খান (SRK)
       
 তুমি ভারতের গর্ব
তুমি ভারতের সেই উজ্জ্বল শুকতারা,
তোমার DDLG মুভি দেখেই
 আমি হয়েছিলাম দিশাহারা।।
 তুমি অভিনয় জগতের নক্ষত্র
তুমিই মোদের রোমান্টিক বাদশা
তাই তো তোমার জন্মদিনে
তোমায় জানাই শতকোটি ভালোবাসা।।

২.
একটি কলমের আত্মকথা
         জয়দেব বেরা

হ্যাঁ, আমি একটি কলম
কিন্তু, নই কেবলমাত্র নিবযুক্ত কালিভরা একটি বস্তু।
হ্যাঁ ,আমি একটি কলম,শক্তিশালী কলম
যার স্পর্শে কেঁপে উঠতে পারে এই সমগ্র সমাজ।
হ্যাঁ ,আমি একটি কলম,ক্ষমতাশালী কলম
যার ক্ষমতার স্পর্শ থাকে সমাজের সর্বত্র।
হ্যাঁ ,আমি একটি কলম,সূর্য্যের ন্যায় তেজস্বী
যার ছোঁয়া থাকে শিক্ষায়-দীক্ষায়,অনুভবে-চিত্তে,যুক্তি ও বিচারে।
হ্যাঁ, আমি একটি কলম,যা বিচারকের হাতের অস্ত্র
যার লেখণীর স্পর্শে বাঁচিতে ও মরিতে পারে কোন এক মানব।
হ্যাঁ, আমি একটি কলম,যা সত্য, সন্দুর ও ন্যায়ের প্রতীক
কিন্তু,নই কোন এক কাঠামো যুক্ত সাধারন বস্তু।
আমি হলাম এক শক্তিশালী,ক্ষমতাশালী,তেজস্বী কলম
হ্যাঁ,আমি একটি কলম।

শাহীন রায়হানের দুটি কবিতা


.
১.
হারিয়ে খুঁজি হেমন্তে

ক্যালেন্ডারে প্রতিনিয়ত ঋতু বদল হয়
বাহারি কবিতার তুমুল বৃষ্টিতে ভেজে ফসলের মাঠ-
কবিতায় কবিতায় গানে গানে চলে
শুধু হেমন্ত বন্দনা।
কবির কল্পনায় নবান্ন আসে
শিশির ভেজা হিম কুয়াশায়।
পিঠাপুলির ঘ্রাণে ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে উদাসী গঙ্গাফড়িং
চারুকলা রমনার বটমূলে চ্যানেলে চ্যানেলে চলে
হেমন্তবরণ।
..
জীর্ণ বিদীর্ণ কৃষকের অন্ধকার খুপরিতে
বাস্তবে হেমন্ত কোথায়!
সবুজহীন রিক্ত মাঠ আজ ধূমায়িত-
ইটভাটার দখলে।
আগ্রাসী নগরায়নে কান্না হয়ে ঝরে যায়
কৃষকের খুশির নবান্ন। তার নির্ঘুম রাত কাটে
চোখের জলে হারিয়ে যাওয়া নবান্নকে খুঁজে খুঁজে-
ফসলহীন আর্তনাদে বেদনার বিস্তীর্ণ পর্দায়-


২.
বিমূর্ত সুখ


এক বিমূর্ত সুখের সন্ন্যাসী আমি-
তবু,
ঘড়ির কাঁটার টিকটিক শব্দে ঝুলন্ত পেন্ডুলামে
পুরানো পত্রিকায় স্মৃতি-বিস্মৃতির আঁকিবুঁকিতে এতিমের বক্ষপিঞ্জরে সকালের খোলা জানালায় কাশ্মীর থেকে কারবালায় সসীম থেকে অসীমে অনন্তে অনন্তে....
ওর দেখা যে কোথাও পাইনি-

বিমূর্ত সুখ যে আজ বিলুপ্ত ডাইনোসর।
মরীচিকার মতো এক খোলস বদলানো নদী।
অনন্ত সূর্যলোকে পোড়া হাজার বছরের এক কল্পিত প্রত্নতত্ব।

বিপ্লব গোস্বামীর দুটি কবিতা

1.
হয়তো তুমি আসবে ফিরে

হয়তো তুমি আসবে ফিরে
ভাঙ্গা বুকের ভাঙ্গা নীড়ে।
আসলে কাছে বুঝে নিও
ভেজা চোখের ভাষা।
ইচ্ছে হইলে মিটিয়ে দিও
ভাঙ্গা বুকের আশা।

হয়তো তুমি আসবে ফিরে
শুকনা গাঙ্গের ভাঙ্গা তীরে।
আসলে ফিরে নাও বাইও
শুকনা গাঙ্গের জলে।
ইচ্ছে হইলে মিশে যাইও
কুল হারাদের দলে।

২.
তুই আমার সব

  তুই আমার সবরে বন্ধু
      তুই আমার সব,
 দূরে গেলে ধ‍্যানলোকে
        করি তব স্তব।
 তুই আমার প্রথম প্রেম
     তুই আমার শেষ,
 তোর জন‍্যে সর্ব ত‍্যাগি
    ধরব ভিগরী বেশ।
তোর কারণে বেঁচে আছি
 মরতে রাজি তুই বললে,
 রাতের তার এনে দেব
  তোই বায়না ধরলে।
  তুই হীন বাঁচা কঠিন
    থাকব হয়ে তোর,
তোর কারণে পারি দেব
        সাত সমুন্দর।

