নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

কৃতী রায়





অন্তর্বর্তীকালীন...



ঝুপ করে নেমে আসা বসন্তের সন্ধ্যেয় ঝরে পড়ে কোনো মায়াবী গন্ধ! তোর বুকের ছাদে উঁকি দিয়ে দাঁড়াই ক্লান্ত আমি; চুল খুলে দিই। বিপদ বাড়তে থাকে, তুই ঠোঁট এগিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত। বাইরে বিধ্বস্ত রাষ্ট্র জ্বলছে প্রতিকূল হাওয়ায়। বুলেটে বুনে দেওয়া তাত্ত্বিক উপত্যকায় গোলাপ বাগান চোখে পড়ছেনা দূরবীনেও।
 তুই জামার বোতাম খুলে রেখেছিস আজ অজান্তেই।আমি ভালোবাসার স্পর্ধায় তাকিয়ে থাকি অনেকক্ষণ। তোর দেওয়া নাম ধরে ডাকতেই পরিচিত হাসি ছড়িয়ে পড়লো আমার আনাচেকানাচে। তোর চশমার ওপার থেকেও একই রকম আলো। আর প্রত্যেকবার এভাবেই ফোনের স্ক্রিনে ভিডিও কলে কয়েক'শ কিলোমিটার দূর থেকেও তুই আমায়ে ছুঁয়ে ফেলিস অবলীলায়। আমি মুখ নীচু করে ফেলি লজ্জায়। তুই এগিয়ে এসে কপালে এঁকে দিস চুমু। অপটিকাল ফাইবারের ডিজিটাইজড পৃথিবীতেও সে স্পর্শ আমাকে ছুঁয়ে ফেলে ঠিক কোন অদৃশ্য সূক্ষ্ম তরঙ্গে। বিজ্ঞান কোনোদিন কি তাকেই "ভালোবাসা" নামে ব্যাখা দেবে!?..হয়ত বা। জাগতিক কিলোমিটারের হিসেব পেরিয়েও আমাদের মাঝে ঠিক কোনো দূরত্ব থাকেনা আর।তুই আমাকে স্পর্শ করিস, আমি তোকে আদর। তুই আমার চুল সরিয়ে দিস ব্যক্তিগত মুহুর্তে, আমি তোর বুকে মুখ! তুই আমার কোলে শুতে চাস ব্যস্ত দিনান্তে, আমি অভিমান করে তোর চোখে চোখ।
ভেবে দেখেছিস,যে পৃথিবীতে তুই আর আমি আস্ত একটা জড়পদার্থ  ফোনের দু'প্রান্তে থেকেও ভালোবেসে ফেলছি দূরত্ব সরিয়ে ! সে পৃথিবীতেই, "ধর্ম", " বর্ণ", "জাত" আরোও কত কি নামের কিছু অদৃশ্য অন্তর্বর্তী বস্তু দিয়ে একে অপরকে আলোকবর্ষ দূরত্বে সরিয়ে দিচ্ছে কত্ত মানুষ!.... অদ্ভুত, তাই না?


জয়তী দাস





"সত্যের মুখোমুখি,,



যতটুকু বিনিময় হলো সারাদিন,
সবাই একই শিকড়ে ভিন্ন ডালে জুড়ে জুড়ে -

যা কিছু স্পষ্ট - ঠোঁট থেকে বেরিয়ে যাওয়া শব্দ
যা কিছু অসংগত সংলাপ- হঠাৎই গেলো মুছে !

অস্পষ্ট আলোয় দীঘির জল কালো হয়ে আসে-
চোখের সামনে প্রতিটা মলাট ছেঁড়া মনেহয়!
সাজানো পাপড়িগুলো ছড়িয়ে আছে; অনাবৃষ্টির মুক্তো ছটায়!

কয়েকশো বার প্রমাণ লোপাট করে বারবার আয়নার সামনে,
রুমালে মুছে নেওয়া যথেচ্ছাচারে শনাক্তকরণের দাগ!
লুকিয়ে পড়া দেহঘরে;সেজে ওঠা জমকালো পোশাকে-

বদলাবো ভাবতেই সেই কবিতা হতে চাই আজ,
কলমের কাছে আর্জি; স্পষ্ট হোক সেই অন্ধকার -

জীবনকে সত্যের মুখোমুখি কাঠগড়ায় টেনে আনতে ;
কঠোর কিছু শব্দের মুখোমুখি! কবিই দাঁড়াক -

