নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

সোমা বিশ্বাস




প্রিয় 
****


তোমার ছলনাকে ভালোবাসা ভেবে
মিথ্যা মোহে আলাদিনের প্রদীপ হাতে নিয়েছি,
উড়িয়েছি মায়াবী মাদুর,
সংঘর্ষে নেমেছি সমাজের কটাক্ষের সঙ্গে,
কখনো বেহুলা হয়ে ভাসিয়েছি ভেলা,
অপেক্ষা করেছি তোমার আসার, তুমি আসোনি ।
কাগজের মত টুকরো টুকরো করেছো আমার বিশ্বাসের ।
এর থেকে প্রাণটা ছিনিয়ে নিতে পারতে,
হাসতে হাসতে দিয়ে দিতাম তোমাকে
আমার কলিজাটা,,,,
তোমার চাইতে প্রিয় আর কিছু হতে পারে কী ?

✍️সম্পাদকীয় ...



প্রতিটা ফুলের যেমন নিজস্ব গন্ধ আছে। ঠিক তেমনি প্রতেক মানুষের অন্তরে একটা ভাষা থাকে। হৃদয়ের দেওয়ালে লিখে দেওয়া নাম, পরিচিত মানুষের চেনা আঙুল, অথবা তার সমস্ত অনুভুতি আপন করে নেয় ভালোবাসা।
বহুদিন অন্ধকারে থাকা মানুষ যখন আলোর সামনে এসে দাঁড়ায় তখন তার দু'চোখে নেমে আসে হাজার আলোর স্বপ্ন। যে স্বপ্ন দিয়ে একটি জীবন তৈরি হয়।
নিজের স্রোতে বয়ে যাওয়া নদী, তার দু'কুলে অবস্থিত কত গ্রাম, শহর ও সভ্যতা কে শুনিয়ে যায় তার প্রেম তার ভালোবাসার পবিত্র ভাষা। আর সেই নদীর ভাষা'ই এবার প্রেমের কবিতা।
বসন্তের এই শুভক্ষণে। প্রবাহমান নাদীর উপর শুয়ে থাকা রোদ্দুর আর ভালোবাসার শঙ্খধ্বনি শুনাতে এবারে আমাদের পথচলা।


তাই প্রীতিবারের মতোই এবারও একগুচ্ছ লেখা নিয়ে হাজির নিকোটিনের "তোমার আমার কথা"র "প্রেম সংখ্যা"


সকল লেখক/লেখিকা, কবি মোহদয়কে অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন ও ধন্যবাদ । এভাবেই নিকোটিনের পাশে থাকবেন আশা করি । তাই এই "প্রেম সংখ্যায়" প্রেমেতে থাকবেন সবাই এই আশা রাখি।

                        ধন্যবাদান্তে ,
                                 বিকি দাস
          শুভেচ্ছান্তে :- নিকোটিন ও নিকোটিন পরিবার 

বৈশাখী চ্যাটার্জী





প্রেম 
*****



ফেসবুকের পাতায় শুধু ছবি দেখি তোমার
জানি আরও অনেক দূরে থাকো তুমি।

তোমার কবিতার মধ্যে বারবার তোমাকে ছুঁতে চাই ।
তোমার ছেঁড়া খাতার সব শব্দ গুলো দেখতে মন চায় বড্ড  ।
সেখানে কি আমার মত সামান্যার জন্য  আছে কোন আঁকিবুকি কাটা দাগ ?
তুমি দেখেছো কবি একবারো তাকে ,
অন্তরালে বসে তোমার কবিতার পাতা উল্টিয়ে চলে যে মেয়েটি  ।
সে তোমাকে ভালোবাসে ।

অামি জানি তুমি জানো এই গোপন অনুরাগেের কথা ।
হয়তো মনে মনে মানোও ।

তোমার ঠোঁটের কোণের মুচকি একটু হাসি আমাকে বলে দেয় -
এ প্রেম স্বীকার করার কোন দায় নেই তোমার ।
তবু যদি একবার দায় চাই -
একটু অনুভবে যদি একটা কবিতা চাই -
আমার জন্য --!
যদি লেখ তুমি --!
অসামান্য হতে পারি তবে ।

শুধু একবার ছুঁয়ে যাও কবি ।
শুধু একবার তোমার কবিতার ছেঁড়া খাতায় আমার নামখানা একটু যত্ন করে লেখো ।
মনে নয় শুধু কলমের কালিতেই আমার জন্য একটু ভালোবাসা রেখো ॥

               
                  

জ্যোতির্ময় মুখার্জি





আঁশটে গৃহকোণ 
************



তুম্ খুবসুরৎ হো, ইয়া না হো
আমার আঁশবটি চাই
.
চমকে উঠো না
.
রক্ত আর কিছু নিরীহ হত‍্যা পেরিয়েই
বেঁচে থাকুক আমাদের আঁশটে গৃহকোণ

মৌসুমী ভৌমিক




লাফিং ক্লাব 
*********




জানিস তো
কেউ আজকাল হাসতে চায় না।
কাল যে মেয়েটি কথায় কথায়
খিলখিল করে হেসে উঠতো-
জীবনের যাঁতাকলে পড়ে আজ
সে হাসতে ভুলে গেছে।
হ্যাঁ, কথায় কথায় কান্নাটা ঠিক চলে আসে।

জানিস তো, কিছু কিছু কথারা শুধুই কথা।
যেমন ধর - ছেলেদের নাকি চোখে জল আসতে নেই।
অথচ দেখ - ছেলেগুলোকেও হাসতেই দেখি না।
ছুটছে তো ছুটছেই
পিষছে তো পিষছেই।
দিনান্তে জামার কলারে দীর্ঘশ্বাস মুছে গোপনে
জলটাও মুছে রাখে।

জানিস তো
সবাই এখন অভিনয়টা ভাল শিখে গেছে।
প্রতিটা বাড়ি - যেন এক একটি রঙ্গমঞ্চ।
আজ আর রিহার্সালের প্রয়োজন পড়ে না।
হ্যাঁ, হাসির জন্য শুধু রিহার্সাল দরকার।
তাই আজ পাড়ায় পাড়ায় লাফিং ক্লাব।

রূপা রায়




শীত নামুক
*********




বেশ শীত নেমেছে তোমার শরীর  জুড়ে
বেশ তো আরো একটু শীত না হয় জড়িয়ে ধরুক তোমার ফাটা ঠোঁট দুটিতে।
পিঠের শিড়দাঁড়ার ভিতর  কেঁপে উঠুক না হয় আর ও একটু জোরে।
 বেশ শীত নেমেছে তোমার বুকের উপর;
নামুক না হয় আর একটু বেগে
প্রশস্ত ওই বুকের উপত্যকা ডুবে যাক বরফে।
তুমি ভাবছো হয়তো আমি ভুল বকছি,
 তবু আমি চাইবো তোমার চোখে উঠুক তুষার ঝড়,
সেই তুষারে চাপা পড়ুক  আমার চোখ ,মুখ, হাত, পা
হিম হয়ে যাক উষ্ণতা, তবু ঠোঁট চেপে থাক ঠোঁটে,
 হাত ধরে থাক হাত , মুখ গুঁজে থাক বরফের উপত্যকায়,
তবু আমি চাইবো শীত নামুক তোমার শরীর বেয়ে
 আরো বেশী শীত  ঝরুক তোমার কপাল চুঁইয়ে শক্ত দুটি  কপোলের পরে,
আরো একটু শীত নামুক...


জয়তী দাস




এখনো অপেক্ষা
*************




  আমার তো প্রতীক্ষা ছিলো --
  আসতে আসতে, সকল দরজা জাগিয়ে এসেছি
  অন্ধকারের পাতায় লিখেছি আগামী আলোর নাম,
  অসুস্থ-মৃত, শরীরী-অশরীরীদের দিয়েছি কথা --
  সেই জীবনদায়ী ছোঁয়া,যা তোমার কাছে ওদের পাওয়ার !