শ্যামল কুমার রায়ের দুটি কবিতা

জলছবি

জীবনের কঠিন সময়, মন খারাপের মুহূর্ত
একরাশ হতাশা আর চরম বিরক্তি!
কানহার মতো কে যেন বলে গেল-
এটাই কি প্রথম দুঃসময়?
ফিরে দেখা জীবনের শৈশবে,কৈশোরে,যৌবনে-
কারা যেন বলেছিল-"ওর কিচ্ছু হবে না।"
আজ ওরাই কুৎসাপক্ষ।
অক্ষমের সান্ত্বনা তো কুৎসাতেই।
তবে জীবনের পরিক্রমণ তো ভারী অদ্ভুত!
স্থায়ী সুখ, শান্তি যেন সোনার পাথর বাটি
আসলে সংসারে সুখ তো ভীষণ অনিত্য
এই আছে তো এই নেই।
ভাঙাচোরা জীবন, অস্থির সময়
নড়বড়ে জ্যোতিষ আর চওড়া মার্শাল লাইন
                                        ভরসা জোগায়।কোথাও যেন একটা চাপা থাকা জেদ,স্থির বুদ্ধি
আর হিম শীতল মস্তিষ্ক দৃষ্টি ঘোরায়
ভরসা করে থাকা মুখ আর ভরসার মুখের দিকে
তোকে পারতেই হবে আনন্দ।
ছোট্ট অথচ অনতিক্রম্য দূরত্ব
বৈঠা পার হওয়াই তো জীবন
আর ওপারে? চিরশান্তি।
       ------------------------------------------



আম্লিক
             

আবার একটা নতুন বাড়ি
নতুন করে লাগলো বকুল গাছ,
বকুল গাছের তলায় দেওয়া
আবার প্রথম প্রতিশ্রুতি।
উস্কে দেয় পুরোনো স্মৃতি -
ফেলে আসা দিন,
রেখে হাতে হাত-
জীবন যুদ্ধের অসংখ্য কথামালা।
ক্ষত বিক্ষত মনের আয়নায়
অজস্র আঁচড়ের চিহ্ন।
তৈরি করে বেদনার বিষ বাষ্প।
তোকে কিছুতেই কাছে আসতে দেয় না।
বেদনা বিধুর জীবনে শুধুই শূন্যতা
গড়ে তোলে আম্লিক ভবিষ্যত।
           ----------------------------

প্রতিসৃত : ভগ্নপুরুষ



আবাসভূমি থেকে গড়িয়ে পড়ছে
শিবরঞ্জনীর ধ্যানমগ্নতা___

আমি বোধহয় আরও প্রতিসৃত হবো!--

দৃশ্যে যে ঠিকানা লেগে আছে অবচেতন হয়ে, রাত ২টো-র দখল ছেড়ে ঘ্রাণপুরুষটি গভীরতার ঘোরাটোপে কিশোর-কিশোরী খেলছে__

এখনও রোজ ভোরে রাতের সমঝোতারাও চায়ের টেবিলে বসে
সমাদৃত হবার পর ডান হাতটি উদ্ধার করতে চাইলো নারীর উর্বরতা ---

কাঙাল : সত্যপ্রিয় বর্মন



ও দাদা আমার বড় বিপদ
মনে বড় দুঃখ,
আমার আসপাশটা বড় ফাঁকা
খুব একা হয়ে গেছি দাদা,
সত্যি বলছি -
একটু সঙ্গ দরকার ছিল আপনার,
দুঃখগুলো শেয়ার করতাম
একটু সময় পাওয়া যাবে?
একটু পাশে বসতাম
কথা বলতাম…

বলতে বলতেই হেঁটে যাচ্ছিলাম ফুটপাথ ধ'রে।
রাস্তায় প্রচণ্ড ভিড়
আমি প্রত্যাশি নয়নে চেয়ে ছিলাম ওদের দিকে
কেউ পাশে এসে দাঁড়াল না,
অনেকে অবশ্য সামান্য সমবেদনা জানিয়ে চলে গেল
ব'লে গেল - সবারই ওই এক…
অনেকে আড়াল খুঁজল
অনেকে আড়াল থেকেই বলল - বেশ হয়েছে।
কেউ আমার প্রত্যাশি চোখের দিকে তাকিয়ে
প্রেরণা জাগিয়ে বলল না - পাশে আছি।

এই সামান্য কথাটি শুনলেই হয়তো বেঁচে যেতাম

অমৃত : সুমিত মোদক



যে মানুষ গুলো প্রথম থেকে মরে আছে
ভিতরে ভিতরে ,
তাদের জন্য সমুদ্র মন্থন ;
তাদের জন্য অমৃত কুম্ভ ;
#
 জানি ওরা কেউই অমৃত পাবে না ;
কারণ , ওরা কুম্ভটাকে পেয়ে কাড়াকাড়ি শুরু করে দেবে ;
ওরা কেউ বাঁচতে শেখেনি ;
শিখবেও না ;
অন্যকে বাঁচানো তো
অনেক দূরের ভাবনা ;
#
তুমি ওদেরই নতুন প্রজন্ম ;
তুমি নাও অমৃত ;
মহাকালের অমৃতবাণী সকল ।।

দেশবাসী : সোমা জারা



রাজনীতির ফন্দি  গিলে নিচ্ছে
  সাধারণের সহজ সরল জীবন,
 নিরীহ চোখের আর্তি ফায়দা করে
 আজীবনের মতো জমা রাখে ভূখণ্ড,
 আ গ্যয়া আচ্ছেদিন

 আচমকা ঝাঁঝরা শ্বাপদের গুলিতে
ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়ে থাকে
 সকল এয়োতি  চিহ্ন সমূহ
  মৃত্যুর চোখের শরম
 জানাজা ঢাকে কফনে
মেরে প্যারে মিত্র

বহুদূরে অপেক্ষার চোখে নোনাপ্লাবন
ভেসে গেছে সোহাগী অন্ন
ওরা  পাঁচ নাম গোত্রহীন সংখ্যামাত্র
সরকারী ভিক্ষার হকদার
জয় জওয়ান জয় কিষাণ

আমি উপেক্ষা  ঢাকি সুখ চাদরে
কাশ্মীর - যন্ত্রণা - পরিণতি -উন্নয়নের জোয়ারে
মেতে উঠি উৎসবে-মোচ্ছবে- মাতম এ
মেরে প্যারে দেশবাসীও..........

