পুজোর সময় আসন্ন। প্যান্ডেল বাঁধাও শেষ।
রাত পেরোলেই ষষ্ঠীর বোধন হবে শুরু।
ব্যস্ততা চরমে সকলেরই। পুরোহিত মশাই
পঞ্জিকায় সঠিক সময় দেখে নিচ্ছিলেন ভালো করে।
দুহাতে পাঁজাকোলা করে মেয়েকে নিয়ে
ভিতরে ঢুকলো গোপাল।
তার সারা গায়ে রক্তের বন্যা যেন। যে পথ দিয়ে ঢুকল
তার সবটুকুও।
অবাক পুরোহিত ও অন্যান্যজন।
গোপাল চিৎকার করে উঠলো কিছু মুহূর্ত পরেই।
ঠাকুরমশাই, এই দেখুন আমার মেয়ে, আপনাদের মন্দিরের পিছনের ড্রেনে পরে ছিল।
প্রাণ চলছে এখনো। তবে থাকবে না, এই দেখুন দেখুন না
আমার মেয়ের সব জায়গা দিয়ে কত রক্ত বেরোচ্ছে!
এই দেখুন পুরোহিতমশাই ক্ষতবিক্ষত যোনি।
ও নতুন প্যান্ডেল দেখতে এসেছিল জানেন তো।
ওর মাকে বলেছিল, আমি দেখে আসি আমি কোথায় বসে
মা দুর্গা হবো।
ওর কুমারিপুজো করবেন আর পুরোহিত মশাই?
খুবলে খুবলে যারা ওকে খেল তাদের সামনে ওর অক্ষত যোনি পুজো করবেন, পুরোহিত মশাই?
গোপালের অচৈতন্য হয়ে পড়ার আগে ধরাধরি করে
নিয়ে যাওয়া হলো হাসপাতালে।
মেয়েটা আর বাবা পাশাপাশি দুই বেডে।
অচৈতন্য।
অষ্টমীর পুজো শুরু হয়েছে মণ্ডপে মণ্ডপে।
পাড়ার মণ্ডপে পুজোর কোনো ঘাটতি নেই।
আয়োজন সম্পন্ন হলে পুরোহিত বললেন
এবার চলো আমার সঙ্গে।
হাসপাতালের বেড ঘিরে অতি সতর্কতায় সাবধানে
গোপালের সাতবছরের মেয়েকে সাজানো হলো।
শুরু হলো অষ্টমীর কুমারীর আরাধনা।
মৃন্ময়ীকে চিন্ময়ীরূপে আরাধনা।
মেয়েটা কিছু পরে ফিরে পেল জ্ঞান, কথা বললো,
'জল খাবো।'
পুলিশ টানতে টানতে নিয়ে এলো দুটো লোককে।
পুরোহিত বললেন, অসুরবধ হবেই হবে, ভেবোনা গোপাল।
উঠে বসলো তার বাবাও, শোক সামলে।
বাচ্চা মেয়েটির পায়ে মাথা রাখলো পূজারী।