  আমি তো দিয়েছি কথা --
  প্রতিটা ফুলের একটা বিশুদ্ধ আকাশ দেবো,
  নুড়ি-পাথর থেকে বাছা হবে না শালগ্রাম শিলা
  শালগ্রাম শিলায় জন্ম নেবে অবহেলিত নুড়ি-পাথর-

  তাদের চাঁদ জোৎস্না একাদশী সবটুকু দেবো করেছি অঙ্গীকার !
  রক্ত লবণ মাটির রোদকণায় ওদের প্রাপ্তি টুকু--
 মেরুদন্ড সোজা করে লিখবে নিজের নাম -
 বলো, আর কতক্ষণ অপেক্ষায় রাখবে !! তোমার দরজায়  --

        

মনিকান্ত সার



~*** নীলাভ অবয়ব ***~
         ***********



ভাবছি, একটা নীল ছবি আঁকবো
তোমার অবয়বের।
নীল বললাম........
কারণ, নীল রঙটা তোমায় বড্ড মানায় ।

চুলগুলোকে এলিয়ে দেবো কানের পাশে -
সমুদ্রের মতো ক'রে,
কয়েকটা তবুও গড়িয়ে পড়বে তোমার গাল বেয়ে
ঢেউয়ের মতো হয়ে ।
তোমার গায়ে জড়িয়ে থাকা পোশাকে
লুকিয়ে থাকবে আমার ভালোবাসারা,
প্রতিটা ভাঁজে আমি খুঁজে নেবো তাদের,
খুঁজে নেবো উদ্ভাসিত যৌবনের রূপ-রস-গন্ধ ।

প্রথমে ভেবেছিলাম.......
কাজল এঁকে দেবো তোমার চোখে,
তার দরকার নেই, মৃগনয়না তুমি,
তোমাতে হারানোর জন্য দুটো চোখই যথেষ্ট ।
যখন মিষ্টি সূর্য এসে ছুঁয়ে যাবে ক্যানভাস,
চোখের সামনে ভেসে উঠবে তোমার মায়াবী মুখ,
আমি হয়তো স্থবির তখন, ভাবলেশহীন,
হয়তোবা নি:স্ব হাত দুটো ছুঁতে চাইবে তোমায়।

আঁকবো.......
আঁকবো আমি তোমার "নীলাভ অবয়ব" ।

কৃপা বসু




ভ্যালেন্টাইন ও প্রেমজেহাদ
***********************



    ১.
পাশের পাড়ায় আট মাসের পোয়াতি সিঁদুরের কৌটো হাতে সুইসাইড করেছে। আমি বলেছি খুন, মেঝেতে গড়ানো নিরীহ ঘুমের শিশিতে লেখা ছিল খুনির বায়োডেটা।

    ২.
মঙ্গল ঘট উল্টে যুবতী নদী নামাজ পড়ার প্র্যাকটিস করে রোজ। খিদের থালায় ধরে রাখে মাগরিবের দ্বিধাগ্রস্থ চাঁদ।

    ৩.
প্রেমিকজল মেখে আসা প্রতিটি পাখি দাহকাল পেরিয়ে শুকনো কালভার্টের দিকে এগিয়ে যায় আধফোটা ফুল নিয়ে ঠোঁটে।

    ৪.
যে কুকুররা দুপুরের শোক ছিঁড়ে খেত একদিন, তাদের পাশ দিয়ে পান্তা ভাত মুখে নিয়ে হেঁটে যায় নিরীহ ভিখারি।

    ৫.
রাতের মফঃস্বলে বালিকা বিলাসের স্বরলিপি ভুলে শিরায় শিরায় স্পষ্ট হয় আদরের নীল ক্ষতদাগ। দ্রাক্ষামদে মেশে বীর্য ও থুতু।

    ৬.
যোগাযোগ নিভে যাওয়া সেন্ট্রাল জেলের মতো ঘর, ধুলোবালির সেলাই করা মেশিনের একটানা ঘরঘরে ছেলেটি কান্না পুষে রাখে।

    ৭.
ছেঁড়াখোঁড়া শরীর নিয়ে মেয়েটি হলুদ আঁচলের ভাঁজে বশমানানো চাবিকাঠি বেঁধে রাখে। স্মৃতির ওয়ার্ডরোবে তোলা তার এক্কাদোক্কার সংসার।

জ্যোতির্ময় রায়




ছুঁয়ে দিও 
**********



ঠোঁটের ভিতর জমছে কথা ,অল্প
শুধুই মিথ্যে ,প্রেমীকি ছোবল নয়'ত?
নাকি বাহানা হ্যাঁ জি ,রঙিন শরীরী ।
ইমোশন জাস্ট ,তবে মিথ্যে সত্যি কি?


আমিও পথে কথার দূর্গন্ধ ছড়াই ,রুমালে
চোখ মুছে নিও ,হঠাৎ স্বপ্ন ভেঙে গেলে ।।
"শুধু তোকে রেখেছি" যত্নে বুকপকেটে ,
দাগ কেটে দিও বালুচর কিছুটা অযত্নে ,অকপটে ।।


এম এ রোকন




বরং নিষ্ঠুর হও!
***************




.
এ কেমন উদারতা দিলে,
কেন বললে, তুমি পাগল হতে চাও-?
এ কেমন স্পর্ধা এনে দিলে যৌবনে,
কেন ভ'রে দিলে ঠোঁট মাদকতায় -?
কেন প্রস্রবণ ঝিরি আলো পেরিয়ে
আঁধার দেয়ালে মাথা ঠু'কে-?
.
এমন উদারতা আমি চাইনি শ্বেতা!
শুধু চেয়েছি
আঁধার আলোয় পাশে থেক,
মনের দেয়ালে মাথা রেখ
ঠোঁটের স্পর্শে বাঁচিয়ে রেখ
নির্ভরতার কাঁধে উত্তরিও বেঁধে দিও
প্রেমের।
.
এর চেয়ে বেশি চাইনি।
জানোই তো বড্ড পাগল আমি
করি প্রেম প্রেম পাগলামি,
তবে কেন, কি দোষে বললে -?
ভূ'লে যেও,
মুছে দিও স্মৃতি অতীতের।
কতটা অবুঝ চাওয়া-?
.
শ্বেতা স্মৃতি একটি অ'গলিত অতীত।
স্মৃতি চিত্রায়িত হয় সময়ে সময়ে
স্মৃতি বেঁচে থাকে অনন্তকাল,
বহমান সময়ের হাতে স্মৃতি সাহসী
সৈনিক।
তুমি তোমাকে ভুলতে পারো-
স্মৃতি তোমাকে ভুলতে চায় না।
তোমার উদারতার কোলে আজ ঝুলছে
দু'টি লাশ!
তুমি, আমি।
তারা বাঁচতে চায়,
প্রাণখুলে হাসতে চায়
ওরা একসাথে বাঁচতে চায়-?
.
শ্বেতা তুমি বরং নিষ্ঠুর হও!
আঘাতে আঘাতে মেরে ফেল ওদের
বেঁচে থেকে কি লাভ!
যদি উদারতা দুরুত্ব বাড়ায়
যদি ঠেলে দেয় মৃত্যুপুরীর ভাগ্যমঞ্চে
যদি খুন হয়,
রক্তাক্ত হয় মনের দেয়াল
যদি বাঁচতে হয়; অপরাধী হয়ে যুগযুগ।
বরং তুমি নিষ্ঠুর হও-
নিষ্ঠুর শিকলে শৃংখলিত করো দু'টি
প্রাণ,
যারা বাঁচবে বলে এসেছিল
যারা ভালোবেসে বেঁচেছিল।

তৌহিদুল ইসলাম মিশু




আমি এবং পেত্নী
*****************

তখন গভীর রাত....
সাড়ে দুইটা বাজে হয়ত।
কানের কাছে কে যেন একটু_
       উদ্ভট রকমের হাসি দিল।
পাশ ফিরতেই চোখের রেটিনা গোল হয়ে গেল।
এতো এক নারী মূর্তি..!!
অন্যরকমের এক হাসি তার ঠোট জোড়ায়;
না,নেশা ধরানো নয় এ হাসি;
বরঞ্চ শ্বাসরুদ্ধকর।
দাত গুলো অস্বাভাবিক রকমের বড়;
আর ঠোট জোড়া রক্তে রঞ্জিত।
গাল বেয়ে কয়েক ফুটা রক্ত থুতনি স্পর্শ করেছে।
এতো ভূত.!!মেয়ে ভূত.!!পেত্নী.!!
মুহুর্তেই সে আমার বুকে চড়ে বসলো।
সাথে সাথেই.....
না গলা টিপে ধরেনি,
নাক টিপে ধরল।
ঠোটে ঠোট লেপ্টে দিয়ে বলল...
ফের কোন মেয়ের প্রেমে পড়েছিসতো__
আর আসবনা আমাবস্যার রাতে..!!
আমিও মাথা নেড়ে সাই দিলাম,ঠিক আছে.!!
এর পর থেকে প্রতি আমাবস্যায় সে আসে।
পরবর্তী আমাবস্যা যেন কবে.?