নতুন জীবন : সুমিত মোদক



স্বপ্ন নাচে আঙুলে আঙুলে ;
আঙ্গুল নাচে সুরে ..
সে সুর এতো দিন হারিয়ে গিয়েছিল
নদীর বাঁকে ;
তাকে খুঁজে পেয়েছে হৃদয়
লাজুক প্রেয়সী ;

কয়েক যুগ পর সকলেই হাঁটছি
নদী বরাবর ;
প্রথম সকালের সূর্যোদয় দেখার জন্য ;

আঙুল গুলোয় ছুঁয়ে নিচ্ছি
নতুন আলো
নতুন জীবন ।।

বিরহিনীর কান্না : বিপ্লব গোস্বামী



বিরহিনীর কান্না আষাঢ় ধারা হয়ে ;
অবিরাম  ঝর-ঝর ঝড় ঝরে।
মেঘের গুমোট ধরা মনাকাশ মাঝে ;
কত রঙ্গিন আভা উঁকি মারে।
ভারাক্লান্ত মনে বিরহিনী বসে আছে;
চাতকের মতো পথ পানে চেয়ে।
হয়তো আসিবে সে শেষ বারের মতো
সেই সুরেলা কণ্ঠে গান গেয়ে।

মৃত্যু : অনিন্দ্য পাল


তোমাকে লিখতে পারি না
সমস্ত বয়ে চলা থেমে গেলে
সমস্ত পথ উপপথ মিশে গেলে এক বিন্দুতে
সবকটা আলোর মোড়ক পৌঁছে গেলে তারপর
তোমার শুরু
অক্ষরে - সংলাপে
অবচেতন - অচেতনে
ধূসর শূন্য গুহামুখে একলা নির্জনে
জন্ম নাও তুমি ...

তোমাকে খুঁজতে ভয় হয়
তোমাকে ভাবতে ভয় হয়
অন্তরাল সুড়ঙ্গে নেমে যেতে পারি না
তবু জানি, জানি তুমি আসবে নিশ্চয়

মৃত্যু
তোমাকে ভয় পাই নি কখনও
পরখ করে চোখে চোখ রেখে দেখো কোনদিন
পিউপিলে খুঁজে পাবে জমানো ভালোবাসা
তবে বুকের এক কোণে কোথাও কেঁপে ওঠে
মন
যখন
সে তোমার জন্য নয়
যাদের জন্য আমি বলতে পারি "আমার"
সেই সব উজ্জ্বল মুখ-চোখ তাদের সবার
ওরাই আটকে রেখেছে, আত্মার কারাগার,

মৃত্যু
তুমি শাসন
তুমি শাসক
তুমি স্রোত
তুমি বাহক
হতে পারো তুমি মহাবিশ্বের যতি
আমি এঁকেছি তোমাকে এই দরজার ওপাশে
অন্য ব্রহ্মাণ্ডে, অন্য এক স্থপতি।

নব ছন্দে আমাবস্যা : অথৈ দেবনাথ (রিনা)



রাত্রি তখন দ্বিপ্রহর,
দুজনে ছিলাম অঘোর ঘুমে।
হঠাৎ ঘুম ভাঙ্গায়,তোমার পাশে তাকাতে।
এক উন্মদনা জেগে উঠল সমস্ত শরীরে।
সত্যি অপরূপ শিল্প প্রতিমা তুমি,
রহস্য আঁধার।
ইচ্ছে হয় তোমাকে ছুঁয়ে দেখবার....
     অগ্রাসী সেই ইচ্ছে।
 তোমার ভীতরে ডুবে যাই আমি।
তুমি চোখে চোখ রাখাতে বুঝতে পাড়লাম, তখন তোমার কোপালে  গালে,নাকে সন্ধানী চুম্বন তরঙ্গের কামনা জেগেছিল
দেহ মনে।
আর চুপিসারে বললে বাইরে যাবে।
আমি বললাম এই এমন হিজল অন্ধকারে।
তুমি বললে দেখ
 প্রকৃতি কেমন গুমড়ে আছে,
আর নীরবে কাঁদছে।
আজ কোন প্রেমিক জুগল কিংবা কোন কবি,কোন গীতিকার, কোন নৃত্যকার আসেনি ছন্দ মেলাতে।
আসো আজ আমরা প্রকৃতির এই বোবা কান্নার সাক্ষি হই।
আর আমাদের ভালবাসা তাদের মাঝে বিলিয়ে দিই।
দেখবে,কামগন্ধী সৌন্দর্যভূক অবলীলায় মেতে উঠবে।
তারা সবাই একে একে......
নেচে উঠবে নতুন তালে আমাবস্যা নব ছন্দে।

ভালো থেকো : শিপ্রা পাল



ভালো থেকো——
ফেঞ্চকাট আর ধূসর টি-সার্টের অবাক চোখ
নদীটি কেমন দোল খায়, কাশের ঝালরে
কথা ছিলো, কথা হবে শিউলির বিকেলে!!

ভালো থেকো——
সারাটি দিন যায়, এখন আলো জ্বলে দূর পাহাড়ে
শীতের পরিযায়ী পাখিরা সবে আসতে শুরু করেছে
মৃদু ওমে ঠোঁট ছুঁয়ে দেয় গত শব্দের আঙুলে
হয়তো তোমার হাতে এই মুহূর্তে কিছু উপন্যাসের চরিত্র!!

ভালো থেকো——
বড়ই অলস হচ্ছে সময়ের অবহেলা
তবুও খুঁজতে খুঁজতে রাত জড়িয়ে নেয় কিছু অক্ষর
আগামী প্রতিধ্বনি আর চেনা গন্ধটুকু বাঁচিয়ে রাখে!!

ভালো থেকো——
কখনো ভাবা হয়নি, কতোটা ভালো আছি
পিচঢালা সড়কের পথে শুনতে এবং বুঝতে পারার সত্যিটা চমকপ্রদ
চাকার আঘাতে পিষ্ট নিরপরাধী প্রত্যাশার ভালো থাকা!!

বোঝাপড়া : জারা সোমা


জীবন কাটাতে হবে বলে
কেউ বসিয়েছিল শেষপাতে
তখন কেবল নুনজল
অন্তিম বোঝাপড়া ছুঁয়ে ছিল আঙুল

আগুন জ্বলতেই বেড়ে গেল তাপ
শরীর মন বুঝে নিল মাপঝোক
তবুও আরোপিত হল না শর্ত
বরং আগুন ও জলের স্ফুলিঙ্গে
সহবাসী প্রেম ও বিচ্ছেদ ..