তিহার : শ্যামল কুমার রায়


অনেক ভেবে দেখেছি-
তিহার জেলেই থাকছি।
অভিযোগে শুরু, অভিযোগেই শেষ
অভিযোগের খাতা, দ্রুত নিঃশেষ।
বেশ কঠিন ছিল ভালো ছেলে হওয়া
যৌবনের ঝোঁক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া।
শাড়ির ভাঁজে ছিল আলতো ছোঁয়া
আঁচল সরিয়ে শুধু কাছে পাওয়া
কাছে পাওয়ার রেশ,থাকে না বিশেষ
তৃপ্তির শেষ, হিসেব শুরু,
কূটক্যাচালিতে বুক দুরুদুরু।
পাওনা গণ্ডা বুঝিয়ে দিতে হবে
রক্ত ৠণ শোধ করতে হবে।
আমিত্বের লড়াই এ সব ছারখার
থামতে চায় না, জীবন বারবার
জনারণ্যে শুধু আজ মুখোশের ভিড়
সম্পর্ক কোথাও নয়তো নিবিড়
এর চেয়ে ঢের ভালো তিহারে থাকা
অপরাধী মন নিয়ে শুধু বেঁচে থাকা।
           -----------------------------

আর নেই ভয় : সাহা শোমী



আনাড়ি সমাজের চোখে আমি যে কেবলই অবলা নারী
নারী সেও,যে লক্ষীবাঈ
শত শত‌ বিদেশীর ওপর পড়েছিল ভারী।
মরতেও যে নেই ভয় আর,
নিজ অস্তিত্বের দায় শুধুই যে আমার।
জড়াবো না কাউকেই আর।
নামেই আপন যারা ,সেসব ভীতুদের নেই স্থান জীবনে আমার।
বেঁচে  রোজ রোজ মরেছি,
 মরে মরে রোজ বেঁচেছি।
জানি‌ দৃঢ়তাই শুধু আছে সাথে,
তবু বাঁচা টা নাহোক মুক্তি তো আমারই হাতে।
ভীতুরা খুঁজিস না আমায়,
এসেছে আমার মুক্তির সময়।
তোরা থাক দূরে ,এ যে আমার একার সমর
ভাবিস না আত্মা যে অবিচল, রয়ে যাবে অমর।
নেই ভয় এ্যসিডে ,বরবাদ যে কুড়িতে
তার ভয় কি বল  শান দেওয়া ছুড়িতে?

রিয়াজুল হক সাগরের দুটি কবিতা



অবুঝ শিশু না বলে কথা
অহংকারি বেসে,
বাংলাব বুকে মরে কেন তারা
হায়না শত্র রেশে।
বাবা মায়ের আদর পেয়ে
থাকেন অনেক সুখে,
হাজার কথার ফুল ছড়িয়ে
অন্য তুলেন মুখে।
অনেক সপ্ন দেখেন বাবা
বুকে নিয়ে তাকে,
সেই শিশুকে হত্যা করেন
নরো পশু বেসে।
হারিয়ে গেছে বিবেক নামের
একটি শিরো নাম,
বাংলাদেশের সভাব এখন
হচ্ছে এমন কাম।
আজ আমাদের ভাবতে হবে
মানবতার দাম,
এটাই সত্য বুঝে নিও
আসল এটাই জাম।



ঋতুমনি


ঋতু মনি বেজায় খুশি
একটু আদর পেলে,
বাবা মায়ের চোখের মনি
থাকেন গাল ফুলে।
লেখা পড়ায় ভাল যে তার
রাগটা অনেক বেশি,
কথা বলে চপড় চপড়
মুখে অনেক হাসি।
বইয়ের পাতায় দেয়না সে মন
খেলায় ব্যস্ত থাকে,
পড়ার কথা বললে সে হায়
মিট মিটিয়ে দেখে।
বাবার কাছে হাজার বায়না
কথার নাই শেষ,
সকাল হলেই পড়ে পড়া
এখন দেখি বেশ।
স্কুল ফাকি দেয়াই ছিলো
একটু তার সভাব,
নিয়মিত স্কুল যায় সে
সবাই দেখে অবাক।

তুমিময় অতীত পাঠ : শাহীন রায়হান


জলের মতো স্বচ্ছ দুটি চোখ
দুর্ভাবনায় পড়ে ছিলো লালচে জলের অববাহিকায়
স্মৃতিময় স্বচ্ছ শোকেস ভেঙে বেরিয়ে আসা
এক পরিত্যাক্ত কাচের উপর।

তোমার প্রিয়তম দুটি হাতের নীরব স্পর্শে
এ পৃথিবীর সবুজ উদ্যানে একদিন
স্বচ্ছন্দে বেঁচে ছিলো ওরা।

আজ ওরা মৃতপ্রায় অন্ধ সভ্যতার বেলাভূমিতে বিলুপ্ত প্রত্নতত্ব। তবু আমি দুঃখ ঢাকা নির্জন মাটির গভীরে
প্রতিনিয়ত খুঁজে ফিরি ওদের
মন দেই তুমিময় অতীত পাঠে
অতীত থেকে অতীতে।