হোসাইন আহমেদ রিপন





অনুভূতিময় প্রেমে তুমি
**********************



অনুভূতিময় প্রেমে তুমি
ঘুম ভাঙানো পাখির কলতানে মুখরিত,
তুমি আমার স্নিগ্ধ সকালের সতেজ অনুভূতি।
প্রকৃতির নিবিড় ঘন কুয়াশায়
তুমি আমার হৃদয়ে নির্মল প্রশান্তি।

তুমি উদিত রবির সোনালি পরশে
তুমি রূপায়িত তুমি অনন্য,
উষ্ণ শিশির কনায় ফুটন্ত তাজা গোলাপের ঘ্রাণে
পাপড়ি পরশে তুমি অপূর্ব  তুমি সুভাসিত লাবণ্য।

তুমি নিঝুম রাতে আমার স্বপ্ন বিলাসী হয়ে
আবার কখনো তুমি জল জ্যোৎস্নার প্রেমে,
নীল দীঘির জলে ভাসা পদ্ম ফুলে
তুমি বৈচিত্র্যময় রূপালী চাঁদের হাসি।

অনুভূতিময় প্রেম তুমি
প্রতিটা বর্ণে তুমি কবিতার ছন্দে তুমি,
আমার অনুভূতিময় প্রেমের ভাবনায় তুমি
আমি শুধু তোমার ভালোবাসায় কাব্য লেখি।


ফারদিন খান সুপ্ত



অপেক্ষার প্রহর
***************
   
 
নিকোশ কালো রাতের আধারে,
জেগে আমি আনমনে,
       তোমার অপেক্ষায়।

হয়ত তুমি আসবে বলে,
নরম বালিসে এলিয়ে মাথা,
গুনছি প্রহর!

নিভনিভে ল্যাম্পপোস্টের বাতি,
আর সাথে তোমার রঙিন স্মৃতি,
নিকোটিনের ধোঁয়ায় ভেসে বেড়ায়।

কড়া লিকারের বাষ্পে আমার,
মনে পড়ে যায় সন্ধ্যাতারার মেলায়,
তোমার আমার গভীর আলিঙ্গন।

কত সহস্রনয়ন জলে শুষ্ক বালিশে,
মেঘবর্ষণ মূখরিত হবে।

বহ্নিশিখা(রিঙ্কি) মুখার্জী






অথৈ জলে ভেসে চলেছি,কূল পেলাম না এখনো।
কখনো খুঁটি,কখনো লতা-পাতা আঁকড়ে ভেসে উঠছি, আবার ডুবছি।
একটা ভেসে যাওয়া নৌকা..
কোনোক্রমে প্রাণ বাঁচলো..ভাসছি আবারো ভাসছি।
এবার নৌকোয়..কিন্তু হঠাৎ তাতে জল উঠতে লাগলো
এবার নৌকোর পাটাতন কিনারা বুকের সাথে চেপে ধরে
বাঁচার সে কি আকুল চেষ্টা,নৌকোতে জল ভরে ডুবে  গেল।
সাথে আমিও।
এই নৌকো অনেকদিন জলের তলায় চাপা পড়ে রইলো।
মাঝিরা টেনে তুলে তাকে সারাই করলে।
শুধু আমার পচা গলা দেহ তারা পেলে না,
মিশে গেছে যা জলের স্রোতে।




ভেবেছিলাম উপন্যাস হবো তোমার।
দীর্ঘ এক উপন্যাস।
সকাল থেকে রাত আচ্ছন্ন করবো আমার কাহিনি দিয়ে।
আমায় পড়বে বুঝবে মাখবে গায়ে ।।
তোমার খাবার টেবিলে অন্নমনস্কতার কারণ হবো আমি।
হটাৎ আসা শীতের প্রথম পরশ হবো আমি।।,,
হাওয়ার সাথে মিশে ছুঁয়ে দেব কেমন।
তোমার প্রবল আগ্রহ টা হবো--দীর্ঘ এক কাহিনি স্রোতের ডুবুরি হবে সচেতন অবচেতনভাবে।
রাতে ঘুমের মধ্যেও জেগে থাকবো তোমাতে।





জানতাম না ছোটগল্প এক,
পড়বে ছাড়বে; তারপর অন্য এক গল্পে বা হাজারো গল্পের ভিড়ে ভিড় জমাবে।
আমি কোথায়?মুহূর্তের উত্তেজনা মাত্র--এক-দু'পাতার ছোটগল্প।
   



ফকির ইবনে হুসাইন



তুমি আমার
***********




তুমি আমার নিষ্কলঙ্ক আকাশের একটি চাঁদ,
সৌন্দর্যে আঁকা শিউলি শিতিল পরশমণি-
অজস্র সহস্র'বিস্তৃত প্রয়াসের দৃপ্ত পদব্রজ চিহ্ন!
তুমি আমার পুষ্পে শোভিত
ফুল মালতীলতা,
আনন্দময়ী সুদৃঢ় আত্মার নিয়ন্ত্রিত প্রভৃতির পাপড়ি!
তুমি আমার
চশমা-আঁটা চোখের জ্যোৎস্নায় আঁকা মুখচ্ছবি,
প্রেম উৎপত্তির বিকাশ সংক্রান্ত ধনভান্ডারের সন্ধান!
তুমি আমার কোকিল,দোয়েল,পাপিয়া প্রভৃতি পাখির কলগানের কুলকুল ধ্বনি-
ভূয়োদর্শণের অভিমানী নীল মেঘ!
তুমি আমার মুখশ্রীর প্রফুল্লতায় ভেঁজা ঠোঁটের ভাজে-ফুটন্ত
লাল গোলাপি তৃপ্তির হাসি,
যুথিকা সৌরভে-সুপ্তির নীরবতা,স্বর্গের অনন্য স্তম্ভিত রূপসি!
তুমি আমার পতাকা নিশানের অনুভবঋদ্ধ কাব্য চিঠি,
শ্রুতিমধুর বুলবুলির বোলে-করুণরসা তালুর ছিদ্র!
তুমি আমার উচ্ছলিত স্রোতের সুঃখ-উল্লাসের মুক্ত অস্তরবি।
(সংক্ষেপিত)

বিন্দু ভূষণ দে




জন্মদিন
********



জন্মের গায়ে, কতটা আয়ু ছড়ালে।
এ জীবন পায় অমরত্ব!
ঠিক কতটা গভীরে! বরফের দেশে।
মৃতদেহ থাকে অক্ষত।।

মরে গেছি আমি বারবারই শুধু!
মৃত্যু নামেনি বরফে।
বেঁচে আছি আমি মৃত্যু শিখিনি।
কবিতা কবির তরফে।।

প্রভাত মন্ডল



অপরিচিতা
***********




ঘুম নেই চোখে
রাত্রি পেরিয়ে গেছে কখন
ভোরের আলো উুকি মারে
শিশার মধ‌্যে দিয়ে ঘরে
স্বপ্নকে আগলে শুয়ে আছি
ভাবছি তোমায় সবক্ষণ
নীল আচল উড়িয়ে
কাজল কালো তারা, এলোকেশী
কে তুমি অপরিচিতা
আমার মনের ক‌্যানভাসে
কেবল করো রঙের খেলা।

    

কেয়া অধিকারী





★★★প্রত্যুত্তর★★★
           *******


আমার থেকে অনেক দূরে,      সরে ছিলিস মোহের ঘোরে,
                তখন আমায় করলি রে তুই পর,
কেমন তুই ছিলিস বল্?            আমারই সাথে করে ছল্,
                ভেঙে দিয়ে আমার সুখের ঘর।

সব বন্ধনকে তুচ্ছ করে,           করেছিলিস আপন যারে,
                তার ছলনায় ভাঙলি আমার মন,
কি অপরাধ করেছিলাম?        যার জন্য এ সাজা পেলাম,
                তুই তো ছিলিস আমার পরম ধন।

তোর কথা আর ভাবি নারে,     ঠকালি তুই এতটা মোরে,
                তোর থেকে তাই ফেরানু এই নয়ন,
নিজের ভুল বুঝবি যেদিন,      পাবি না আর আমায় সেদিন,
                বুঝবি তুই কোনটা আসল জীবন।।

তুলি রায়




অতঃপর...
**********




অনুরণনটা তখনও লেগে
চোখ বুজলে একরাশ ফেনিল বুদবুদ
সব রঙ মিশে বুঝি এমন সাদা হয়!
আমি বাসন্তিকা
তুই বুঝি ফাগ


বাতাসে পলাশ ছোঁয়
ঝরাপাতার উঠোন
ফিসফিসিয়ে
অসম্পৃক্ত কথকতা

অসমতা ছাপিয়ে
জেগে ওঠা সুপ্ত আদিমতা

গলে পড়া লীন তাপে
দাহ্য আমি -তুই

নিষিদ্ধ দ্বীপ
হেঁটে বেড়ায় রূপকথারা

অতঃপর চাঁদ ওঠে

বেজে চলে রিঙটোন.....


                                

বিকি দাস




ভালোবাসা - ১
 ************


তোমার চোখে সূর্য নেমে এলে
আমি পান পাতায় শিশির হয়ে থাকি।
ভোরবেলায় আলোর দেখা পেলে
চড়ুই পায়ে নূপুর বেঁধে রাখি......