জাগো হে যুবসমাজ : জয়দেব বেরা


দিনে দিনে এ সমাজটা
ভরে যাচ্ছে সাম্প্রদায়িকতায় ও
আঞ্চলিকতার মায়াজালে।
চারিদিকে যেন রাজনৈতিকতার ঘন
কুয়াশায় ঢেকে গেছে এই সমাজ।
ধর্ম ও জাতি প্রথার অন্ধকার কুঁয়োতে
মানুষগুলো ব্যাঙের মতো বন্দি।
এই সমাজে নেই কোনো
অন্যায়ের প্রতিবাদ ও বিরোধিতা।
ধর্ষণের কবলে পড়তে হয়
আট মাসের শিশু থেকে আশি বছরের বৃদ্ধাকেও।
চারিদিকে শুধু অন্ধকার,
নেই কোনো আলোর ছোঁয়া।
তাই,হে যুব সমাজ
তোমরা হও আগুয়ান।
তোমরা জেগে ওঠো,
আর নিশ্চুপ থেকোনা।
দূর করো এই অন্ধকারের প্রাচীর।
রক্ষা করো এই সমাজকে,
হে যুব সমাজ তোমরা জাগো।

আর ফেরা হয় না না-ফেরার ঘরে : শিপ্রা পাল


অলিখিত অধিকারে দাবী থাকতে নেই——
স্বপ্ন দেখা আর দেখানো, দু’টো এক ব্যাপার নয়
একমুঠো ছাই ওড়িয়ে দিলাম শূন্যতার আকাশে!!

হোঁচট খাওয়া বিকেলের দাবাদাবি
কখনো কী নীড়ভাঙা পাখির চিৎকার শুনেছো——
এখানে পথ শেষ হয়, যেখানে তোমার শুরু!!

বরফ জমা দুঃসময় ভীষণভাবে আঁটাআঁটি
কেবল-ই পড়ে থাকা অনিকেত সময়ে
তুমি এগিয়ে যাও, মাথা উঁচু করে সামনের দিকে
তখন তোমার হাতে জেতার চাবুক!!

কাজল কালো চোখে তাকিয়ে রয় বৃষ্টির কান্না
ভিজে যেতে যেতে একসময় সব শুকিয়ে  যায়
আর ছোঁয়া হয় না, ভেজে না অনাদি জমিন!!

চাঁদের কলঙ্ক, এক যাতনাময় আলো
যতো কাছে যাই, বেদনার রেখাটি জ্বলজ্বলে 
সূর্য ডুবে যায়— আর ফেরা হয় না,না-ফেরার ঘরে!!


প্রেম ও শোষণের বেড়াজাল :-শাহীন রায়হান



একটি মেঘ রং প্রেমের কবিতা লিখবো বলে-
প্রেম পর্যটক আমি
প্রতিদিন প্রতীক্ষার জানালায় অবসন্ন প্রহর গুনি-
ইছামতীর বাঁক ঘেষে বসে থাকি চরম উৎকন্ঠায়
গাঙচিলের ধূসর ডানায় খুঁজি প্রেমের প্রাঞ্জল পঙক্তিমালা।
.
একটি মেঘ রং প্রেমের কবিতা লিখবো বলে-
তোমার অসীম কল্পনায় আঁকি হেমন্তের সবুজ ধানক্ষেত
গঙ্গাফড়িং এর সমান্তরালে উড়াউড়ি
বৈকালি প্রজাপতির ডানায় স্মৃতির গোলাপি শহর।
.
একটি মেঘ রং প্রেমের কবিতা লিখবো বলে-
নিদ্রাহীন কলমে অধীর আগ্রহে-
বুকের অন্তরালে ঘুমন্ত ইচ্ছাকে বারবার
জাগ্রত করি-
কিন্তু না, আমার হেয়ালি কলম এখন
মেঘ রং প্রেমের কবিতা লিখে না।
ওর তুমুল আগ্রহ এখন
বিপন্ন মানুষের আর্তহাহাকার মানবাতিকার
ধর্ষণ গুম খুন হত্যা খোলস বদলানো রাজনৈতিক নিষ্ঠুরতা
মানুষে মানুষে অসাম্য দেয়াল শোষণের বেড়াজালে।

বুঝবে সেদিন বুঝবে : বিপ্লব গোস্বামী



সূর্য সেদিন অস্ত যাবে
ভেঙ্গে যাবে খেলা ;
তোমার প্রিয় মানুষ যেদিন
করবে তোমায় হেলা।
স্বপ্ন ভেঙ্গে বুঝবে সেদিন
সত‍্য মিথ‍্যার খেলা;
সত‍্য প্রেমের খুঁজে খুঁজে
কাটবে সারা বেলা।
বুঝবে সেদিন বুঝবে তুমি
সত‍্যি সেদিন বুঝবে ;
আশার সমাধি পাড়ে
অতীত স্মৃতি খুঁজবে।
হঠাৎ শোনবে ডাকছি আমি
খুলবে তুমি দ্বার ;
ধরতে আমায় হাত বাড়াবে
দেখবে সব আঁধার।
শ্রাবণের রিম ঝিমিতে
ভিজবে তোমার চুল ;
মধুল লোভে উড়বে অলি
গাইবে আপন সুর।
আসবে ফিরে শরৎ ঋতু
ঝরবে শিশির কণা ;
অতৃপ্তির তৃষায় তুমি
থাকবে যে আনমনা।
বুঝবে সেদিন বুঝবে তুমি
সত‍্যি সূদিন বুঝবে ;
আশার মমাধি পাড়ে
অতীত স্মৃতি খুঁজবে।

মন- দূষণ : সুমিত মোদক



যাযাবর জীবন নিয়ে নামছে মানুষ পথে ;
লক্ষ্য তাদের একটাই
সবুজ রাখবে কাছে ;
আবার তারা গাছ কাটবে
ধ্বংস করবে সবুজ ;
মানুষ নামক জীব গুলো সব এতটাই অবুঝ ;
বায়ুদূষণ , জলদূষণ , শব্দদূষণ , শত ....
আসল কথা মন-দূষণ , করে রেখেছি ক্ষত ....

সুদীপ্ত বিশ্বাসের গুচ্ছ কবিতা







আহ্বান

গুমরে মরেছি শুধু মনের গভীরে।
 অস্ফুট আর্তিতে , অপেক্ষায় -অপেক্ষায়
 বয়ে গেছে রক্তধারা এই যমুনায়।
রুধিরের স্রোত জল বৃথা, সব বৃথা ।
অনেক মায়াবী রাত ঝলমলে দিন ,
নিতান্ত নিস্ফল তারা, অপুষ্পক স্মৃতি।
এখনও গোলাপবাগে আধফোটা  কুঁড়ি,
ভ্রমরের স্পর্শ পেতে প্রচণ্ড উন্মুখ।
প্রতীক্ষা, প্রতীক্ষা নিয়ে রাত ভোর জেগে,
সরিয়ে  রেখেছি পাশে বরমাল্য খানি।
তারার জন্মের পর তারার মৃত্যুতে,
চুপচাপ কাল স্রোতে বয়ে গেছে কাল।
নিঝুম দুপুর থেকে ধূসর বিকেলে
অলিন্দে একাকী বসে দেখেছি জগত।
লুকিয়ে রেখেছি কত চোরাবালি স্রোত।
লুকিয়ে রেখেছি কত পক্ষ বিধূনন।
আগ্নেয়গিরির সেই উদ্গিরণের মত,
আজ আমি অভিসারী, রোমাঞ্চ পিয়াসী।
তুমি এসো...মুগ্ধতার সে প্রাচীন আধিকার নিয়ে এসো।
 রুদ্ধদ্বারে বার বার কর করাঘাত।
তোমার উদ্ধত ফনায় আমাকে বিদ্ধ কর,
 মুগ্ধ কর, কর শিহরিত।
বাজিয়ে তোমার বীণ,
 নিয়ে চল জ্যোৎস্নার মায়াবী জগতে।
তোমার ডানার স্বেদ বিন্দু
 গড়িয়ে পড়ুক আমার ডানায়।
কানায় কানায় উপচে উঠুক রসস্রোত।
পিয়াসী  তৃষ্ণার্ত বুকে
ঢেলে দাও অমৃত তোমার ...


---------------------------------------------------------------

বৃষ্টি এলে

বৃষ্টি এলে বুকের ভিতর গোলাপ কুঁড়ি ফোটে
বৃষ্টি এলে মনটা বড় উদাস হয়ে ওঠে।
বৃষ্টি এলে শিউলিতলায়, ছাতিমগাছের ডালে
মনটা বড় কেমন করে বৃষ্টি-ঝরা কালে।
এখন তুমি অনেকদূরে না জানি কোনখানে,
ভিজছো কিংবা গুনগুনিয়ে সুর তুলেছো গানে।
তোমার গানের সেই সুরটাই বৃষ্টি হয়ে এসে
টাপুরটুপুর পড়ছে ঝরে মেঘকে ভালবেসে।
মেঘ বিরহী,কান্নাটা তার বৃষ্টি হয়ে ঝরে
তোমার বুঝি মেঘ দেখলেই আমায় মনে পড়ে?

************---------*******------****----



কবিতা

সেটা আকাশ থেকে হঠাৎ ভেসে আসে
সেটা স্বপ্ন হয়ে নামে আমার পাশে।
তার আলোর সুরে শুকতারাটি হাসে
তার খুশির দোলা প্রতিটি ঘাসে ঘাসে।
তার সুরের ধারা আপনি বয়ে চলে
তার গভীর সুরে প্রাণটি কথা বলে।
তাকে মনন করে মনের সীমা বুঝি
তার গভীরতায় পাতালপুরী খুঁজি।
তাকে অস্ত্র করে দূর বিদেশে যাই
সেই তারার পারে মরণ সীমানায়।
তাকে আগলে বুকে জীবনে বেঁচে থাকি
তাকে যত্ন করে আবেগ দিয়ে আঁকি।
তার প্রাণের সুরে বাঁধা আমার প্রাণ
তার গানের সুরে সুর যে পেল গান।
তার উথলে ওঠা আবেগটুকু নিয়ে
ওই ঝর্ণা ছোটে পাহাড় চিড়ে দিয়ে।
তার শক্তি কত বলতে পারে কেউ?
সে তো রোজই বলে সাগর সেঁচা ঢেউ।
তাকে আগলে রাখি মাথায় করে চলি
তার সপ্ত সুরে প্রাণের কথা বলি।
তার চলার পথে আবেগ রাশি রাশি
তাকে আদর করি, তাকেই ভালবাসি...

****-----------------------*****************------


 *আহাম্মকি*

মগজে তালাচাবি দিয়ে
বুকের সব লাল গোলাপগুচ্ছ
বাগান উজাড় করে তোমায় দিলাম।


কানাকড়ির চেয়েও কম দামে
বিকিয়ে দিলাম নিজেকে।


সব বাঁ পায়ে মাড়িয়ে মশমশিয়ে চলে গেলে।


বুকের গভীরে বিঁধে থাকা পেরেক
উপড়ে ফেলতে না পেরে,
নির্জন সমাধিতে আজও একা শুয়ে।


আজকাল কেউ স্ফটিক চাইতে এলে
তাকে কাচের টুকরোও দিতে পারি না!


______________________





 *শূন্যতা*

দিনকে ফাঁকি দিতে পারলেও
রাতের কাছে হেরে যাই রোজ!
স্বপ্নেরা সব মুখ থুবড়ে পড়ে
চোখের জলে বালিস ভিজতে থাকে।

তারপর খুব ক্লান্ত হলে,
গভীর ঘুমে পাই মৃত্যুর স্বাদ।

সারারাত জ্বলতে-জ্বলতে
রাতের তারার সলতে ফুরিয়ে যায়।

আবার একটা দিন...
আবার ছোটা শুরু...





______________________



 *মরণের পার থেকে


কীদোষে ছিলাম দোষী,কীদোষ আমার?
অনেক ভেবেছি তবু সদুত্তর নেই,
গোলাপ ফুলের মত নতুন কিশোরী
স্ত্রীলিঙ্গ শরীরে ছিল, দোষ ছিল এই!