চড়ুইপাখি তোমার কানের কাছে
জানিয়ে যায় আমার ডাকনাম।
ফুলের মতন একটা প্রেমিক আছে
তোমায় ভালোবাসতে পারে অবিরাম......

ফুলের থেকেও প্রেম যে বেশি সুন্দর,
এই কথাটা সব প্রেমিকা জানে।
জলের মতন সরলতা সেই অন্তর
চালচুলো নিয়ে বাসা বাঁধে যার মনে......

বাসা বেঁধে'ও প্রেম উড়তে চায়
ভালোবাসা জীবন রেখে যায়......

রিক্তা মুখার্জি




ভালোবাসার লেভেল
***********************




     
উফ! নড়তে পারছি না রে অনু! কী প্রচুর খাওয়ালি!প্রায় পাঁচ বছর পর পিয়াস এসেছে অনুশ্রীর বাড়ি।স্কুল জীবনের হরিহর আত্মা দুই বন্ধু।
   'তুই ভালো আছিস তো অনু?' হঠাৎই জিজ্ঞেস করে পিয়াস।
    'কেন?তোর কি মনে হচ্ছে আমি খারাপ আছি?' হালকা হেসে জিজ্ঞেস করে অনু।
      বুঝতে পারছি না খারাপ কিছু,কিন্তু.... কিভাবে বলি তোকে.... জানি না আমি ঠিক না ভুল'!
   বল না।প্রবলেম নেই কিছু।আমি হেল্প করবো তোকে?'
'মানে?তুই জানিস আমি কি বলবো?'
'অমিত তো?তোর সাবজেক্ট? এর মধ্যে নিশ্চয়ই কোথাও দেখেছিস লাবণ্য র সাথে।দেখে বুঝেও গেছিস যে,ওদের মধ্যে একটা গভীর সম্পর্ক আছে প্রেমের! হ‍্যাঁ, আছে। অমিত লাবণ্য কে ভালোবাসে।বুঝলি কিছু?'
    'মা-ন্নে? তুই ভালোবেসে বিয়ে করলি। তোর জন‍্যেই ওর চাকরি, বাড়ি, গাড়ি.... আর ভালোবাসে লাবণ্য কে?'
      'ভালো আমি বেসেছিলাম পিয়াস।এখনও বাসি।ভালোবাসার অন‍্যতম শর্ত স্বাধীনতা।ওর খুশিতে আমার কোনো আপত্তি কোনোদিন ই ছিল না, আজ ও নেই।আমাকে তো অমিত কোনো অবহেলা করে না।যথেষ্ট কেয়ার নেয় আমার একটা হাত নেই বলে। আমাকে ও সব ই বলে । আমি ভালো আছি রে। তুই ভাবিস না। লাইফ ইজ ওয়ান্ডারফুল।'
     অনুশ্রীর চোখের গভীরে কোনো দুঃখের ছায়া দেখতে পায় না পিয়াস।এই ভালোবাসার লেভেল বুঝতে আপ্রাণ চেষ্টা করে যায় শুধু।

পিংকি মণ্ডল







হয়তো বা 
*********


হয়তো বা ...
প্রতিদিন মানুষের ভীড়ে ভেসে আসা তোমার চন্দ্রকান্ত মণি আমার,
হয়তো বা....
শীতের চাদর জড়ানো তোমার আলতো চুম্বন আমার,
হয়তো বা....
মেঘলা বাতাসে শ্বাসরোধ তোমার ধোঁয়া আমার,
হয়তো বা....
সলতে নেভা তোমার হানিকারক অন্ধকার আমার
হয়তো বা....
নীলাঙ্গন ছোঁয়া তোমার মন প্রান্তর আমার,
হয়তো বা....
ওষ্ঠোমাঝে তোমার কালো নিগ্রো তিলটি আমার,
হয়তো বা...
তোমার সিনসিয়ার ইগোর যন্ত্রনার বালুচর আমার,
হয়তো বা....
অকথ‍্য তোমার সহন সব অসহায় বেদনা আমার,
হয়তো বা....
উদাসিন সঙ্কেতে স্বপ্ন বোনা তোমার জাদুকাঠি আমার,
হয়তো বা....
তোমাকে ভালোবাসার অধিকারের অভ‍্যাস শুধু আমার,
হয়তো বা....
তোমার বুকের বাঁম পাজরের হাড়কাঠি আমার।

         

   

        মুহূর্তরা
*************



সুখ দুঃখ
ক্ষণিকে সব নিশ্চিহ্ণ
অন্ধকার প্রাচীর পর্দা
নিখাঁদ রশ্মি
পলক ফেলা পাঁপড়ি
ছায়াপথ বিলীন
আদি অন্তিম অশ্রু অক্ষর
কুঁচকানো মসৃণ আবদ্ধ বাঁক
পিরামিডে থামে
নিগ্রো শিকলের চির নামে।

সত্যেন্দ্রনাথ নাইয়া




★চরৈবেতি★
************



বাঁচ্,নিজের মতো বাঁচ্,
নিজের খুশীতে থাক্,
ঘেরাটোপের বাইরে তুই
খুঁটে খুঁটে জগতের বাহার দেখ,
রাধা-রহিম-মেরী বলতে হবে না আর, ময়না!তুই স্বাধীন হলি আজ।

অবাক!খাঁচার বাইরে আসতে নারাজ!

বাবু!আমি বন্দীদশায় বেশ স্বাভাবিক,
মুক্তির স্বাদ আমাকে টানে না আর,
ওড়ার থেকে পড়ার ভয় করে গ্রাস,
জানি না মা-বাবা কোথায় আজ,
দলছুটকে কে বা নিতে চায়!
তার চেয়ে রাধা-রহিম-বুদ্ধ বলি,
চরৈবেতি।
পরজন্মে যদি মানুষ হতে পারি,
পরাধীনকে স্বাধীন,স্বাধীনকে পরাধীন
করার কারবারি।
চরৈবেতি।

ভেতরের ধূর্ত কাকটা ভ্যাংচায়,
সিংহটা লোলজিহ্বায়,
কামুক কুকুর ঘাম ঝরায়,
আমার কেমন চারপা গজিয়ে যায়,
চরৈবেতি...

গৌরাঙ্গ মণ্ডল




নিত্যনতুন প্রেমান্তর
******************



বাকল মোচন, শুকনো পাতা, ঝরে যাওয়া সবকিছু 
উল্টো পিঠে দিচ্ছে টহল কয়েকশো প্রেম। ঘাড় পিছু। 

খোলাই ছিল রাস্তা দু'দিক, পা চেপে যাও পাশ কেটে 
শব্দ পেলেই মৃতেরা ঠিক নেমে আসবে প্ল্যান চ্যাট-এ। 

তার চেয়ে বরং ন্যাংটো হয়ে ঘুম দি এসো। দীর্ঘায়ু। 
লক্ষ 'তুমি'র গর্ভ তুমি অনিন্দিতা প্রেম-স্নায়ু, 

উগড়ে দিচ্ছো!উগড়ে দিচ্ছো!কক্ষে কক্ষে কোপ, জানি
আমারও নেই অসুস্থ ভয়। ব্যাধির অনুসন্ধানী। 

কথার ভাঁজে বাঁধছি শুধু লারেলাপ্পা মস্করা, 
স্পর্শ মেশাও, পাল তুলেছে পেন্ডুলামের শিরদাঁড়া। 

সমস্তই তো স্রোতোস্বিনী চরের নীচে খলবলে, 
চুপসে চোখের দৃষ্টিপাতই টেম্পোরারি ফেল হলে। 

গতি! সে নয় প্রতীক্ষিতা, বহমন্দ্রে উদবায়ী, 
চরিত্রেরা বদলে প্রতি উপন্যাস ও অধ্যায়-ই.. 

আগলাবে না আ়ঁচল পেতে, মেঘ জমেছে এক মনে;
আমার হৃদয় কুরবানী দি নব্য প্রেমের অঙ্গনে।

কল্যাণ মণ্ডল




     হারিয়ে যাওয়া গান 
      ******************




হারিয়ে যাবো যেদিন অামি,
মনখারাপের হিমেল বাতাস
জানাবে খবর কাঁদবে তুমি ৷
খুঁজবে অস্তমিত সূর্যের রঙে ,
খবর নেবে শুকতারার কাছে
ছবি হয়ে ঝুলবো দেওয়ালে ৷
কাঁদবে তুমি বুকটা ধরে ,
গন্ধ হয়ে বইবো বাতাসে ৷
তারা হয়ে দেখবো তোমাকে,
বুঝবে সেদিন বিরহজ্বালা
শুকিয়ে যাবে বরণমালা ৷
গভীর রাতে স্বপ্ন ভেঙে চমকে উঠে
অনুভব করবে মায়ার ছোঁয়া ৷
এই তো ছিল অামার পাশে
বসেছিল কোলটি ঘেষে ৷
পাওয়ার অাশা ধরবে যখন
ভাঙবে তোমার মিছে স্বপন ৷
মুছবে যখন অশ্রুধারা
পড়বে মনে সোহাগপাড়া ৷
জ্বলবে চিতা মিটবে জ্বালা ,
হাসবো অামি কাঁদবে তুমি
রইবে পড়ে হিসাবখাতা ৷

সমীর সরকার





ছায়াপোড়া মন
************



গুল্ম ঘুমের কুশি
নরম হাওয়ার দোল ছোঁয়ায়

জলছবির আকর্ষ
চুঁইয়ে পড়ছে অর্বুদে

জড়া মুখ তুলে
বোঁটা খসা আলো
শিষ  কাটছে জলবাঁশি

ঠেস দুয়ার
কোদাল ছাটা অন্ধকার
আড়ষ্ট চোখ
এক দোয়াত হিমেল কুচো
উত্তুরে জানালা
ভাবডোবা খাগ সুদূর প্রান্তীয়

বাড়িয়ে হাত টানছে দাগ
 তোমার সেই অনুক্ষণ

কি করব বলো -

কথাঝরা গাছ আমার যে
 ছায়াপোড়া মন ...

ঝুমা চৌধুরী




চৌকাঠের ওপারে
***************


স্পর্শকাতর ইচ্ছা গুলোতে সাহসের প্রলেপ লাগিয়েছিলো

যে দলছুট মেঘ

তার কাছে হাত পেতে একদিন বৃষ্টি চেয়েছিলাম আমি

ঝড়ের বুকে হাত রেখে বলেছিলাম

"এলোচুল উড়িয়ে, বুকের আঁচল সরিয়ে

লজ্জাকে উড়িয়ে নিয়ে যা দেখি"

গুমোট বিকেল বললো, "তবে যে তুমি অশুচি হবে!"

অস্ত যাওয়া সূর্যের চোখে চোখ রেখে অহংকার দিয়েছিলাম ছুঁড়ে

বলেছিলাম,"বেশ, হোক আমার সর্বনাশ "

গভীর রাতের গল্প গুলো যদিও ছিলো বড়ো বেশী সংযত,

শরীরী গন্ধ উপেক্ষা করে,সোজা মনের গালে গাল ঘসলো!

আমি অস্থির হয়ে বলেছিলাম,"ওওও মেঘ,

তুমি অমন কেনো!!

মন ভিজলে ক্ষতি নেই,শরীর জবজবে হলেই দোষ!!"

মেঘের মুখে তখন জয়ের হাসি।

আজ আমার উঠান জুড়ে মেঘ ভেঙে ভীষন বৃষ্টি

আর আমি বারান্দার পাশ ঘেঁষে চুপটি করে দাঁড়িয়ে

"ও মেঘ, আজ যে আমার ভীষন জ্বর!!"


                  

সোমনাথ দাস চান্দল্য




" মাঘ স্নান "
**********





         বারো মাসে তেরো পার্বণের মধ্যে পৌষ সংক্রান্তি  গ্রাম বাংলার লোকসংস্কৃতিতে লোকাচারে পূর্ণ বিশেষ একটি পার্বণ । তাইত এই পার্বণের অনেক নাম -- মাঘস্নান ( মাঘবুর) , পৌষ সংক্রান্তি , হালন্তি , মকর সংক্রান্তি ।
পৌষ সংক্রান্তির প্রস্তুতি শুরু হত অনেক আগে থেকে।
পালাপার্বণ গুলো ছিল সে সময়ে সর্বস্তরের গ্রামীণ জীবনে বিনোদনের একমাত্র মাধ্যম ।   আবাল বৃদ্ধ বনিতা সকলের সক্রিয় অংশ গ্রহণের মধ্য দিয়ে যা ছিল অনাবিল আনন্দ যাপন । সহজ সরল আয়োজনের মধ্য দিয়ে গ্রামীণ জীবনে নিয়ে আসতো আনন্দ ধারা । কৃষিনির্ভর জীবনে সকল উৎসব অনুষ্ঠান তাকেই কেন্দ্র করে আবর্তিত হতো  তারই প্রাকৃতিক উপকরণ কে অঙ্গীভূত করে নিয়ে ।
      আজ থেকে বছর তিরিশ আগেও পূর্ব বঙ্গের ভাটি অঞ্চলের গ্রামগুলোতে চাষাবাদ হত চিরাচরিত প্রাচীন প্রথায় । লাঙ্গল জোয়াল আবাল চকম ( মই ) আচঁড়া কাঁচি কোদাল ইত্যাদি । ধান পাটের প্রজাতি দেশি , উচ্চ ফলনের লোভে সংকরায়ন  থাবা গাড়েনি তখনও ।
আমন ধানের গাছগুলো আষাঢ় শ্রাবণ জুড়ে বর্ষার জলভেঙে দৈর্ঘ্যে প্রায় দশ বারো ফুট । দানির সময় মোটে তিন ফুট কেটে নিয়ে বাকি নাড়া হয়ে মাঠেই পড়ে থাকে । জ্বালানির কাজে লাগে আবার মাঠেই জ্বালিয়ে দিয়ে জমির উর্বরতা বাড়ানো হয় ।
      পৌষ মাসের শুরু থেকেই আমাদের বাড়ির জোয়ান ছোকরারা প্রতি রাতে দল বেঁধে মাঠে যায় , নাড়া তুলে আনে । পূবের পুকুরের দক্ষিণ পাড়ের কলতলার কাছে বরি (কুল ) গাছের তলে জমা করে রাখে । সংগ্রহ দিনে দিনে বিশাল আকার ধারণ করে ।
পৌষের শেষের দিনগুলোতে শুরু হয় চালের গুঁড়ি কুটা, ঢেঁকি বা গাইল শেহাইড এ । খেজুরে গুড় , তিল্লাই (কদমা) বাতাসা কাঁঠালকুশি (গুড়ের মিষ্ট নিরেট চুঙের আকারে , ছোট ) ...কিনে আনা হয় বাজার থেকে।

      সংক্রান্তির দিন ভোর রাত্রে তিনটা থেকে বাড়ির সব ছেলে ছোকরা জড় হয় কল পাড়ে । পূব পুকুরের দক্ষিণা ঘাটের জলবিভাজিকায় নাড়া দিয়ে জ্বালানো হয় আগুন । উল্লাসে চেঁচিয়ে উঠে সবাই , জানান দেয়  জ্বলেছে আগুন , এসো করে নাও মাঘস্নান ।
মা ঠাকুমারাও শুরু করে দেয় পিঠে পুলি বানানোর প্রস্তুতি । আজ কত কাজ , রকমারি পিঠে পুলি পায়েস , উঠোন নাটমন্দিরে আলপনা ,স্নান সেরে নিয়ে ভোর ভোর ,  করে দিতে হবে নগর কীর্ত্তনের আয়োজন । এ বাড়ি থেকেই যে বেরোবে নগর কীর্ত্তন । তারপর হালন্তির  রান্না লাউ  কুল দিয়ে টক , তাতেই না হয় লাঙলের পূজা । এদিকে পুকুর ঘাটে ক্ষণে ক্ষণে ছেলেদের হল্লা শুনা যায় । ছেলেরা আগুন পোহায় , আগুনে অরণি ইন্ধন যোগায়  , হলকে উঠে নাড়ার আগুন উৎসাহে হল্লা করে দ্বিগুন ।
বৌদি ঠাকুমা  ঠিসারার (রঙ তামাশা)  পাত্রীদের নিয়ে অশ্লীল ছড়া কাটে , উল্লাসে চেঁচায় --
  " লাউ পাতা ঢুলা ঢুলা বাণীর মার পেটটা ফুলা " ,
" পূবের পাত্রঅ  দেহিরে ভাই কাঁচির উপরে কাঁচি
গোপাল দাসে কাইজ্যা লাইগ্যা বেডি রে ডাহে চাচি " ,
পশ্চিমের পাতরঅ দেহি রে ভাই ঠ্যাডার ভিতরে ঠ্যাডা
কিরণবলার খেতার নিচে তিন চাইর বেডা " ।

  যখন যে স্নান করতে আসে তাকে নিয়ে ছড়া কাটে সম্পর্ক অনুযায়ী । এক সময় স্নান শেষ হয় , সবাই ঘরে চলে আসে । পিঠে পায়েস দই চিড়া খেয়ে সবাই এসে জড় হয় নাট মন্দিরে । ঠাকুর প্রণাম করে  খোল করতাল তাসা সহযোগে শুরু করে কীর্তন প্রভাতী সুরে --
" ভজ গৌরাঙ্গ কহ গৌরাঙ্গ লহ গৌরাঙ্গের নাম রে ,
যে জন আমার গৌরাঙ্গ ভজে সে জন আমার প্রাণ রে ..."