মানুষেরা পশু নয়, সেকথা জেনেই
ধর্ষিতা হতে হতে কেঁদেছি অঝোর,
আমার মতোই কত কেঁদেছে কিশোরী
তবুও তো রাত কেটে আসেনি গো ভোর।

অনেক কাঁদার পরে, অবশেষে থেমে
নিথর আমার দেহ কফিনে শোয়ানো;
মোমবাতি মিছিল হবে ! হাঁটো মিছিমিছি,
সোহাগ দেখাতে কিছু ফুল কিনে আনো।

যেদেশে ধর্ষণ, খুন আর অনাচার
অসভ্য সেদেশ ছিল ঠিকানা আমার!

লেখক পরিচিতি :-

নাম- সুদীপ্ত বিশ্বাস,জন্ম ১৯৭৮,
কবিতা লিখছেন ১৯৯২ সাল থেকে।কবিতার প্রথম প্রকাশ  ২০১০ সালে। কবির কবিতা প্রকাশিত হয়েছে শুকতারা, নবকল্লোল, উদ্বোধন, কবিসম্মেলন, চির সবুজ লেখা, তথ্যকেন্দ্র, প্রসাদ, দৃষ্টান্ত, গণশক্তি ইত্যাদি বাণিজ্যিক পত্রিকা ও অজস্র লিটিল ম্যাগাজিনে। কবিতার আবৃত্তি হয়েছে আকাশবাণী কলকাতা রেডিওতে। ঝিনুক জীবন কবির প্রথম বই। ২০১০ এ প্রকাশিত হয়। এরপর মেঘের মেয়ে, ছড়ার দেশে, পানকৌড়ির ডুব, হৃদি ছুঁয়ে যায়, Oyster Life বইগুলো এক এক করে প্রকাশিত হয়েছে। দিগন্তপ্রিয় নামে একটা পত্রিকা সম্পাদনা করেন। কবি পেশাতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। নদিয়া জেলার রানাঘাটের বাসিন্দা। শিক্ষাগত যোগ্যতা বি ই,এম বি এ, ইউ জি সি নেট। স্বরবৃত্ত, অক্ষরবৃত্ত ও মাত্রাবৃত্ত তিন ছন্দেই কবিতা লেখেন।বড়দের কবিতার পাশাপাশি ছোটদের জন্যও কবিতা লেখেন।


মাটি : শক্তি পুরকাইত


এখনও মাটির কাছে দাঁড়াই
এখনও গ্রামে গ্রামে ঘুরি ।

সকল সময় আমাদের পূর্ব পুরুষেরা
বলতেন , মাটির কথা
মানুষের কথা ।

আকাশের সিঁদুরে মেঘ দেখলে
চোখের সামনে ছল ছল করে
নদীর ভাঙনে ভেঙে যাওয়া ঘর ।

আমার মায়ের সেই ডাক
আমি কী এতই সহজে
ভুলে যাব !

বহু দূর থেকে শোনা যায়
কার কুঁকিয়ে ওঠার শব্দ

অথচ প্রতিনিয়ত লাঙলের ফলায়
এ ফোঁর ও ফোঁর করে
     মাটি ।

চির অনন্ত ধন : বিপ্লব গোস্বামী



আমি ভগবানকে দেখেছি ছবিতে
দেখেছি অনেক মূর্তিতে;
বাস্তবে এক ভগবানকে দেখেছি
পাশে পেয়েছি সর্বক্ষণ ;
সাথে পেয়েছি বিষাদে,ফূর্তিতে।
যেদিন হাঁটতেও শিখিনি সেদিন
হাতে ধরে মোর ;
পথ চলা শিখিয়েছেন তিনি।
আজো অফিস হতে যদি
বাড়ি ফিরতে দেরি হয়;
বার বার কল করেন তিনি।
অসুস্থ হলে যিনি হাজার বার
বলেন ডাক্তার দেখাতে ;
শত বার বলেন তিনি
নিয়ম মেনে ঔষধ খেতে।
যিনি প্রেরণা যোগান অহরহ
মম প্রতিটা কাজে ;
যার পরিচয়ে পরিচিত আজ
এ পৃথিবী মাঝে।
তিনি আর কেহ নন,,,
একান্ত শান্তির আশ্রয় ;
তিনি জন্ম দাতা পিতা
চির অনন্ত ধন।

ওরা স্বার্থপর : বিপ্লব গোস্বামী



এত দিনে বুঝিলাম ওরা স্বার্থপর
স্বার্থের লোভে সবই পারে ওরা
ভুলে যায় প্রেমের দর।

ওরা লোভী,
পূজার লোভে খেলে ওরা প্রেম খেলা
স্বার্থ ফুরালে পূজারীরে ওরা
হানে শত অবহেলা।

ওরা স্বার্থপর মির্জাফরের জাত
পূজা শেষে পূজারীরে ওরা
সজোরে মারে লাথ।

ওরা লোভী, লোভী ওদের মন
এক জন থাকিতে ওরা চাহে অন‍্য জন।

ওরা বিশ্বাস ঘাতক,ওরা পাষাণ
নীলকণ্ঠ কবির অশ্রু লেখা ওদেরই দেওয়া দান।

সেই সময় : রিয়াজুল হক সাগর



দুর থেকে কাউকে চেনার উপায় নেই
আসল আর নকলের তফাৎ বোঝার,
ভাবছি আগুন খাবো আগের মত করে
ক্ষুদায় কাতর পথ শিশু পড়ায় পাড়ায়।
ফুল কুড়ানির আনা গোনায় জট লেগেছে
জেলেরা নদীতে কৃষক মাঠে রাখাল গরু
নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করে,
অভাবের সংসার বকুলের করিমের।
আধুনিগতার ছোয়া পাইনি তারা এই সময়ে এসে
ভোর হলে চলে যায় সন্ধায় ফিরে ঘরে,
কারো সাথে কথা নেই দু-বেলা খেতে পাড়লেই সব
না হলে আগুন জ্বলে পেঠে আকিবরের।
চুলোতে ভাঁত উঠে না কাজের অভাবে
বধুরা ধাঁন কুড়িয়ে পার করে দিন ছকিনাও,
পাগল হয়ে এখন পাগলা গাড়দে হামিজ মিয়া
টাকা নেই খাবার নেই গরুটাও মরেছে।
শহরের বড় বড় দালান দেখে আজিম হতবাগ
এই কি শহর হালের গরু নেই মাঠ নেই পাখি ডাকে না,
আছে শুধু দালান আর পাথরের দেয়াল আজ শহর হয়েছে
নগর হলো হতে পারিনি আমি আধুনিক ।