    বাড়ি ছেড়ে উত্তর মুখী হয় কীর্ত্তন । চারিপড়া থেকে পৌদ্দা হয়ে উত্তর পাড়ায় যায় । পৌদ্দা থেকে যুক্ত হয় দেবেন্দ্র দেব চিন্তা দেবেরা , যুক্ত হয় কিছু উৎসাহী মুসলিম ছেলে ছোকরাও । একে একে সাধুর বাড়ি সরকার ( নেহেরু) বাড়ি দাসদের বাড়ি করবাড়ি  প্রতি বাড়িতেই নেচে নেচে কীর্ত্তন আর তার মাঝেই গৃহী ফুল বাতাসা কদমা ... দেন হরির লুট । যার ভাগ্যে যা জোটে , সন্তুষ্ট তাতে , কেউ কেউ কমলা লেবুও দিতেন লুটে ।
প্রবোধ দাসের বাড়িতে একটু বিরতি । পিঠে পুলি চা পান তামাক । আবার বেরিয়ে পড়ে নগর কীর্ত্তন । গৌরাঙ্গ দাস মূল সুর ধরে ঘরে ঘরে হরিনাম সুধা নিয়ে যায় । ফিরে আসে আবার চারিপাড়ার , শ্মশানে কীর্ত্তন চলে কিছু ক্ষণ , সেখান থেকে চারিপাড়ার ষোল ঘর হিন্দুর ঘরে ঘরে  । সুর উঠে দাসেরা বাড়ির নাটমন্দিরে পরিশেষে ---
" নগর ভ্রমিয়া শেষে নিতাই এলেন ঘরে ...."
গান বুড়ি প্রমোদাসুন্দরী ধান্য দূর্বা দিয়ে বরণ করে নেন তাঁর প্রাণের গৌরাঙ্গ কে । পিঠে পুলি পায়েস পরিবেশন শেষে সাঙ্গ হয় নগর কীর্ত্তন ।

পকেট ভর্তি লুটের প্রসাদ আমিও চালান করি আমার গোপন সিন্ধুকে ।
তাই না আজ দিয়েছি খুলে
সকলের তরে !

      লাঙল জোয়াল সহ সকল চাষের উপকরণ পরিষ্কার করে ধুয়ে এনে রাখা হয় নিকানো নাট মন্দিরের এক কোণে । লাউ পাতায় দুধভাত,  লাউ বরির (কুল) টক দিয়ে পূজা হয় । রাধা কৃষ্ণের ভোগ লাগে , ভোগ যায় শ্মশানে পিঠে পুলি পায়েস নিরামিষ রন্ধনে ।
কাজের লোকেদের দেওয়া হয় পিঠে পায়েস ।
  অনাড়ম্বর সহজে সরলে গ্রাম বাংলা গ্রামীন বিনোদন ,
আজও চলে হয়ত একটু ভিন্নতর সময়ের সাথে তাল দিয়ে ।
তবে চারিপড়া থেকে আর নগর কীর্ত্তন বেরোয় না , বেরোবেও না আর কোন দিন আর --
কাল হরণ করেছে সব , গান বুড়ি ধরে না গান ভোর রাত থেকে --
" সূর্য বংশে ভগীরথ আগে দেখাইয়া পথ তোমারে অনিল মহিতলে ...
সগর রাজার বংশ ব্রহ্ম শাপে হইল ধ্বংস ...
তোমারে আনিল মহিতলে ...."

 তবে রাঢ়ের অজয় তীরে বসে মকর আসর , তীরবর্তী প্রতি গ্রামের  আখড়া থাকে , কীর্ত্তন বাউল ভাটিয়ালি লোকগীতি গানে গানে মন মাতে , স্থায়ী বাউলের আখড়া তো আছেই । সব মিলিয়ে পাঁচশত । থাকা খাওয়ার চিন্তা নাই , কন্ঠ একটু সুরেলা হলে ত কথাই নাই ,গানও গাওয়া যায় নেচে দোতারা খমকে ।

   বাঁশি বনে নয় মনেই বাজে ।
নিয়েছে যত দিয়েছেও কম নয় !!

অভিষেক ঘোষ




নাম দিয়েছি "অ ভি মা ন"....
**********************




প্রেম বড়ো বাজে জিনিস
প্রেমিকাকে ভালো লাগলে
সে মনে বসে যায়।
অার যদি সে কষ্ট দিয়ে বুকের বাঁদিক নষ্ট করে দেয়;
তাহলে  প্রেমহীন শরীরে এক টুকরো পুকুর জন্মায়...

   ^অামি সেই পুকুরের নাম দিয়েছি - - "অ ভি মা ন"।।

মৌসুমী রায়


মুখ ও মুখোশ 
**************



রাত নেমে আসে শহরের অলি গলি
চৌরাস্তায় বাড়ির ছাদে সবখানেই
অন্ধকার ঘেরে আরো অন্ধকারের জীবন,
প্রথম রাতে জীবনে উচ্ছ্বাস জাগে
যত ঘন হয় উত্তরের হাওয়ায় শূণ্যতা পায়।
কমে আসে বাড়ি ফেরার ব্যস্ততা
কমে আসে ভদ্রমুখোশের খেলা
খালি পেট রংচঙে মুখ বিকোয়
বিকোয় শহরে উষ্ণতা,শুধু পারদের ওঠা নামা,
রংচটা মুখ তখন ফেরার অপেক্ষায়।
পথের ধারে জটলা আগুন
কোথাও বেসুরো গান গুনগুন
কাঠের আঁচে শরীর সেঁকে প্লাস্টিক চাপা ঘুম
রাত নামে নিজের মত ধীর পায়ে
শহরের কোথাও এখনো বেঁচে থাকার ধুম।


তাপস খাঁন




প্রিয় রুদ্রকে 
************



প্রিয় রুদ্র ,
কতদিন পর দেখা হলোরে অাজ
মনে পড়ছে ; নাকি সব ভুলে বসে অাছিস ৷
সেই যে সোনামুইয়ের শিক্ষায়তন
ক্লাস টুয়েলভ ; রোল নং থার্টিন
তুই প্রথমের দিক থেকে দ্বিতীয় বেঞ্চ
অার অামি একটা ছেড়ে চতুর্থ ৷
তবুও সব কিছুই কেমন যেন 
অনায়াসে অাদান—প্রদান হয়ে যেত ৷
জানিস ;এ যাবৎ ততটাও ভালো নেইরে 
যতটা সেই দিনগুলোতে ছিলাম ৷
একটা বিশ্বাসী মানুষের কাছে 
প্রত্যেকটা দিন ,প্রত্যেকটা মুহূর্ত ধর্ষিত হয়েছি
না যৌনাঙ্গের অাঘাতে নয় ; 
প্রত্যাক্ষায়িত কথার অাঘাতে অার
অবিশ্বাসের লোলুপ দৃষ্টিতে ৷
এই দেখ কথায় কথায় জিজ্ঞেস করতেই ভুলে গেছি
এখন কি করছিস , বিয়েথা করেছিস
নাকি.........অাজও অপেক্ষায় ........ ৷
কিরে কিছু বলছিস না কেন ; কিছু বল ৷
সেদিনের সেই দিনটা অাজও ভুলতে পারিনারে 
একটা ভুল সিদ্ধান্ত ; অাজও অামাকে তাড়িয়ে বেড়ায় 
ভীষণ রকম ভাবে তাড়িয়ে বেড়ায়রে ৷
তোকে লুকিয়ে ;বন্ধুদের লুকিয়ে 
তলে তলে যে ফার্স্ট ইয়ারের রাজার সঙ্গে
প্রেম জমিয়েছিলাম ;তা সফল হয়েছিল ঠিকই
কিন্তু তার ফলটা ছিল খুব মারাত্মক ৷
সেদিন শ্রাবণ মাসের ঝোড়ো অাকাশ
তুমুল বৃষ্টি—বাদল মাথায় নিয়ে
তোদের না জানিয়ে বাড়িছেড়েছিলাম ৷
তার মাস চারেক পর একদিন রাতে 
রাজা মদ্যপ অবস্থায় বেহুঁশ হয়ে বাড়ি ফিরেছিল
বলতে যেতেই সেকি মার মেরেছিলোরে অামায়
শরীর ফেঁটে রক্ত ঝরছে ; 
অামি গুগিয়ে গুগিয়ে কাঁদছি
লাথি মারতে মারতে দরজার বাইরে বের করেদিল সেদিন ৷
সেই রাতে সেখানেই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম ৷
শরীর ছেঁড়ার যন্ত্রনায় অার জ্বরে গা পুঁড়ে যাচ্ছিল অামার ৷
পরের দিন সকালে অামায় পাশকাটিয়ে
দরজায় চাবি দিয়ে চলেগেল রাজা 
একটি বার ফিরেও তাকালনা ৷
সেই যে সেদিন ঘর ছাড়লাম 
স্বামী ছাড়লাম ; তার পর পাঁচ বছর হয়ে গেল
ফিরে যাওয়া হয়নি ৷
কিছু দিন রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ালাম
তখন বদ্দ উন্মাদ ; ঠিক মনে নেই 
কোথা থেকে অামার মেজো কাকা 
অামাকে ধরে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করিয়েছিলেন ৷
তারপর অারো দুবছর হয়ে গেল 
কতকিছু পালটেছে মানুষ পালটেছে সমাজ পালটেছে 
অার নিজেকেও অনেকটা পালটেনিয়েছিরে ৷
তুই কেমন অাছিসরে রুদ্র ;
এবিদানী শরীরটা খুব ভেঙেছেরে তোর
কি হলো তোর চোখে জল ; তুই কাঁদছিস রুদ্র
দেখ সেদিন তোকে তোদেরকে ঠকানোর 
শাস্তি ঠিক পেয়েগলাম রে রুদ্র 
ঠকানোর শাস্তি ঠিক পেয়েগেলাম ৷


               

প্রাঞ্জল দাস




সন্ধি  পুজোর আগে তুই মণ্ডপে এসে দাঁড়ালি ।পরনে সেই হলুদ শাড়ী ।তোর খোলা চুল, কাজল পরা চোখ, আর কপালের মাঝখানে ছোট্ট একটা টিপ...।
তুই আড় চোখে তাকালি তারপর ...।
ঢাকির কাছ থেকে কাঠি নিয়ে একটু বাজানোর চেষ্টা করছিলাম ।তোর সাথে চোখাচোখি হতেই তাল মিল ঘেঁটে ঘ।এবার তোর স্পষ্ট ইশারা বুঝে মণ্ডপের পেছনে গেলাম
আমাকে একটা গোলাপ দিয়ে বললি-“তোর বন্ধু স্বপ্ননিল কে বড্ড ভালবাসি রে।ওকে আমার মনের কথা টা একটু জানিয়ে দিস না প্লিস । আমার নিজে মুখে বলতে লজ্জা করে।আর ওর মনের কথা টাও জানাবি কিন্তু।"

সন্ধি পুজ শেষ হওয়ার সঙ্গেই ঢাকের আওয়াজ মিলিয়ে গেল / বুঝলাম গোলাপের কাঁটা আঙ্গুলে ফুটেছে ।

অহল্যা



আমার ভ্যালেন্টাইন
***********************




প্রেম.....!
প্রেমের কি গন্ডি হয় অথবা সংঞ্জা ?
প্রেমের জন্য সম্পর্ক লাগে অথবা অসম্পর্ক ?
প্রেম কী এতো ঠুনকো !
অন্তরে প্রেম একবার জন্মালে
আমৃত্যু সে ধ্বংস হয় না।
আর যেটা ধ্বংস হয় সেটা নিছক সম্পর্ক।
জীব প্রেমে শর্ত থাকে কী অথবা মানুষ মানুষ প্রেমে!
প্রতিটা মুহুর্তে দিনে লুকিয়ে থাকে প্রেম ,
প্রেমের জন্য একটা স্পেশাল দিন হয় না কি ?
সেই প্রেম তবে কয়েকটা দিনেই থাক পর্যাপ্ত।
প্রেম হ্যাঁ প্রেম!
সে তো অসীম........
বর্তমান বলে সে কেবল উপন্যাসের পাতা বন্দী দুঅক্ষরের এক জটিল শব্দ ।

বিশ্বজিৎ মাহাত





আজ জন্মদিন 
**********




আজ জন্মদিন ।
যদি উপহার দাও--- দিয়ো না কিছুই   , 

ভালোবেসে ,  দাও যদি গোলাপের ফুল---- 
আরেক মায়ের ভালোবাসা নেবে  কেড়ে  ? তুমি নও যমদূত----

আজ জন্মদিন  ।
যদি উপহার দাও--- দিয়ো না কিছুই   , 

ভালোবেসে ,  দাও যদি কেকের কবিতা--- 
হত্যাকারী হবে ছুরি আর তুমি ।  রক্তাক্ষরে  জীবন কয়েদি----

আজ জন্মদিন ।
যদি উপহার দাও-- দিয়ো না কিছুই   ।

শেখ ইমদাদ উল্লাহ নীলয়





অনুমতি 
*********



 যখন দেখি কাউকে হাত ধরে
পাশাপাশি হাটঁতে তখন
খুব ভাল লাগে সেটা দেখতে,
 আমার ও মাঝে মাঝে মনে চায়
তোমার হাত ধরে হাটতে
জানি পারবোনা কখনই
এই ইচ্ছেটা পূরণ করতে।
 যখন দেখি কাউকে চোখে চোখ
 রেখে কথা বলতে তখন
 ভাল লাগে তা দেখতে,
 আমার ও তখন ইচ্ছে করে
তোমার ঐ দুটি চোখে চেয়ে থাকতে,
তুমি আজ বহুদূরে
 তাই অপূর্ণই রয়ে যাবে আমার ইচ্ছে।
যখন দেখি কাউকে পূর্ণিমারাতে সমুদ্রজলে ।

ঋতুপর্ণা সরকার



ঘুমভাঙ্গানিয়া...
***************




এই পাগলি আমার সঙ্গে শুবি?
ভাবিস না রে ছোঁব না আজ তোকে
তাকিয়ে শুধু দেখব এলোমেলো
শুয়ে আছিস কেমন আমার হয়ে!
অন্ধকারে মোমবাতিটা জ্বেলে
ধন্য হয়ে উঠুক আমার ঘর
খোঁপা ভাঙ্গা এলো চুলের মাঝে
কুর্চি হয়ে আজকে ঝরে পড়।

এই পাগলি অমন কেন হাসিস?
ঠোঁটের কোনে মরন হাসি মাখাস
চুলের ফাঁকে গভীর ওই চোখে
পাগল করা দুষ্টুমির-ই আভাস।

তোর চোখে আজ সর্বনাশের হাসি
রাত্রি জাগা চোখের কোলে কালি
চোখের নিচে জলের দাগটা কেন?
এমন করে কষ্ট সুখ ও পেলি?

এই পাগলি আমার সঙ্গে শুবি?
ভয় নেই রে ছোঁব না তো আর
ঘুমপাড়ানি গান গেয়ে আজ তোকে
নিয়ে যাব সাত সমুদ্র।

গুনধর বারিক




একটি স্বপ্ন
********



                  আলোক প্রিয়াসী মন আমার,                                               তোমারই আলোক
ছোঁয়াতে হয়েছে আলোকিত মোর দেহ-প্রান।                    এ আলো তুমি জ্বালিয়ে রেখো
সর্বক্ষন মোর প্রানেরও দিকে।                      পরশকাতর এ দেহ আমার,
                            যে স্পন্দিত হয়েছে প্রথমবার তোমারই আলতো
পরশে।                               এ দেহের অপেক্ষা এখন পেতে সে পরশ চিরতরে
সর্বক্ষন।                                   স্বপ্ন সাজানো আঁখি আমার,
             যে স্বপ্ন সাজিয়ে দিয়েছো তুমি প্রথম।
চাইছি তুমি একদিন এ আঁখিতে আঁখি মিলিয়ে,                                  করোগো সে
স্বপ্ন সত্যি আমার,যারে কিনা সবাই শুভদৃষ্টি কয়।                             এ
নয়ন এখন সেই স্বপ্নই দেখে শুধু বারে বার।                                      কিগো
পারবে তো সে স্বপ্ন সত্যি করতে আমার?                                             এই
প্রশ্নই তোমার কাছে রাখি শতবার।
            তুমিও সাজিয়ে নাওনা প্রিয়ো এ স্বপ্নকে আঁখিতে তোমার।


                                                
                                                    

দেবযানী বসু







ধুলোরাগ
******


কোলকাতার বলয়ে খুব চাঁদ। অসংখ্য ডাকটিকিট বুকের নিষেধে সাঁটা। সময় ফুরিয়ে আসা টের পায় খেলুড়ে পাখিরা। ফুল ও শষ‍্যের বীজ ভেঙে ভেঙে ধুলোযাত্রা। বনেদী গ্ৰহের আদেখলে শীত। বোকা ঘুটিগুলো আগেই ছুঁড়েছি। শনিবলয়ের চাঁদ খুলছে অক্ষরবোতাম। 