সমুদ্র ইতিহাস : শাহীন রায়হান


হিমালয়ের বরফকুচি থেকে অানমনে যে শিশির বিন্দুটি খসে পড়ে ছিল-
প্রকৃতির বুক চিড়ে সেই জলকণা আজ জল সমুদ্রের ঢেউ
যার বুকে প্রেম আছে বিরহ আছে-
আছে প্রেমের আগুনে পোড়া প্রেমময় বারুদের গন্ধ।
.
শ্রাবন মেঘের অন্ধ পদযাত্রায় ভেসে যায় এক ঝাঁক- পথভোলা বালিহাঁস
আমার উড়ো ভাবনার ব্যবচ্ছেদে
সমুদ্র ক্যানভাসে এঁকে যাই তার এক সমুদ্র ইতিহাস।

বটগাছ : শ্যামল কুমার রায়



বড় বেমানান এ জীবনে
প্রতি নিয়ত ক্ষত বিক্ষত
টোল খাওয়া আত্ম বিশ্বাস
চিড় ধরা সম্পর্ক
উদ্যত অভিযোগের আঙুল
অসন্তোষের বিষেদাগার
সম্পর্কের ফাটলেই -
গগনচুম্বী বটগাছ।
________________

চির বিদ্রোহী: বিপ্লব গোস্বামী



তুমি চির বিদ্রোহী,করেছো বিদ্রোহ
আজীবন আপুষ বিহীন,হে মহা বীর ;
করেছো লড়াই বলদপী' অত‍্যাচারী সনে
তবু,কভু হওনি নত শীর।

বিলিয়েছো তুমি বিদ্রোহী বাহী
নিখিল অখিল ব‍্যাপিয়া ;
তোমারি ভয়ে অত‍্যাচারী সবে
উঠেছিলো সেদিন কাঁপিয়া।

নির্ভীক তুমি করেছো প্রতিবাদ
যেখানে যখনই হেরেছো অন‍্যয় ;
ধরণী তুমি ভাসিয়ে দিয়েছো
তব প্রতিবাদের বন‍্যায়।

রাজদণ্ড ভয়ে যে গান গাহে নাই কেহ
সে গান গাহিলে তুমি ;
গেয়েছিলে গান নির্ভীক তুমি
বীরেদের জন্মভূমি।

অত‍্যাচারী শাসক দিয়েছে কারাবাস
তবু হওনি নত শীর ;
করেগেছো রণ কলম সৌনিক
চির উন্নত তব শীর।

দুখু মিয়া তোমার দুঃখ বিনা
সুখ হলো না জীবনে ;
শেষ বেলা ধরলে মৌন ব্রত
কোন সে অভিমানে।

আঙুলের কলকেলি :অভিজিৎ দাসকর্মকার



কিশোরীর শেষে
জলজ-শ্যাওলায় লি লি বাতাস,
ঢেউয়ে দোলা অসংখ্য ঘুনসি বাঁধা নস্টালজিয়া

অতঃপর গলায় ছোট্ট মাদুলি আর,
গোরুটির ইউরেনাস অর্বিটে জাবর কাটা বা
পায়রা উড়ে যাওয়া ডট্-বল লেখা দানাটির উপর

পুটুস ফুল বাড়ছে স্যাটেলাইট ছাতা ধরে
কানের কাছে শালিক পাখিটি ওয়েব লেন্থ আঁকা বৃষ্টিদুপুর বলেছিল
ভলতেয়ার তখনো সামনে দাঁড়িয়ে

পাটকুহু পাখিটি মুখে করে ছিঁড়ে ছিঁড়ে
নক্সা কাটা টুনটুনি পাখির অভিনয় যাপনের আষাঢ়িকোষ

অহল্যাবাই রাস্তাটি ঠিক
অক্লান্ত জলের বুদবুদ ভিড়ে মিশে গেছে,  আর-
সরবনে দ্রুপদীপদের আলাপ

সা-পা ধরে তানপুরা
সকালে খবরকাগজ হাতে
মৈত্রী চ্যানেল শোনে আর-
চায়ের ঠোঁটে গরম ক্ষণিক চুমু, এতে -
শিবরঞ্জনী ও রাগ হারায়

কবি শান্ত হয় কলমে 
প্রেমিকার কোলে মাথা আর
আঙুলের কলকেলিতে আঙটির কলাকোষ
সোনা-জল হয়ে বয়ে যায়...

খুশবু পারভিন এর প্রতি : হাসিবুল



বয়স আমার কেবল দশ
পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ি
মায়ের চোখের সোনামনি ছিলাম
বাবার চোখের পরি ।

পুজোর এক অনুষ্ঠানের
প্রতিযোগিতায় দিতে গিয়েছিলাম যোগ
হটাৎ পথে দস্যু এসে
করলো আমায় ভোগ ।

ফুপিয়ে ফুপিয়ে কেঁদেছি মাগো
কেউ শোনেনি কথা
রাক্ষসের ন্যায় গিলে খেয়েছে
পেয়েছি অনেক ব্যথা ।

জানি কোন ইনসাফ নেই
এই ভারতের বুকে
তুমি মা আর কেঁদোনা ওগো
আমি আছি সুখে ।

বুক চিতিয়ে ঘুরে ওরা
এই সমাজের মাঝে
ইনসাফ নেই এই ভারতে
মাগো যেওনা রাজার কাছে ।


শরীর প্রেমী : ফিরোজ হক


ভালোবাসার জন্য বেঘর হতে চাই
আষ্ঠেপিষ্ঠে প্রতিটি মুহূর্ত আপন করতে চাই
সকল মুহূর্ত ফ্রেমে বাঁধা পড়ে না
অধিকাংশই মনের এক কোণে ঠাঁই পায়।

তৃতীয় নয়ন দিয়ে মুহূর্ত দেখে
 ম্লান হাসিতে মুখপলক ভরে ওঠে
কখনও বা চোখ দিয়ে দু-ফোটা জল...

গানের সুরে সুরে প্রিয়তমা খুঁজে পাই
দুষ্ট-মিষ্ট কথার ভাগীদার হতে
সারাদিন ওত পেতে বসে থাকি।
কখনও বা ক্ষণিকের ভাগীদার হই
কখনও বা ভাগীদারের ভ-ও জোটে না।

ভালোবাসার অঙ্গীকার হিসাবে
গাঢ় আলিঙ্গন থেকে চুমু,
তোমার পাশে আশ্রয় কিংবা
খুব কাছ থেকে তোমায় আপন করতে গেলে
শরীরপ্রেমী আখ্যা পেতে হয়।

আমি অকপটে স্বিকার করে নেই
আমি শরীরপ্রেমী...শরীরকেই ভালোবাসি।
তখনি তুমি সহ্য করতে না পেরে
নিজেকে শাস্তি দিয়ে বসে থাকো।

আর আমার মনের পিঞ্জরায় হুল ফোটে
ধর থেকে দেহ বিচ্ছিন্ন করতে চাইলেও
তোমারি মায়ায় বেঁধে পড়ি...

আর শরীরের প্রতিটি কোণে কাজ করে
গভীর যন্ত্রণা...

লক্ষ্যভ্রষ্ট : সুদীপ্ত বিশ্বাস


পথিক আমি, পথের কাছে কথা আমার দেওয়াই আছে
ঠিক যে ভাবে ছোট্ট নদী ছুটতে-ছুটতে দারুণ বাঁচে!
মাধুকরী করেই আমি পাহাড় দেখে ঝর্ণাতলে
সেই যেখানে অরণ্য-বন ভালবাসার কথাই বলে;
সেই সে দেশে যেই না গেছি ছুটতে ছুটতে হন্যে হয়ে
নদীও দেখি দারুণ খুশি, আমার জন্যে যাচ্ছে বয়ে।
টুনটুনিটার মতই সরল, আমার হাতে রাখল সে হাত
তারপরে তো আপন হল, নদীর সে গান, জলপ্রপাত।
ছপ-ছপা-ছপ সাঁতরে শুধু ডুব-সাঁতারে, চিৎ-সাঁতারে
যাচ্ছি ডুবে উঠছি ভেসে কুল না পেয়ে সেই পাথারে।
এরপরে তো হঠাৎ করে সেই ফোয়ারা উথলে ওঠে
এমনি করেই ঝলমলিয়ে বাগানজুড়ে গোলাপ ফোটে।
গেলাম ভুলে পথের কাছে কথা আমার দেওয়াই আছে
বন্দী আমি আটকে গেছি, আটকে গেছি তোমার কাছে!

অস্তিত্বে: মুহম্মদ আল আমিন


পরিশ্রান্ত দিন শেষে যদি একলা লাগে-
আসবো তোমার ঘুমের দেশে।
মাঝ রাতে যদি মন খারাপ থাকে-
আসবো জোছনার বেশে।

আকাশ জুড়ে শূন্যতার ভরা রোদ্দুরে,
আসবো কায়াহীন ছায়া হয়ে।
নিশি রাতে সজনে পাতার অভিমান ভাঙিয়ে
তারার আলোর মতন দেবো তোমায় ছঁুয়ে।

সব আলো ফুরিয়ে গেলে
আমার দু’চোখের আলোটুকু নিও,
হঠাৎ তোমার ধারায় দিনেই যদি রাত নামে,
তবে সে অন্ধকার আমায় দিও।

তন্ত্র: সঞ্জয় গায়েন


--মানুষকে বশ করতে চাই বাবা। একসঙ্গে অনেক অনেক মানুষ বশ হবে। তার মন্ত্র বলে দিন।
--এ তো খুব সহজ রে বেটা। যা ঘরে ফিরে গিয়ে সবথেকে বড় তন্ত্রের সাধনা কর। একসঙ্গে লক্ষ লক্ষ মানুষ বশ হয়ে যাবে।
--সত্যি বলছ, বাবা। কিন্তু সবথেকে বড় তন্ত্র! তার নাম কি? আর সেই তন্ত্রের সাধনা কেমন করে করতে হয়?
-- এই তন্ত্রের সাধনা করতে হলে তোকে মানুষের অরণ্যে যেতে হবে। মনে রাখবি এই সাধনায় মানুষই শব। মানুষই সব। সেই মানুষদের স্বপ্নের নেশায় বুঁদ করতে পারলেই কাজ হাসিল। কি রে পারবি তো?
-- পারব।  আমাকে পারতেই হবে। কিন্তু বাবা, এই তন্ত্রের নাম কি?
--ওরে, এর নাম গণ-তন্ত্র।

খোঁজ: নীলাদ্রি হাসানাত



এক টুকরো হাসির খোঁজে  ফিরব কোথায় বলতে পারো? 
গৃহের কোনে? সবার মাঝে? লুকিয়ে আছে হৃদয়ে কারো?

সবার সাথেই মেলাতে গিয়ে,
 সবার মতো হতে গিয়ে
বারে বারে বদলে যাচ্ছি
হারিয়ে ফেলছি নিজেকে যে!
কারণ, ওরা চাইনা আমায়
চাইনা রাখতে কাছে,
কাছে গেলেই তাই তো সবাই
দূর দূর দূর করে। 

খাবার খেতে যাচ্ছি যখন
আহ্লাদে আটখানা
যেই ঘেঁষেছি ওদের কাছে
শুনিয়ে দিল কথা ষাটখানা।

এবার বলো কোন সুখেতে ফিরব তাদের কাছে? 
কোন আশাতে ঘুরব বলো তাদের পিছে পিছে? 
আমিও মানুষ  এই কথাটা যাচ্ছে কি ওরা ভুলে?