এক হাজার আশি ডিগ্রি
***************


ম‍্যারাথন মশাল ছুটিয়ে চলছিলাম। চলার লম্বা এক্সপোজার। শেষ টেক্কাটি নিয়েছে একটি মুহূর্ত। আমার প্রেমিকের প্রেমিকারা শিশির পোহায়। যোনিফোয়ারা থেকে কুড়োই কমলালেবুর কোয়াকোয়া শীত। ফুলটস গোলাপ। তন্তুজ আর্তি। প্রচুর ফুটো থাকে আলোচনায়।



রফতারমন
********




মডেল মাধ‍্যমের এম + ম। পথ ফণা তোলে। ফণায় প'ড়ে দুধ মিল্ক পাউডার। তাজা রক্ত মাখা বিরহ। ভুলস্বর্গে মাকড়সা বাঁচতে পারে না। শঙ্খ পঅঅথ বলে ডাকে। বাজতে ভুলে যায়। আমার প্রেম আমার। তোমার প্রেম তোমার। ইস্পাতের বালায় বাজে সুফিয়ানা।

অভিজিৎ পাল




দ্বন্দ্ব নেই আর 
*************




১.
তুমি শিখিয়েছো শুধুমাত্র আমার ও তোমার এই দ্বন্দ্বটিই বিশাল এক যুদ্ধ এনে দিতে পারে। শেষ করে দিতে পারে গোটা হস্তিনাপুরের সাম্রাজ্য। অনেক দহনদিনের পর আমি জীবনের পাঠক্রমে এবার আমরা শব্দটি পড়তে শিখেছি।

২.
তুমি আমায় কর্মের ওপর আধিপত্য দিয়েছো। ফলে দাওনি একফোঁটা। আমি হাজার হাজার অভিঘাত ভুলে নিষ্কাম হতে চেয়েছিলাম। তুমি নিষ্কাম করে তুলতে গিয়ে আমার মনোবৃত্তি নিয়ে খেলেছো। আমার ঠকবাজির দুনিয়ায় মানুষ চেনা হয়নি।

৩.
তুমি শিখিয়েছো ব্রহ্ম-পরমাত্মাই সত্য, জগৎ মিথ্যা। আমি বাধ্য ছেলের মতো তোমার হ্যাঁ-তে হ্যাঁ মিলিয়েছিলেন শুধু। এখনও তোমার এই সব তাত্ত্বিক কথা পুরোপুরি আয়ত্ত করতে পারিনি। আমার জাগতিক দ্বন্দ্বটিই বিশাল প্রক্ষেপের সম্ভাবনা নিয়েছে।

৪.
অর্পন করে দিয়েছি তো সবটুকু। যা ছিল আমার। আমার, আমিও অর্পিত হয়ে গেছি পাদমূলে। অনেক দহনদিনের কথা মনে আসছে, অনেক ভয়ংকর বিকৃতি ও বিশাল যন্ত্রণার কথা। তুমি দাঁড়িয়ে আছো পথের শেষে। ভরসা থাকুক তাতে। আমি উৎসর্গ করে ফেলেছি আমার সব।

৫.
এভাবে খেলতে চেয়েছো তুমি। আমি সুযোগ দিয়েছি তোমায়। ছেলেবেলায় পুতুল খেলার পুতুল যেমন নিস্পৃহ ভাব রেখে খেলা দেখে খেলোয়াড়ের। মনে রেখো শুধু তোমার খেলার শেষে রীতিকৌশল বুঝে ফেলে একদিন আমিও তোমার বিশ্বরূপ দর্শন করার অধিকার চাইতে পারি।


রাহুল গাঙ্গুলী






১টি বিপরীতমুখি শ্লোগান ~ ওরফ্ যৌনকল্পকথা
---------------------------------------------------------------------
[১] 




চিড়িতনের গোলাম_____________


বাধ্য হচ্ছি ~ সময়ের সমীকরণ পুড়িয়ে ফেলতে
এই মুহূর্ত : অস্তিত্বহীন বোবা ক্যালেন্ডার।শিরায় ছুঁচ

তোমার মূল্যবোধ ≠ আমার ব্যর্থতা
বেশ্যাপনার অহংকার ≠ [ঘাত ~ প্রতিঘাত]

আলগাহাতের স্পর্শক তাপে : চাঁদ-হিজলের ছাই

প্রশ্ন চলছে ~ চলবেই।যোনী~বাঁধন~লিঙ্গ~প্রবেশ
ঠোঁটের নিঃশ্বাসে : আদিম মাস্টারবেটের গুহাছবি



[২]

রুহিতনের বাদশা_________


২দন্ড অমেরুদণ্ডী হয়ে বসলেই ~ ঘিলুতে ক্ষরন
ভুলে যাচ্ছি : রাতের আড়ালে মেহফিলের সিরিঞ্জ

চাকা ঘুরছে : রাতমাখানো ঠো্ঁট।ঠোঁটের কাটাকুটি
আদমশুমারি ~ কোনো অশ্লীল ভয় ছাড়াই নিখোঁজ

বেলুনের ভিতর ~ স্পর্শক পৃথিবী ভেসে চলে 
কোনো ঈশান কোনের : গবেষক সংকেতময়তা

তীরবিদ্ধ গন্ধক ফুসফুস : নৌকার ~ গায়ে।পিঠে



[৩] হরতনের বিবি___________


যতোটা গোপন আদ্যক্ষরের সাথে পরিচয়
ততোটাই ক্রুশঘড়ির কাঁটায় ~ বিলম্বিত কার্পেট

রঙীন।রঙীন।অযথা।অপ্রকাশিত : ক্রিমরঙা বাতাস

অজস্র চৌকাঠ : মাতনের শুদ্ধাকৃতি বিয়োগ্

এসো ~ সময়ের সমাধান মিলিয়ে নিয়ে তাঁবু গাড়ি

পায়রার কণিষ্ক বোঁটা [ঝড়] : লাগামহীন সুতো ছাড়া
যতোটুকু গেরুয়া লালার ব-দ্বীপ উপনিবেশ



[৪] ইস্কাবনের টেক্কা___________


ফাঁকতালে উড়িয়ে দিই গোপন আদ্যক্ষর
তুমি /আমি~দুজনেই এখন '্য' - সম্পর্কিত উপহার
আয়নার শব্দগুলো : টুপটুপানিয়া নিঃশ্বাস
কপিকলে যমজ যতিচিহ্ন ~ পাপড়িমূলক বর্ণনায়

প্রজাপতির সেল্ফিকথা ~ মুঠোমুঠো কাগজের ঘাস
নষ্ট হলেও ~ হওয়া কি আদৌ যায়?

চন্দন হাওয়ায় দরজা ওড়ে : আঁচলের উৎসবে

শাল্যদানী


★love সাইন★
****************




#এক#

দিনের ঘরে লাল ক্যাকটাস
বুকের ভিতর বুক
এইতো আজ প্রেমের দিন
খুলবো ব্রায়ের হুক।

পার্কার পেনে নীল কালি
পার্কে হবে দেখা
নীল কালিতে নীল ছবিতে
তোর মুখটা আঁকা।

দুষ্টু হব প্রেমের দিনে
দুষ্টু হব দুই
অর্কিড প্রেমে বিলাসী মন
তোর পাশেতে শুই।

ভাবছি কত
বলবো যত
গভীরতম খাঁদ।
প্রেম চুটকি 
মৌটুসকি
চন্দ্রবিন্দু চাঁদ।।

#দুই#

অনলি ফর লাভ
ঝোলানো শিক কাবাব

রেস্টুরেন্টে ভোজ
উইথ আ রেড রোজ

ছোট্টছোট্ট কামড়
স্টাইলিশ ভ্রমর

সময়সূচী ফিক্সড
কলের আগে মিসড

পকেটমার প্রেম
ডেঞ্জারাস গেম

#তিন#

অস্তিত্ব।
প্রেমেরদিন।
ভরসাহীন

কলেজআইন
ভেরি ফাইন।
গোলাপ দিন

লাল।
জবাই রঙ।
প্রেমিক সং

ভ্যালেন্টাইন
বড্ড লাইন।
মিষ্টি ঢং

#চার#

লাভ ফর অল।
মনুমেন্টাল ফোকাল হাওয়া
চাবুক পেটানো বুক
দিনান্ত পাপেট শো

অবসাদ।
নেই

আছে
অবলেপন।

অনেক বছরকার ইস্যু
টানলে বাড়ে
থমকে দাঁড়াই মুখোমুখি
দুই মুখোশ। এক অন্যঘর
জবরদখল প্রেমভক্তি
বিলাসে কাদম্বরী স্টাইল।
ভ্যালেন্টাইন স্পেস